ঈশ্বর (হিন্দু দর্শন)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ঈশ্বর (সংস্কৃত: ईश्वर) সনাতন ধর্মের এমন বিষয়, যার সময়কাল ও শাখাভেদে বহু অর্থ প্রচলিত রয়েছে। সনাতন ধর্মের গ্রন্থানুসারে, এই ঈশ্বর নানান রূপের হতে পারে। প্রাচীন শাস্ত্রে, বিষয়ভেদে ঈশ্বর শব্দের অর্থ পরমাত্মা, শাসক, প্রভু, রাজা, রাণী বা স্বামী। মূলত, ঈশ্বর শব্দটি মহাদেবের পাঁচ মুখের মধ্যে একটি মুখের নাম - ঈশান থেকে এসেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সনাতন ধর্মের শাস্ত্রের শাখাভেদে ঈশ্বর শব্দের অর্থ ভগবান, পরমেশ্বর, ইষ্টদেবতা বা বিশেষ আত্মা,[১][২], যা কালক্রমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ঈশ্বরের রূপ নেয়।[২][৩][৪]

ভক্তিবাদে ঈশ্বর সনাতনধর্মের বহু দেব-দেবীর মধ্যে ভক্তের দ্বারা নির্বাচিত, যিনি এক বা একাধিক হতে পারে। যেমন, শৈব সম্প্রদায়ের নিকট ঈশ্বর হচ্ছেন মহাদেব, যিনি তার ভক্তদের কাছে কখনো মহেশ্বর বা কখনো পরমেশ্বর বলে পূজনীয়। বৈষ্ণবদের নিকট ঈশ্বর বিষ্ণুর সাথে সমার্থক। আর্য সমাজব্রাহ্ম সমাজের মতো আধুনিক ধর্মশাখাগুলোর ক্ষেত্রে ঈশ্বর নিরাকার অদ্বিতীয়, পরমপিতা। যোগশাখায় ঈশ্বর ইষ্টদেবতা বা আদর্শস্থানীয়, প্রকারান্তরে গুরু হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।[৫] সনাতন ধর্মের যোগ দর্শনে ঈশ্বরকে ব্যক্তি ঈশ্বর বা আধ্যাত্মিক ভাবে তাকে ডাকা হয়, তার সাধনা করা হয়।[৬] অদ্বৈত বেদান্তে ঈশ্বর এক অদ্বৈতবাদী সত্তা, যিনি জড়ের সাথে জীবের সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম।[৭][৮]

ব্যুৎপত্তিগত অর্থ[সম্পাদনা]

সংস্কৃতে “ঈশ্বর” শব্দের ধাতু মূল "ঈশ্" এর অর্থ হল,দক্ষ, মালিক, শাসক।[৯] দ্বিতীয় অংশ 'বর' যার আভিধানিক অর্থ হল "সেরা, চমৎকার, সুন্দর, শাসক"।[১০] অতএব, যুগপৎভাবে ঈশ্বর শব্দের অর্থ হল; সেরা বা সুন্দরের স্রষ্টা।

প্রাচীন এবং মধ্যযুগের সংস্কৃত ধর্মীয় গ্রন্থের ধারণা থেকে ঈশ্বর এর নানাবিধ অর্থ পাওয়া যায়, যেমন: সৃষ্টিকর্তা, মহান সত্তা, পরমাত্মা, প্রভু, মহাবিশ্বের শাসক, ধনী শ্রেষ্ঠী ,একাদশ রুদ্রগণের মধ্যে একজন,স্বামী,দেবতা-শিব, দয়াময় এবং রক্ষাকর্তা।[১][১১][১২]

ঋগ্বেদে ঈশ্বর শব্দটি কখনো আসে নি।[১৩] তবে ঈশ্ ক্রিয়াপদটি ঋগ্বেদে এসেছে, যার অর্থ কিছু করতে সক্ষম, যোগ্য।[১৩] ঈশ্বর শব্দটির উপস্থিতি সামবেদ, অথর্ববেদ এবং যজুর্বেদ-এর সংহিতায় দেখা যায় না। প্রাচীন ভারতীয় ব্যাকরণবিদ পাণিনি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ঈশ্বর শব্দের আভিধানিক অর্থ আর যাই হোক; কোনোভাবে সৃষ্টিকর্তা বা মহান সত্তা নয়।[১৩]

ধর্মসূত্রের অনেক প্রাচীন গ্রন্থে ঈশ্বর শব্দটি পাওয়া যায়। প্যাট্রিক অলিভেলে ঈশ্বর সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন, এই শব্দ দ্বারা বেদকে বুঝায়, সৃষ্টিকর্তাকে নয়।[১৪] দেশপাণ্ডে এ প্রসঙ্গে বলেন, ঈশ্বরের বিকল্প অর্থ রাজা।[১৪]

