শৃঙ্গী

শৃঙ্গী মহাভারতে বর্ণিত এক ঋষি। তাঁর অভিশাপেই রাজা পরীক্ষিত তক্ষকের দংশনে মৃত্যুবরণ করেন। শৃঙ্গী, ঋষি শমীকের পুত্র।

মহাভারতের উপক্রমণিকাভাগ একচত্বারিংশ ভাগে বর্ণিত আছে যে, রাজা পরীক্ষিত মৃগয়া করার সময় একটি হরিণ পালিয়ে গেলে তিনি বনে তপস্যারত ঋষি শমীককে হরিণটি যেতে দেখেছেন কিনা জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু ঋষি শমীক মৌনব্রতে থাকায় রাজার প্রশ্নে নিরুত্তর থাকেন। ক্রোধান্বিত রাজা ঋষির গলায় একটি মৃত সাপ ঝুলিয়ে দেন। শৃঙ্গী ঋষি তার পিতার প্রতি এমন অপমানজনক কর্মের জন্য রাজাকে এই অভিশাপ দেন যে, সাতদিনের মধ্যে সর্পরাজ তক্ষকের দংশনে রাজা প্রাণ হারাবেন। শমীক ঋষি অবশ্য পুত্রের কাছে এই কাজের কথা শুনে পুত্রকে ভর্ৎসনা করে বলেন এটি উচিৎ কাজ হয়নি। রাজা রাজ্যকে রক্ষা করেন এবং রাজা কখনো অপরাধ করলে তা ক্ষমা করাই কর্তব্য। তবে, শাপের কারণে রাজা পরীক্ষিতের মৃত্যু সেই সর্পরাজ তক্ষকের দংশনেই ঘটেছিল।

একটি সূত্রে জানা যায়, রাম ও লক্ষ্মণের এক বড় বোন ছিলেন শান্তা নামে। যিনি দশরথের প্রথম সন্তান। পুত্র না থাকায় রাজা পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞ করেন। আর বড় মেয়ে শান্তা সংসার বৃদ্ধির জন্য বনে গিয়ে তপস্যা শুরু করেন। সেখানে তার ঋষি শৃঙ্গীর সাথে দেখা হয় এবং তাদের বিয়ে হয়। শান্তা এই ঋষির আশ্রমে শৃঙ্গী নারীধামও গড়ে তোলেন।

অপরদিকে মহর্ষি বশিষ্ঠের পরামর্শ অনুযায়ী রাজা দশরথ এই শৃঙ্গী ঋষির আশ্রমেই পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞ করেন পুত্রলাভের আশায়। শৃঙ্গীর যজ্ঞ আর শান্তার তপস্যার ফলেই দশরথের চার পুত্রের জন্ম হয়: রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন।