পলাশীর যুদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পলাশীর যুদ্ধ
মূল যুদ্ধ: সপ্তবর্ষের যুদ্ধ

পলাশীর যুদ্ধের শেষে মীরজাফর ও লর্ড ক্লাইভের সাক্ষাৎ, ফ্রান্সিস হেম্যান (১৭৬২)
তারিখ২৩ জুন ১৭৫৭
অবস্থান
ফলাফল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিজয়
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক কার্যত বাংলা অধিকৃত হয়
বিবাদমান পক্ষ
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা
ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ
মেজর কিলপ্যাট্রিক
মেজর গ্র্যান্ট
মেজর আইরি কুট
ক্যাপ্টেন গপ
ক্যাপ্টেন রিচার্ড নক্স
সিরাজউদ্দৌলা
মোহন লাল (প্রধান সেনাপতি)
মীর মদন (ভ্যানগার্ড)
মীর জাফর (অশ্বারোহী) (বিশ্বাসঘাতক)
খুদা-ইয়ার লুৎফ খান (বিশ্বাসঘাতক)
রায় দুর্লভ (বিশ্বাসঘাতক)
সিনফ্রে (অস্ত্রাগার)
শক্তি
১,০০০ ইউরোপীয় সৈন্য[১]
২,১০০ ভারতীয় সিপাহি[১]
১০০ বন্দুকবাজ[১]
৯টি কামান (আটটি ৬ পাউন্ডার ও একটি হাওইটজার)
প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ সৈন্য (তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫,০০০ যুদ্ধে অংশ নেয়)
৫৩টি কামান
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
২৭ সৈন্য নিহত (১০ ইউরোপীয় সৈন্য এবং ১৭দেশীয় সৈন্য)
৫৩ সৈন্য আহত (১৩ ইউরোপীয় সৈন্য এবং ৩৬ দেশীয় সৈন্য)
৫০০ সৈন্য নিহত ও আহত
প্রাথমিক ৩৫,০০০ পদাতিক সৈন্য ও ১৫,০০০ অশ্বারোহীর মধ্যে ৪৫,০০০ সৈন্য ছিল মীর জাফরের অধীনস্থ; অবশিষ্ট ৫,০০০ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল[১]
পলাশীর যুদ্ধের মানচিত্র

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলারফরাসি[২] মিত্রদের সাথে ব্রিটিশ ইস্ট কোম্পানির পলাশী নামক স্থানে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাই পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৭৫৭ সালের জুন ২৩ তারিখে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন এবং ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়। এই যুদ্ধ ভারতে ইংরেজ শক্তির ক্ষমতা প্রদর্শন ও প্রবেশ কে সূচিত করেছিল।

যুদ্ধটি কলকাতা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) উত্তরে এবং মুর্শিদাবাদের দক্ষিণে, তৎকালীন বাংলার রাজধানী (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায়) হুগলী নদীর তীরে পলাশিতে (আংলিসিসড সংস্করণ: প্লাসি) সংঘটিত হয়েছিল। যুদ্ধকারীরা ছিল নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাহ, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তিনি আলীবর্দি খানের (তার মাতামহ) স্থলাভিষিক্ত হন। সিরাজ-উদ-দৌলা হ'ল আগের বছর বাংলার নবাব হয়েছিলেন, এবং তিনি ইংরেজদের তাদের দুর্গের সম্প্রসারণ বন্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন। রবার্ট ক্লাইভ নবাবের সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি মীর জাফরকে ঘুষ দেন ও তাকে পরবর্তী নবাব করার প্রতিশ্রুতি দেন । ক্লাইভ ১৭৫৭ সালে প্লাসিতে সিরাজ-উদ-দৌলাহকে পরাজিত করেন এবং কলকাতা দখল করেন।[৩]

পলাশী মনুমেন্ট

পলাশি যুদ্ধের কারণ[সম্পাদনা]

  • সিরাজুদ্দৌলা বাংলার সিংহাসনে বসার পর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ইংরেজরা নতুন নবাবকে কোনো উপটৌকন পাঠায়নি এবং তাঁর সঙ্গে কোনো সৌজন্যেমুলক সাক্ষ্যৎও করেনি। ইংরেজদের এই অসৌজন্যমূলক আচরণে নবাব ক্ষুব্ধ হন
  • নবাবের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইংরেজদের কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ।
  • নবাব দস্তকের অপব্যবহার নিষেধ করার সত্ত্বেও কোম্পানি নবাবের আদেশ অগ্রাহ্য করা।
  • কৃষ্ণদাস কে কাশিমবাজার কুঠিতে আশ্রয় দান
  • ইংরেজদের একের পর এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও অবাধ্যতা।

