সিন্ধু সভ্যতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সিন্ধু সভ্যতা
IVC major sites
Alternative namesসিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা, হরপ্পা সভ্যতা
ভৌগলিক সীমাদক্ষিণ এশিয়া
সময়ব্রোঞ্জ যুগ দক্ষিণ এশিয়া
তারিখআনু. ৩৩০০ – আনু. ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
টাইপ সাইটহরপ্পা
প্রধান স্থানহরপ্পা, মহেঞ্জোদার, লোথাল, কালিবঙ্গান, আলমগীরপুর, সুৎকাগেন্দর, বালাকোট, রাখিগড়হি , রুপার, আমির, প্রভৃতি
পূর্বসূরীমেহেরগড়
উত্তরসূরীধূসর কুম্ভসংস্কৃতি অংকিত
সমাধিক্ষেত্র এইচ সংস্কৃতি
মহেঞ্জোদারো অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত পুরোহিতরাজা (the priest king)

সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের[১] পশ্চিমাঞ্চলে[২][৩] অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা।[n ১] এই সভ্যতা প্রস্তর যুগে বিকাশ লাভ করে (প্রাচীন যুগকেই প্রস্তর যুগ বলে)। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-হকরা নদী উপত্যকা[৭]গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত।[৮][৯] বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।

পূর্ণবর্ধিত সময়কালে এই সভ্যতা হরপ্পা সভ্যতা নামে পরিচিত। হরপ্পা ছিল এই সভ্যতার প্রথম আবিষ্কৃত নগরগুলির অন্যতম। ১৯২০-এর দশকে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে এই শহরটি আবিষ্কৃত হয়।[১০] ১৯২০ সাল থেকে সিন্ধু সভ্যতার প্রত্নস্থলগুলিতে খননকার্য চলছে। ১৯৯৯ সালেও এই সভ্যতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নসামগ্রী ও আবিষ্কৃত হয়েছে।[১১] মহেঞ্জোদাড়ো সিন্ধু সভ্যতার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

হরপ্পা ভাষা প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত হয়নি এবং এই ভাষার উৎস অজ্ঞাত। যদিও ইরাবতম মহাদেবন, অস্কো পারপোলা, এফ জি বি কুইপারমাইকেল উইটজেল প্রমুখ বিশেষজ্ঞেরা এই ভাষার সঙ্গে প্রোটো-দ্রাবিড়ীয়, এলামো-দ্রাবিড়ীয় বা প্যারা-মুন্ডা সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন।ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান

আনুষ্ঠানিক বাসন, হরপ্পান, ২৬০০-২৪৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

সভ্যতার নাম নিয়ে বিতর্ক[সম্পাদনা]

হরপ্পা সভ্যতার প্রথম দিকে আবিষ্কৃত মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা নগরটি সিন্ধু উপত্যাকা অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল। যার ওপর ভিত্তি করে ঐতিহাসিকরা সিন্ধু নদীর নাম অনুযায়ী এই সংস্কৃতিকে সিন্ধু সভ্যতা নামকরণ করা হয়েছিল।

কিন্তু পরে সিন্ধু উপত্যকার বাইরে নানাস্থান থেকেও এই সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হতে থাকে। এই সভ্যতার ব্যাপক বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এখন আর একে সিন্ধু সভ্যতা বলা হয় না। ঐতিহাসিকরা প্রত্নতত্ত্বের একটি ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে এই সভ্যতার প্রথম আবিষ্কৃত প্রত্নক্ষেত্র হরপ্পার নাম অনুসারে এই সভ্যতাকে হরপ্পা সভ্যতা নামকরণ করেছেন। যা বর্তমান যুগের ঐতিহাসিকদের অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। এছাড়া ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরে এই নামটি ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক কেন্দ্র দ্বারা গ্রহণ করা হয়।

তবে বর্তমান যুগের এক দল ঐতিহাসিকরা নতুন এক নামকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা এই সভ্যতা কে সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতা বলতে বেশি আগ্রহী। তাদের মতে উত্তর-পশ্চিম ভারতে ঘাগর-হাকড়া নদীর তীরে সিন্ধু উপত্যকার তুলনায় অধিক সংখ্যক প্রত্নক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।বভিন্ন ঐতিহাসিকরা ঘাগর-হাকড়া নদীকে ঋকবেদে উল্লেখিত সরস্বতী নদীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। ঘাগর-হাকড়া নদীটি প্রাচীন ভারতে সরস্বতী নদী নামে বিখ্যাত ছিল । হরপ্পা সভ্যতা সরস্বতী নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল তাই বিভিন্ন ইতিহাসবিদ এই সভ্যতাকে সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতা বলে উল্লেখ করেছেন।[১২][১৩]

কালনির্ণয়[সম্পাদনা]

স্যার জন মার্শালের সময় থেকেই হরপ্পা সংস্কৃতির কাল নির্ণয়ের চেষ্টা চলছে। জন মার্শাল সিন্ধু সভ্যতা সম্বন্ধে ' 'ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন-এ' সর্বপ্রথম একটি নিবন্ধ লেখেন ২০ সেপ্টেম্বর ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে । এই বিশদ প্রবন্ধটির নামে ছিল " ফার্স্ট লাইট অন এ লং ফরগটেন সিভিলাইজেশন : নিউ ডিসকভারিজ অব অ্যান আননোন প্রি-হিস্টরিক পাস্ট ইন ইন্ডিয়া " এই প্রবন্ধটি বেরোনোর এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ববিদ এ.এইচ. সায়েস লক্ষ্য করেন যে হরপ্পায় প্রাপ্ত বিভিন্ন সিলমোহরগুলি মেসোপটেমিয়ার "প্রোটো-এলামাইট" সিলমোহরের মতন দেখতে । প্রোটো-এলামাইট ট্যাবলেটগুলি বয়স আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের কাছাকাছি । সায়েস, তাই প্রাসঙ্গিকভাবে লিখেছেন যে 'হরপ্পা সীলগুলির আবিষ্কার ভারতীয় সভ্যতার যুগ এবং উৎপত্তি সম্পর্কে আমাদের ধারণাগুলিকে বদলে দিতে পারে '।[১৪]

