বিষয়বস্তুতে চলুন

পঞ্চগড় জেলা

স্থানাঙ্ক: ২৬°১৫′ উত্তর ৮৮°৩০′ পূর্ব / ২৬.২৫০° উত্তর ৮৮.৫০০° পূর্ব / 26.250; 88.500
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(পঞ্চগড় জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পুনর্নির্দেশিত)
পঞ্চগড়
জেলা
উপরে-বাম থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: মির্জাপুর শাহী মসজিদ, পথরাজ নদী, বোদেশ্বরী মন্দির, দেবীগঞ্জ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু, ভিতরগড়ের ধ্বংসাবশেষ
বাংলাদেশে পঞ্চগড় জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে পঞ্চগড় জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৬°১৫′ উত্তর ৮৮°৩০′ পূর্ব / ২৬.২৫০° উত্তর ৮৮.৫০০° পূর্ব / 26.250; 88.500 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
সরকার
 • জেলা প্রশাসকমোঃ সাবেত আলী
আয়তন
 • মোট১,৪০৪.৬২ বর্গকিমি (৫৪২.৩৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০২২)[]
 • মোট১১,৭৯,৮৪৩ (গনশুমারী−২,০২২)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৭৩.৬৬%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৫০০০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৭৭
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

পঞ্চগড় জেলা: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা। এই জেলা থেকেই বহুল আলোচিত হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া দেখতে পাওয়া যায়।

অবস্থান ও আয়তন

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় জেলার আয়তন প্রায় ১,৪০৪.৬২ বর্গ কি.মি. বা ৫৪২.৩৩ বর্গমাইল।[] বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের স্থানাঙ্ক প্রায় ২৬°১৫′ উত্তর ৮৮°৩০′ পূর্ব / ২৬.২৫° উত্তর ৮৮.৫০° পূর্ব / 26.25; 88.50। পঞ্চগড় জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে দিনাজপুর জেলাঠাকুরগাঁও জেলা, পূর্বে নীলফামারী জেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ[] ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের জন্য স্যার সিরিল রেডক্লিফের নির্ধারিত সীমানা অনুযায়ী পঞ্চগড় জেলার তিনদিকে প্রায় ১৮০ মাইল বা ২৮৮ কি.মি. জুড়ে ভারতের সীমান্ত অবস্থিত।[]

ভূমির বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় জেলার মাটি বালুকাময়, জলাভূমি এবং পুরাতন হিমালয় বেসিনের মাটির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। সমুদ্রতল থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট (৪৬ মিটার)।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

নামকরণ

[সম্পাদনা]

কেউ কেউ মনে করে থাকেন যে, প্রাচীনকালে পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের অর্ন্তগত ‘পঞ্চনগরী’ নামে একটি অঞ্চল ছিল। কালক্রমে পঞ্চনগরী ‘পঞ্চগড়’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। ‘পঞ্চ’ (পাঁচ) গড়ের সমাহার ‘পঞ্চগড়’ নামটির অপভ্রংশ ‘পঞ্চগড়’ দীর্ঘকাল এই জনপদে প্রচলিত ছিল। কিন্তু এই অঞ্চলের নাম যে পঞ্চগড়-ই ছিল সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া যায় না। পঞ্চগৌড়ের একটি অংশ হিসেবে প্রাকৃত ভাষার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পঞ্চগড়ের নামকরণের সম্ভাবনা থেকে যায়। অর্থাৎ পঞ্চগৌড় > পঞ্চগোড় > পঞ্চগড়। অবশ্য আরেকটি বহুল প্রচলিত ধারণা মতে, এই অঞ্চলের পাঁচটি গড়ের সুস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই "পঞ্চগড়" নামটির উৎপত্তি।[] গড়গুলো হলো:

  1. ভিতরগড়
  2. মিরগড়
  3. রাজনগড়
  4. হোসেনগড়
  5. দেবনগড়

আবার কিছুটা ভিন্ন মতে ‘পঞ্চ’ শব্দের অর্থ 'পাঁচ', আর ‘গড়’ শব্দের অর্থ 'বন বা জঙ্গল'। ভারত বিভাগের আগে এই অঞ্চল জঙ্গলাকীর্ণ থাকায়, তা থেকেও এলাকার নাম হতে পারে 'পঞ্চগড়'। যদিও বর্তমানে জনবসতি গড়ে ওঠায় বনভূমি প্রায় নেই বললেই চলে।।

