বিষয়বস্তুতে চলুন

আরব জাতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আরব জাতি
العرب
আল্-আরব
মোট জনসংখ্যা
৪২–৪৫ কোটি[]
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
 আরব লীগ৪০ কোটি[]
 ব্রাজিল১কোটি[]
 ফ্রান্স৫কোটি ৮৮লাখ[]
 ইন্দোনেশিয়া৫০লাখ
 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৩৫লাখ[]
 শ্রীলঙ্কা১৮লাখ ৭হাজার[]
 ইসরায়েল১৬লাখ ৫৮হাজার[]
ভাষা
আরবি, ফরাসি, ইংরেজি, হিব্রু
ধর্ম
ইসলাম (প্রধানত সুন্নি, সংখ্যালঘু শিয়া), পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্ম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্ম
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
অন্য সেমিটিক আর ভিন্ন আফ্রো-এশীয় জাতিসমূহ

আরব (আরবি: عَرَب, DIN 31635: ʿarab, আরবি: [ˈʕɑ.rɑb]; একবচনে: عَرَبِيٌّ, ʿarabiyyun, উচ্চারণ [ʕɑ.rɑˈbɪj.jʊn]) একটি জাতিগোষ্ঠী,[] যাঁদের জাতিগত, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভিত্তিতে একটি দৃঢ় পরিচয় গড়ে উঠেছে। এই পরিচয় ইতিহাস, জাতীয়তাবাদ, ভূগোল ও ধর্মীয় প্রভাব দ্বারা গঠিত, যা আরবদের অনন্য রীতিনীতি, শিল্প, খাবার এবং সামাজিক পরিচয়কে রূপ দিয়েছে।[]

আরব অঞ্চলপশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা—এ আরবরা প্রধানত বসবাস করেন। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গুরুত্বপূর্ণ আরব প্রবাসী জনগোষ্ঠী রয়েছে।[]

আরবরা সহস্রাব্দকাল ধরে ঊর্বর উপত্যকায় বসবাস করে আসছেন। খ্রিস্টপূর্ব ৯শ শতকে আসিরীয়রা আরবদের লেভান্ট, মেসোপটেমিয়াআরবের অধিবাসী হিসেবে লিখিতভাবে উল্লেখ করে।[১০] খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে আরবরা দিলমুন, গেরহা, মাগান প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা গড়ে তোলে এবং মেসোপটেমিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্যে বড় ভূমিকা পালন করে।[১১]

মিদিয়ান, আদ এবং থমূদ—এই প্রাচীন গোত্রগুলির উল্লেখ বাইবেল এবং কুরআনে রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ সালের দিকে কেদারীয়রা দক্ষিণ লেভান্ট ও নিম্ন মিশর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করত।[১২] খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১১০ পর্যন্ত আরবের দক্ষিণাঞ্চলে সাবা, লিহিয়ান, মিনিয়ান, কাতাবান, হাদরামাউত, আওসানহিমিয়ার প্রভৃতি রাজ্য গড়ে ওঠে।[১৩] আব্রাহামীয় ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, আরবরা ইব্রাহিম নবীর পুত্র ইসমাইলের বংশধর।[১৪]

নবাতীয়রা খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সালে পেট্রা নগরকে রাজধানী করে একটি রাজ্য স্থাপন করে। ২৭১ খ্রিস্টাব্দে পালমিরা নগর ছিল জেনোবিয়া রানীর নেতৃত্বাধীন পালমিরিন সাম্রাজ্যের রাজধানী, যা সিরিয়া, আরব পেত্রেয়া, মিশরআনাতোলিয়ার বড় অংশ দখলে রাখে।[১৫] হেলেনীয় ও রোমান যুগে ইতুরিয়ান, ওস্রোয়েন এবং হাত্রা ছিল আরব রাজ্য।[১৬] সাসানীয়রা আরবদের অঞ্চলকে "আরবায়িস্তান" নামে স্বীকৃতি দেয়।[১৭] এমেসা শহরে এমেসেন আরব রাজবংশের শাসন চলত।[১৮] উত্তর মেসোপটেমিয়া ও লেভান্ট অঞ্চলে তানুখি, সালিহি, লাখমিদ, কিন্দা এবং ঘাসানিদ আরব গোত্রগুলির প্রভাব ছিল, যাঁরা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।[১৯]

মধ্যযুগে ইসলামের প্রসার আরবদের একত্রিত করে। রাশিদুন, উমাইয়া, আব্বাসীয়, এবং ফাতিমীয় খিলাফত গঠন হয় এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যসাসানীয়দের পতন ঘটে। আরব শাসিত এলাকা দক্ষিণ ফ্রান্স থেকে চীন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, যা ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সাম্রাজ্য গঠনে সহায়ক হয়।[২০]

২০শ শতকের গোড়ার দিকে মহান আরব বিদ্রোহ ওসমানীয়দের পতনে সাহায্য করে। এরপর ১৯৪৫ সালের ২২ মার্চ আরব লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার সনদ একীভূত আরব মাতৃভূমির নীতিকে সমর্থন করে।[২১]

মরক্কো থেকে ইরাক পর্যন্ত আরবরা জাতিগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক ঐক্যের মাধ্যমে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় বহন করে, যা তাঁদের মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে পৃথক করে।[২২] আরবদের নিজস্ব সাহিত্য, সঙ্গীত, নৃত্য, খাদ্য, পোশাক, স্থাপত্য, শিল্পধর্মীয় ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁরা বিজ্ঞান, দর্শন, ব্যবসা, রাজনীতি, চিকিৎসা, নাটক, চলচ্চিত্রসহ বহু ক্ষেত্রে মানব সভ্যতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।[২৩]