সচিত্র লন্ডন সংবাদ
সচিত্র লন্ডন সংবাদ


পরবর্তী সময়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ আর্নেস্ট জে.এইচ.ম্যাকে, যিনি মার্শালকে লিখেছিলেন যে সুমেরীয় সভ্যতারশহর-রাজ্যগুলির মধ্যে এবং কিশ-এ একটি ছোট বর্গক্ষেত্র স্টেটাইট সীলমোহরের সন্ধান পাওয়া গেছে । কিস থেকে প্রাপ্ত সীলটি জন মার্শাল (প্রত্নতত্ত্ববিদ)নিবন্ধে প্রাপ্ত চিহ্নগুলির মতো দেখতে।এই প্রমাণ গুলির মাধ্যমে এটা প্রমাণ হয়। যে হরপ্পা সভ্যতা মেসোপটেমিয়া সভ্যতার সমসাময়িক ছিল। জন মার্শাল এই প্রমাণ গুলোর উপর নির্ভর করে হরপ্পা সংস্কৃতির কাল সীমা আনুমানিক ৩২৫০ - ২৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ধার্য করেছিলেন।তবে জন মার্শাল সিন্ধু সংস্কৃতির যে কাল নির্ণয় করে ছিলেন তা বর্তমানে পরিত্যক্ত হয়েছে।[১৪]

সি.জে. গ্যাড, অভিমত প্রকাশ করেছেন ২৩৫০ থেকে ১৭৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ হরপ্পা সংস্কৃতির বিকাশকাল। স্টুয়ার্ট পিগট ও মরটিমার হুইলার হরপ্পা সংস্কৃতির সময় ২৫০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ধার্য করেছেন।কিছু সিলমোহর মেসোপটেমিয়ায় পাওয়া হরপ্পা প্রত্ন সামগ্রী ও ইরানের প্রভৃতি স্থানের উপাদানের উপর নির্ভর করে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন।

আধুনিক সময়ে রেডিও কার্বন পরীক্ষা হরপ্পা সংস্কৃতির কাল নির্ণয়ের শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রথম দিকে ডি.পি আগরওয়াল এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হরপ্পা অঞ্চলে ব্যাপক অনুসন্ধান কার্য পরিচালনা করেন । বর্তমান সময়ে হরপ্পা সভ্যতার বিভিন্ন প্রত্ন ক্ষেত্র থেকে পরিণত হরপ্পার ৭০ টিরও বেশি নতুন তারিক পাওয়া গেছে এই তারিখ অনুযায়ী হরপ্পা সভ্যতার পরিণত কাল ২৬০০ থেকে ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ।[১৫]

মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা নগর উত্তরসংস্কৃতির রেডিও কার্বন পরীক্ষা লব্ধ তারিখ অষ্টাদশ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত প্রসারিত।১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নাগাদ মহেঞ্জোদারো বিনষ্ট হয়েছিল বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতবাদ। প্রায় একই সময় আরো কিছুকাল পর হরপ্পাও মানবহীন প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল। লোথাল , রংপুর প্রভৃতি কেন্দ্রের নগর উত্তর হরপ্পা সংস্কৃতি অবলুপ্ত না হয়ে স্থানীয় সংস্কৃতির রূপে বিদ্যমান থাকে। হরপ্পা সভ্যতার অবলুপ্তির কাল ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা মনে করেন।[১৬]

বিভিন্ন ইতিহাসবিদ মনে করেন কতদিজি ও আম্রির মতো কেন্দ্রে আদি সংস্কৃতির অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে আদি হরপ্পা সংস্কৃতির সূচনা হয়েছে। ঐতিহাসিক গিগরি.এল পোশেল কোডদিজি সংস্কৃতি সূচনা পর্ব ৩২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দকে নির্ণয় করেছেন। ঐতিহাসিক দিলীপকুমার চক্রবর্তী ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ধার্য করেছেন।

বিভিন্ন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক আদি , পরিণত উত্তর হরপ্পা সংস্কৃতির নিম্নরূপ কাল সীমা ধার্য করেছেন।

আদি হরপ্পা সংস্কৃতি :৩২০০ - ২৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। পরিণত হরপ্পা সংস্কৃতি :২৭০০ - ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। উত্তর হরপ্পা সংস্কৃতি :১৯০০ - ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।[১৭]

বিস্তার[সম্পাদনা]

সিন্ধু সভ্যতা মোটামুটিভাবে প্রাচীন বিশ্বের অন্যান্য নদীমাতৃক সভ্যতার সমসাময়িক ছিল যেমন প্রাচীন মিশরীয় , মেসোপটেমিয়ানচৈনিক সভ্যতা । প্রায় ৭০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ বেলুচিস্তানে সিন্ধু উপত্যকায় সর্বপ্রথম কৃষির উদ্ভব হয়েছিল। কৃষির উদ্ভবের ফলে মানুষ যাযাবর বৃত্তি ছেড়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে, যার ফলে তাদের জনসংখ্যা দ্রুত হাঁড়ি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিলো। কৃষির অত্যাধিক পরিমাণে উন্নতির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে প্রচুর পরিমাণে উদ্বৃত্ত বেঁচে যাচ্ছিল । যার মাধ্যমে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে আর ক্রমশ তারা একটি গ্রামীণ সংস্কৃতি থেকে একটি নগর সভ্যতায় পরিণতি লাভ করে । হরপ্পা সভ্যতার মহেঞ্জোদারো এবং হরপ্পার বৃহৎ নগর কেন্দ্র গুলিতে সম্ভবত ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ ব্যক্তি বসবাস করত এবং সভ্যতার প্রাপ্ত বয়সে , উপমহাদেশের জনসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল ।

