মূসার সহিফা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মূসার সহিফা (আরবি: صحف موسى) হলো মূসার ওপর অবতীর্ণ কুরআনে দু'বার উল্লেখিত ধর্মগ্রন্থ। এগুলো ইসলামের ধর্মীয় ধর্মগ্রন্থগুলোর (আসমানি কিতাবের) অন্যতম। এখন বিশ্বাস করা হয় যে সেসব কিতাব বিকৃত হয়েছে বা হারিয়ে গিয়েছে। এই ধর্মগ্রন্থগুলি, মুসলমানদের মতে, তা মূল কিতাব তাওরাত নয়। বরং তা একটি সহিফা

তবে একটি প্রাচীন পাঠ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সহিফাগুলো মূসার নিজের এবং তার অনুসারীদের দ্বারা লিখিত যা তার নবুয়ত জীবনে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণামূলক কিছু প্রকাশনা যা কিনা তার মৃত্যুর পরেও লেখা হয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পটভূমি[সম্পাদনা]

কুর’আনে দুটি মক্কি সূরায়, ইব্রাহিমের এবং মূসার কিতাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উক্ত সূরা ইশ্বরের বার্তার সত্যতা এবং ইব্রাহিম ও মূসার কাছে প্রেরিত বিধি-বিধানের অস্তিত্বের সত্যতা উল্লেখ করে। এগুলোকে সচরাচর সুহুফ বা (বহুবচনে) সহিফা বলে উল্লেখ করা হলেও আবদুল্লাহ ইউসুফ আলি, মারমাদুখে পিকথল প্রমূখ অনুবাদকগণ এগুলোকে "ইব্রাহিম ও মূসার কিতাব" হিসেবে অনুবাদ করেছেন।[১]

কুর’আনে উল্লেখ[সম্পাদনা]

মূসা, যিনি ইসলাম ধর্মমতে আল্লাহর ধার্মিক নবী ছিলেন, তার জীবদ্দশায় অনেকগুলি অলৌকিকতা লাভ করেছিলেন - যার বিষয়বস্তু এই কিতাবে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

  • ...নিঃসন্দেহে এ পূর্ববর্তী কিতাবে রয়েছে; ইব্রাহিম ও মূসার কিতাবে....।

    — কুর’আন, সূরা ৮৭ (আল আ’লা), আয়াত ১৮-১৯[২]
  • "...নাকি তাকে (তা) অবগত করা হয়নি মূসার কিতাবে? এবং ইব্রাহিমের কিতাবে; যে তার দায়িত্ব পালন করেছিল?

    — কুর’আন, সূরা ৫৩ (আল-নাজম), আয়াত ৩৬-৩৭[৩]

পরিচিতি[সম্পাদনা]

অনেক পণ্ডিতই অনুমান করেছেন যে "মূসার বইগুলো (সহিফা)" বলতে তার ওপর নাযিলকৃত তাওরাত বা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থকে বোঝায় কিনা। কিন্তু ইসলামি বিশ্বাস যে, তাওরাত মূসার ওপর অবতীর্ণ মূল একক কিতাব ছিল, অনেকেই[কে?] মনে করেন বই শব্দটির বহুবচনবাচক সহিফা শব্দটির উল্লেখ থাকায় তা তাওরাতকে বোঝায় না। কুরআনের ভাষ্যকার আবদুল্লাহ ইউসুফ আলী উল্লেখ করেছেন যে, এটি ইসরাঈলের হারিয়ে যাওয়া (বিকৃত হওয়া) বইয়ের সম্ভাব্য উল্লেখ হতে পারে, যা বাইবেলে উল্লিখিত।

তবে এটি সুপরিচিত যে ইহুদিরা সাধারণত তাওরাতকে মূসার পাঁচটি খণ্ডের পুস্তক বলে উল্লেখ করে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে, পঞ্চম গ্রন্থ ডিউটারোনমি বিভিন্ন দিক থেকে স্বতন্ত্র এবং এটিকে 'মিশনেহ তাওরাত' হিসাবে উল্লেখ করা হয় যা তাওরাতের পর্যালোচনা হিসেবে বিবেচ্য। এখানে একটি প্রাচীন নির্দেশিকাও রয়েছে যাতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় লেখকদের (ইহুদিদের কথিত পঞ্চখণ্ডের তাওরাতের) প্রতিটি বইয়ের মাঝে চারটি লাইন ফাঁকা রেখা রেখে দেওয়ার প্রচলন আছে। এই রীতিনীতি মুহাম্মদের কয়েকশো বছর পূর্বে প্রণীত করেছিলেন। এই কারণেই মেনে নেয়া যায় না যে, কুর'আনে সহিফা বলতে তাওরাতকে বোঝানো হয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Marmaduke Pickthall, The Meaning of the Glorious Qur'an [মহিমান্বিত কুর’আনের অর্থ]; Abdullah Yusuf Ali, The Holy Qur'an: Text, Translation and Commentary [পবিত্র কুর’আন: পাঠ, অনুবাদ, ব্যাখ্যা]
  2. কুরআন ৮৭:১৮–১৯
  3. কুরআন ৫৩:৩৬–৩৭