মহাযান বৌদ্ধধর্মে ঈশ্বর "অবলোকিতেশ্বর" ("এমন এক মহান সত্তা, যিনি জগতের সকলের দুঃখ, কষ্ট অনুভব করেন") অংশ হিসেবে পূজনীয় হয়, যিনি বোধিসত্ত্ব হিসেবে ভক্তগণের কাছে আরাধ্য। হিন্দুধর্মের আরেকটি ঐতিহ্য হচ্ছে, তাদের ঈশ্বর নারীরূপেও পূজিত হন। বিশেষ করে শাক্তধর্মে (লক্ষ্মী, সরস্বতী,দুর্গা ইত্যাদি দেবীর পূজা করা হয়) ঈশ্বরকে স্ত্রীলিঙ্গ ঈশ্বরী হিসেবে ডাকা হয়।[১৫]

ঈশ্বর নিয়ে হিন্দুধর্মে বিভিন্ন মতবাদ[সম্পাদনা]

হিন্দু ধর্মের ছয়টি দর্শনের দুইটি হল সাংখ্য এবং মীমাংসা। এই দুইটি দর্শন ঈশ্বরকে স্বীকার করে না। যোগদর্শন, বৈশেষিক, বেদান্ত এবং ন্যায় নামক চারটি দর্শনে ঈশ্বর নিয়ে আলোচনা করা হয়, তবে প্রত্যেক দর্শনে ঈশ্বর ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে।

ডেসমারিস এ প্রসঙ্গে বলেছেন যোগসূত্রে ঈশ্বর একটি আধ্যাত্মিক ধারণা।[১৬] এই দর্শনে কোথাও দেবতার নাম নেওয়া হয় নি, কোনও আচার-মন্ত্রের উল্লেখ হয়নি, নেওয়া হয় নি কোনো প্রার্থনার স্থানের নাম।[১৬] যোগ দর্শন নিয়ে বলতে গিয়ে হুইচার বলেন, এই দর্শনে ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা নন।[৩] তিনি আরো বলেন এই দর্শনে ঈশ্বর হচ্ছেন এক পরম ব্রহ্ম, যিনি এই বিশ্বজগৎকে নিয়ন্ত্রণ করেন।[৩][১৭] ম্যালিনার সাংখ্য দর্শন নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, এই দর্শনে ঈশ্বর না ত্রাণকর্তা, না সৃষ্টিকর্তা।[১৮]

জিমার ১৯৫১ সালে ভারতীয় দর্শন সংক্রান্ত বইয়ে উল্লেখ করেন, ঈশ্বর অলৌকিক মহান সত্তা রূপে ভক্তি-আন্দোলনের মাধ্যমে হয়ে ওঠেন সেই ভক্ত সম্প্রদায়ের কাছে আরাধ্য।[১৯] নব্য সম্প্রদায় ঈশ্বরকে মহান সত্তা হিসেবে ধরে নেয়। উদাহরণস্বরূপ: ইসকন সম্প্রদায় কৃষ্ণকেই ইষ্টদেবতা হিসেবে ধরে নেয়।[২০]

রাধাকৃষ্ণণ এবং মুরে এবিষয়ে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ঈশ্বর সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারণা হিন্দুধর্মের ইষ্টদেবতার ধারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত।[২১] রাইপ এবং অন্যান্যদের মতে[৪] হিন্দুধর্মে চিন্তার স্বাধীনতা আছে, ফলে একজন মানুষ যে ঈশ্বর বা ধর্মের মধ্যে তার জীবনের মূল অর্থ খুঁজে পায়, তাকে বাছাই করে নিতে পারে। সে চাইলে নিরাকার ঈশ্বরে (ব্রহ্ম) বিশ্বাস করতে পারে, আবার সাকার ঈশ্বরের ও আরাধনা করতে পারে।[২][২২][২৩]

হিন্দুধর্মে সাংখ্যদর্শন[সম্পাদনা]

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা সাংখ্যদর্শনকে হিন্দুধর্মের সবচেয়ে বড় নাস্তিক্যবাদী দর্শন বলে অভিহিত করেছেন।[৬][২৪][২৫] অন্যান্যরা যেমন: জ্যাকবসেন সাংখ্যতত্বকে বিশ্বাসহীনতা বলে আখ্যায়িত করেছেন।[২৬] তার মতে, ঈশ্বরকে এখানে অপ্রাসঙ্গিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ দর্শনে ঈশ্বরকে না সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, না বাতিল করা হয়েছে।[২৭]

হিন্দুধর্মে যোগ[সম্পাদনা]

