বাংলাপিডিয়া
![]() বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ | |
| লেখক |
|
|---|---|
| মূল শিরোনাম | বাংলাপিডিয়া |
| অনুবাদক | বাংলাপিডিয়ায় সংস্করণ |
| প্রকাশনার স্থান | |
| ভাষা | বাংলা, এবং ইংরেজি |
| বিষয় | বিবিধ |
| ধরন | বিশ্বকোষ |
| প্রকাশক | বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি |
প্রকাশনার তারিখ | জানুয়ারি ২০০৩ |
| মিডিয়া ধরন | ছাপা (শক্তমলাট), সিডি-রোম, অনলাইন |
| পৃষ্ঠাসংখ্যা | ১৪ খণ্ড |
| আইএসবিএন | ৯৮৪-৩২-০৫৭৬-৬ |
| ওসিএলসি | ৫২৭২৭৫৬২ |
| ওয়েবসাইট |
|
বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় জ্ঞানকোষ।[১] এই বিশ্বকোষ বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায়[২] মুদ্রিত সংস্করণ, ইলেকট্রনিক সংস্করণ ও সিডি-রম আকারে উপলব্ধ।[৩] এই মুদ্রণ সংস্করণটি ৫০০ পৃষ্ঠার দশ খণ্ডে গঠিত। প্রতি দুই বছর অন্তর হালনাগাদ করার পরিকল্পনা নিয়ে[৪] বাংলাপিডিয়া ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে ১০ খণ্ডে এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।[৫] ২০০৯ সালে বাংলাপিডিয়ার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিলো এবং ২০১২ সালে তা প্রকাশ করা হয়।[৬]
বাংলাপিডিয়া একটি সাধারণ বিশ্বকোষের পরিবর্তে প্রধানত বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিষয়ক বিশেষ বিশ্বকোষ হিসেবে নকশা করা হয়েছে।[৭] বিশ্বকোষের উদ্দেশ্যে, ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারে বাংলাদেশ প্রাচীন পূর্ব ভারত, সুবাহ বাংলা, শাহী বাংলা, মুগল সুবাহ বাংলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, বেঙ্গল প্রদেশ, পূর্ব বাংলা, পূর্ব পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[৪][৮]
এই বিশ্বকোষের প্রধান সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।[৯] বাংলাদেশ ও বিদেশের ১৪৫০ জন লেখকের লেখা বাংলাপিডিয়ায় স্থান পেয়েছে।[৪][৫] এই বিশ্বকোষের ছয়টি সম্পাদকীয় বিভাগে মোট ৫,৭০০ ভুক্তি রয়েছে।[৩] প্রতি বিভাগ একজন সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।[৪][৫][৮] বাংলাদেশ সরকার ছাড়াও ইউনেস্কো, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত মালিকানার সংগঠন এই বিশ্বকোষ নির্মাণে অর্থ সাহায্য করে থাকেন।[৫][৭] এই প্রকল্পের জন্য আট লক্ষ বাংলাদেশী টাকা ধার্য্য করা হলেও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি এই প্রকল্পে আট কোটি বাংলাদেশী টাকা ব্যয় করে।[৫][১০]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং আদিবাসী জনগণ বিষয়ক নিবন্ধগুলি সম্বন্ধে বিতর্ক থাকলেও বাংলা ও ইংরেজি ভাষার এই বিশ্বকোষ প্রকাশের পরে জনপ্রিয়তা লাভ করে।[৪]
বাংলা ভাষার বিশ্বকোষের ইতিহাস
[সম্পাদনা]বাংলায় বিশ্বকোষ রচনার পথিকৃৎ উইলিয়াম কেরির পুত্র ফেলিক্স কেরি (১৭৮৬-১৮২২)। তিনি এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকার পঞ্চম সংস্করণ অনুসরণ করে কাজ শুরু করেছিলেন। এই দুর্গম পথে আরও কাজ করেছেন মহারাজা কালিকৃষ্ণ দেব (সদবিদ্যাবলি), কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি (বিদ্যাকল্পদ্রুম), রাজকৃষ্ণ রায় ও শরৎচন্দ্র দেব (ভারতকোষ) এবং রঙ্গলাল মুখোপাধ্যায়, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ও নগেন্দ্রনাথ বসু (বিশ্বকোষ)। শেষেরটি সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ। এর ২২ খণ্ডের কাজ শেষ করতে ২২ বছর লেগেছিল। পরবর্তীকালে প্রকাশিত শিক্ষাকোষ-এর জন্য অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণ ৩৮ বছর ধরে তথ্য-উপাত্ত-রসদ সংগ্রহ করেছিলেন। ভারত বিভাগের পর ১৯৫৯ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রকাশ করে পাঁচ খণ্ডের ভারতকোষ। এসব প্রাথমিক প্রচেষ্টার অধিকাংশ অসম্পূর্ণতা দূর করে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি পাঠকের হাতে পৌঁছে দিয়েছিল বাংলাপিডিয়া।[১১]
বিতর্ক
[সম্পাদনা]বাংলাপিডিয়া প্রকাশের আগেই এটি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে, যখন বাংলাদেশের একটি প্রধান সংবাদ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইনকিলাব গ্রুপ ধর্ম ও সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ নিয়ে লেখা কয়েকটি নিবন্ধের খসড়া সংগ্রহ করে।[৭] এছাড়াও, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের তথ্য উপেক্ষা করা হয়েছে—এ ধরনের অভিযোগও উঠেছে।[৭] অনলাইন সংবাদ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম'র এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, বাংলাপিডিয়া বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট এবং তথ্যগতভাবে ভুল উপস্থাপন করেছে।[১২] ঐ বিশ্বকোষে আদিবাসীদের বর্ণনায় মারমা ও রাখাইনদের জন্য মগ, ত্রিপুরাদের জন্য ‘টিপরা’ এবং মুরংদের জন্য ম্রো—এ ধরনের অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি, এই জনগোষ্ঠীগুলিকে বোঝাতে উপজাতি শব্দটিও ব্যবহার করা হয়েছে, যার আক্ষরিক অর্থ “উপজাতি” হলেও এর প্রয়োগে তুচ্ছতা প্রকাশ পায়।[১৩] আদিবাসী নেতৃবৃন্দ—যাদের মধ্যে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি-এর সদস্য এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা রূপায়ন দেওয়ান, এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি-এর সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং—এই গবেষণার পর্যবেক্ষণকে সমর্থন করেছেন।[১৩] প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ইসলাম এই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় সংস্করণে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।[১৩]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Bangla Academy: The Hub of the Development of Bengali Language and Literature"। এসিসিইউ/ইউনেস্কো। ইউনেস্কোর এশিয়া প্যাসিফিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ৭ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ ইকবাল, ইফতেখার (১৬ নভেম্বর ২০০৬)। "The case for Bangladesh Studies" [বাংলাদেশ স্টাডিজের মামলা] (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০০৬।
- 1 2 প্রতিনিধি সংবাদদাতা (২ জানুয়ারি ২০০৪)। "Banglapedia on CD-Rom to hit market by February" [ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজারে সিডি-রোমে বাংলাপিডিয়া হিট] (ইংরেজি ভাষায়)। নিউ এজ। ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০০৭।
{{সংবাদ উদ্ধৃতি}}:|archive-date=/|archive-url=টাইমস্ট্যাম্প মেলেনি; 7 ফেব্রুয়ারি 2005 প্রস্তাবিত (সাহায্য);|লেখক=প্যারামিটারে সাধারণ নাম রয়েছে (সাহায্য) - 1 2 3 4 5 আক্কাস, আবু জার এম (২৩ মে ২০০৪)। "Banglapedia edition every 2 years" [বাংলাপিডিয়া সংস্করণ প্রতি ২ বছর] (ইংরেজি ভাষায়)। The Weekly Holiday। ১৩ ডিসেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০০৭।
- 1 2 3 4 5 UNB (২৪ মার্চ ২০০৩)। "Compilation of Banglapedia completed"। General news। Sustainable Development Networking Programme (SDNP)। ৩ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০০৮।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "প্রধান পাতা"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন ৯৮৪৩২০৫৯০১। ওসিএলসি 883871743। ওএল 30677644M।
- 1 2 3 4 Zaman, Mustafa; Ahsan, Shamim (২ সেপ্টেম্বর ২০০৩)। "The Banglapedia and its Making"। Star Magazine। দ্য ডেইলি স্টার। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৫।
- 1 2 Islam, Sirajul (জানুয়ারি ২০০৩)। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh। Dhaka, Bangladesh: Asiatic Society of Bangladesh। আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৩২-০৫৭৬-৬।
- ↑ Khan, Mubin S (১ জানুয়ারি ২০০৬)। "Professor Sirajul Islam: Making history"। New Age New Year Special 2006। The New Age। ১১ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০০৭।
- ↑ "Banglapedia"। Bangladesh। Asia Pacific Cultural Centre for UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০০৭।
- ↑ "স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম গৌরবসৌধ"। ২৭ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Respect the languages and cultures of ethnic minorities" (Editorial)। The New Age। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ১৫ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৭।
- 1 2 3 "Wrong info on ethnic groups in Banglapedia"। The New Age। BDNews24। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ১৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০০৭।
