বিষয়বস্তুতে চলুন

চিত্রাঙ্গদা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিত্রাঙ্গদা
দাম্পত্য সঙ্গীঅর্জুন
সন্তানবভ্রূবাহন

চিত্রাঙ্গদা মহাভারত মহাকাব্যের একটি চরিত্র। তিনি রাজা চিত্রবাহন ও বসুন্ধরার কন্যা ও অর্জুনের তৃতীয়া স্ত্রী।

জন্ম ও প্রথমজীবন

[সম্পাদনা]

মণিপুরের রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা। মণিপুর রাজের ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে শিব বর দিয়েছিলেন যে তাঁর বংশে কেবল পুত্রই জন্মাবে। কিন্তু তা সত্বেও যখন রাজকূলে চিত্রাঙ্গদার জন্ম হল রাজা তাকে পুত্ররূপেই পালন করলেন।

রাজকন্যা অভ্যাস করলেন ধনুর্বিদ্যা, শিক্ষা করলেন যুদ্ধবিদ্যা, রাজদণ্ডনীতি।

বিবাহ, সন্তান ও অন্যান্য

[সম্পাদনা]

মণিপুররাজ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তার কন্যার সাথে কেবলমাত্র মহাবীর অর্জুনের বিবাহ দেবেন। ওইদিকে ইন্দ্রপ্রস্থে সহবাসরত যুধিষ্ঠির ও পাঞ্চালিকে দেখে ফেলে অর্জুনের দ্বাদশ বর্ষ বনবাস হয়। অর্জুন দ্বাদশবর্ষব্যাপী ব্রহ্মচর্য ব্রত পালনের সময় ভ্রমণ করতে করতে এলেন মণিপুররাজ্যে। সেই সময়ে অর্জুন চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। তার ও চিত্রাঙ্গদার বিবাহ হল। তাঁদের মিলনের ফলে অর্জুনের ঔরসে চিত্রাঙ্গদার গর্ভে সন্তান জন্মায়। তাদের সেই মিলনজাত পুত্রের নাম বভ্রূবাহন[]।অর্জুন বভ্রূবাহনকে মণিপুরের রাজা বানিয়ে দেন ও নিজের রাজ্যে ফিরে যান।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় -

আমি চিত্রাঙ্গদা - রাজেন্দ্রনন্দিনি

পরবর্তী জীবন

[সম্পাদনা]

যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধ-যজ্ঞের অশ্বকে নিয়ে যুদ্ধার্থী অর্জুন যখন মণিপুরে এসে পৌঁছলেন, তখন পুত্র বভ্রুবাহন যুদ্ধ না করে ভক্তি সহকারে পিতা অর্জুনকে অভ্যর্থনা জানালেন। অর্জুন পুত্রের এই কাপুরুষতা দেখে যখন ধিক্কার দিচ্ছেন, তখন অর্জুনের দ্বিতীয় স্ত্রী উলুপী ভূমিতল থেকে উঠে এসে নিজেকে বভ্রুবাহনের বিমাতা বলে পরিচয় দিয়ে পুত্রকে বললেন যুদ্ধ করতে[]। বিমাতার আদেশে তিনি যুদ্ধ শুরু করলেন এবং তাঁর বাণে অর্জুন ভূমিশয্যা নিলেন। বভ্রূবাহনের দ্বারা যুদ্ধে নিহত হওয়ার পরে উলুপী অর্জুনকে পুনরায় জীবিত করে তাকে বসুদের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছিলেন। উলুপী সঞ্জীবন-মণি এনে অর্জুনকে সুস্থ করে বসুগণের শাপের কথা সবাইকে বললেন[]। অশ্বমেধ যজ্ঞে অর্জুনের আমন্ত্রণে চিত্রাঙ্গদা ও বভ্রূবাহনের সঙ্গে উলুপীও এসেছিলেন এবং পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানে যাওয়া পর্যন্ত পাণ্ডবদের সঙ্গেই ছিলেন। পাণ্ডবরা চলে গেলে তিনি আবার নিজ রাজ্যে ফিরে যান।[]

সাহিত্য

[সম্পাদনা]
  • চিত্রাঙ্গদা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • Citrāngadā in: M.M.S. Shastri Chitrao, Bharatavarshiya Prachin Charitrakosha (Dictionary of Ancient Indian Biography, in Hindi), Pune 1964, p. 213
  • The Mahabharata of Krishna Dvaipayana Vyasa, trl. from the original Sanskrit by Kisari Mohan Ganguli, Calcutta 1883-1896
  • Chitrangada in: Wilfried Huchzermeyer, Studies in the Mahabharata, edition sawitri 2018, p. 17-19. (also as E-Book)

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Shastri Chitrao (1964), p. 213
  2. Vettam 1975, পৃ. 97।
  3. Ganguli, Kisari Mohan (১৮৮৩–১৮৯৬)। "SECTION LXXX"। The Mahabharata: Book 14: Anugita ParvaInternet Sacred Text Archive। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬ 
  4. Ganguli, Kisari Mohan (১৮৮৩–১৮৯৬)। "SECTION 1"। The Mahabharata: Book 17: Mahaprasthanika ParvaInternet Sacred Text Archive। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