বিষয়বস্তুতে চলুন

রাজশাহী বিভাগ

স্থানাঙ্ক: ২৫°০০′ উত্তর ৮৯°০০′ পূর্ব / ২৫.০০০° উত্তর ৮৯.০০০° পূর্ব / 25.000; 89.000
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজশাহী বিভাগ
বিভাগ
রাজশাহী বিভাগ এর মানচিত্র
রাজশাহী বিভাগ এর মানচিত্র
স্থানাঙ্ক: ২৫°০০′ উত্তর ৮৯°০০′ পূর্ব / ২৫.০০০° উত্তর ৮৯.০০০° পূর্ব / 25.000; 89.000
দেশ বাংলাদেশ
স্থাপিত১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ
সদর দপ্তররাজশাহী
সরকার
 • বিভাগীয় কমিশনারড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির
আয়তন
 • মোট১৮,১৫৩.০৮ বর্গকিমি (৭,০০৮.৯৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০২২ আদমশূমারী)
 • মোট২,৩৩,৫৩,১১৯
 • জনঘনত্ব১,৩০০/বর্গকিমি (৩,৩০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ মান সময় (ইউটিসি+৬)
আইএসও ৩১৬৬ কোডBD-E

রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ঢাকা বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগের পর এটি বাংলাদেশের তৃতীয় জনবহুল বিভাগ। এবং আয়তনে চতুর্থ বৃহত্তম বিভাগ। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী জনসংখ‍্যা ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ১১৯ জন। এবং আয়তন ১৮,১৫৪ বর্গ কিলোমিটার। রাজশাহী বিভাগটি একটি প্রাচীন এলাকা হ‌ওয়ার সুবাদে এখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রত্নস্থান দেখা যায়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগে ১৩৪ টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এরমধ্যে বৃহত্তর রাজশাহীর বর্তমান ন‌ওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এছাড়া এই বিভাগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আম ও পান চাষ হয়। মিঠা পানির মাছ চাষে প্রথম সারির বিভাগ রাজশাহী। এছাড়া গবাদি পশুর চাহিদার সবচেয়ে বড় অবদান রাখে রাজশাহী বিভাগ। রাজশাহী বিভাগে আয়তনে সবচেয়ে বড় জেলা ন‌ওগাঁ। এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় বগুড়া জেলা। রাজশাহী ও বগুড়া শহর বাংলাদেশের প্রথম সারির শহর। রাজশাহী শহরে দেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ‌ যেমন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পোস্টাল একাডেমী, বাংলাদেশ স্টাডিজ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সদর দপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ এডাকেমী, ইত্যাদি। রাজশাহী বিভাগে আটটি জেলা, ৬৭টি উপজেলা, ৫৯টি পৌরসভার এবং ৫৬৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।[] রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া এবং পাবনা রাজশাহী বিভাগের চারটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র এবং বড় শহর। নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট প্রধান কৃষি এলাকা। রাজশাহী হল এ বিভাগের রাজধানী।

পটভূমি

[সম্পাদনা]

১৮২৯ সালে উত্তরবঙ্গের বিশাল অংশ নিয়ে একটি বিভাগ গঠিত হয়েছিল। সে সময় এর সদর দপ্তর ছিল ভারতের মুর্শিদাবাদ। ৮টি জেলা নিয়ে এই বিভাগটি গঠিত হয়েছিল। জেলাগুলো ছিলঃ মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনারাজশাহী। কয়েক বছর পর বিভাগীয় সদর দপ্তর বর্তমান রাজশাহী শহরের রামপুর-বোয়ালিয়া মৌজায় স্থানান্তরিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৮৮৮ সালে বিভাগীয় সদর দপ্তর ভারতের জলপাইগুড়িতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৪৭ সালের পাক-ভারত বিভাজনের পর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বিভাগে পরিণত করা হয় রাজশাহীকে এবং এই বিভাগের সদর দফতর রাজশাহী শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো ছিলঃ কুষ্টিয়া, খুলনা, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনা, যশোর, রংপুর ও রাজশাহী। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিভাগের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল জেলা কর্তন করে খুলনা বিভাগ গঠন করা হয়। ফলে রাজশাহী বিভাগের জেলার সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ এবং জেলগুলো ছিলঃ দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ৫ টি জেলা নিয়ে রাজশাহী বিভাগ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮৪ সালে এই বিভাগের প্রতিটি জেলার মহকুমা জেলাতে পরিণত হয়। তখন এই বিভাগের মোট জেলার সংখ্যা ছিল ১৬টি। যে ৫ জেলাকে ভেঙে যে নতুন জেলাগুলো হয়ঃ

২০১০ সালে রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয় এবং রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ পুনঃগঠিত হয়।