হরপ্পা সভ্যতার প্রধান দুটি নগর সিন্ধু অববাহিকায় আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে এই সভ্যতা প্রথমদিকে সিন্ধু সভ্যতা নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু পরে সিন্ধু উপত্যকার বাইরে নানা স্থানে এই সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে । এই সভ্যতার ব্যাপক বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে একে এখন আর সিন্ধু সভ্যতা বলা হয় না প্রথম আবিষ্কৃত কেন্দ্রের নাম অনুসারে একে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়। ভারতে উপমহাদেশ এর বিশাল এক অংশ জুড়ে বিস্তৃত হরপ্পা সভ্যতা। এই সভ্যতার বসতিগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম স্তরটিতে রয়েছে বৃহত্তম বসতিগুলি যেমন মহেঞ্জোদারো (২০০ হেক্টরের বেশি)। হরপ্পা ( ১৫০ হেক্টরের ) গানেরিওয়ালা (81.5 হেক্টরের বেশি), রাখিগড়ী (80 হেক্টরের বেশি), এবং ধোলাভিরা (প্রায় 100 হেক্টর) এছাড়া চোলিস্তানের লুরেওয়ালা, যার আনুমানিক জনসংখ্যা প্রায় ৩৫,০০০ ঐতিহাসিকরা মনে করেন মহেঞ্জোদারোর মতোই বড় ছিল এই নগরটি । এছাড়াও অন্যান্য বড় প্রত্নক্ষেত্র ২০০ হেক্টরের মধ্যে যেমন নাগুর, থারো ওয়ারো দারো, এবং সিন্ধুর লাখুয়েঞ্জো-দারো এবং বেলুচিস্তানের ননদৌরি। সম্প্রতি, মানসা জেলার পাঞ্জাব-ধালেওয়ান (প্রায় 150 হেক্টর) এবং গুরনি কালান I (144 হেক্টর), হাসানপুর II (প্রায় 100 হেক্টর), লক্ষ্মীরওয়ালা (225 হেক্টর), এবং বাগলিয়ান দা থেহ (প্রায় 150 হেক্টর) সম্প্রতিক এরকম কিছু খুব বড় পত্নক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে । হরপ্পা সভ্যতার বসতিগুলির দ্বিতীয় স্তরটি হল মাঝারি আকারের 10 থেকে 50 হেক্টর, যেমন জুদেরজোদারো এবং কালিবঙ্গান। তারপরে, 5-10 হেক্টরের আরও ছোট প্রত্নক্ষেত্র রয়েছে, যেমন আমরি, লোথাল, চানহুদারো এবং রোজদি। তৃতীয় স্তরটি হল 1-5 হেক্টর অঞ্চলে বিস্তৃত রয়েছে এমন প্রত্নক্ষেত্রগুলি হল আল্লাহদিনো, কোট ডিজি, রূপার,বালাকোট,সুরকোটাদা,নাগেশ্বর,নওশারো এবং গাজী শাহ। এছাড়াও কিছু ছোট ছোট প্রত্ন ক্ষেত্র আমরা লক্ষ্য করতে পারি।[১৮] খননকার্য সম্প্রসারণ এর সঙ্গে সঙ্গে আরো যে বহু পরিণত হরপ্পা বসতির সন্ধান পাওয়া যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গোড়ার দিকে সামান্য কয়েকটি কেন্দ্রিক এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল কিন্তু ধীরে ধীরে তার নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ।

সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন প্রশ্ন ক্ষেত্র

বর্তমান সময়ে হরপ্পা সভ্যতার প্রত্নক্ষেত্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় 1,022, যার মধ্যে 406টি পাকিস্তানে এবং 616টি ভারতে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র 97টি খনন করা হয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিসংখ্যান আরো বৃদ্ধি পাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই । মোটামুটি ভাবে এই সভ্যতা পশ্চিমে সুটকাগেনদর থাকে পূর্বে দিল্লির নিকটবর্তী আলমগীরপুর এবং উত্তরে জম্বুর কাছা কাছি মান্ডা দক্ষিনে গোদাবরী আবহবাহিকার দাইমাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। হরপ্পা সভ্যতার পশ্চিম পূর্বে সর্বোচ্চ বিস্তার ১৫০০ কি.মি. উত্তর দক্ষিনে এই বিস্তার ১২৫০ কি.মি.সব মিলিয়ে, এই সভ্যতার আয়তন ছিল প্রায় 800,000 কিমি আজকের ভারতের প্রায় এক-চতুর্থাংশ । যদি আমরা সমসাময়িক সভ্যতার সাথে তুলনা করি তাহলে প্রাচীন মিশর এর ২০ গুন এবং মেসোপটেমিয়াকে একত্রিত করে ১২ গুন বড় । প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম সভ্যতা হল এই হরপ্পা সভ্যতা । এই বিশাল বিস্তৃতিটি অবশ্যই বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছিল হরপ্পা বাসীদের।

খননকার্য ও আবিষ্কার[সম্পাদনা]

য়াস জার্নিস ইন বালোচিস্তান, আফগানিস্তান অ্যান্ড দ্য পাঞ্জাব গ্রন্থের হরপ্পার ধ্বংসাবশেষের কথা প্রথম উল্লেখ করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা তাকে "তেরো ক্রোশ" দূরে একটি প্রাচীন নগরীর উপস্থিতির কথা বলেছিল। কিন্তু প্রায় শতাব্দীকাল এই বিষয়ে কেউ কোনো প্রকার প্রত্নতাত্ত্বিক আগ্রহ দেখাননি।[১৯]

১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার জন ও উইলিয়াম ব্রান্টন করাচিলাহোরের মধ্যে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি লাইন স্থাপনের দায়িত্ব পান। জন লিখেছেন: "রেললাইন স্থাপনের জন্য উপযুক্ত ব্যালাস্ট কোথা থেকে পাওয়া যায়, সেই ভেবে আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম।" তাদের বলা হয় যে, লাইনের নিকট ব্রাহ্মণাবাদ নামে এক প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। সেই শহরে এসে তারা শক্ত ও ভালভাবে পোড়ানো ইঁটের সন্ধান পান এবং নিশ্চিত এই ভেবে যে "ব্যালাস্টের একটি উপযুক্ত উৎস পাওয়া গেছে।" ব্রাহ্মণাবাদ শহর এই ভাবে ব্যালাস্টে পরিণত হয়।[২০] কয়েক মাস পরে, আরও উত্তরে জনের ভাই উইলিয়াম ব্রান্টনের কর্মস্থলে "লাইনের অংশে অপর একটি শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। এই ধ্বংসাবশেষের ইঁট নিকটবর্তী হরপ্পা গ্রামের অধিবাসীরাও ব্যবহার করত। এই ইঁটেরই ব্যালাস্টে তৈরি হয় লাহোর থেকে করাচি পর্যন্ত ৯৩ মাইল (১৫০ কিলোমিটার) দৈর্ঘ্যের রেলপথ।"[২০]

