মানিকগঞ্জ জেলা
মানিকগঞ্জ | |
---|---|
জেলা | |
![]() বাংলাদেশে মানিকগঞ্জ জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫১′০″ উত্তর ৯০°০′৩৬″ পূর্ব / ২৩.৮৫০০০° উত্তর ৯০.০১০০০° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৩°৫১′০″ উত্তর ৯০°০′৩৬″ পূর্ব / ২৩.৮৫০০০° উত্তর ৯০.০১০০০° পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
সরকার | |
আয়তন | |
• মোট | ১৩৭৮.৯৯ কিমি২ (৫৩২.৪৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১৩,৯২,৮৬৭ |
• জনঘনত্ব | ১০০০/কিমি২ (২৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৬% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৫৬ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
মানিকগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।
পরিচ্ছেদসমূহ
ইতিহাস[সম্পাদনা]
বাংলার মধ্য-ভাটি অঞ্চলভূক্ত মানিকগঞ্জ জেলার ভূ-ভাগ নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত। বিশেষত: পদ্মা, গঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতি, করতোয়া, বোরাসাগর তিস্তা ও ব্রক্ষ্মপুত্র প্রভৃতি নদনদী যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলের ভূমি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। সবুজ শস্য-শ্যামল প্রান্তর, রাশিরাশি বৃক্ষরাজি আর দূর দিগন্তে দৃষ্টির সীমানায় আকাশের নীলিমার সখ্যতা নিয়ে গাজীখালি, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা বন্দর মানিকগঞ্জ। এ জেলার নৈসর্গিক দৃশ্যে মন হারিয়ে যায় প্রকৃতির সাথে। ধলেশ্বরীর রূপালী বেলাভূমিতে ভোরের আকাশের উদীয়মান সূর্যের শাশ্বত রূপ হয় মোহনীয়। এমন অপরূপ রূপের জেলা মানিকগঞ্জ।
মানিকগঞ্জ মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৫ সালের মে মাসে। মানিকগঞ্জ মহকুমা প্রথমে ফরিদপুর জেলার (১৮১১ সালে সৃষ্ট) অধীন ছিল। প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনকল্পে ১৮৫৬ সালে মানিকগঞ্জ মহকুমাকে ফরিদপুর জেলা থেকে ঢাকা জেলায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়। মানিকগঞ্জ জেলার উত্তর সীমান্তে টাঙ্গাইল জেলা। পশ্চিম এবং দক্ষিণ সীমান্তে যমুনা ও পদ্মা নদী পাবনা ও ফরিদপুর জেলাকে বিচ্ছিন্ন করেছে। পূর্ব, উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণে রয়েছে যথাক্রমে ধামরাই, সাভার, কেরানীগঞ্জ উপজেলা।
নামের উৎপত্তি[সম্পাদনা]
মূলতঃ সংস্কৃত ’মানিক্য’ শব্দ থেকে মানিক শব্দটি এসেছে। মানিক হচ্ছে চুনি পদ্মরাগ। গঞ্জ শব্দটি ফরাসী। মানিকগঞ্জ নামে কোন গ্রাম বা মৌজার অস্তিত্ব নেই। ১৮৪৫ সাল মহুকুমা সৃষ্টির আগে কোন ঐতিহাসিক বিবরণে বা সরকারী নথিপত্রে মানিকগঞ্জ এর নাম পাওয়া যায়নি। কিংবদন্তী রয়েছে যে, অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে মানিক শাহ নামক এক সুফি দরবেশ সিংগাইর উপজেলার মানিকনগর গ্রামে আগমন করেন এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন । পরবর্তীকালে তিনি এ খানকা ছেড়ে হরিরামপুর উপজেলায় দরবেশ হায়দার সেখের মাজারে গমন করেন এবং ইছামতি তীরবর্তী জনশূন্য চরাভূমি বর্তমান মানিকনগরে এসে খানকা প্রতিষ্ঠা করেন । এ খানকাকে কেন্দ্র করে এখানে জনবসতি গড়ে উঠে ।
উক্ত জনবসতি মানিক শাহ’র পূণ্য স্মৃতি ধারন করে হয়েছে মানিকনগর । মানিক শাহ শেষ জীবনে ধামরাইতে অবস্থিত আধ্যাত্নিক গুরুর দরবার শরীফে ফিরে যাবার মানসে পূনরায় দ্বিতীয় খানকা ছেড়ে ধলেশ্বরীর তীরে পৌঁছেন । জায়গাটির নৈসর্গিক দৃশ্য তার পছন্দ হয় । তিনি এখানে খানকা স্থাপন করেন । প্রথম ও দ্বিতীয় খানকার ভক্তবৃন্দও এখানে এসে দীক্ষা নিতো । মানিকশাহর অলৌকিক গুনাবলীর জন্য জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই তাকে শ্রদ্ধা করতেন । এমনকি দস্যূ তস্করগণও কোন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে খানকার ধারে কাছে আসতো না । তাই ভক্তবৃন্দ ছাড়া বণিকগণও এখানে বিশ্রাম নিতো এবং রাত্রি যাপন করত । এভাবেই ধলেশ্বরীর তীরে মানিক শাহ’র খানকাকে কেন্দ্র করে জনবসতি ও মোকাম প্রতিষ্ঠিত হয় । কেউ বলেন দুর্ধর্ষ পাঠান সরদার মানিক ঢালীর নামানুসারে মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি হয়। আবার কেউ কেউ বলেন নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিশ্বাস ঘাতক মানিক চাঁদের প্রতি ইংরেজদের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার নামানুসারে
অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]