নদ-নদী

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত রাজশাহী বিভাগেও নদ-নদীর অভাব নেই। রাজশাহী বিভাগের উল্লেখযোগ্য নদ-নদীসমূহ হচ্ছে পদ্মা, যমুনা, মহানন্দা, আত্রাই, ইছামতি, করতোয়া, বড়াল, তুলসীগঙ্গা, পুনর্ভবা, গুমানি, নাগর, বাঙ্গালী প্রধান। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট ছোট নদ-নদী রয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

[সম্পাদনা]

উচ্চ শিক্ষার জন্য বর্তমানে রাজশাহী বিভাগে সাতটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১টি আর্মি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হল

এছাড়াও এই বিভাগে পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। কলেজগুলো হল

উল্লেখযোগ্য কলেজ সমূহ—

পলিটেকনিক সমূহ—

ভৌগোলিক অবস্থান

[সম্পাদনা]

এই বিভাগের দক্ষিণে খুলনা বিভাগ, উত্তরে রংপুর বিভাগ ও ভারত, পশ্চিমে ভারত, পূর্বে ঢাকা বিভাগময়মনসিংহ বিভাগ অবস্থিত।

প্রশাসনিক জেলাসমূহ

[সম্পাদনা]

৮টি জেলা নিয়ে এই বিভাগটি গঠিত; এগুলো হলো:

নাম প্রশাসনিক কেন্দ্র এলাকা (কিমি ²) জনসংখ্যা
(২০১১ জনগণনা)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১,৭০২.৫৬ ১৬,৪৭,৫২১
জয়পুরহাট জেলা জয়পুরহাট ৯৬৫.৪৪ ৯,৫০,৪৪১
নওগাঁ জেলা নওগাঁ ৩,৪৩৫.৬৭ ২৬,০০,১৫৮
নাটোর জেলা নাটোর ১,৯০৫.০৫ ১৮,২১,৩৩৬
পাবনা জেলা পাবনা ২,৩৭১.৫০ ২৮,৬০,৫৪০
বগুড়া জেলা বগুড়া ২,৮৯৮.২৫ ৩৫,৩৯,২৯৪
রাজশাহী জেলা রাজশাহী ২,৪০৭.০১ ২৩,৭৭,৩১৪
সিরাজগঞ্জ জেলা সিরাজগঞ্জ ২,৪৯৭.৯২ ৩৫,৪৪,০৮০
মোট জেলা ০৮টি ১৮,১৫৩.০৮ ১,৮৪,৮৪,৮৫৮

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

[সম্পাদনা]

শস্য, খাবার ও পণ্য

[সম্পাদনা]

রাজশাহী সাধারনত ফলের জন্য সুপরিচিত, বিশেষ করে আমলিচু। এছাড়াও রাজশাহীতে অনেক ধরনের শস্য এবং সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে, এর মধ্যে আলু, গাজর, পটল, পেঁয়াজ, আখ, কলা, ধান, গমমরিচ প্রভৃতি অন্যতম। বগুড়া জেলার দই ও ক্ষীর পুরো বাংলাদেশে বিখ্যাত। বাংলাদেশে জয়পুরহাট খাদ্য সংরক্ষণ এলাকা হিসাবে সুপরিচিত। বাংলাদেশের মধ্যে বগুড়ার লাল মরিচ বিখ্যাত।এছাড়া কাহালুর কল্যাণপুর গ্রাম মরিচ চাষের এবং নাটোর গম,আখ,রসুন চাষের জন্য বিখ্যাত।নাটোরএর কাঁচাগোল্লা দেশ ও দেশের বাহিরে বিখ্যাত।

বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার শান্তাহারএ আছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম খাদ্য সংরক্ষণ গুদাম(সাইলো)।

  • জেলা ভিত্তিক কৃষজ উৎপাদন
  1. রাজশাহী জেলা →আম,লিচু,ধান,পাট
  2. চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা →আম, লিচু,ধান,গম,সবজি
  3. বগুড়া জেলা→দই,ক্ষীর, কটকটি,মরিচ,আলু,গম,সরিষা,ধান,কলা,

পেঁপে,মাছ।

  1. পাবনা জেলা→(পেঁয়াজ), ডাল,গম,পেয়ারা,কাঁঠাল, মাছ
  2. নাটোর জেলা →আখ,গম,রসুন,পাট,মাছ,ধনিয়া,মরিচ,বেগুন,আম,লিচু,ডাগন,ধান,তরমু,কলা,ভুট্টা,সবজি ইত্যাদি।
  3. নওগাঁ জেলা →আম, মাছ, সবজি,ধান, পাট, ভুট্টা, গম, পাট
  4. সিরাজগঞ্জ →গম,ধান,ভুট্টা, মাছ,তিল,গরুর দুধ
  5. জয়পুরহাট জেলা →আলু,গম,তুলা,পাট,সবজি

দর্শনীয় স্থানসমূহ

[সম্পাদনা]

রাজশাহী বিভাগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হবার কারণে রাজশাহী অঞ্চলে ভ্রমনের জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

অন্তর্ভুক্ত দর্শনীয় স্থানসমূহঃ

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]