১৮৭২-৭৫ সালে আলেকজান্ডার কানিংহাম প্রথম হড়প্পা সিলমোহর প্রকাশ করেন। তিনি ভুলবশত এটি ব্রাহ্মী লিপি মনে করেছিলেন।[২১] এর প্রায় অর্ধশতাব্দী পরে ১৯১২ সালে জে. ফ্লিট আরও কতকগুলি হরপ্পা সিলমোহর আবিষ্কার করেন। এই সিলমোহর দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯২১-২২ সালে স্যার জন মার্শাল এই অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য অভিযান চালান। এই অভিযানের ফলশ্রুতিতেই স্যার জন মার্শাল, রায়বাহাদুর দয়ারাম সাহানি ও মাধোস্বরূপ ভাট হরপ্পা এবং রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ই. জে. এইচ. ম্যাককি ও স্যার জন মার্শাল মহেঞ্জোদাড়ো আবিষ্কার করেন। ১৯৩১ সালের মধ্যেই মহেঞ্জোদাড়োর অধিকাংশ প্রত্নস্থল আবিষ্কৃত হয়ে গিয়েছিল। তৎসত্ত্বেও খননকার্য অব্যাহত থাকে। এরপর ১৯৪৪ সালে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের তদনীন্তন ডিরেক্টর স্যার মর্টিমার হুইলারের নেতৃত্বে অপর একটি দল এই অঞ্চলে খননকার্য চালায়। ১৯৪৭ সালের পূর্বে আহমদ হাসান দানি, ব্রিজবাসী লাল, ননীগোপাল মজুমদার, স্যার মার্ক অরেল স্টেইন প্রমুখ এই অঞ্চলে খননকার্যে অংশ নিয়েছিলেন।

রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহেঞ্জোদারো নগরের আবিষ্কর্তা ১৯২১
রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহেঞ্জোদারো নগরের আবিষ্কর্তা ১৯২১
দয়া রাম সাহিনী যিনি ১৯২০ সালে হরপ্পা খনন করেছিলেন
দয়া রাম সাহিনী যিনি ১৯২০ সালে হরপ্পা খনন করেছিলেন

ভারত বিভাগের পর সিন্ধু সভ্যতার অধিকাংশ প্রত্নস্থল পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্গত হয়। উল্লেখ্য, পাকিস্তান ভূখণ্ডই ছিল এই প্রাচীন সভ্যতার মূল কেন্দ্র। ১৯৪৯ সালে পাকিস্তান সরকারের পুরাতাত্ত্বিক উপদেষ্টা স্যার মর্টিমার হুইলার এই সব অঞ্চলে খননকার্য চালান। সিন্ধু সভ্যতার সীমান্তবর্তী প্রত্নস্থলগুলি আবিষ্কৃত হয়েছে পশ্চিমে বালোচিস্তানের সুকতাগান ডোর এবং উত্তরে আফগানিস্তানের আমুদারিয়া বা অক্সাস নদীর তীরে শোর্তুগাই অঞ্চলে।

আদি হরপ্পা সংস্কৃতি (৩২০০-২৬০০)[সম্পাদনা]

পরিণত হরপ্পা সংস্কৃত (২৬০০-১৯০০)[সম্পাদনা]

আগের পর্যায়ে আমরা লক্ষ্য করেছি সিন্ধু সভ্যতার বেশিরভাগ বসতিগুলো ছিল গ্রামে। দু একটি বসতি শহর হবার পথে চলছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এক আমূল পরিবর্তন ঘটে যায়। তৈরি হয়ে যায় সিন্ধু সভ্যতার নাগরিক দশা যেটির জন্য এই সভ্যতা বিশ্ব বিখ্যাত। এই সভ্যতার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আমাদের এর পূর্ণতার দশা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। যেমন বৈদেশিক বাণিজ্য , পূর্ণ লিপির ব্যবহার , হস্তশিল্পী উৎপাদন সহ এক জটিল নাগরিক জীবনের পরিবর্তন ইত্যাদি। ঐতিহাসিক ভি গর্ডন চাইল্ড একটি নগর সভ্যতার দিশারী হিসেবে লিপির ব্যবহার, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি, বৃহৎ বৃহৎ স্মৃতিসৌধের কথা উল্লেখ করেছেন, তবে এ বিষয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক মানতে নারাজ। এই সময় সভ্যতাটি একটি জটিল অথচ সুসংবদ্ধ সভ্যতা রূপে বিকাশ লাভ করল।

সিন্ধু সভ্যতার পরিণত পর্যায়ে রূপান্তরিত হওয়ার কারণ হিসেবে ২০১২ সালে জিওসান এট আল , এশিয়া জুড়ে বর্ষার ধীর-দক্ষিণমুখী স্থানান্তর ও প্রাথমিকভাবে সিন্ধু নদীর বন্যার ফলে সৃষ্ট উর্বর জমিকে সিন্ধু উপত্যকায় গ্রামগুলির বিকাশের কারণ বলে মনে করেন। তাদের মতে, এই সময় উর্বর জমির জন্য কৃষি কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার ফলে শহরগুলির উৎপত্তি ঘটে যা ধীরে ধীরে ভারতের প্রথম নগরায়নের রূপ নেয়। সিন্ধুবাসিরা কোনদিনই সেচ ব্যবস্থা ব্যবহার করেননি তারা প্রধানত মৌসুমী বর্ষার উপর নির্ভর করে যা গ্রীষ্মকালীন বন্যার দিকে পরিচালিত করে। তবে এই তত্ত্বের মাধ্যমে আমরা শুধু সিন্ধু উপত্যকা অঞ্চলের নগরগুলি গড়ে ওঠার কারণ উল্লেখ করতে পারি , সে ক্ষেত্রে বৃহৎ সিন্ধু সভ্যতার অন্যান্য নগর গুলি গড়ে ওঠার প্রশ্নটি থেকে যায়।