পতঞ্জলির যোগসূত্রে প্রাথমিক পাঠ হল যোগদর্শনে ১১টা শ্লোক যথা ১.২৩ থেকে ১.২৯, ২.১, ২.২, ২.৩২ এবং ২.৪৫ এ ঈশ্বর নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বিভিন্ন হিন্দু ধর্মের বিশেষজ্ঞরা ক্রমাগত একটাই প্রশ্ন করে আসছিলেন, কে ঈশ্বর? কী ঈশ্বর? যোগীরা ঈশ্বর এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে তাকে বিভিন্ন উপাধায় বিভক্ত করেন, যেখানে ঈশ্বর শুধু স্রষ্টা নন, তিনি পরমাত্মা, তার প্রত্যেক জীবের উপর অলৌকিক প্রভাব রয়েছে।[৬][২৮] হুইচার পতঞ্জলির শ্লোক সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন যে, শ্লোকগুলো সংক্ষিপ্ত হওয়ায় তা আস্তিক্যবাদী বা নাস্তিক্যবাদী উভয়ই হতে পারে।[২৯]

পতঞ্জলি ১নং বইয়ের ২৪ নং শ্লোকে ঈশ্বরকে বিশেষ পুরুষ বলে আখ্যা দিয়েছে।[৩০]

সংস্কৃত: क्लेश कर्म विपाकाशयैःपरामृष्टः पुरुषविशेष ईश्वरः ॥२४॥
– যোগসূত্র ১.২৪

যোগসূত্রের ঈশ্বরের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, তুমি কে, তোমার কর্ম কী এই বিষয়গুলো যোগসূত্রের ঈশ্বরের কাছে কোনো প্রভাব ফেলবে না।[৩১][৩২]

পতঞ্জলির ঈশ্বর এর ধারণা অদ্বৈতবাদের ঈশ্বরের মত সৃষ্টিকর্তা নয়। তা সম্পূর্ণ ভিন্ন।[৩][৩৩]

হিন্দুধর্মে বৈশেষিক[সম্পাদনা]

হিন্দুধর্মে একটি বিশেষ দর্শন বৈশেষিক। যা কণাদ এক সহস্র খ্রিস্টপূর্বে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই দর্শনে পরমাণু বা বিশ্বজগৎ সৃষ্ট হতে ঈশ্বরের প্রয়োজন হয় নি। এই দর্শনের মুল কথা হল পরমাণুর সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, তা শাশ্বত। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী এই পরমাণুর স্থানান্তর ঘটে, এর জন্য কোনো লৌকিক সত্তার প্রয়োজন নেই। বা [৩৪][৩৫] এক সহস্রবছর পরে ঈশ্বর সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারণা এই বৈশেষিক দর্শনে প্রবেশ করে।[৩৪][৩৬] এই দর্শনের নানাবিধ বিবর্তন ঘটার পর, এই দর্শনের বিশেষজ্ঞরা বলেন, পরমাণু এবং ঈশ্বর শাশ্বত। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বত্র বিরাজমান (সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী নয়)। এখানকার বিদ্বানদের মতে, ঈশ্বর বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেন নি। বরং তিনি সৃষ্টি করেছেন মহাবিশ্বের অদৃশ্য নিয়ম এবং ধ্রুবক। এ নিয়ম (law) গুলোর জন্য মহাবিশ্ব তার আপন নিয়মে চলতে থাকে। এবং তারপর ঈশ্বর নিষ্ক্রিয় হয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। আর মহাবিশ্ব তার আপন গতিতে চলতেই থাকে।[৩৪] en:Klaus Klostermaier এই দর্শন সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন, পরমাণু এবং বস্তুর মত শাশ্বতভাবে তিনিও মহাবিশ্বে অবস্থান করেন। তবে তিনি ঘড়ির ন্যায় একবার মহাবিশ্বকে তার মত করে চলতে দেন, এবং তা স্বয়ংক্রিয় ভাবে অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে।[৩৪]

হিন্দুধর্মে অদ্বৈতবেদান্ত[সম্পাদনা]

অদ্বৈতবাদীর ঈশ্বর মাধ্যমিকার "আদি বুদ্ধের" ন্যায়। অদ্বৈতবাদের ঈশ্বর সংক্রান্ত ধারণা 'মনিজম' ধারণার মতই, কিন্তু তা নাস্তিক্যবাদী নয়।[৩৭] হিন্দুধর্মের অন্যান্য দর্শনের ন্যায় অদ্বৈতবাদীরা আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী, কিন্তু বৌদ্ধ র আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়।[৩৭] [৭]

ईश्वरः अहम्
আমিই ঈশ্বর।

— আদি শঙ্কর, Upadesasahasri 2.3.1, 2.10.8 [৭]

