নেত্রকোণা জেলা
নেত্রকোণা | |
---|---|
জেলা | |
![]() বাংলাদেশে নেত্রকোণা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫২′৪৮″ উত্তর ৯০°৪৩′৪৮″ পূর্ব / ২৪.৮৮০০০° উত্তর ৯০.৭৩০০০° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৪°৫২′৪৮″ উত্তর ৯০°৪৩′৪৮″ পূর্ব / ২৪.৮৮০০০° উত্তর ৯০.৭৩০০০° পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
আয়তন | |
• মোট | ২,৮১০.২৮ বর্গকিমি (১,০৮৫.০৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২২,২৯,৪৬৪ |
• জনঘনত্ব | ৭৯০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৩৪.৯৪% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৭২ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
নেত্রকোণা জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক এলাকা। উপজেলার সংখ্যানুসারে নেত্রকোণা বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।[২] এখানে রয়েছে পাহাড়ি জলপ্রপাত, চীনা মাটির পাহাড়, নদী, খাল, বিল। এই জেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে এ অঞ্চল গুপ্ত সম্রাটগণের অধীন ছিল। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গুপ্তযুগে সমুদ্রগুপ্তের অধীনস্থ এ অঞ্চলসহ পশ্চিম ময়মনসিংহ কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দুরাজ শশাংকের আমন্ত্রণে চৈনিক পরিব্রাজক হিউ এন সাঙ যখন কামরূপ অঞ্চলে আসেন, তখন পর্যন্ত নারায়ণ বংশীয় ব্রাহ্মণ কুমার ভাস্কর বর্মণ কর্তৃক কামরূপ রাজ্য পরিচালিত ছিল। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগে পূর্ব ময়মনসিংহের উত্তরাংশে পাহার মুল্লুকে বৈশ্যগারো ও দুর্গাগারো তাদের মনগড়া রাজত্ব পরিচালনা করতো। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ দিকে জনৈক মুসলিম শাসক পূর্ব ময়মনসিংহ অঞ্চল আক্রমণ করে অল্প কিছুদিনের জন্য মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। চতুর্দশ শতাব্দীতে জিতারা নামক একজন সন্ন্যাসী কামরূপের তৎকালীন রাজধানী ভাটী অঞ্চল আক্রমণ ও দখল করেন। সে সময় পর্যন্তও মুসলিম শাসক ও অধিবাসী স্থায়ীভাবে অত্রাঞ্চলে অবস্থান ও শাসন করতে পারেনি। খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের শাসনামলে (১৪৯৩-১৫১৯) সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চল মুসলিম রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ’র পুত্র নসরৎ শাহ’র শাসনামলে (১৫১৯-১৫৩২) দু'একবার বিদ্রোহ সংঘটিত হলেও বিদ্রোহীরা সফল হয়নি। সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চলেই নসরৎ শাহ’র শাসন বলবৎ ছিল। নসরৎ শাহ-র উত্তরাধিকারীরা (১৫৩৩-১৮৩৮) কিংবা তার পরবর্তী লক্ষ্মণাবতীর অন্য শাসকেরা ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপর আধিপত্য বজায় রাখতে পারেনি। ময়মনসিংহের উত্তরাংশ কোচদের পুনরাধীন হয়ে পড়ে। বাকী অংশ দিল্লীর পাঠান সুলতান শেরশাহ-র (১৫৩৯-১৫৪৫) শাসনভুক্ত হয়েছিল। তৎপুত্র সেলিম শাহ’র শাসনের সময়টি (১৫৪৫-১৫৫৩) ছিল বিদ্রোহ ও অস্থিরতায় পূর্ণ। রাজধানী দিল্লী থেকে অনেক দূরে ও কেন্দ্রীয় রাজশক্তির দূর্বলতার সুযোগে প্রধান রাজস্ব সচিব দেওয়ান সুলায়মান খাঁ (যিনি পূর্বে কালিদাস গজদানী নামে পরিচিত ছিলেন) সম্রাটের বিরুদ্ধাচরণ করেন। এতে করে দেশী ও বিদেশী রাজ্যলিপ্সুরা এতদঞ্চল দখলের প্রয়াস পায়। এর মধ্যে ভাটী অঞ্চল (পূর্ব-উত্তরাংশ) সোলায়মান খাঁ-র দখলভুক্ত ছিল। কেন্দ্রীয় শাসকের প্রেরিত সৈন্যদের হাতে সোলায়মান খাঁ নিহত হলেও তার দু’পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র ঈশা খাঁ খিজিরপুর থেকে ভাটী অঞ্চলে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ঈশা খাঁ’র মৃত্যুর পর তৎপুত্র মুসা খাঁ ও আফগান সেনা খাজা উসমান খাঁ কর্তৃক অত্রাঞ্চল শাসিত ছিল। সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে (১৬০৫-১৬২৭) সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চল মোঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।[৩][৪]
