মগধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৫ম শতাব্দিতে,মগধ রাজ্যের আনুমানিক পরিমাণ
প্রায় ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মগধ রাষ্ট্র, প্রসারিত হবার আগে

মগধ প্রাচীন ভারতে ষোলটি মহাজনপদ বা অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। ষোলটি মহাজনপদের মধ্যে মগধ বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই রাজ্য বর্তমানের বিহারের পাটনা, গয়া আর বাংলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ছিল। রাজগৃহ ছিল মগধের রাজধানী। তারপর পাটলিপুত্র রাজধানী বানিয়ে গিয়েছিলো। রাজা বিম্বসার ছিলেন মগধের প্রথম ঐতিহাসিক রাজা। তিনি অঙ্গ দখল করেন।

রাজা বিম্বসার তার পুত্র অজাতশত্রুর হাতে মারা যান। অজাতশত্রু রাজা হলে কোশলের রাজা প্রসেনজিতের সংগে তার যুদ্ধ বেধে যায়। যুদ্ধে হেরে গিয়ে প্রসেনজিত মৈত্রী চুক্তি করে ও নিজের মেয়ের সঙ্গে অজাতশত্রুর বিয়ে হয়। অজাতশত গঙ্গার ওপারে রাজ্য বিস্তার করার জন্য পাটলিপুত্রে রাজধানী স্থানারিত করেন। পাটালিপুত্রে তার নতুন দুর্গের সাহায্যে সহজেই লিছ্ছবি প্রজাতন্ত্র দখল করে ফেলেন। শোনা যায় অজাতশত্রু তার দু'ধরনের নতুন অস্ত্রের (গুলতি ও আচ্ছাদনযুক্ত রথ) সাহায্যে সহজেই সব যুদ্ধে জিতে যান।

পঞ্চম এবং চতুর্থ খ্রীষ্টাব্দে মগধ শাসন করে নন্দ বংশ। শিশুনাগ বংশের শেষ রাজা মহান্দীনের অবৈধ সন্তান মহাপদ্ম নন্দ নন্দ রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বৌদ্ধ সাম্রাজ্যগড়ে তোলেন। তিনি সমস্ত ক্ষত্রিয় রাজাদের পরাজিত করে বিন্ধ্য পর্বত পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। তাকে ভারতের প্রথম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতাও বলা যায়। সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য তিনি ২,০০,০০০ পদাতিক, ২০,০০০ অশ্বারোহী, ২,০০০ রথ ও ৩,০০০ হস্তীবিশিষ্ট সুবিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। প্লুটার্কের মতে তার বাহিনী আরো বড় ছিল। এই বংশের শেষ রাজা ছিলেন ধননন্দ। তিনিই ছিলেন নন্দ বংশের শেষ রাজা। তার সাম্রাজ্যে কড়া আইন ছিল। তিনি তার সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য সবসময় প্রস্তুত রাখতেন। আলেকজান্ডার যখন ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন তখন মগধের সুবিশাল সেনাবাহিনী দেখে ভীত হয়ে মগধ আক্রমণ এর পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন।চানক্য একদিন মহারাজ ধননন্দের রাজসভায় কুৎসিত পোশাকে উপস্থিত হলে তিনি রাজা ধননন্দের দ্বারা বন্দি হন।চানক্য এতে অপমানিত হন এবং এই অপমানের জন্য নন্দ সাম্রাজ্যের পতন আরম্ভ শুরু হয়। চাঁনক্য প্রতিজ্ঞা করেন এই পুরো ভারতে অন্য একছত্র সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি এক ক্ষত্রিয়কে অর্থশাস্ত্র, যুদ্ধনীতি, রাজনীতির জ্ঞান দেন এবং তাকে মগধ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য গড়ে তোলেন তক্ষশীলা বিদ্যালয়ে। চন্দ্রগুপ্ত সমস্ত জ্ঞান লাভ করে। তিনি তার অপমানের প্রতিশোধের জন্য চন্দ্রগুপ্তকে রাজা করেন। প্রথম রাজ পান তক্ষশীলা পরর্বতী কালে চানক্য পরিকল্পনায় মগধ সেনাকে পরাজিত করে মগধের সম্রাট হয়। চন্দ্রগুপ্তকে মগধ সম্রাট করেন। এবং প্রতিজ্ঞা পূরণ করে। চন্দ্রগুপ্তর সঙ্গে বিবাহ হয় ধনানন্দ এর পুত্রীর। এবং চন্দ্রগুপ্ত তার গুরু চানক্যকে প্রধান উপদেশ কর্তা(মহা মন্ত্রী )পদে রাখেন।।। এর পর মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠা হয়।