প্রাগৈতিহাসিক থেকে মধ্যযুগ

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় একটি প্রাচীন জনপদ। প্রাচীন ও মধ্য যুগে এই ভূখন্ডের পাশেই ছিল মগধ, মিথিলা, গৌড়, নেপাল, ভুটান, সিকিম ও আসাম রাজ্যের সীমান্ত। আধুনিককালের মত অতীত কালেও জনপদটি ছিল সীমান্ত অঞ্চল। এই ভূখন্ডটি পর্যায়ক্রমে শাসিত হয়েছে প্রাগজ্যোতিষপুর, কামরূপ, কামতা, কুচবিহার ও গৌর রাজ্যের রাজা, বাদশা, সুবাদার এবং বৈকুন্ঠপুর অঙ্গ রাজ্যের দেশীয় রাজা ও ভূ-স্বামীদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে। খ্রিস্টীয় ২য়, ৩য় শতকের মধ্যে রাজা ‘শালিবাহন’, রাজা ‘পৃথু’ এবং রাজা ‘জল্লেশ’ পঞ্চগড়ের শালবাহান ও ভিতরগড় এলাকায় নগর ও সমৃদ্ধ জনপদ গড়ে তুলেছিলেন। মৌর্য, গুপ্তপাল রাজারাও এই অঞ্চল শাসন করেছিলেন।

মধ্যযুগের শুরুতেই প্রথম মুসলিম বঙ্গবিজয়ী সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজী তার বহু বিতর্কিত তিব্বত অভিযানের এক পর্যায়ে পঞ্চগড় জনপদের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হয়েছিলেন বলে জানা যায়। সুলতান হোসেন শাহ এবং কামতার রাজা নীলধ্বজ তেঁতুলিয়া থানার দেবনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে কোন কোন ঐতিহাসিক মত প্রকাশ করেন। সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহ, সুলতান বারবক শাহ, শেরশাহ, খুররম খাঁ (শাহজাহান), মীরজুমলা, সুবাদার ইব্রাহীম খাঁ ফতে জঙ্গ এবং অন্ত মধ্যযুগে দেবী চৌধুরাণী, ভবানী পাঠক, ফকির মজনুশাহ প্রভৃতি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পঞ্চগড় জনপদের নাম ও স্মৃতি নিবিড়ভাবে জড়িত। ষোড়শ শতকে কুচবিহার রাজ্য গঠিত হওয়ার পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত পঞ্চগড় অঞ্চল মূলত কোচ রাজন্যবর্গের দ্বারাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শাসিত হয়েছে।

ভারত বিভাগ ও আধুনিক যুগ

[সম্পাদনা]

১৯১১ সালে পঞ্চগড় জেলা একটি পূনার্ঙ্গরুপে থানা হিসাবে আত্নপ্রকাশ করে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পঞ্চগড় থানাটি দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমার অর্ন্তভূক্ত হয়। ১৯৪৭ সালে ঠাকুরগাও মহকুমার ৬ টি থানা এবং ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ৩টি থানা ও কোচবিহার জেলার ১টি থানা (পঞ্চগড়, বোদা, তেতুলিয়া ও দেবীগঞ্জ) নিয়ে ১০টি থানার মহকুমা হিসেবে ঠাকুরগাঁও নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে। ১৯৮০ সালে ১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও মহকুমার ৫টি থানা তেতুলিয়া, পঞ্চগড় সদর, আটোয়ারী, বোদাদেবীগঞ্জ নিয়ে পঞ্চগড় মহকুমা সৃষ্টি হয়। মহকুমার সদর দপ্তর পঞ্চগড় থানায় স্থাপিত হয়। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন সৈয়দ আব্দুর রশিদ (১৯৮০-১৯৮২)। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। পঞ্চগড় জেলার প্রথম জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আ.স.ম. আব্দুল হালিম (১৯৮৪-১৯৮৫)।[]

মুক্তিযুদ্ধে অবদান

[সম্পাদনা]

