শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত
![]() শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃতের ৫ খণ্ডের প্রচ্ছদ | |
লেখক | মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত |
---|---|
দেশ | ভারত |
ভাষা | বাংলা |
ধরন | আধ্যাত্মিকতা |
প্রকাশক | কথামৃত ভবন |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮, ১৯১০ ও ১৯৩২ |
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত বাংলা ভাষায় লেখা একটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৫৪-১৯৩২) পাঁচ খণ্ডে এই বইটি রচনা করেন। এই বইতে উনিশ শতকের হিন্দু ধর্মগুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের কথোপকথন ও কার্যকলাপের বিবরণী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কথামৃত-এর পাঁচটি খণ্ড যথাক্রমে ১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮, ১৯১০ ও ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিকে বাংলা সাহিত্যের একটি ধ্রুপদি গ্রন্থ[১] বলে মনে করা হয়। ভক্ত হিন্দুরা বইটিকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দেন।[২]
রচনাপদ্ধতি ও ইতিহাস[সম্পাদনা]

মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (যিনি "শ্রীম" ছদ্মনামে কথামৃত রচনা করেন) ছিলেন কলকাতার রিপন কলেজের অধ্যাপক। কলকাতার একাধিক স্কুলে তিনি শিক্ষকতাও করেছিলেন। তের বছর বয়স থেকে তিনি ডায়েরি লিখতেন।[৩] ১৮৮২ সালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সঙ্গে তার আলাপ হয়। রামকৃষ্ণের ব্যক্তিত্বে আকর্ষিত হয়ে মহেন্দ্রনাথ তার কথোপকথন ও কার্যকলাপের স্টেনোগ্রাফিক রেকর্ড রাখতে শুরু করেন নিজের ডায়েরিতে। এই রেকর্ডটিই পরবর্তীকালে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত নামক বইয়ের আকার নেয়।[২][৪] প্রথম দিকে মহেন্দ্রনাথ যখন ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিলেন, তখন তার সেটি প্রকাশের কোনো পরিকল্পনা ছিল না।[৪][৫] রচনাপদ্ধতি সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন, "বাড়ি ফেরার পর স্মৃতি থেকে সব কিছু লিখে রাখতাম। মাঝে মাঝে সারা রাতও জেগে থাকতে হত...মাঝে মাঝে টানা সাত দিন বসে থেকে লিখতে হত। গানগুলিকে স্মরণে আনতে হত, কোন ক্রমে সেগুলি গাওয়া হয়েছিল, সেগুলিও মনে করতে হত, সমাধি ও অন্যান্য সব ঘটনার কথা মনে করতে হত।"[৪] কথামৃতের প্রতিটি পরিচ্ছেদে মহেন্দ্রনাথ তথ্যের পাশাপাশি সময় ও স্থানের উল্লেখ করেছেন।[৬] "কথামৃত" শব্দটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ ভাগবত পুরাণ-এর ১০।৩১।৯ সংখ্যক শ্লোক থেকে গৃহীত।[৭]
"কথামৃত-এর প্রথম খণ্ড (১৯০২) প্রকাশের আগে আ লিফ ফ্রম দ্য গসপেল অফ শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৯৭) নামে একটি ছোট ইংরেজি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়।[৮] রামকৃষ্ণ পরমহংসের মৃত্যুর পর তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলে মহেন্দ্রনাথ নিজের ডায়েরিটি প্রকাশের উদ্যোগ নেন। তিনি ভেবেছিলেন এর মাধ্যমে রামকৃষ্ণের চিন্তাভাবনার কথা সঠিকভাবে লোকসমক্ষে প্রচার করা যাবে। ডায়েরি প্রকাশের আগে তিনি সারদা দেবীর অনুমতিও নেন।[৯] ১৮৯৮ থেকে ১৯০২ সালের মধ্যে তাঁর ডায়েরির অংশবিশেষ বঙ্গদর্শন, উদ্বোধন, হিন্দু পত্রিকা, সাহিত্য পত্রিকা, জন্মভূমি প্রভৃতি প্রথম সারির সাময়িকপত্রে প্রকাশিত হয়।[৯] প্রথম চারটি খণ্ড যথাক্রমে ১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮ ও ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয়। মহেন্দ্রনাথের অসুস্থতার জন্য পঞ্চম খণ্ডটির প্রকাশ বিলম্বিত হয়। অবশেষে ১৯৩২ সালে পঞ্চম খণ্ডটি প্রকাশিত হয়।[১০] ১৯৩২ সালে মারা যাওয়ার আগে মহেন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন ছয় বা সাতটি খণ্ড পর্যন্ত প্রকাশের পর তিনি গোটা বইটির বিষয়বস্তু কালানুক্রমিকভাবে সাজাবেন।[৬][১০]
পাদটীকা[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- Dasgupta, R.K (১৯৮৬)। Sri Sri Ramakrishna Kathamrita as a religious classic। Bulletin of the Ramakrishna Mission Institute of Culture। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Harding, Elizabeth U. (১৯৯৮)। Kali, the Dark Goddess of Dakshineswar। Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 8120814509।
- Hixon, Lex (২০০২)। Great Swan: Meetings With Ramakrishna। Burdett, N.Y.: Larson Publications। আইএসবিএন 0-943914-80-9।
- Jackson, Carl T. (১৯৯৪)। Vedanta for the West। Indiana University Press। আইএসবিএন 0-253-33098-X।
- Gupta, Mahendranath ("M.") (২০০১)। Sri Sri Ramakrishna Kathamrita। Sri Ma Trust। আইএসবিএন 978-81-88343-00-3। ১২ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১২। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - D.P. Gupta; D.K. Sengupta, সম্পাদকগণ (২০০৪)। Sri Sri Ramakrishna Kathamrita Centenary Memorial (PDF)। Kolkata: Sri Ma Trust। ১৬ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১২।
- Sarkar, Sumit (১৯৯৩)। An exploration of the Ramakrishna Vivekananda tradition। Indian Institute of Advanced Study।
- Sen, Amiya P. (২০০৬)। "Sri Ramakrishna, the Kathamrita and the Calcutta middle classes: an old problematic revisited"। Postcolonial Studies। 9 (2): 165–177। ডিওআই:10.1080/13688790600657835। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Sen, Amiya P. (২০০১)। "Three essays on Sri Ramakrishna and his times"। Indian Institute of Advanced Study।
- Tyagananda; Vrajaprana (২০১০)। Interpreting Ramakrishna: Kali's Child Revisited। Delhi: Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 410। আইএসবিএন 9788120834996।