বিবরণ[সম্পাদনা]

১৭৫৭ সালের ১২ জুন কলকাতার ইংরেজ সৈন্যরা চন্দননগরের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়। সেখানে দুর্গ রক্ষার জন্য অল্প কিছু সৈন্য রেখে তারা ১৩ জন অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে যুদ্ধযাত্রা শুরু করে। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের পথে হুগলী, কাটোয়ার দুর্গ, অগ্রদ্বীপ ও পলাশীতে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ রোধ করে নি। ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বুঝতে পারেন, তার সেনাপতিরাও এই ষড়যন্ত্রে শামিল।

বিদ্রোহের আভাস পেয়ে সিরাজ মীর জাফরকে বন্দি করার চিন্তা পরিত্যাগ করেন। তিনি মীর জাফরকে ক্ষমা করে তাকে শপথ নিতে বলেন। মীর জাফর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে অঙ্গীকার করেন যে, তিনি শরীরের একবিন্দু রক্ত থাকতেও বাংলার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন হতে দেবেন না। গৃহবিবাদের মীমাংসা করে নবাব রায় দুর্লভ, ইয়ার লতিফ, মীর জাফর, মীর মদন, মোহন লাল ও ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রেঁকে সৈন্য চালানোর দায়িত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা করেন।

২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর আমবাগানে ব্রিটিশ সৈন্য, নিচে বাঙালি সৈন্যদের গুলি করছে

২৩ জুন সকাল থেকেই পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। ১৭৫৭ সালের ২২ জুন মধ্যরাতে রবার্ট ক্লাইভ কলকাতা থেকে তার বাহিনী নিয়ে পলাশী মৌজার লক্ষবাগ নামে আম্রকাননে এসে তাঁবু গাড়েন। বাগানটির উত্তর-পশ্চিম দিকে গঙ্গা নদী। এর উত্তর-পূর্ব দিকে দুই বর্গমাইলব্যাপী আম্রকানন[৪]। বেলা আটটার সময় হঠাৎ করেই মীর মদন ইংরেজ বাহিনীকে আক্রমণ করেন। তার প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। ক্লাইভ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন। মীর মদন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু মীর জাফর, ইয়ার লুৎফ খান ও রায় দুর্লভ যেখানে সৈন্য সমাবেশ করেছিলেন সেখানেই নিস্পৃহভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন। তাদের সামান্য সহায়তা পেলেও হয়ত মীর মদন ইংরেজদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করতে পারতেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সিরাজউদ্দৌলার গোলাবারুদ ভিজে যায়। তবুও সাহসী মীর মদন এবং অপর সেনাপতি মোহন লাল ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলার আঘাতে মীর মদন মারাত্মকভাবে আহত হন ও মারা যান। নবে সিং হাজারী ও বাহাদুর খান প্রমুখ গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধানও একইসাথে মৃত্যুবরণ করেন।

মীরমদন, নবে সিং হাজারী ও বাহাদুর খানের স্মারকস্তম্ভ,পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্র

গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান নিহত হওয়ার পর সিরাজউদ্দৌলা মীর জাফর ও রায় দুর্লভকে তাদের অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে তীব্র বেগে অগ্রসর হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উভয় সেনাপতি তার নির্দেশ অমান্য করেন। তাদের যুক্তি ছিল গোলন্দাজ বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া অগ্রসর হওয়া আত্মঘাতী ব্যাপার। কিন্তু কোম্পানি ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে তখন দূরত্ব মাত্র কয়েকশত গজ। বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহন লাল নবাবকে পরামর্শ দেন যুদ্ধবিরতি ঘটলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী কিন্তু সিরাজ মীর জাফর প্রমুখের পরামর্শে পশ্চাৎপসরণের সিদ্ধান্ত নেন। বিকেল পাঁচটায় সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী নির্দেশনার অভাবে এবং ইংরেজ বাহিনীর গোলন্দাজি অগ্রসরতার মুখে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে অর্থাৎ পরাজয় স্বীকার করে। নবাবের ছাউনি ইংরেজদের অধিকারে আসে। ইংরেজদের পক্ষে ৭ জন ইউরোপীয় এবং ১৬ জন দেশীয় সৈন্য নিহত হয়। তখন কোনো উপায় না দেখে সিরাজউদ্দৌলা রাজধানী রক্ষা করার জন্য ২,০০০ সৈন্য নিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু রাজধানী রক্ষা করার জন্যেও কেউ তাকে সাহায্য করেনি। সিরাজউদ্দৌলা তার সহধর্মিণী লুৎফুন্নেসা ও ভৃত্য গোলাম হোসেনকে নিয়ে রাজধানী থেকে বের হয়ে স্থলপথে ভগবানগোলায় পৌঁছে যান এবং সেখান থেকে নৌকাযোগে পদ্মামহানন্দার মধ্য দিয়ে উত্তর দিক অভিমুখে যাত্রা করেন। তার আশা ছিল পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারলে ফরাসি সেনাপতি মসিয়ে নাস-এর সহায়তায় পাটনা পর্যন্ত গিয়ে রাজা রামনারায়ণের কাছ থেকে সৈন্য সংগ্রহ করে ফরাসি বাহিনীর সহায়তায় বাংলাকে রক্ষা করবেন। কিন্তু তার সে আশা পূর্ণ হয়নি। সিরাজ পথিমধ্যে বন্দি হন ও মিরনের হাতে বন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।[৫]

গুরুত্ব[সম্পাদনা]

বিখ্যাত পর্তুগিজ ঐতিহাসিক বাকসার পলাশীর যুদ্ধকে গুরুত্বের দিক থেকে পৃথিবীর সেরা যুদ্ধগুলোর অন্যতম মনে করেন।[৪]

একটি পর্যায়ে ইংরেজরা নবাবকে উৎখাতের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সৈন্যবাহিনী নিয়ে মুর্শিদাবাদের পথে অগ্রসর হয়। সিরাজও তার বাহিনী নিয়ে পলাশীর পথে অগ্রসর হন। ২৩ জুন সকাল ৮টার দিকে যুদ্ধ শুরু হয়। ইংরেজদের বাহিনীর তুলনায় নবাবের বাহিনীর আকার অনেক বড় হলেও মীরজাফর, ইয়ার লতিফ এবং রায় দুর্লভের অধীনস্থ প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সৈন্য নিষ্ক্রিয় দাঁড়িয়ে থাকে। মীর মর্দান, মোহনলাল, খাজা আব্দুল হাদী খান, নবে সিং হাজারীর নেতৃত্বাধীন সৈন্যরা এবং ফরাসী সৈনিকদের একটি দল যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ক্লাইভ যুদ্ধে ধারণার চেয়ে বেশি প্রতিরোধের সন্মুখীন হন। যুদ্ধ চলাকালে বৃষ্টিতে নবাব এবং ফরাসীদের কামানের গোলায় ব্যবহৃত গানপাউডার ভিজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু ইংরেজরা তাদের গান পাউডার সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ক্লাইভ দিনে যুদ্ধ চালিয়ে রাতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের এক পর্যায়ে বেলা তিনটার দিকে কামানের গোলার আঘাতে মীরমদন নিহত হলে নবাব ভেঙে পড়েন এবং মীর জাফরের কাছে পরামর্শ চান। মীরজাফর নবাবকে যুদ্ধ বন্ধ করে পরবর্তী দিনে নতুন উদ্যমে যুদ্ধ করার পরামর্শ দেন।