যে.জি শ্যাফার এবং ডি.এ.  লিচটেনস্টাইন, এর মতে পরিপক্ক হরপ্পা সভ্যতা গড়ে উঠেছিল ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে ঘাগর-হাকড়া উপত্যকায়। এবং এই সভ্যতার পরিপূর্ণতা বিকাশের পেছনে  বাগোর, হাকরা ও কোট ডিজি সংস্কৃতির বা এই সকল 'জাতিগত গোষ্ঠী'র সংমিশ্রণ" কাজ করেছিল।

2600 খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে,  হরপ্পা সভ্যতার পৃথিবীর বৃহৎ এক নগরায়নের পরিবর্তিত হয়েছিল।  এই ধরনের নগর কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে আধুনিক পাকিস্তানের হরপ্পা, গানেরিওয়ালা, মহেঞ্জোদারো এবং আধুনিক ভারতে ধোলাভিরা, কালিবঙ্গন, রাখিগড়ি, রূপার এবং লোথাল। হরপ্পা সভ্যতার পরিণত কালে প্রায় , 1,000 টিরও বেশি বসতি পাওয়া গেছে, প্রধানত সিন্ধু এবং ঘাগর-হাকড়া নদী এবং তাদের উপনদী অঞ্চলগুলিতে।

অন্তিম হরপ্পা সংস্কৃতি (১৯০০-১৩০০)[সম্পাদনা]

হরপ্পা সভ্যতার অবুলপ্তি[সম্পাদনা]

ব্যবসা বাণিজ্য[সম্পাদনা]

শিল্প ,ধাতু ও স্থাপত্য[সম্পাদনা]

ধর্ম[সম্পাদনা]

সিন্ধু উপত্যকার জনগণের ধর্ম এবং বিশ্বাস সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের যথেষ্ট কৌতুহল লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত তারা হিন্দু ধর্মের আদিপর্যায় গুলির সন্ধানে বেশি আগ্রহী। তবে একদল ইতিহাসবিদ এই সভ্যতাই হিন্দু ধর্মের আদি পর্যায়ের সন্ধান অর্থহীন বলে মনে করেন। তবে প্রমাণের স্বল্পতার কারণে, সিন্ধু লিপির পাঠ্য উদ্ধারে ব্যর্থতা ও বেশিরভাগ উপসংহার গুলি আংশিকভাবে অনুমানমূলক যার কারণে সিন্ধু সভ্যতার ধর্মের বিষয়টিও একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে থেকে গেছে।[২২]

সর্বপ্রথম হরপ্পা সভ্যতার ধর্মের অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন জন মার্শাল। তিনি 1931 খ্রিস্টাব্দে এই সভ্যতার ধর্মকে হিন্দু ধর্মের আদি পর্যায়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে চেষ্টা করেছিলেন। এর স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রমাণের অবতারণা করেন যেমন পুরুষ ঈশ্বরের এবং মাতৃদেবীর পূজা ,প্রাণী ও উদ্ভিদদের দেবিকরণ , লিঙ্গ বা ইয়োনি পূজা, ধর্মীয় অনুশীলনে স্নান এবং জলের ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া প্রভৃতি বিষয়কে তিনি হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেখেছেন। তবে মার্শালের ব্যাখ্যা অনেক দশক ধরে বিতর্কিত হয়েছে।[২৩][২৪]

Pashupati seal
Pashupati seal

মার্শাল সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জোদারোতে আবিষ্কৃত অ্যাস্ট্রাটাইট সীলের উপর ধ্যানমগ্ন পুরুষের প্রতিচ্ছবিকে দেবতা পশুপতি হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সিলমহরে তাকে ধ্যানরত যোগী রূপে দেখানো হয়েছে তিনি সিংহাসনে পদ্মাসনে বসে আছেন। নাসাগ্রে তার দৃষ্টি , তিনি উদ্বোলিঙ্গ, তার মাথায় শিং ও মুকুট, কোমরে আবরণ এবং তার চারপাশে চারটি পশু হাতি, বাঘ, গন্ডার ও মহিষ । তার পায়ের কাছে আরো একটি পশু হরিণ। তিনি প্রাণীদের প্রভু হিসেবে বিবেচিত যার কারণে সিলটি বর্তমান ঐতিহাসিক মহলে পশুপতি সিলনামে পরিচিতি লাভ করেছে।[২৩] পশুপতি আসলে শিবের একটি উপাধি। এটি যেমন বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের কাছে সমর্থন যোগ্য হয়ে উঠেছে তেমনি বিভিন্ন ইতিহাসবিদ কিছু আপত্তি উত্থাপন করেছেন।

যেমন ডরিস শ্রীনিবাসন যুক্তি দিয়েছেন যে চিত্রটির তিনটি মুখ বা যোগীর ভঙ্গি নেই।[২৫] তার মতে বৈদিক সাহিত্যে রুদ্র বন্যপ্রাণীদের রক্ষাকারী ছিলেন না। শিরিন রত্নাগর মনে করেন বৈদিক পশুপতি হলেন গৃহপালিত গবাদি পশুদের দেবতা তিনি চারণভূমির পশুকে রক্ষা করেন কিন্তু অরণ্যের হিংস্র পশুদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। বরং এই সিলমোহরে খোদিত মূল মূর্তিটি হয়তো কোন সাধক পুরুষ যিনি পশুদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে পারেন।[২৬] আবার 2002 সালে লেখার সময়, গ্রেগরি এল. পোসেহেল এই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে মূর্তিটিকে দেবতা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া উপযুক্ত হলেও, এটিকে আদি শিব হিসাবে বিবেচনা করা উচিত ।[২৭] কিন্তু এই মূর্তিটিকে শিব বা আদি শিব হিসাবে চিহ্নিত করার বিপক্ষেও বহু যুক্তি উপস্থাপিত হয়েছে । বলা হয়েছে শিব গৃহপালিত পশুদের অধিপতি তিনি ব্যাগ্রহ বা গন্ডারদের মতো বন্য প্রাণীদের অধীশ্বর নন ।আবার বিলাস সাঙ্গেভের মতো জৈন ধর্মের কিছু পণ্ডিত দ্বারা এটিকে তীর্থঙ্কর ঋষভনাথ হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।[২৮]হেনরিখ জিমার এবং টমাস ম্যাকইভিলির মতো ঐতিহাসিকরা বিশ্বাস করেন যে প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভনাথ এবং সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার মধ্যে একটি সংযোগ থাকলেও থাকতে পারে।[২৯][৩০]