একজন অদ্বৈতবাদী হিন্দু ঈশ্বর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ঈশোপনিষদে ১.৫-৭ এ ঈশ্বর নিয়ে বলা হয়েছে, ঈশ্বর সবকিছুর উর্ধ্বে, সবকিছুর বাইরে, সবকিছু পেরিয়ে তথাপি সবকিছুর অভ্যন্তরে বিরাজমান। যে ব্যক্তি নিজেকে জানে, তাকে কখনো কারো সম্মুখে মাথা নোয়ানোর প্রয়োজন হয় না, সে হয় ভয়শূন্য, বিভ্রান্তি মুক্ত, এবং শয়তানের কুদৃষ্টি থেকে মুক্ত থাকে। সে ঠিক ঈশ্বরের মতই নির্মল হয়, অভেদ্য হয়, শয়তানের প্রভাব থেকে স্বাধীন থাকে।[৩৮][৩৯]

দ্বৈত বেদান্ত[সম্পাদনা]

হিন্দুধর্মে দ্বৈতবাদ ১৩ শতকের মধ্যভাগ থেকেই দেখা যায়। যেখানে ঈশ্বরকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে ভাবা হয়।[৪০] দ্বৈতবাদে নারায়ণকে (বিষ্ণু) ঈশ্বর হিসেবে ভাবা হয়।[৪১]

দ্বৈতবাদীদের কাছে ঈশ্বর সম্পূর্ণ, নিখুঁত এবং উচ্চতর বাস্তবতারূপে বিদ্যমান। একই সাথে তাদের কাছে এই পৃথিবী সম্পূর্ণ ভিন্ন-বাস্তবতারূপে বিদ্যমান। অর্থাৎ, লৌকিক এবং পারলৌকিক উভয়জগৎই দ্বৈতবাদীদের কাছে বাস্তব। তবে একটি জগৎ আরেকটি জগৎ থেকে আলাদা।[৪১] দ্বৈতবাদিতায় জীবাত্মা (Jiva) (প্রত্যেক জীবে যে আত্মা থাকে, তাকে বুঝানো হচ্ছে) প্রত্যেক জীবের জন্য স্বতন্ত্র, এবং সে আত্মা অন্য জীবের আত্মা থেকে ভিন্ন। আত্মা সবসময় মোক্ষ লাভ করতে চায়, আর এ মোক্ষ লাভের উপায় হচ্ছে আত্মার পরমাত্মার (ঈশ্বর) সাথে লীন বা একাত্ম হয়ে যাওয়া।[৪০]

মাধবাচার্য (ইনি দ্বৈতবাদের প্রধান প্রবক্তা ছিলেন) জীবাত্মা এবং ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্যকে পাঁচটি উপায়ে বিন্যস্ত করেছেন। যথা: আত্মা এবং ঈশ্বর দ্বৈত, ঈশ্বর এবং বস্তুর দ্বৈত, আত্মা এবং বস্তুর দ্বৈত, একটি আত্মার সাথে অপর আত্মার মধ্যে ভিন্নতা, এবং বস্তু-বস্তুতে দ্বৈততা। এই ভিন্নতা গুণে এবং সং্খ্যায় উভয়ক্ষেত্রেই বিদ্যমান [৪২] অদ্বৈতবাদে মোক্ষ ইহকালেই লাভ করা যায়, কিন্তু দ্বৈতবাদে মোক্ষ লাভ করা যায় মৃত্যুর পরে, যদি ঈশ্বর চান। তবে ঈশ্বর যদি না চান এক্ষেত্রে আত্মার মোক্ষ লাভ হয় না, তাকে পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয় (মোক্ষলাভ বলতে আত্মার পরমাত্মার সাথে একাত্ম হয়ে যাওয়াকে বুঝানো হচ্ছে)।[৪২]

দ্বৈতবাদের মতে এই বিশ্বজগৎ মায়া দ্বারা আচ্ছন্ন।[৪০] দ্বৈতবাদীরা বলেন আত্মা সঠিক জ্ঞানের অভাব এবং অজ্ঞতার কারণে-কষ্ট করে, দুর্ভোগ ভোগ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করে, এবং তার বন্ধন তৈরী হয়। এ বন্ধন মোক্ষলাভের পথে বাধা। সকল পিছুটান ছেড়ে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করলেই আত্মার মোক্ষলাভ সম্ভব।[৪০] ধার্মিক জীবনযাপন করে ইহলোকে সাত্ত্বিক কর্ম করলে ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় আত্মার মুক্তি ঘটে যায় বলেই দ্বৈতবাদীরা দাবী করেন।[৪০]

হিন্দুধর্মে মীমাংসা[সম্পাদনা]

