ঝালকাঠি জেলা

স্থানাঙ্ক: ২২°৩৮′৩৫″ উত্তর ৯০°১২′০″ পূর্ব / ২২.৬৪৩০৬° উত্তর ৯০.২০০০০° পূর্ব / 22.64306; 90.20000
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঝালকাঠি
জেলা
মানচিত্র
বাংলাদেশে ঝালকাঠি জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে ঝালকাঠি জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৮′৩৫″ উত্তর ৯০°১২′০″ পূর্ব / ২২.৬৪৩০৬° উত্তর ৯০.২০০০০° পূর্ব / 22.64306; 90.20000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগবরিশাল বিভাগ
সরকার
 • জেলা প্রশাসকফারাহ্ গুল নিঝুম
আয়তন
 • মোট৭০৬.৭৭ বর্গকিমি (২৭২.৮৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৬,৮২,৬৬৯
 • জনঘনত্ব৯৭০/বর্গকিমি (২,৫০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৬৫.৭৪% [২]
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
১০ ৪২
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

ঝালকাঠি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। নদী বন্দরের জন্য ঝালকাঠি সবসময় ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ঝালকাঠি পূর্বে বরিশাল জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১ এপ্রিল ১৮৭৫ সালে ঝালকাঠি পৌরসভার গোড়াপত্তন হয়। [৩] ব্রিটিশ শাসনামলে সেনাবাহিনী কর্তৃক কুলকাঠিতে ১৭ জন মুসলমান নিহত হন। স্থানীয় দাঙ্গা নিরসন ও শৃঙ্খলা প্রদানের জন্য ১৮৮২ সালে ঝালকাঠিতে একটি পুলিশ থানা স্থাপন করা হয়। নদী বন্দরের জন্য ঝালকাঠি সবসময় ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝালকাঠি সদর উপজেলার রেজাউল করিম ২৪ সদস্য বিশিষ্ট মানিক বাহিনী গড়ে তোলেন। কিছু স্থানীয় রাজাকার এর সহায়তায় ১৬ই জুন ১৯৭১ সালে পাক-হানাদার বাহিনী তাদের হত্যা করে। ২৭শে এপ্রিল হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পরে ১৯৭২ সালের ১ জুলাই, ঝালকাঠি থানাকে বরিশাল জেলার মহকুমায় উন্নীত করা হয়। [৩] পহেলা ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ঝালকাঠি থানাকে বরিশাল জেলা থেকে পৃথক করে পূর্ণাঙ্গ জেলায় পরিণত করা হয়। [৩]

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

এ জেলার মোট আয়তন ৭৫৮.০৬ বর্গকিলোমিটার[৪]। ঝালকাঠি জেলার উত্তর ও পূর্বে বরিশাল জেলা, পশ্চিমে পিরোজপুর জেলা, দক্ষিণে বিষখালী নদীবরগুনা জেলা

প্রধান নদী[সম্পাদনা]

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]

ঝালকাঠি জেলা ৪টি উপজেলা, ৪টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৩২টি ইউনিয়ন, ৪০০টি মৌজা, ৪৪৯টি গ্রাম ও ২টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।

উপজেলাসমূহ[সম্পাদনা]

ঝালকাঠি জেলায় মোট ৪টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:

ক্রম নং উপজেলা আয়তন
(বর্গ কিলোমিটারে)
প্রশাসনিক থানা আওতাধীন এলাকাসমূহ
০১ কাঁঠালিয়া ১৫১.৩০ কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন (৬টি): চেঁচরী রামপুর, পাটিখালঘাটা, আমুয়া, কাঁঠালিয়া, শৌলজালিয়া এবং আওরাবুনিয়া
০২ রাজাপুর ১৬৪.৫৯ রাজাপুর ইউনিয়ন (৬টি): সাতুরিয়া, শুক্তাগড়, রাজাপুর, গালুয়া, বড়ইয়া এবং মঠবাড়ী
০৩ ঝালকাঠি সদর ১৫৯.৪৬ ঝালকাঠি সদর পৌরসভা (১টি): ঝালকাঠি
ইউনিয়ন (১০টি): গাভা রামচন্দ্রপুর, বিনয়কাঠী, নবগ্রাম, কেওড়া, কীর্তিপাশা, বাসণ্ডা, পোনাবালিয়া, গাবখান ধানসিঁড়ি, শেখেরহাট এবং নথুল্লাবাদ
০৪ নলছিটি ২৩১.৪৩ নলছিটি পৌরসভা (১টি): নলছিটি
ইউনিয়ন (৯টি ও ১টির আংশিক): ভৈরবপাশা, মগড়, কুলকাঠী, রানাপাশা, সুবিদপুর, কুশঙ্গল, নাচনমহল, সিদ্ধকাঠী, দপদপিয়া (আংশিক) এবং মোল্লারহাট
বন্দর ইউনিয়ন (১টির আংশিক): দপদপিয়া (আংশিক)

সংসদীয় আসন[সম্পাদনা]

সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৫] সংসদ সদস্য[৬][৭][৮][৯][১০] রাজনৈতিক দল
১২৫ ঝালকাঠি-১ কাঁঠালিয়া উপজেলা এবং রাজাপুর উপজেলা বজলুল হক হারুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
১২৬ ঝালকাঠি-২ ঝালকাঠি সদর উপজেলা এবং নলছিটি উপজেলা আমির হোসেন আমু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ঝালকাঠি জেলার মোট জনসংখ্যা ৬,৮২,৬৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩,২৯,১৪৭ জন এবং মহিলা ৩,৫৩,৫২২ জন। মোট পরিবার ১,৫৮,১৩৯টি।[১১]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ঝালকাঠি জেলার সাক্ষরতার হার ৬৬.৭%।[১১]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

প্রধান শস্য: ধান

প্রধান ফল: আম, কলা, জলপাই, কাঠাল তাল, লিচু, নারিকেল, আমড়া, পেয়ারা, পান

শিল্প-কারখানা: বরফ কল, ময়দার কল, লবণ কারখানা, রাইস মিল, তেলের কল, বিড়ি কারখানা।

কুটির শিল্প: গামছা শিল্প, মৃৎশিল্প

চিত্তাকর্ষক স্থান[সম্পাদনা]

সুজাবাদ কেল্লা, ঘোষাল রাজবাড়ী, পুরাতন পৌরসভা ভবন, মাদাবর মসজিদ, সুরিচোরা জামে মসজিদ, ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা, গাবখান সেতু, কীর্ত্তিপাশা জমিদার বাড়ি, শের-ই বাংলা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজ, বিনয়কাঠি, আটঘর নৌকা বাজার, ভীমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার, পেয়ারা বাগান,কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি

স্বাস্থ্য কেন্দ্র[সম্পাদনা]

হাসপাতাল ২ টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৪ টি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ২২ টি।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (জুন ২০১৪)। "Population Census 2011 (Barisal & Chittagong)" (পিডিএফ)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৪ 
  2. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে জেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৩ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৪ 
  3. কবীর, বিলু। বাংলাদেশের জেলা নামকরনের ইতিহাসআইএসবিএন 9844614397 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: checksum (সাহায্য) 
  4. ফাইয়াজ খান, অনম (৩১/০৩/২০২৩)। "ঝালকাঠি জেলার আয়তন"ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। Archived from the original on ২৫ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১/০৩/২০২৩  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  6. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  7. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  8. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  9. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  10. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  11. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৯