দেশের মোট ৪টি মুক্তাঞ্চলের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা ছিল একটি। সীমান্ত পরিবেষ্টিত হওয়ায় ও ভৌগোলিক কারণে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় এ মুক্তাঞ্চলটি যুদ্ধের গতি প্রকৃতি নির্ণয়ে ও পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঠাকুরগাঁও মহকুমার অন্তর্গত পঞ্চগড় জেলা ৬নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সেক্টরটির বেসামরিক উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম। অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম, অ্যাড. কমরউদ্দিন আহমেদ (এমএলএ), অ্যাড. মোশারফ হোসেন চৌধুরী (এমএলএ), কাজী হাবিবর রহমান, আব্দুল জববার প্রমুখের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। সেসময় এই এলাকায় ৭টি কোম্পানির অধীনে ৪০টি মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মাহবুব আলম, মো. মতিয়ার রহমান, মো. তরিকুল ইসলাম, মো. মোকলেছার রহমান, মো. দুলাল হোসেন, আব্দুর রহমান এবং আব্দুল গণি। এ ছাড়া বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) এর আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলেন ছাত্র নেতা নাজিম উদ্দীন আহমেদ।

১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল পাকবাহিনী পঞ্চগড় দখল করে নেয় এবং পঞ্চগড় শহরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় ও নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ২৮ নভেম্বর মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের উপর বেশ জোরালোভাবে আক্রমণ করে। আক্রমণের পর ২৯ নভেম্বর হানাদার মুক্ত হয় পঞ্চগড় সদর উপজেলায়, ১ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় বোদা উপজেলায়, ২ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় আটোয়ারী উপজেলায়, ৯ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় দেবীগঞ্জ উপজেলায় এবং তেঁতুলিয়া উপজেলা সম্পূর্ণ মুক্তাঞ্চল ছিলো।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় জেলার শিক্ষার হার ৬৩.৬৬%। পঞ্চগড় জেলায় মোট ২২টি কলেজ ও প্রায় ১৮৬৫টি বিদ্যালয় রয়েছে।

উল্লেখ যোর্গ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-

ক্রীড়া

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় জেলায় ক্রিকেট খেলা ও ফুটবল বেশি জনপ্রিয়। বিভিন্ন খেলার আয়োজনের জন্য পঞ্চগড় শহরে একটি স্টেডিয়াম আছে যা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম নামে পরিচিত। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এর খেলোয়াড় শরিফুল ইসলাম পঞ্চগড় জেলাদেবীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশ প্রমিলা ক্রিকেট দলের খেলয়ার ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা পঞ্চগড় সদর উপজেলার মিরগড় গ্রামে জন্মগ্রহন করেছেন। এ ছাড়াও আঞ্চলিকভাবে হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, বউ ছি, লুকোচুরি খেলা হয়।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ

[সম্পাদনা]

পৌরসভা-

[সম্পাদনা]

এই জেলায় মোট ৩ টি পৌরসভা রয়েছে। যথা:

উপজেলা/থানা-

[সম্পাদনা]

এই জেলায় মোট ৫ উপজেলা রয়েছে। যথা:

ইউনিয়ন পরিষদ-

[সম্পাদনা]

এই জেলায় মোট ৪৩ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। যথা:

ক্রমিক নং ইউনিয়নের নাম
বাংলাবান্ধা
তিরনইহাট
তেঁতুলিয়া
শালবাহান
ভজনপুর
বুড়াবুড়ি
দেবনগর
চাকলাহাট
সাতমেড়া
১০ অমরখানা
১১ হাড়িভাষা
১২ কামাত কাজলদিঘী
১৩ ধাক্কামারা
১৪ গড়িনাবাড়ী
১৫ মাগুড়া
১৬ পঞ্চগড় সদর
১৭ হাফিজাবাদ
১৮ তোড়িয়া
১৯ আলোয়াখোওয়া
২০ রাধানগর
২১ ধামোর
২২ মির্জাপুর
২৩ বলরামপুর
২৪ বেংহারি
২৫ ময়দানদিঘি
২৬ ঝলইশালশিরি
২৭ সাকোয়া
২৮ পাঁচপীর
২৯ বোদা
৩০ কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ
৩১ মাড়েয়া
৩২ বড়শশী
৩৩ চন্দনবাড়ী
৩৪ দেবীগঞ্জ
৩৫ সোনাহার
৩৬ দন্ডপাল
৩৭ শালডাংগা
৩৮ টেপ্রীগঞ্জ
৩৯ চিলাহাটি
৪০ সুন্দরদিঘী
৪১ পামুলী
৪২ দেবীডুবা
৪৩ চেংঠি হাজরাডাঙ্গা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি

[সম্পাদনা]
পঞ্চগড়-১ পঞ্চগড়-২
শূণ্য শূণ্য

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]

পঞ্চগড় জেলা বাংলাদেশের সর্বউত্তর প্রান্তের জেলা হলেও এ জেলায় প্রথম বৃহৎ শিল্পের প্রসার ঘটে ১৯৬৯ সালে পঞ্চগড় সুগার মিলস লি: প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরবর্তীতে এ জেলায় কৃষি ভিত্তিক অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো হল:

  • পঞ্চগড় সুগার মিলস লিঃ (১৯৬৯)
  • জেমকন লিমিটেড (১৯৯৩)
  • জেমজুট লিমিটেড (২০০৩) (২১শে জানুয়ারি, ২০০৬ সালে কোম্পানিটি আইএসও ৯০০১:২০০০ সনদ লাভ করে)
  • মার্শাল ডিস্টিলারী (১৯৯৬)
  • ইন্ডিগো ব্রোকার্স লিমিটেড

বিগত ১০ বছরে পঞ্চগড় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জন করেছে যা সেই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক ও জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সাধনে ভূয়সী ভূমিকা পালন করছে। উন্নয়ন গুলো হলো-

১) বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর চালু (একমাত্র রপ্তানিমুখী স্থলবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত)

২) রাজধানী ঢাকার সাথে ৩টি আন্ত:নগর ট্রেন চালু । দ্রুতযান এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসএকতা এক্সপ্রেস । এবং রাজশাহী নগরীর সাথে ১টি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস

৩) পঞ্চগড় অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে (দেবীগঞ্জে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা হলে হাজার হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে, দূর হবে বেকারত্ব। ইতোমধ্যে দেবীগঞ্জে জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে)

পঞ্চগড়ের একটি চা বাগান

ইদানিংকালে পঞ্চগড় জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুনভাবে যোগ হয়েছে চা চাষ। বাংলাদেশে সমতলভূমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেবল মাত্র এই জেলাতেই চা চাষ হচ্ছে। ইতিমধ্যে চা চাষ জেলার কৃষিতে একটি বড় যায়গা করে নিয়েছে। যার ফল অনুযায়ী জেলার প্রায় আনাচে কানাচেই চোখে পরে বিস্তৃর্ণ সবুজে ঘেরা অসংখ্য সব চা বাগান।সমতল ভূমিতে চা চাষের এই ব্যবসাটিতে যে প্রতিষ্ঠানগুলো উল্ল্যেখযোগ্য অবদান রাখছে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো নাম নিচে দেয়া হলঃ

  1. আগা টি এস্টেট, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  2. করতোয়া চা বাগান, জগদল সাতমেরা, পঞ্চগড়।
  3. কাজী এন্ড কাজী চা বাগান, প্রযত্নে খালেক কোচ কাউন্টার, পঞ্চগড়।
  4. গ্রীন কেয়ার চা বাগান, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।
  5. ডাহুক চা বাগান, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।
  6. ময়নাগুড়ি চা বাগান, তেঁতুলিয়া রোড, পঞ্চগড়।
  7. পঞ্চগড় চা কোম্পানী, বুড়াবুড়ি, পঞ্চগড়।
  8. কাজী ফার্মস লিঃ বুড়াবুড়ি, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  9. স্যালিলেন টি এস্টেট, প্রযত্নে খালেক কোচ কাউন্টার, পঞ্চগড়।
  10. এম এম টি এস্টেট, হাড়িভাসা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।
  11. আর ডি আর এস চা বাগান, জগদল, পঞ্চগড়।
  12. গ্রীন গোল্ড চা বাগান লিঃ দশমাইল, সাতমেরা, পঞ্চগড়।
  13. হক টি এস্টেট, লোহা কাচি, তেতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  14. নাহিদটি এস্টেট, ভদ্রেশ্বর, ভজনপুর, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  15. আরিব টি এস্টেট, জিয়াবাড়ী, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।
  16. জেসমিন টি এস্টেট, কালান্দিগঞ্জ মাঝি পাড়া, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  17. কুসুম টি এস্টেট, শালবাহান রোড, মাঝিপাড়া, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
  18. জেড এন্ড জেল টি এস্টেট, অমরখানা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।