মানিকগঞ্জ ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি জেলা। এই জেলার উত্তর সীমান্তে টাঙ্গাইল জেলা, পশ্চিম, পশ্চিম দক্ষিণ, এবং দক্ষিণ সীমান্তে যথাক্রমে যমুনা এবং পদ্মা নদী পাবনা জেলা ও ফরিদপুর জেলা থেকে এ জেলাকে বিচ্ছিন্ন করেছে। পূর্ব, উত্তর পূর্ব এবং পূর্ব দক্ষিণে রয়েছে ঢাকা জেলার যথাক্রমে ধামরাই, সাভার, কেরানীগঞ্জ দোহার এবং নবাবগঞ্জ উপজেলা । ইহা ২৩°৫২'৪৫" উত্তর অক্ষাংশ ও ৯০˚৪'১৫" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত । মানিকগঞ্জ জেলার আয়তন- ১৩৭৮.৯৯ বর্গ কিঃ মিঃ ।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]
মানিকগঞ্জ জেলা ৭টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত; এগুলো হলোঃ
- ঘিওর উপজেলা
- দৌলতপুর উপজেলা,
- মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা,
- শিবালয় উপজেলা,
- সাটুরিয়া উপজেলা,
- সিঙ্গাইর উপজেলা এবং
- হরিরামপুর উপজেলা।
চিত্তাকর্ষক স্থান[সম্পাদনা]
১. মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা ঘাট এই এলাকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। যমুনা সেতুর আগে এই ঘাট দিয়েই যানবাহন পারাপার করা হতো।
২. বালিয়াটি প্রাসাদ, সাটুরিয়াঃ মানিকগঞ্জ জেলার পুরাকীর্তির ইতিহাসে বালিয়াটির জমিদারদের অবদান উল্লেখ যোগ্য। বালিয়াটির জমিদারেরা উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে আরম্ভ করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গেছেন যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
৩. তেওতা জমিদার বাড়ি , শিবালয়ঃ মানিকগঞ্জ উপজেলাধীন শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়িটি বাবু হেমশংকর রায় চৌধুরী, বাবু জয় শংকর রায় চৌধুরী পিং দুই সহোদর ভ্রাতার নিজ বসতবাড়ী ছিল। তেওতা অবস্থান করে তারা জমিদারি পরিচালনা করতেন।
৪. মুন্নু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
৫. জাফরগঞ্জ বেড়িবাঁধ।
৬. তরা ব্রিজ।
৭. নয়াকান্দি ব্রিজ।
৮. পাটুরিয়া ঘাট।
৯. বেউথা ঘাট, বেউথা ব্রিজ।
১০. কালিগঙ্গা নদীর তীর।
১১. পি.ডি.বি.।
১২. ফকুুরহাটী-নুুরুল্লাপুুর মাজার শরীফ।
১৩. মাচাইন মাজার শরীফ।
১৪. ঝিটকা মাজার শরীফ।
১৫. ষাইটঘর টাওয়ার।
১৭. তেরশ্রী স্মৃতিস্তম্ব
শিক্ষা[সম্পাদনা]
- মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ
- ঘিওর দুর্গা নারায়ন উচ্চ বিদ্যালয়
- শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- তেরশ্রী ডিগ্রী কলেজ
- তেরশ্রী কালীনারায়ণ ইনষ্টিটিউশন
- রুপসা ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়
- বেজপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়
- কাটিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]
- রফিকউদ্দিন আহমদ, ভাষা শহীদ।
- হারুনার রশীদ খান মুন্নু, সাবেক এমপি ও মন্ত্রী। বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক।
- খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন , ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক এমপি, চীফহুইপ। সাবেক মহাসচিব, বিএনপি।
- ড. অমর্ত্য সেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক
- বিচারপতি এ কে এম নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান বিচারপতি।
- হীরালাল সেন , উপমহাদেশের চলচিত্রের জনক, চিত্রগ্রাহক।
- খান আতাউর রহমান, সুরকার, গায়ক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সংগীত পরিচালক, গীতিকার, প্রযোজক
- মমতাজ বেগম, সংগীত শিল্পী, সংসদ সদস্য
- কিশোরীলাল রায় চৌধুরী
- ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন, প্রাচীন পুঁথি সংগ্রাহক, সাহিত্যিক, গবেষক
- মুনীর চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী
- শামীম জামান, অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক
- শামসুজ্জামান খান, সাবেক মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি।
- ফারুক আহমেদ,জনপ্রিয় নাট্যভিনেতা।
- নীনা হামিদ,প্রখ্যাত লোকশিল্পী।
- নাইমুর রহমান দুর্জয়, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্যাপ্টেন, সাংসদ।
- অমলেন্দু বিশ্বাস বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি যাত্রাপালার পথিকৃত। প্রখ্যাত যাত্রাভিনেতা।
- সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহিত্যিক এবং প্রথম আলোর নিয়মিত কলাম লেখক
গ্যালারি[সম্পাদনা]
আরো দেখুন[সম্পাদনা]
প্রবাসী[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মানিকগঞ্জ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৬।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
![]() |
উইকিভ্রমণে মানিকগঞ্জ জেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |