বিষয়বস্তুতে চলুন

মির্জা আব্দুল জলিল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডক্টর
মির্জা আব্দুল জলিল
প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান
কাজের মেয়াদ
২০০৯ – ২০১৪
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান
কাজের মেয়াদ
১৯৯৬ – ২০০১
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯ মার্চ ১৯৩৭
পাবনা
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সম্পর্কমনজুর কাদের (ভাগনে)
মির্জা আব্দুল হালিম (ভাই)
মির্জা আব্দুল আউয়াল (ভাই)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ড. মির্জা আব্দুল জলিল (জন্মঃ ১৯ মার্চ ১৯৩৭) বাংলাদেশের পাবনা জেলার রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব যিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।[][]

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

মির্জা আব্দুল জলিল ১৯ মার্চ ১৯৩৭ সালে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার জয়নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে পশুচিকিৎসা ও পশুপালন বিষয়ে বিএসসি এবং ১৯৬৪ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৩-১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে পশুপুষ্টির ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[]

পারিবারিক জীবন

[সম্পাদনা]

মির্জা আব্দুল জলিলের ভাই মির্জা আব্দুল হালিম দ্বিতীয় জাতীয় সংসদের পাবনা-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তার আরেক ভাই মির্জা আব্দুল আউয়াল পূর্ব পাকিস্তানের ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের নির্বাচিত এমএলএ ও দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন পাবনা-৮ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর, রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য মনজুর কাদের তার ভাগনে।[][]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

ড. মির্জা আব্দুল জলিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি। তিনি ১৯৬৭ সালে পশুসম্পদ অধিদফতরে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক পশুসম্পদ অধিদফতরে পরিচালক, বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য, অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি অবসরে যান।[]

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়ে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। তবে নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী একেএম সেলিম রেজা হাবিবের কাছে নির্বাচনে পরাজিত হন।[] ২০০৬ সালের ২২ ডিসেম্বর, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিবাদের অংশ হিসাবে ঢাকা জুড়ে আওয়ামী লীগের ২০০ জন কর্মীর একটি মিছিলে তিনি নেতৃত্ব দেন। প্রতিবাদের সময় মিরপুরের কাছে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয় এবং পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর আব্দুল জলিলকে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় আটক করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

আব্দুল জলিল বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-২ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান, তবে এ কে খন্দকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

আব্দুল জলিল আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়ে তিনি পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন।[] জানুয়ারী ২০১১ সালে, তিনি বলেন যে সরকার বেসরকারীকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলিকে বাঁচানোর পরিকল্পনা করেছে। ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রাইভেটাইজেশন কমিশনকে বিনিয়োগ বোর্ডের সাথে একীভূত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে পাবনা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।[]

অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ তাকে ২০২১ সালের একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বেড়া, পাবনা, প্রতিনিধি (৭ জানুয়ারি ২০১৯)। "ভাগ্যের শিকা এবারও ছিড়ল না বেড়াবাসীর"দৈনিক প্রথম আলো। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  2. পাবনা, এ বি এম ফজলুর রহমান (৫ নভেম্বর ২০০১)। "পাবনা-২ আসনে নৌকা চান মির্জা জলিল"এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  3. পাবনার খবর (২২ ডিসেম্বর ২০১৯)। "চতুর্থ বারের মতো আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হলেন মির্জা জলিল"পাবনা সমাচার। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  4. "পাবনা-২ আসনে নৌকা চান মির্জা জলিল"এনটিভি। ৫ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০২৩