এ ছাড়াও স্মল হোল্ডিং এবং স্মল গোয়ার্স এর আওতায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে শুরু হয়েছে ব্যাপক চা চাষ।

এছাড়া চায়ের নিলাম পরিচালনা করার জন্য দেশের তৃতীয় নিলামকেন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় ২০২২ সালে। যা পঞ্চগড়ের উৎপাদিত চা বিভিন্ন ব্রোকারদের মাধ্যমে নিলাম করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

[সম্পাদনা]

চিত্তাকর্ষক স্থান

[সম্পাদনা]

এখানকার প্রায় বয়সের মানুষের চিত্তাকর্ষণ ও বিনোদনের জন্য জেলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বেশকিছু স্থান। সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য রয়েছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা শিশু একাডেমি, নজরুল পাঠাগার। বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম সহ জেলায় প্রায় ৯৭ খেলাধুলা উপযোগী মাঠ যেমন রয়েছে তেমনি চিত্তাকর্ষনের জন্য রয়েছে ডি.সি পার্ক, হিমালয় পার্ক, সীমান্ত ক্যান্টিন, ট্র্যাফিক পুলিশ ক্যান্টিন ইত্যাদি। জেলায় বেশ কিছু পিকনিক স্পট। এছাড়া আছে কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান আছে। তন্মাধ্যে মহারাজা পুকুর অন্যতম, তাছাড়াও অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে দেশব্যাপী সুনাম রয়েছে। এসবের পাশাপাশি পঞ্চগড়ে রয়েছে এশিয়ার একমাত্র রকস মিউজিয়াম যা পঞ্চগড় সরকারী মহিলা কলেজে অবস্থিত। উল্লেখ্য যে প্রতি শীতে পর্যটকের ভিড় জমে হিমালয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্যে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায়[] উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে হিমালয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের দূরুত্ব মাএ ৭৫ কি.মি, যার কারণে তেতুঁলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এটি দেখা যায়। পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানার চাওয়াই ব্রিজের পাশে পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল পার্ক নামে একটি পার্ক চালু হয় ২০২৩ খ্রিঃ। এছাড়া বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে প্রতি সোম ও মঙ্গলবার বিকাল-০৪.০৫ মিনিটে ভারতীয় বিএসএফবর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর সৈনিকদের মর্ধ্যে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয় যা অনেক মনমুগ্ধকর।

দর্শনীয় স্থানসমূহ

[সম্পাদনা]
পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা

পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ হলঃ[]

দেবীগঞ্জের কাছে তোলা করতোয়া নদীর দৃশ্য।

জেলায় ছোট-বড় মিলে অনেকগুলো নদী রয়েছে। পঞ্চগড়কে সম্পূর্ণভাবে নদী বেষ্টিত একটি জেলাও বলা যেতে পারে। উল্লেখযোগ্য নদীগুলো হল:

  1. করতোয়া নদী
  2. তালমা নদী
  3. চাওয়াই নদী
  4. পাঙ্গা নদী
  5. কুরুম নদী
  6. পাম নদী
  7. সুই নদী
  8. যমুনা নদী
  1. মরা তিস্তা নদী
  2. আত্রাই নদী
  3. ভুল্লী নদী
  1. ঘোড়ামারা নদী
  2. পাথরাজ নদী
  1. নাগর নদী
  2. সিংগিয়া নদী
  3. বহু নদী
  4. রসেয়া নদী
  5. টাঙ্গন নদী

তেতুলিয়া উপজেলা

[সম্পাদনা]
  1. মহানন্দা নদী
  2. ডাহুক নদী
  3. তীরনই নদী
  4. রনচন্ডি নদী
  5. বেরং নদী
  6. জোড়াপানি নদী
  7. শাঁও নদী
  8. ভেরসা নদী
  9. গোবরা নদী

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে পঞ্চগড়"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৩ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৪ 
  2. "এক নজরে জেলা"। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন। ২০১০-০৯-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-২৭ 
  3. "ভৌগোলিক প্রোফাইল"। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন। ২০১০-০৯-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-২৭ 
  4. "জেলার পটভূমি"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  5. "জেলার পটভূমি"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  6. "কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, পঞ্চগড় থেকে দেখুন সিনিওলচু!"প্রিয়.কম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৯-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১০ 
  7. "দর্শনীয় স্থানসমূহ"। ২০১৩-০৪-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-২৪