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮০ খিস্টাব্দে হওয়া নেত্রকোণা মহকুমাকে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলা করা হয়।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]
নেত্রকোণা জেলা ১০টি উপজেলা, ১০টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৮৬টি ইউনিয়ন, ১৯৬৭টি মৌজা, ২২৯৯টি গ্রাম ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
উপজেলাসমূহ[সম্পাদনা]
নেত্রকোণা জেলায় মোট ১০টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
সংসদীয় আসন[সম্পাদনা]
শিক্ষা[সম্পাদনা]
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.৯%; পুরুষ ৩৭.৯%, মহিলা ৩১.৯%। নেত্রকোণা জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ১ টি, মেডিকেল কলেজ ১ টি, কলেজ ২৮ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৩৬ টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৮৩ টি, মাদ্রাসা ১৬০টি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়[সম্পাদনা]
কলেজসমূহ[সম্পাদনা]
মেডিকেল কলেজ[সম্পাদনা]
অন্যান্য[সম্পাদনা]
- নেত্রকোণা সরকারি কলেজ,
- নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজ,
- মদন সরকারি কলেজ
- কেন্দুয়া সরকারি কলেজ
- সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান কলেজ,
- আবু আব্বাস ডিগ্রি কলেজ,
- হেনা ইসলাম কলেজ,
- নেত্রকোণা সিটি কলেজ,
- মোহনগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ,
- পূর্বধলা সরকারি কলেজ।
- ফকির আশরাফ কলেজ,
- কলমাকান্দা সরকারি ডিগ্রি কলেজ,
- সুসং সরকারি কলেজ।
- চন্দ্রনাথ ডিগ্রি কলেজ
- তেলিগাতী সরকারী কলেজ
- সরকারী কৃষ্ণপুর হাজী আলী আকবর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
- মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজ
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]
চিত্তাকর্ষক স্থান[সম্পাদনা]
- হযরত শাহ সুলতান কমরউদ্দিন রুমি (র) মাজার শরীফ, মদনপুর,নেত্রকোণা সদর।
- উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী - বিরিশিরি, দুর্গাপুর উপজেলা;
- বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড় - দুর্গাপুর উপজেলা;
- কমলা রাণীর দিঘী;
- কমরেড মণি সিংহ-এর স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি ও স্মৃতিস্তম্ভ - দুর্গাপুর উপজেলা;
- কুমুদীনি স্তম্ভ - দুর্গাপুর উপজেলা;
- সোমেশ্বরী নদী - দুর্গাপুর উপজেলা;
- ডিঙ্গাপোতা হাওর - মোহনগঞ্জ উপজেলা;
- চরহাইজদা হাওর
- মগড়া নদী - মদন উপজেলা।[১২]
- কংস নদী
- নিঝুম পার্ক
- নারায়ণডহর জমিদার বাড়ি
- বাঘবেড় জমিদার বাড়ি
- সাত শহীদের মাজার- লেঙ্গুরা, কলমাকান্দা উপজেলা
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
মদন পৌরসভাতে মগড়া নদীর দৃশ্য
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
![]() |
উইকিভ্রমণে নেত্রকোণা জেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নেত্রকোণা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৩ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৬।
- ↑ "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ নেত্রকোণা জেলার ইতিহাস’ (পৃষ্ঠা-১৬৮, খন্ড-৫)
- ↑ বাংলাপিডিয়া
- ↑ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (PDF)। web.archive.org। Wayback Machine। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ২৯৬।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে নেত্রকোণা জেলা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- নেত্রকোণা - জাতীয় তথ্য বাতায়ন।