হিন্দুধর্মে দর্শন মীমাংসা-এর গুণীরা প্রশ্ন করেন ঈশ্বর কে?[৪৩] তারা প্রমাণ(সঠিক জ্ঞান অর্জনের জন্য ভারতীয় দর্শন মতে বিভিন্ন পন্থা) ব্যবহার করে, হিন্দুধর্মে বাকি দর্শনগুলোকে প্রশ্ন করতেন, এবং উত্তরগুলোকে বিশ্লেষণ করতেন। উদাহরণস্বরূপ: ন্যায় সম্প্রদায় যখন বলতেন ঈশ্বর হচ্ছেন সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, অব্যর্থ, এবং এই বিশ্বচরাচর ঈশ্বরের সৃষ্টি। মানুষের কাজ যেমন, তার অস্তিত্ব প্রমাণ করে, একইভাবে সৃষ্টির উপস্থিতি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বেরই প্রমাণ দেয়। মীমাংসা বিশেষজ্ঞরা তখন প্রশ্ন করতেন, এ মহাবিশ্ব ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন, কী কারণে? তারপর তারা বলতেন, এটা হতে পারে না। কারণ, যদি ঈশ্বর এই বিশ্ব সৃষ্টি করে থাকেন, তাহলে মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ পেত, কিন্তু বাস্তবে মানুষ এবং তাঁর আত্মা অনেক কষ্ট করে। মীমাংসা বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই মহাজগৎ নিখুঁত নয়। এজন্য তারা বলেন, আত্মার মোক্ষলাভের জন্য ঈশ্বরের কোনো প্রয়োজন নাই।[৪৩][৪৪]

হিন্দুধর্মে ন্যায় শাস্ত্র[সম্পাদনা]

প্রথমদিকের ন্যায়শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞরা ঈশ্বর নিয়ে নিজেদের মত একটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছিলেন। তাদের মতে ঈশ্বর হচ্ছন সৃষ্টিকর্তা, যিনি আশীর্বাদ করেন, অন্নদায়ী, মানুষের আকাঙ্খা পূর্ণ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ন্যায় বিশেষজ্ঞরা এই তত্ত্বকে বাতিল করে দেন এবং তাদের কার্যক্রমে ক্রমেই নাস্তিক্যবাদী ভাবনা ফুটে উঠে।[৪৫][৪৬] এর পরবর্তীতে ন্যায় শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞরা পুনরায় ঈশ্বর সম্পর্কে নিজেদের প্রশ্ন করে, ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে ক্রমাগত যুক্তি দেখিয়ে ঈশ্বরের অস্তিত্বের পক্ষেই একমত হন।[৪৭]

ন্যায়সূত্রের ৪র্থ অধ্যায় ১ নং পরিচ্ছেদে বলা হয়েছে, এ মহাবিশ্বে জড় জীব সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী? একারণে তারা ঈশ্বরকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে নানাবিধ তত্ত্ব দেন। ১৯-২১ নং শ্লোকে বলা হয়েছে ঈশ্বর আছেন এবং তিনিই একমাত্র আদি কারণ। এর পরের শ্লোকে এর বিপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তারপর ঈশ্বর সংক্রান্ত ধারণাকে তারা বাতিল করে দেয়।[৪৮]

सिद्धान्तसूत्र : ईश्वरः कारणम्, पुरुषकर्माफल्यदर्शनात्
पूर्वपक्षसूत्र : न, पुरुषकर्माभावे फ्लानिष्पत्तेः
सिद्धान्तसूत्र : तत्कारितत्वादहेतुः

প্রস্তাবনা সুত্র: ঈশ্বর হচ্ছে আদি কারণ। মানুষের কর্মের ফলে ঈশ্বর তার ফল নির্ধারণ করে।
দৃশ্যত বিরোধিতাকারী সূত্র: মানুষের কর্মই বাস্তবে তার ফল নির্ধারণ করে।
সমাপ্তি সূত্র: ঈশ্বরের, মানুষের কর্মফলে কোনো হাতই নেই।

— ন্যায় সূত্র, IV.1.19 - IV.1.21 [৪৮]

৫ম শতকে ন্যায় বিশেষজ্ঞ 'প্রস্তপাদ' ঈশ্বর নিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করেন। উদয়ন তার অনুসারী ছিলেন। তিনি তার শাস্ত্র ন্যায়কুসুমাঞ্জলিতে, শ্লোক ৪:১:২১ এর পুনরায় ব্যাখ্যা দেন। সেখানে তিনি বলেন, মানুষ বা তার কর্মের পরিবর্তে ঈশ্বর হবে। তারপর তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষে যে যুক্তিগুলো আছে সেগুলোর উন্নয়ন ঘটান।[৪৯] তিনি সহজাতভাবে এক্ষেত্রে বলেন, ঈশ্বরই আদিকারণ, সর্বজ্ঞ, অব্যর্থ, মানুষের মঙ্গলদায়ী, এই বিশ্বের সকল নিয়মের আধার, এবং তার রয়েছে অদৃশ্য ক্ষমতা, যার ফলে ভালো কর্ম করলে জীবের মঙ্গল হয়।[৪৯][৫০]

বিশিষ্টাদ্বৈতবাদিতা বেদান্ত[সম্পাদনা]

দ্বৈতবাদ এবং অদ্বৈতবাদ উভয় ধারণাই বিশিষ্টাদ্বৈতবাদিতার ঈশ্বরের মধ্যে দেখা যায়।[৫১] বিশিষ্টাদ্বৈতবাদের বিশেষজ্ঞ যেমন: রামানুজ ঈশ্বর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ঈশ্বর ব্রহ্মের মতই এ বিশ্বচরাচরের সৃষ্টিকর্তা।[৫২] বিষ্ণু অথবা তার অবতারই এখানে ঈশ্বর।[৫৩] তিনিই পরম কারণ, তিনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে বিস্তৃত।[৫১] বিশিষ্টাদ্বৈতবাদীদের মতে ঈশ্বর পাঁচরূপে বিস্তৃত হতে পারেন, তিনি মহাবিশ্বজুড়ে অবস্থান করেন। অবতাররূপে পৃথিবীতে অবস্থান করতে পারেন, জলের প্রবাহে অবস্থান করেন, সকল জীবের অভ্যন্তরে অবস্থান করেন এবং বিগ্রহের অভ্যন্তরে অবস্থান করেন।[৫৪] বিশিষ্টাদ্বৈতবাদীদের এই ব্যাখ্যা দেখে জন গ্রিমস বলেছেন, ঈশ্বর ছয়টি বিশেষ অলৌকিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। যা হল: 'জ্ঞান', শক্তি, ঈশ্বরত্ব, ক্ষমতা, বীর্য এবং তেজ।[৫৪]

রামানুজের বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী ধারণা হিন্দুধর্মে নানান ধরনের ভক্তিমূলক সংস্কৃতির (যেমন: শিবলিঙ্গ পুজো) জন্ম দেয়।[৫৫][৫৬]

অচিন্ত্য ভেদ-অভেদ[সম্পাদনা]

অচিন্ত্য ভেদ-অভেদ হচ্ছে বেদান্তের এমন এক দর্শন যেখানে "ধারণাতীতভাবে একই এবং পার্থক্যকে" পাঠ করা হয়। এই দর্শনে সৃষ্টি এবং স্রষ্টার মধ্যে সম্পর্ক থাকে। এই দর্শনের ঈশ্বর হলেন কৃষ্ণ[৫৭][৫৮]

সংস্কৃতে অচিন্ত্য শব্দের অর্থ হচ্ছে, চিন্তা করা যায় না এমন; অর্থাৎ ধারণাতীত। "ভেদ" শব্দের অর্থ হচ্ছে পার্থক্য, আর অভেদ শব্দের অর্থ হচ্ছে একই। অলৌকিক আত্মাকে ঈশ্বরের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আত্মার বৈশিষ্ট্য ঈশ্বরের মতই, এবং একইসাথে তার সংখ্যা ঈশ্বরের চেয়ে ভিন্ন। একেই বলা হয় 'অচিন্ত্য ভেদ-অভেদ' তত্ত্ব। ধারণাতীত, একই সাথে একই এবং ভিন্ন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

হিন্দুধর্ম ও আব্রাহামিক ধর্মে ঈশ্বরের তুলনা[সম্পাদনা]

ব্রহ্মের ধারণা আব্রাহামীয় ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পূর্ণ এক নয়। ব্রড বলেন যে আব্রাহামীয় ধর্মে “স্রষ্টা, জীব- অস্তিত্বের থেকে একটি পৃথক সত্ত্বা”। কিন্তু হিন্দুমতে ঈশ্বর, ব্রহ্মাণ্ড, মানুষ ও অন্যান্য জীবজগৎ একই সূত্রে গ্রথিত। ঈশ্বর আত্মারূপে সকল জীবের মাঝেই অবস্থান করেন। এই আত্মা শাশ্বত ও পরম সত্তা।[৫৯][৬০]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Monier Williams, Sanskrit-English dictionary, Search for Izvara, University of Cologne, Germany
  2. Dale Riepe (1961, Reprinted 1996), Naturalistic Tradition in Indian Thought, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১২৯৩২, pages 177-184, 208-215
  3. Ian Whicher, The Integrity of the Yoga Darsana, State University of New York press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৩৮১৫২, pages 82-86
  4. Mircea Eliade (2009), Yoga: Immortality and Freedom, Princeton University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৯১১৪২০৩৬, pages 73-76
  5. RK Pruthi (2004), Arya Samaj and Indian Civilization, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৭১৪১৭৮০৩, pages 5-6, 48-49
  6. Lloyd Pflueger, Person Purity and Power in Yogasutra, in Theory and Practice of Yoga (Editor: Knut Jacobsen), Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, pages 38-39
  7. Lance Nelson (1996), Living liberation in Shankara and classical Advaita, in Living Liberation in Hindu Thought (Editors: Andrew O. Fort, Patricia Y. Mumme), State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪২৭০৬৪, pages 38-39, 59 (footnote 105)
  8. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; jkoller নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  9. Arthur Anthony Macdonell (2004), A Practical Sanskrit Dictionary, Motilal Banarsidass, ISBN 98-8120820005, p 47
  10. Arthur Anthony acdonell (2004), A Prctical Sanskrit Dictionary, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮২০০০৫, page 270
  11. Apte Sanskrit-English dictionary, Search for Izvara, University of Cologne, Germany
  12. James Lochtefeld, "Ishvara", The Illustrated Encyclopedia of Hinduism, Vol. 1: A–M, Rosen Publishing. আইএসবিএন ০-৮২৩৯-২২৮৭-১, page 306
  13. Madhav Deshpande (1991), Sense and Syntax in Vedic (Editors: Joel Brereton and Stephenie Jamison), Volumes 4-5, Brill, আইএসবিএন ৯৭৮-৯০০৪০৯৩৫৬০, pages 23-27
  14. Patrick Olivelle (2006), Between the Empires : Society in India 300 BCE to 400 CE: Society in India, Oxford University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৫৩০৫৩২৬, page 176
  15. Roshen Dalal (২০১০)। Hinduism: An Alphabetical Guide। Penguin Books। পৃষ্ঠা 376। আইএসবিএন 978-0-14-341421-6 
  16. Michele Marie Desmarais (2008), Changing Minds : Mind, Consciousness And Identity In Patanjali's Yoga-Sutra, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩৩৩৬৪, page 131
  17. Knut Jacobsen (2008), Theory and Practice of Yoga : 'Essays in Honour of Gerald James Larson, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, page 77
  18. A Malinar (2014), Current Approaches: Articles on Key Themes, in The Bloomsbury Companion to Hindu Studies (Editor: Jessica Frazier), Bloomsbury Academic, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৭২৫১১৫১৫, page 79
  19. Zimmer (1951), Philosophies of India, Reprinted by Routledge in 2008, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫৪৬২৩২৭, pages 242-243, 309-311
  20. Karel Werner (1997), A Popular Dictionary of Hinduism, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭০০৭১০৪৯২, page 54
  21. Radhakrishnan and Moore (1967, Reprinted 1989), A Source Book in Indian Philosophy, Princeton University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৯১০১৯৫৮১, pages 37-39, 401-403, 498-503
  22. RC Zaehner (1975), Our savage god: The perverse use of eastern thought, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৩৬২০৬১১১, pages 69-72
  23. RC Zaehner (1966), Hinduism, Oxford University Press, 1980 edition: pages 126-129, Reprinted in 1983 as আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৮৮৮০১২৭
  24. Mike Burley (2012), Classical Samkhya and Yoga - An Indian Metaphysics of Experience, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫৬৪৮৮৭৫, page 39
  25. Richard Garbe (2013), Die Samkhya-Philosophie, Indische Philosophie Volume 11, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৮৪০৩০৬১৫, pages 25-27 (in German)
  26. Knut Jacobsen (2008), Theory and Practice of Yoga : 'Essays in Honour of Gerald James Larson, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, pages 15-16
  27. Knut Jacobsen (2008), Theory and Practice of Yoga : 'Essays in Honour of Gerald James Larson, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, pages 76-77
  28. Hariharānanda Āraṇya (2007), Parabhaktisutra, Aporisms on Sublime Devotion, (Translator: A Chatterjee), in Divine Hymns with Supreme Devotional Aphorisms, Kapil Math Press, Kolkata, pages 55-93; Hariharānanda Āraṇya (2007), Eternally Liberated Isvara and Purusa Principle, in Divine Hymns with Supreme Devotional Aphorisms, Kapil Math Press, Kolkata, pages 126-129
  29. Ian Whicher (1999), The Integrity of the Yoga Darsana: A Reconsideration of Classical Yoga, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৩৮১৫২, page 86
  30. Āgāśe, K. S. (১৯০৪)। Pātañjalayogasūtrāṇi। Puṇe: Ānandāśrama। পৃষ্ঠা 25। 
  31. aparAmRSTa[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], kleza, karma, vipaka and ashaya ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে; Sanskrit English Dictionary, Koeln University, Germany
  32. Lloyd Pflueger (2008), Person Purity and Power in Yogasutra, in Theory and Practice of Yoga (Editor: Knut Jacobsen), Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, pages 31-45