Dancing bronge Girl of Mohenjo-daro
Dancing Bronze Girl of Mohenjo-Daro
Female figurine. Mature Harappan period. Indus civilization
Female figurine. Mature Harappan period. Indus civilization

মার্শাল , খননের মাধ্যমে প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি মাতৃ মূর্তির উপর ভিত্তি করে মাতৃদেবীর উপাসনার একটি সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের অনুমান করেছিলেন। তার মতে মাতৃকা-মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে তা পুরুষমূর্তি বা দেবমূর্তির তুলনায় সংখ্যায় অধিক । বিভিন্ন ইতিহাসবিদ সিন্ধু বাসীদের ধর্মবিশ্বাসে মাতৃকা দেবীর ভূমিকায় প্রধান ছিল বলে মনে করেন। মাতৃকা দেবীর পূজা পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রচলিত ছিল। সিন্ধু সভ্যতাই কিছু কিছু মাতৃকা মূর্তি ব্রোঞ্জ ও তামায় তৈরি হতো তবে বেশিরভাগ মূর্তি পোড়ামাটির লক্ষ্য করা যায । কোনো কোনো মূর্তির গায়ে ধোয়ার চিহ্ন স্পষ্ট। হরপ্পাই প্রাপ্ত একটি সিলমোহরে একটি দেবমূর্তি উৎকীর্ণ আছে। মূর্তিটির ভঙ্গি উদ্যানপাধ অর্থাৎ তার মাথা নিচের দিকে পা দুটি উপরের দিকে, দেবী মূর্তির গর্ব থেকে একটি চারা গাছ নির্গত হচ্ছে চারা গাছটির জন্মের মধ্যে দিয়ে দেবী প্রকটিত হয়েছেন। তবে সিন্ধু উপত্যকার মানুষের জীবনে নারী মূর্তিগুলির কার্যকারিতা অস্পষ্ট থেকে যায় ।[১৬] তবে পোসেহল মার্শালের অনুমানের প্রমাণকে ভয়ংকর ভাবে শক্তিশালী বলে মনে করেন না।[২৪] বেশিরভাগ নারী মূর্তি গুলি পাওয়া গেছে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় এর মধ্যে কোনোটিও মন্দির সংলগ্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়নি আবার মূর্তিগুলি ভঙ্গন অবস্থায় পাওয়া যাওয়াই , বিভিন্ন ইতিহাসবিদরা মনে করেন মূর্তিগুলি স্বল্পকালীন সময়ের জন্য পূজিত হতো ও পরবর্তীকালে তা ভেঙে দেওয়া হতো।সিন্ধু সভ্যতায় পশু বলির চলছিল বলেও বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা মনে করেন এর স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রমাণও উত্থাপিত করেছেন। যেমন , একটি সীলমোহরে পিপুল গাছের ছবি আঁকা আছে গাছের দুই শাখার মাঝখানে উৎকীর্ণ আছে এক দেবী মূর্তি দেবীর পাশে এক উপাসক । সে বলি দিতে একটি ছাগকে নিয়ে এসেছে। এই প্রমাণের স্বপক্ষে ঐতিহাসিকরা পশু বলির একটি স্পষ্ট ধারণা করা যায় বলে মনে করেন। [২৬]

সিন্ধু উপত্যকায় লিঙ্গ ও যোনির আকারের পাথরের জিনিস প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেছে। জর্জ ডেলস মনে করেন সম্ভবত এগুলি উপাসনার বস্তু ছিল ।[১৩] লিঙ্গ শিবের প্রতিক কিন্তু সেই সময়ে এই ধারণা গড়ে উঠেছিল কি না বলা কঠিন । খুব সম্ভবত প্রজনন শক্তির প্রতীক লিঙ্গ , এই লিঙ্গ কে পূজা করার মাধ্যমে তারা আসলে জমির পূজা করতো । পুরুষ ও স্ত্রী আদর্শের সংযোগ সৃষ্টির প্রক্রিয়ার মূল সিন্ধু বাসীদের এই বিশ্বাসি যেন লিঙ্গ ও যোনি উপাসনার মধ্যে মুক্ত হয়েছিল। কেউ কেউ অবশ্য লিঙ্গ ও যোনি পূজার প্রচলন সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মনে করেন যে দ্রব্যগুলিকে লিঙ্গ বা যোনি বলে সনাক্ত করা হয়েছে সেগুলি লিঙ্গ বা যোনি নয় অন্য কোন বস্তু।

সমসাময়িক মিশরীয় এবং মেসোপটেমীয় সভ্যতাই যেমন বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপত্য আমরা লক্ষ্য করতে পারি। কিন্তু সিন্ধু উপত্যকায় কোনো রকমের স্মৃতিসৌধের বা প্রাসাদের প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।, যদিও খনন করা শহরগুলি ইঙ্গিত দেয় যে সমাজের প্রয়োজনীয় এই ধরনের স্থাপত্য তৈরি করার মতন ক্ষমতা তাদের ছিল।[২৬] [৩১]ঐতিহাসিকরা মনে করেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি যদি থাকে তবে তা মূলত ব্যক্তিগত বাড়ি, ছোট মন্দির বা খোলা বাতাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। অবশ্য পরবর্তী পণ্ডিতদের দ্বারা সম্ভবত ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহারিত কয়েকটি প্রত্নক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে । যেমন বর্তমানে মহেঞ্জোদারোতে গ্রেট বাথকে ব্যাপকভাবে আচার-অনুষ্ঠান শুদ্ধিকরণের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হয় ।[২৪] সিন্ধু বাসীদের স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় নয় প্রধানত ধর্মীয় প্রয়োজনেই জল ব্যবহারে আগ্রহী ছিল নিশ্চয়ই এমন এক অনুমানের ভিত্তিতেই এই মন্তব্য করা হচ্ছে তবে এই অনুমানটিও প্রমাণিত নয়। মহেঞ্জোদারোতে হুইলার একটি ভবন আবিষ্কার করেছিলেন সেটির প্রবেশপথে মন্দিরের মতো দুটি শিরির ধাপ ছিল । যদি তা হয়ে থাকে তাহলে , সেটি নিশ্চয়ই ইউনিকর্ন দেবীর মন্দির বলে ইরফান হাবিব মনে করেন।[১২]কালিবঙ্গান , লোথাল ও নাগেশ্বরে কয়েকটি অগ্নিশালা আবিষ্কৃত হয়েছে। কালিবঙ্গানের সিটাডেল অঞ্চলের অনেকগুলি অগ্নিশালা সংযুক্ত ছিল। কখনো কখনো অগ্নিশালার কাছাকাছি মাটির গর্তের মধ্যে পশুর হাড় ও পাওয়া গেছে। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা অবশ্যই এ ধরনের অগ্নিশালার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই প্রমাণের স্বপক্ষে ইতিহাসবিদরা মনে করেন সিন্ধু উপত্যকার কোনো কোনো স্থানে অগ্নিপূজা বা যাগযজ্ঞ চালু ছিল।[১২]

Great bath view Mohenjodaro
Intaglio seal (H97-3433-7617-01) Indus Fish symbol
Intaglio seal (H97-3433-7617-01) Indus Fish symbol

বিভিন্ন ঐতিহাসিকরা সিন্ধু সভ্যতা থেকে প্রাপ্ত সিল গুলিতে সিন্ধু বাসীদের বিশ্বাসের জগতটি উপস্থাপিত হয়েছে বলে মনে করেন। সিলগুলিতে আমরা বিভিন্ন পশুর প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করতে পারি। এ থেকে ধারণা করা যায় যে হরপ্পা বাসীরা হয়তো জীবজন্তুদের দেবতা জ্ঞানে পূজো করতো । এই সিলগুলির প্রায় তিন চতুর্থাংশ কেবল একটিমাত্র পশুর ছবি আমরা লক্ষ্য করতে পারি । এই পশুটি সর্বদাই ডান পাশ ফিরে রয়েছে। শিলে প্রাপ্ত সবচেয়ে বেশি চিত্রিত পশুটি হলো ইউনিকর্ন অর্থাৎ কুঁজহীন একশৃঙ্গ ষাঁর। এবং সব সময় তার সামনে অদ্ভুত আকারের ত্রিস্তর বিশিষ্ট একটি জাবনা পাত্র থাকে। এই পশুটি সিন্ধু সভ্যতায় অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে মনে করা হয়। এছাড়া পাওয়া গেছে কুঁজবিহীন ষাঁর বা বাইসন, হাতি, কুঁজবিশিষ্ট ষাঁর , বাঘ , খরগোশ এবং মহিষ। এইসব পশুগুলি কোনো দেবতার প্রতিনিধি হতে পারে বলে ঐতিহাসিক মহলের ধারণা।[৩২] এছাড়া আমরা সিন্ধু সভ্যতার অঞ্চল গুলিতে বৃক্ষ পূজার প্রমাণ পাই। সিন্ধু বাসীরা মনে করত বৃক্ষের অন্তরে কোন দেবতা বাসা বাঁধতে পারে , এই ধারণায় হয়তো তাদের বৃক্ষ পূজার কারণ । সভ্যতার বিভিন্ন নগরে পিপুলের শাখার ছবি দেওয়া বিভিন্ন সিলমোহর খুঁজে পাওয়া গেছে। যেমন মহেঞ্জোদারোর একটি সিলে একটি বিশদ দৃশ্য খচিত রয়েছে, পিপুল গাছের মধ্যেই এক দেবমূর্তি সঙ্গে মাছের চিহ্ন এবং একটি বিশাল রামছাগলের মূর্তি ও একজন পূজারী উপাসনা করছে এক পুরুষ কিছু সম্ভবত উৎসর্গ করেছেন । আর সাত জন নারী নিচের দিকে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছে । তখনো মানুষকে সর্বদাই জঙ্গলে ঘন অরণ্যে বিপদজনক বন্য পশুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হতো । যার ফলাফল হিসেবে তারা হয়তো জীবজন্তুদের ও বৃক্ষদের নিজেদের দেবতা জ্ঞানে পুজো করত ।[৩২]


জাতি তত্ত্ব[সম্পাদনা]

সিন্ধু লিপি[সম্পাদনা]

কালপঞ্জি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Indus Civilization Introduction"। Harappa.com। ২০০৬-১০-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-২৭ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৮ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০ 
  3. "An Ancient Indus Valley Civilization Metropolis"। Mohenjo-daro। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-২৭ 
  4. Ching, Francis D. K. (২০০৬)। A Global History of Architecture। Hoboken, N.J.: J. Wiley & Sons। পৃষ্ঠা 28–32। আইএসবিএন 0471268925  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  5. McIntosh 2001, পৃ. 24।
  6. Ratnagar, Shereen (২০০৬)। Trading Encounters: From the Euphrates to the Indus in the Bronze Age। Oxford University Press, India। আইএসবিএন 019568088X 
  7. Possehl, G. L. (১৯৯০)। "Revolution in the Urban Revolution: The Emergence of Indus Urbanization"Annual Review of Anthropology19: 261–282। ডিওআই:10.1146/annurev.an.19.100190.001401। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)See map on page 263
  8. Indian Archaeology, A Review. 1958-1959. Excavations at Alamgirpur. Delhi: Archaeol. Surv. India, pp. 51–52.
  9. Leshnik, Lawrence S. (১৯৬৮)। "The Harappan "Port" at Lothal: Another View"American Anthropologist, New Series,70 (5): 911–922। ডিওআই:10.1525/aa.1968.70.5.02a00070। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  10. Beck, Roger B. (১৯৯৯)। World History: Patterns of Interaction। Evanston, IL: McDougal Littell। আইএসবিএন 0-395-87274-X  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  11. "'Earliest writing' found"। BBC News। ১৯৯৯-০৫-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-০৫ 
  12. Habib, Irfan (২০১৫)। The Indus Civilization। Tulika book। আইএসবিএন 978-93-82381-53-2 
  13. Singh, Upender (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India। Pearson। আইএসবিএন 978-81-371-1120-0 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: checksum (সাহায্য) 
  14. Danino, Michel (২০১০)। The lost river |on the trail of the Saraswati। Haryana, India: Penguin random house India। পৃষ্ঠা 88। আইএসবিএন 978-0-14-306864-8 
  15. Agarwal, D P (১৯৮২)। The archaeology of India। New Delhi। 
  16. গঙ্গোপাধ্যায়, দিলীপ কুমার (২০০০)। ভারত-ইতিহাসের সন্ধানে। কলকাতা: সাহিত্যলোক। আইএসবিএন 81-86946-54-3 
  17. Singh, Upender (২০০৮)। A history of ancient and early medieval India। DELHI: Persons। আইএসবিএন 978-81-317-1677-9 
  18. Singh, Upinder (২০০৯)। A history of ancient and early medieval India। Head Office: 15th Floor, Tower-B, World Trade Tower, Plot No. 1, Block- C, Sector 16. Noida 201 301, Uttar Pradesh, India.: Pearson। পৃষ্ঠা 147। আইএসবিএন 978-8131-716779 
  19. Masson, Charles (১৮৪২)। "Chapter 2: Haripah"Narrative of Various Journeys in Balochistan, Afghanistan and the Panjab; including a residence in those countries from 1826 to 1838। London: Richard Bentley। পৃষ্ঠা 472। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০A long march preceded our arrival at Haripah, through jangal of the closest description.... When I joined the camp I found it in front of the village and ruinous brick castle. Behind us was a large circular mound, or eminence, and to the west was an irregular rocky height, crowned with the remains of buildings, in fragments of walls, with niches, after the eastern manner.... Tradition affirms the existence here of a city, so considerable that it extended to Chicha Watni, thirteen cosses distant, and that it was destroyed by a particular visitation of Providence, brought down by the lust and crimes of the sovereign.  Note that the coss, a measure of distance used from Vedic period to Mughal times, is approximately ২ মাইল (৩.২ কিমি).
  20. Davreau, Robert (১৯৭৬)। "Indus Valley"। Reader's Digest। World's Last Mysteries 
  21. Cunningham, A., 1875. Archaeological Survey of India, Report for the Year 1872-73, 5: 105-8 and pl. 32-3. Calcutta: Archaeological Survey of India.
  22. Wright, Rita P (2009 September)। The Ancient Indus: Urbanism, Economy, and Society.। Cambridge University Press.। আইএসবিএন 978-0-521-57219-4  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  23. John, Marshall (১৯৩১)। Mohenjo-Daro and the Indus Civilization: Being an Official Account of Archaeological Excavations at Mohenjo-Daro Carried Out by the Government of India Between the Years 1922 and 1927.। London: Arthur Probsthain। 
  24. Possehl, L.Gregory (২০০২)। The Indus Civilization: A Contemporary Perspective। The Indus Civilization: A Contemporary Perspective. Rowman Altamira.। পৃষ্ঠা 141–145। আইএসবিএন 978-0-7591-1642-9. |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 
  25. Srinivasan, Doris (১৯৭৫)। "The so-called Proto-Śiva seal from Mohenjo-Daro: An iconological assessment"। Archives of Asian Art। পৃষ্ঠা 47–58। 
  26. Ratnagar, Shereen (২০০৩)। Understanding hadappa: civilization in the greater Indus valley। Kolkata: National book agency private limited। পৃষ্ঠা 95। 
  27. Possehl, L Gregory (২০০২)। The Indus Civilization: A Contemporary Perspective। Rowman Altamira.। পৃষ্ঠা 141–144। আইএসবিএন 978-0-7591-1642-9. |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 
  28. Vilas, Sangave (২০০১)। Facets of Jainology: Selected Research Papers on Jain Society, Religion, and Culture। Mumbai: Popular Prakashan। আইএসবিএন 978-81-7154-839-2 
  29. McEvilley, Thomas McEvilley (২০০২)। The Shape of Ancient Thought: Comparative Studies in Greek and Indian Philosophies। Allworth Communications। পৃষ্ঠা 816। আইএসবিএন ISBN 1-58115-203-5 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 
  30. Zimmer, Heinrich, Campbell, Joseph (ed.) (১৯৬৯)। Philosophies of India। NY: Princeton University Press। পৃষ্ঠা 60, 208–209। আইএসবিএন 978-0-691-01758-7 
  31. Thapar, Romila (২০০৪)। Early India: From the Origins to AD 1300। University of California Press। আইএসবিএন ISBN 978-0-520-24225-8. |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 
  32. হাবিব, ইরফান (২০০৪)। সিন্ধু সভ্যতা [ও অন্যান্য তাম্র যুগের সংস্কৃতি সমূহ এবং ভাষার রূপ পরিবর্তনের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ১৫ ০০ অব্দ পর্যন্ত]। কলকাতা: ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড। পৃষ্ঠা ৫৮। আইএসবিএন 81-7626-166-1 
  1. The civilization is sometimes referred to as the Indus Ghaggar-Hakra civilization or the Indus-Sarasvati civilization. The appellation Indus-Sarasvati is based on the possible identification of the Ghaggar-Hakra River with the Sarasvati River of the Nadistuti sukta in the Rig Veda, but this usage is disputed on linguistic and geographical grounds.[৪][৫][৬]