মোহনলালের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও নবাব যুদ্ধ বন্ধের নির্দেশ দেন। নবাবের সৈন্যরা পিছু হটে আসে। মীরজাফরের বার্তা পেয়ে ইংরেজরা নবাবের অপ্রস্তুত বাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং যুদ্ধে জয়লাভ করে। ফলে প্রায় ২০০ বছরের জন্য বাংলা স্বাধীনতা হারায়। প্রতি বছর সে জন্য ২৩ জুন পলাশী দিবস হিসাবে পালিত হয়। ১৭৫৭ সালের এইদিনে পলাশী প্রান্তরে রবার্ট ক্লাইভ, মীরজাফর, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ চক্র এই কালো দিবসের জন্ম দেয়। ঘৃণিত কলঙ্কজনক এই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের অধ্যায় সৃষ্টির পেছনে জড়িত ছিল বিশ্বাসঘাতক জগৎশেঠ, মাহতাব চাঁদ, উমিচাঁদ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র, রায়দুর্লভ, মীর জাফর, ঘষেটি বেগম, রাজা রাজবল্লভ, নন্দকুমার প্রমুখ কৌশলী চক্র। এই স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্রীদের প্রথম শিকার ছিল স্বাধীন ভারতের শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা এবং তার বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদন ও প্রধান আমাত্য মোহনলাল কাশ্মিরী। ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা ও লর্ড ক্লাইভের মধ্যে এক যুদ্ধ নাটক মঞ্চায়িত হয়। এতে নবাব বাহিনীর পক্ষে সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ছিল মাত্র ৩ হাজার। যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌল্লার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর ও তার অনুসারী প্রায় ৪৫ হাজার সৈন্য নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ফলে যুদ্ধে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির পরাজয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের সেবাদাসদের সাহায্যে এভাবেই বাংলায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। এরপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দীর্ঘ ১৯০ বছর এদেশে শাসন শোষণ করে। কোটি কোটি টাকার অর্থ সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করে। বাংলাদেশ থেকে লুটকৃত পুঁজির সাহায্যে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটে। আর এককালের প্রাচ্যের স্বর্গ সোনার বাংলা পরিণত হয় শ্মশান বাংলায়, স্থান পায় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশে। এ যুদ্ধের রাজনৈতিক ফলাফল ছিল ধ্বংসাত্মক ও সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বাংলা ব্রিটিশদের অধিকারে চলে আসে। বাংলা অধিকারের পর ক্রমান্বয়ে ব্রিটিশরা পুরো ভারতবর্ষ এমনকি এশিয়ার অন্যান্য অংশও নিজেদের দখলে নিয়ে আসে। পলাশীর যুদ্ধের এই নৃশংস ও কলঙ্কজনক ঘটনার মাধ্যমে কলকাতা কেন্দ্রিক একটি নতুন উঠতি পুঁজিপতি শ্রেণী ও রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটে। ইংরেজ ও তাদের এ দেশীয় দালালগোষ্ঠী দেশবাসীর ওপর একের পর এক আগ্রাসন চালায়। ফলে দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Paul K. Davis (1999). 100 Decisive Battles: From Ancient Times to the Present, p. 240-244. Santa Barbara, California. আইএসবিএন ১-৫৭৬০৭-০৭৫-১.
  2. "Memoirs of the Revolution in Bengal, Anno Domini 1757"www.wdl.org। ১৭৬০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৪ 
  3. "This Imperious Company - The East India Company and the Modern Multinational"www.gresham.ac.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৪ 
  4. http://archive.prothom-alo.com/allnewsdetails/date/2010-06-25/category/47[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. রজতকান্ত রায় (১৯৯৪)। পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ। কলকাতা: আনন্দ পাবলিশার্স। 

উৎস[সম্পাদনা]

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Chaudhary, Sushil (২০০০)। The Prelude to Empire: Plassey Revolution of 1757। New Delhi: Manohar। আইএসবিএন 81-7304-301-9 
  • Datta, K.K. (১৯৭১)। Siraj-ud-daulah। Calcutta: Sangam Books। আইএসবিএন 0-86125-258-6 
  • Gupta, B.K. (১৯৬২)। Sirajuddaulah and the East India Companyওসিএলসি 1240808 
  • Hill, S.C. (১৯০৩)। The Three Frenchmen In Bengal: The Commercial Ruin of the French Settlements in 1757। London। আইএসবিএন 1-4264-4475-3 
  • Marshall, P.J. (১৯৮৭)। Bengal — the British Bridgehead। Cambridge। আইএসবিএন 0-521-02822-1 
  • Ray, Indrajit (২০১১)। Bengal Industries and the British Industrial Revolution। Routledge। আইএসবিএন 978-1136825521 
  • Spear, Thomas G.P. (১৯৭৫)। Master of Bengal — Clive and His Indiaবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। London। আইএসবিএন 0-500-25041-3 
  • Strang, Herbert (১৯০৪)। In Clive's Command — A Story of the Fight for Indiaআইএসবিএন 1-4069-1756-7 
  • McAleer, John (২০১৭)। Picturing India: People,Places and the world of the East India Company। Niyogi Books। আইএসবিএন 978-8193393543। ২৯ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০২১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]