  33. Knut Jacobsen (2008), Theory and Practice of Yoga : 'Essays in Honour of Gerald James Larson, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮৩২৩২৯, page 77
  34. Klaus Klostermaier (2007), A Survey of Hinduism, Third Edition, State University of New York, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৭০৮২৪, page 337
  35. A Goel (1984), Indian philosophy: Nyāya-Vaiśeṣika and modern science, Sterling, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৬৫৯০২৭৮৭, pages 149-151
  36. R Collins (2000), The sociology of philosophies, Harvard University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৭৪০০১৮৭৯, page 836
  37. Eric Reynolds (1975), On the relationship of Advaita Vedanta and Madhyamika Buddhism, PhD Thesis awarded by University of British Columbia, Department of Religious Studies, pages 11, 90-91, 121-127
  38. William Indich (2000), Consciousness in Advaita Vedanta, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১২৫১২, page 23-25
  39. Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Volume 2, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 547-551
  40. R Prasad (2009, A Historical-developmental Study of Classical Indan Philosophy of Morals, Concept Publishing, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৮০৬৯৫৯৫৭, pages 345-347
  41. Oliver Leaman (2000), Eastern Philosophy: Key Readings, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫১৭৩৫৮২, page 251
  42. Thomas Padiyath (2014), The Metaphysics of Becoming, De Gruyter, আইএসবিএন ৯৭৮-৩১১০৩৪২৫৫০, pages 155-157
  43. FX Clooney (1997), What’s a god? The quest for the right understanding of devatā in Brāhmaṅical ritual theory (Mīmāṃsā), International Journal of Hindu Studies, August 1997, Volume 1, Issue 2, pages 337-385
  44. P. Bilimoria (2001), Hindu doubts about God: Towards Mimamsa Deconstruction, in Philosophy of Religion: Indian Philosophy (Editor: Roy Perrett), Volume 4, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১৫৩-৩৬১১-২, pages 87-106
  45. John Clayton (2010), Religions, Reasons and Gods: Essays in Cross-cultural Philosophy of Religion, Cambridge University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৫২১১২৬২৭৪, page 150
  46. G Oberhammer (1965), Zum problem des Gottesbeweises in der ndischen Philosophie, Numen, 12: 1-34
  47. Francis X. Clooney (2010), Hindu God, Christian God: How Reason Helps Break Down the Boundaries, Oxford University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৯৭৩৮৭২৪, pages 18-19, 35-39
  48. Original Sanskrit: Nyayasutra Anand Ashram Sanskrit Granthvali, pages 290-292; Alternate Archive ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে
    English translation: Francis X. Clooney (2010), Hindu God, Christian God: How Reason Helps Break Down the Boundaries, Oxford University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৯৭৩৮৭২৪, page 37
  49. Sharma, C. (1997). A Critical Survey of Indian Philosophy, Delhi: Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৮১-২০৮-০৩৬৫-৫, pp. 209-10
  50. VR Rao (1987), Selected Doctrines from Indian Philosophy, আইএসবিএন ৮১-৭০৯৯০০০৯, pages 11-12
  51. McCasland et al. (1969), Religions of the world, Random House, আইএসবিএন ৯৭৮-০৩৯৪৩০৩৮৪০, page 471
  52. S. M. Srinivasa Chari (১৯৮৮)। Tattvamuktākalāpa। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 212, 231–233। আইএসবিএন 978-81-208-0266-7 
  53. S. M. Srinivasa Chari (১৯৮৮)। Tattvamuktākalāpa। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 18, 228, 340–341। আইএসবিএন 978-81-208-0266-7 
  54. John Grimes (1996), A Concise Dictionary of Indian Philosophy: Sanskrit Terms Defined in English, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৩০৬৭৫, page 143
  55. Thomas Padiyath (2014), The Metaphysics of Becoming, De Gruyter, আইএসবিএন ৯৭৮-৩১১০৩৪২৫৫০, page 151
  56. Carl Olson (2007), The Many Colors of Hinduism: A Thematic-historical Introduction, Rutgers University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮১৩৫৪০৬৮৯, pages 243-244
  57. Kaviraja, K.G.। Sri Caitanya-caritamrita. Bengali text, translation, and commentary by AC Bhaktivedanta Swami PrabhupadaBhaktivedanta Book Trust Madhya 20.108-109 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ মে ২০০৮ তারিখে "It is the living entity's constitutional position to be an eternal servant of Krishna because he is the marginal energy of Krishna and a manifestation simultaneously one with and different from the Lord, like a molecular particle of sunshine or fire."
  58. Kṛṣṇa Upaniṣad 1.25: ...na bhinnam. nā bhinnamābhirbhinno na vai vibhuḥ
  59. Jeffrey Brodd (2003), World Religions: A Voyage of Discovery, Saint Mary's Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮৮৪৮৯৭২৫৫, page 43
  60. Christopher John Fuller (2004), The Camphor Flame: Popular Hinduism and Society in India, Princeton University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৯১১২০৪৮৫, pages 30-31, Quote: "Crucial in Hindu polytheism is the relationship between the deities and humanity. Unlike Jewish, Christian and Islamic monotheism, predicated on the otherness of God and either his total separation from man and his singular incarnation, Hinduism postulates no absolute distinction between deities and human beings. The idea that all deities are truly one is, moreover, easily extended to proclaim that all human beings are in reality also forms of one supreme deity - Brahman, the Absolute of philosophical Hinduism. In practice, this abstract monist doctrine rarely belongs to an ordinary Hindu's statements, but examples of permeability between the divine and human can be easily found in popular Hinduism in many unremarkable contexts".