ত্রিযোগ

ত্রিযোগ (সংস্কৃত: त्रियोगः) বা ত্রিমার্গ (সংস্কৃত: त्रिमार्ग) হল আধ্যাত্মিক মুক্তির জন্য ভগবদ্গীতায় উল্লিখিত তিনটি পরিত্রাণতত্ত্বীয় পথ, এবং এগুলো হলো - কর্মযোগ, ভক্তিযোগ ও জ্ঞানযোগ। রাজযোগকে কখনও কখনও "চতুর্থ যোগ" হিসেবে যোগ করা হয়।

আলোচনা

মধ্যযুগের হিন্দু দার্শনিকরা এই তিনটি পথের প্রকৃতি এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন।

আদি শঙ্কর মূলত জ্ঞানযোগের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন, যাকে তিনি জ্ঞান বা বিদ্যা অর্জন হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি কর্মযোগকে নিকৃষ্ট মনে করতেন। তিনি যে শিব, বিষ্ণু, দেবী, গণেশ ও কার্তিকের মতো ব্যক্তিগত দেবতাদের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত কিছু স্তোত্র লিখেছেন তা ভক্তিযোগের প্রতি তার সখ্যতা তুলে ধরে।

দ্বাদশ শতাব্দীর দার্শনিক রামানুজ তার পূর্বসূরি যমুনাচার্যের ব্যাখ্যা করে তিনটি যোগকে বিবেচনা করেছিলেন। রামানুজের ব্যাখ্যায়, ভক্তিযোগ মোক্ষের প্রত্যক্ষ পথ বলে মনে হয়, যা শুধুমাত্র তাদের জন্য উপলব্ধ যাদের অভ্যন্তরীণ অনুষদ ইতিমধ্যেই কর্মযোগ ও জ্ঞানযোগ উভয়ের দ্বারা প্রশিক্ষিত হয়েছে।

রাজযোগ বা "ধ্যানের পথ" কে কখনও কখনও "চতুর্থ যোগ" হিসেবে যোগ করা হয়। এটি হল পতঞ্জলির যোগসূত্রে উপস্থাপিত ধ্রুপদী যোগ। পতঞ্জলির পদ্ধতিটি রাজযোগ নামে পরিচিত হয়, প্রায় ১৫ শতকে, কারণযোগ শব্দটি "ধর্মীয় পথ"-এর সাধারণ ধারণার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

এই চারটি পথে বিভক্ত হিন্দু একেশ্বরবাদের পদ্ধতিগত উপস্থাপনা বা "যোগসমূহ" স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর রাজযোগ বইতে সমর্থন করেছেন। এগুলিকে ঈশ্বরের কাছে চারটি পথ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা চারটি মানুষের প্রকৃতির জন্য উপযুক্ত। সক্রিয়, আবেগপ্রবণ, দার্শনিক ও রহস্যবাদী।