কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা
কুড়িগ্রাম সদর | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°৪৮′৫৮″ উত্তর ৮৯°৩৯′১০″ পূর্ব / ২৫.৮১৬১১° উত্তর ৮৯.৬৫২৭৮° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | কুড়িগ্রাম জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৭৬.৪৫ বর্গকিমি (১০৬.৭৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ২,৫৯,১৫৭ [১] |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৮% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৪৯ ৫২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
অবস্থান ও আয়তন
[সম্পাদনা]আয়তন: ২৭৬.৪৫ বর্গ কি. মি। এই উপজেলাটি বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্জলে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা ও নাগেশ্বরী উপজেলা, দক্ষিণে উলিপুর উপজেলা, পূর্বে ভারতের আসাম, পশ্চিমে রাজারহাট উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
[সম্পাদনা]- সংসদীয় এলাকার সংখ্যা: ১টি। নাম ও এলাকা: (২৬) কুড়িগ্রাম-২ (রাজারহাট(আংশিক), কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী)
- পৌরসভার সংখ্যা: ১টি
- ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা: ৮টি-
- নং ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন
- নং ঘোগাদহ ইউনিয়ন
- নং পাঁচগাছি ইউনিয়ন
- নং যাত্রাপুর ইউনিয়ন
- নং কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন
- নং বেলগাছা ইউনিয়ন
- নং মোগলবাসা ইউনিয়ন
- নং হলোখানা ইউনিয়ন[২]
- গ্রামের সংখ্যা: ২৬৪টি
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কুড়িগ্রাম নামকরণের ইতিহাস নিয়ে অনেক কিংবদন্তি রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নাতীত বা সন্দেহমুক্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সবই কিংবদন্তি ও প্রচলিত লোকশ্রুতি। তার কিছু কিছু বিষয় সমর্থনযোগ্য মনে হতে পারে। জানা যায়, কোন এক সময় মহারাজা বিশ্ব সিংহ কুড়িটি জেলে পরিবারকে উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুরূপে স্বীকৃতি দিয়ে এ অঞ্চলে প্রেরণ করেন। এ কুড়িটি পরিবারের আগমনের কাহিনী থেকে কুড়িগ্রাম নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিলু কবীরের লেখা 'বাংলাদেশের জেলা নামকরণের ইতিহাস' বই থেকে জানা যায়, এখানে কুড়িটি মেচ্ তৈলজীবী পরিবারের বসতি ছিল বলে এ রকম নামকরণ হয়েছে। অন্য আরেকটি লোকশ্রুতি হলো- রঙ্গপুর অর্থাৎ এই অঞ্চল একদা ছিল কুচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত। কুচবিহারের বাসিন্দাদের বলা হয় কোচ। এরা তিওড় গোষ্ঠীবিশেষও। মাছ ধরে বিক্রি করা তাদের পেশা। সুবিধাবঞ্চিত নিচু শ্রেণীর এই হিন্দু কোচদের কুড়িটি পরিবারকে সেখান থেকে এখানে প্রেরণ করা হয়েছিল বা আনয়ন করা হয়েছিল বসতি স্থাপনে জন্য। ওই কুড়িটি কোচ পরিবারের কারণে 'কুড়িগ্রাম' নামকরণ হয়েছে। আবার এমনও জানা যায়, এই গ্রামে কুরি বা কুরী নামক একটি হিন্দু আদিবাসী বা নৃগোষ্ঠী বসবাস করত বলেই অঞ্চলটির নাম হয় 'কুড়িগ্রাম'। অদ্যাবধি এখানে 'কুরি' নামক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস লক্ষ্য করা যায়। এখনও এ অঞ্চলে কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে। বিশিষ্ট পণ্ডিত জা পলিলুস্কি প্রমাণ করেছেন, গণনার এ পদ্ধতি বাংলায় এসেছে কোল ভাষা থেকে। কোল অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। আরব অস্ট্রিক ভাষায় কুর বা কোর ধাতুর অর্থ হলো মানুষ। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতিটিও এসেছে মানুষ থেকেই। এ অস্ট্রিক কারা? পন্ডিতদের মতে, প্রত্নপ্রস্তর যুগে এ অঞ্চলে বাস করত নিগ্রো জাতি। এরপর আসে নব্যপ্রস্তর যুগ । আসামের উপত্যকা অতিক্রম করে আসে অস্ট্রিক জাতীয় জনগোষ্ঠী। তারপরে আসে দ্রাবিড় ও মঙ্গোলীয়রা। এদের মিলিত স্রোতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় মানবসভ্যতার সূচনা হয়। এরাই লাঙ্গল দিয়ে চাষের প্রবর্তন করেছে। কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি করেছে চালু। নদনদীতে ডিঙি বেয়েছে, খেয়েছে শুঁটকি, খেয়েছে বাইগন বা বেগুন, লাউ বা কদু, কদলী বা কলা, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা। করেছে পশু পালন। এঁকেছে কপালে সিঁন্দুর। করেছে রেশম চাষ। করেছে তামা, ব্রোঞ্জ ও সোনার ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করত 'ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি'। ১৮৫৮ সালের পর শাসনকার্যের ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে। এই ব্রিটিশ সরকারের আমলে কুরিগঞ্জ চারটি থানায় বিভক্ত ছিল। পরে ১৮৭৫ সালে ২২ এপ্রিল তারিখে একটি নতুন মহকুমার গোড়াপত্তন হয়। এ মহকুমার নাম 'কুড়িগ্রাম'। কুড়িগ্রামঘেষা ব্রহ্মপুত্রের কারণে এখানে আসে বিভিন্ন আদিম জনগোষ্ঠী। এসব কারণে এখানে গড়ে উঠেছিল একটি সভ্যতাও। বিজিত আর্যদের কোন স্মৃতি এখানে নেই। তবে অন্যদের কিছু কিছু ক্ষীয়মাণ রাজচিহ্ন রয়েছে। বারো বা দ্বাদশ শতকের প্রথমপর্বে এ অঞ্চলে সেন রাজবংশের শাসনকাল আরম্ভ হয়। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চত্রা নামক গ্রামে এদের রাজধানী ছিল। এ বংশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাজার নাম নীলধ্বজ সেন, চক্রধ্বজ সেন, নীলাম্বর সেন। সেনবংশের পতনের পর শুরু হয় মুঘল যুগ।
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]- জনসংখ্যা: মোট: ২৫৮৪৪০ জন, পুরুষ- ১৩২৪৪০ জন, মহিলা- ১২৬০০০ জন
- ভোটার সংখ্যা: মোট -১৮০৯৭৯ জন, পুরুষ- ৮৭৯৮৮ জন, মহিলা- ৯২৯৯১ জন
শিক্ষা
[সম্পাদনা]স্কুল এন্ড কলজে
- কুড়িগ্রাম সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ
- খলিলগজ্ঞ স্কুল এন্ড কলেজ
- কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ
- মধ্যকুমরপুর গালর্স স্কুল এন্ড কলেজ
- নীলারাম স্কুল এন্ড কলেজ
কলেজ
- কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ
- কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ মহাবিদ্যালয়
- কুড়িগ্রাম সিটি কলেজ
- কুড়িগ্রাম বি এম কলেজ
- খলিলগজ্ঞ কারিগরি মহাবিদ্যালয়
- পাঁচগাছী কলেজ
- যাত্রাপুর আদর্শ কলেজ
- কাঁঠালবাড়ী ডিগ্রী কলেজ
- ভোগডাঙ্গা মডেল কলেজ
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]- মোট আবাদী জমির পরিমাণ: ৪৫০৫০ একর
- অর্থকরী ফসল: ধান, গম, আলু, পাট, তামাক, সরিষা, সুপারী, বাঁশ, আখ, ভুট্টা প্রভৃতি।
- শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: মোট-১৫৬টি, ৪টি বড়, ২৭টি মধ্যম এবং ১২৫টি কুটির শিল্প
- পাকা রাস্তা: ১০৩ কি. মি.
- কাঁচা রাস্তা: ৭৩০ কি. মি.
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
[সম্পাদনা]- সৈয়দ শামসুল হক
- কছিম উদ্দিন
- ভাওয়াইয়া শিল্পীকাজী ঈমদাদুল হক
- আহমেদ বকসী
- প্রাণ বল্লভ করনজাই
- শ্রী অতুল চন্দ্র চৌধুরী
- বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জু মন্ডল
- আলহাজ্ব জহুরুল হক
বিবিধ
[সম্পাদনা]- মসজিদের সংখ্যা: ৩৮৬টি
- মন্দিরের সংখ্যা: ২৮টি
- গীর্জার সংখ্যা: ২টি
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- ধরলা ব্রিজ
- ধরলা বাঁধ
- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক
- স্বাধীনতার বিজয স্তম্ভ প্রভৃতি।
- ধরলা ব্রীজ পূর্ব পাড়ের ফজলুল করিম (রহ.) জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসা
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "এক নজরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা"
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |