১,৮১,০৪১টি
সম্পাদনা
Debjitpaul10 (আলোচনা | অবদান) |
অ (বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে) |
||
=== গ্রন্থ প্রচার ===
[[File:Snakesacrifice.jpg|thumb|236x236px|মহারাজ [[জন্মেজয়|জন্মেজয়ের]] সর্পযজ্ঞ]]
মহাভারত রচনা সম্পূর্ণ হলে ব্যাসদেব এই কাব্য তাঁর পুত্র [[শুকদেব]]কে দিয়ে অধ্যয়ন করান, পরে শিষ্য পরম্পরায় গ্রন্থটি [[বৈশম্পায়ন]], পৈল, [[জৈমিনি]], অসিত-দেবল প্রভৃতি ঋষি দ্বারা পঠিত হয়। শুকদেব এই গ্রন্থটির কাহিনী গন্ধর্ব, যক্ষ ও [[অসুর|রাক্ষস]]দের মধ্যে, দেবর্ষি [[নারদ]] দেবতাদের মধ্যে ও অসিত-দেবল পিতৃদের মধ্যে প্রচারিত করেন।<ref name="ReferenceB">মহাভারত-গীতা প্রেস গোরখ্পুর, আদি পর্ব অধ্যায় ১, শ্লোক-১০৩-১০৭</ref> বৈশম্পায়ন এই কাহিনীটি প্রথম মনুষ্যদের মধ্যে 'ভারত' নামে প্রচার করেন। [[অর্জুন|অর্জুনের]] প্রপৌত্র মহারাজ [[জন্মেজয়|জন্মেজয়ে]]র মহাযজ্ঞে ঋষি বৈশম্পায়ন ঐ কাহিনী জন্মেজয় সহ সৌতি এবং উপস্থিত মুনি-ঋষিদের শোনান।<ref
একদা সম্রাট [[পরীক্ষিৎ]] তক্ষক নাগের দংশনে মারা গেলে ক্রোধের বশে পরীক্ষিৎপুত্র [[জনমেজয়]] বিশ্বের সমস্ত সাপেদের ধ্বংস করবার পণ নিয়ে সর্পযজ্ঞের আয়োজন করেন। কিন্তু তক্ষকের অনুরোধে আস্তিক মুনি এই যজ্ঞ পণ্ড করে দেন। জনমেজয়ের অনুতাপ হয় ও পাপ খণ্ডন করতে [[অশ্বমেধ যজ্ঞ|অশ্বমেধ যজ্ঞের]] আয়োজন করেন। কিন্তু, কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞ করা অনর্থের কারণ মনে করে [[ইন্দ্র|দেবরাজ ইন্দ্র]] ছল করে এই যজ্ঞও নষ্ট করেন ও জনমেজয়ের ওপর ব্রাহ্মণহত্যার পাপ পড়ে। এই মহাপাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে তিনি [[ব্যাসদেব|ব্যাসদেবের]] পরামর্শ মতো ঋষি বৈশম্পায়নের কাছ থেকে পবিত্র মহাভারতের কাহিনি শ্রবণ করে পাপমুক্ত হন। পরে ঐ যজ্ঞে উপস্থিত গল্পকথক [[সৌতি|উগ্রশ্রবা সৌতি]] কাহিনিটি শুনে তা নৈমিষারণ্যে যজ্ঞরত শৌনক ও অন্যান্য মুনিদের শোনান। এইরূপে মনুষ্যসমাজে মহাভারতের কাহিনী প্রচারিত হয়।<ref>'''কাশীদাসী মহাভারত''', দেব সাহিত্য কুটীর।</ref>
=== বিশালতা ===
মহাভারতের বিশালতা তথা দার্শনিক গূঢ়তা কেবল [[ভারত মহাসাগর|ভারতের]] [[পুরাণ|পৌরাণিক আখ্যান]]ই নয়, বরং এটিকে সমগ্র [[হিন্দু ধর্ম]] এবং [[বেদ|বৈদিক দর্শন]] ও সাহিত্যের সারসংক্ষেপ বলা যেতে পারে। 'মহাভারত' নামটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে একটি আখ্যান প্রচলিত যে, [[দেবতা]]রা তুলাযন্ত্রের একদিকে চারটি [[বেদ]] রাখেন ও অন্যদিকে বৈশম্পায়ন প্রচারিত ভারত গ্রন্থটি রাখলে দেখা যায় ভারত গ্রন্থটির ভার চারটি বেদের চেয়েও অনেক বেশি। সেকারণে ভারত গ্রন্থের বিশালতা দেখে দেবগণ ও ঋষিগণ এর নামকরণ করলেন 'মহাভারত'। আবার একে ''''পঞ্চম বেদ'''<nowiki/>'ও বলা হয়। জগতের তাবৎ শ্রেষ্ঠ বস্তুর সঙ্গে একে তুলনা করে বলা হয়েছে: "'''মহত্ত্বাদ্ ভারতবত্ত্বাচ্চ মহাভারতমুচ্যতে।'''"<ref>'''কাশীদাসী মহাভারত''', দেব সাহিত্য কুটীর, পৃষ্ঠা-১২১৮, পরিশিষ্ট-মহাভারত পরিচয়।</ref>
[[বাংলা ভাষা|বাংলাতেও]] মহাভারতের বিশালতা সম্পর্কিত একটি সুপ্রচলিত প্রবাদ রয়েছে: {{cquote2|'''যা নেই ভারতে, তা নেই ভারতে।''' }}
|<span lang="BN">৯৭</span>
|<span lang="BN">১২৩</span>
|<span lang="BN">পাণ্ডব ও দ্রৌপদীর মহাপ্রস্থানে গমন, [[দ্রৌপদী]], [[ভীম]], [[অর্জুন]],[[নকুল (মহাভারত)|
|-
|১৮
ক. সর্বপ্রথমে [[ব্যাসদেব]] ১০০ পর্ব ও এক লাখ শ্লোক সমন্বিত 'জয়' গ্রন্থ রচনা করেন, যা পরবর্তী কালে মহাভারত নামে প্রসিদ্ধ হয়।
খ. পরে ব্যাস প্রচারিত ঐ কাহিনীটিকে তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়ন [[
* '''২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ'''<ref name=":1" />
কিছু ভূবিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, বর্তমানের শুষ্ক ঘগ্গর-হাকরা নদীই বাস্তবে বৈদিক যুগের সরস্বতী নদী, যেটি ৫০০০-৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পশ্চিম ভারতে বইত এবং আনুমানিক ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভূ-আলোড়ন জনিত কারণে শুকিয়ে যায়। বৈদিক যুগে লিখিত [[ঋগ্বেদ|ঋগ্বেদে]] সরস্বতী নদীকে ‘নদীতমা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ঋগ্বৈদিক সভ্যতায় সরস্বতী নদীই ছিল সর্বপ্রধান নদী, [[গঙ্গা নদী|গঙ্গা]] নয়।
ভূ-আলোড়নে সরস্বতী নদীর মূল প্রবাহ যমুনার সাথে মিশে যায়, যেমন ‘[[ত্রিবেণী সংগম]]’কে [[গঙ্গা নদী|গঙ্গা]], [[যমুনা]] ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল বলা হয়।<ref>জ়ি নিউজ়-राजस्थान की कहानी</ref> পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে ও [[পুরাণ|পুরাণে]] এও বলা হয়েছে, পরীক্ষিতের ২৮ প্রজন্মের রাজত্বের সময় গঙ্গার বিধ্বংসী বন্যায় [[হস্তিনাপুর]] নগরী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তী রাজারা কৌশাম্বী নগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
মহাভারতে বর্ণিত হয়েছে, সরস্বতী নদী বিনাশ্ন নামক তীর্থে শুকিয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ম্লেচ্ছদের সাথে বিদ্বেষের কারণে সরস্বতী নদী ম্লেচ্ছ প্রদেশে যাত্রা বন্ধ করে দেন।
=== কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ===
[[File:Dialogue between Krishna and Arjuna on the battlefield of Kurukshetra (6124590103).jpg|thumb|[[অর্জুন (পাণ্ডব)|অর্জুনের]] প্রতি [[শ্রীকৃষ্ণ|শ্রীকৃষ্ণের]] উপদেশ|left|229x229px]]
কুরুরাষ্ট্রে সামন্তপঞ্চকে [[কুরুক্ষেত্র]] নামে এক পুণ্যক্ষেত্রে মহাযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়। [[পাণ্ডব]] ও [[কৌরব|কৌরবদের]] উদ্যোগে সমস্ত [[আর্যাবর্ত|আর্যাবর্তের]] রাজ্যসমূহ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। [[কৃষ্ণ]] তথা [[দ্বারকা|দ্বারকার]] সাহায্য প্রার্থনায় [[অর্জুন]] ও [[দুর্যোধন]] উভয়েই একই সময়ে দ্বারকায় যান। কিন্তু কৃষ্ণের ভ্রাতা [[বলরাম]] যুদ্ধে অংশ না নিয়ে তীর্থযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন। আর [[কৃষ্ণ]] উভয় দলের আবেদন রক্ষাহেতু অস্ত্রধারণ না করার প্রতিজ্ঞা করে পাণ্ডবদের পরামর্শদাতা রূপে নিজে পাণ্ডবপক্ষে যোগ দেন এবং কৌরবপক্ষে দ্বারকার দুর্জয় নারায়ণী সেনা দান করেন। আপাতদৃষ্টিতে এতে কৌরবপক্ষই লাভবান হলেও স্বয়ং ধর্মরক্ষক ভগবান [[বিষ্ণু|বিষ্ণুর]] অবতার [[কৃষ্ণ]] নিজে পাণ্ডবপক্ষে থাকায় তারাই লাভবান হয়।
এদিকে [[কৃষ্ণ]] যুদ্ধ না করলেও যুদ্ধে [[অর্জুন (পাণ্ডব)|অর্জুনের]] রথের সারথির ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি পাণ্ডবদের শান্তিদূত রূপে [[কৌরব|কৌরবদের]] কাছে পাণ্ডবদের জন্য পাঁচটি গ্রাম ভিক্ষা করেন। কিন্তু [[দুর্যোধন]] কঠোরভাবে ঐ প্রস্তাব অস্বীকার করে বলেন, “'''বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী'''”।
|