ইসলামের আগে, অধিকাংশ আরব বহুদেববাদে বিশ্বাস করতেন। তবে কিছু গোত্র ইহুদিখ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে এবং কিছু ব্যক্তি, যাঁরা হানিফ নামে পরিচিত, একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন।[২৪] বর্তমানে প্রায় ৯৩% আরব মুসলিম, এবং বাকিরা মূলত আরব খ্রিস্টান, দ্রুজবাহাই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।[২৫]

শব্দমূল

[সম্পাদনা]
নাবাতীয় লিপিতে খোদাই করা ইমরু' আল-কায়সের সমাধিফলক, যেখানে তাঁকে "সমস্ত আরবের রাজা" বলা হয়েছে। এটি ৩২৮ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর তারিখে হাওরানে (বর্তমান দক্ষিণ সিরিয়া) অবস্থিত নিমরা শহরে খুঁজে পাওয়া একটি বেসল্ট পাথরে উৎকীর্ণ।

আরব শব্দটির প্রাচীনতম প্রামাণ্য ব্যবহার পাওয়া যায় আসিরীয়দের আরামের জয়যাত্রা বিষয়ক একটি আক্কাদীয় ভাষায় লেখা লিপিতে, যা কুরখ স্তম্ভ নামে পরিচিত (খ্রিস্টপূর্ব ৯ম শতক)। সেখানে আরব শব্দটি আরব উপদ্বীপের বেদুইনদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে, যাঁরা রাজা গিন্দিবুর নেতৃত্বে আসিরীয়দের বিরুদ্ধে গঠিত একটি জোটের অংশ ছিলেন।[২৬]

ʾআʿরাব শব্দটি আজও বেদুইনদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ʿআরাব শব্দটি আরবদের সাধারণ অর্থে নির্দেশ করে।[২৭] ইসলাম-পূর্ব সাবায়ান ভাষায় প্রায় ৪০ বার এই দুই শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। ʿআরাব শব্দটি হিমিয়ার রাজাদের উপাধিতেও ব্যবহৃত হয়েছে, বিশেষত 'আবু কারিব আসআদ' থেকে শুরু করে 'মাদিকারিব ইয়াঅফুর' পর্যন্ত। সাবায়ান ব্যাকরণ অনুসারে, ʾআʿরাব শব্দটি ʿআরাব শব্দের ব্যুৎপত্তিগত রূপ। এই শব্দটি কুরআনেও ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে মদীনার আশেপাশে বসবাসকারী কিছু জনগোষ্ঠীকে বোঝাতে এটি ব্যবহৃত হয়েছে। এটি সম্ভবত দক্ষিণ আরবীয় উৎস থেকে কুরআনের ভাষায় আগত একটি ধার শব্দ।[২৮]

আরব জাতীয় পরিচয়ের প্রাচীনতম সাক্ষ্য পাওয়া যায় ৩২৮ খ্রিস্টাব্দে নাবাতীয় লিপিতে লিখিত একটি প্রাচীন আরবি শিলালিপিতে। এখানে ইমরু' আল-কায়সকে “সমস্ত আরবের রাজা” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[২৯][৩০]

হেরোডোটাস আরবদের উল্লেখ করেছেন সিনাই, দক্ষিণ ফিলিস্তিন এবং ধূপ উৎপাদনকারী অঞ্চলে (বর্তমান দক্ষিণ আরব)। প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক আগাথারখিদিস, ডিওডোরাস সিকুলুস এবং স্ত্রাবো আরবদের মেসোপটেমিয়া (বিশেষত ইউফ্রেটিস নদীর তীরবর্তী অঞ্চল), মিশর (সিনাই ও লোহিত সাগর উপকূল), দক্ষিণ জর্ডান (নাবাতীয়রা), সিরীয় মরুভূমি এবং পূর্ব আরব অঞ্চলে (যেমন গেরহা) বসবাসকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইয়েমেনে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের কিছু শিলালিপিতে ‘আরব’ শব্দটির ব্যবহার পাওয়া যায়।[৩১]

একটি জনপ্রিয় আরব ব্যাখ্যা অনুসারে, আরব শব্দটি ইয়ারুব নামক এক পৌরাণিক পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে, যিনি প্রথম আরবি ভাষায় কথা বলতেন। আবু মুহাম্মদ আল-হাসান আল-হামদানির মতে, মেসোপটেমিয়াবাসীরা আরবদের 'ঘারাব' বা 'পশ্চিমবাসী' নামে ডাকত, কারণ বেদুইনরা তখন মেসোপটেমিয়ার পশ্চিমে বাস করত। পরবর্তীতে এ শব্দটি বিকৃত হয়ে আরব হয়েছে।

আরেকটি মত অনুযায়ী, আল-মাসউদি মনে করেন আরব শব্দটি মূলত ইসমাইলীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হতো, যাঁরা আরাবা অঞ্চলে বাস করতেন। বাইবেলভিত্তিক ব্যুৎপত্তি অনুসারে, হিব্রু আরবি শব্দটি মরুভূমি বা 'অরণ্য' অর্থে ব্যবহৃত 'আরাভা' শব্দ থেকে উদ্ভূত।

ʿআরব শব্দটির মূল ʿ-r-b সেমিটিক ভাষাগুলিতে একাধিক অর্থ বহন করে, যেমন: 'পশ্চিম', 'সূর্যাস্ত', 'মরুভূমি', 'মিশ্রণ', 'বণিক', এমনকি 'কালো কাক'। এইসব অর্থের মধ্যে একাধিকটি 'আরব' শব্দটির উৎপত্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে করা হয়। কিছু ভাষাবিদ এই শব্দের উৎপত্তিকে ʿ-B-R (অর্থাৎ ‘পরিভ্রমণ’ বা 'চলা-ফেরা') মূল শব্দ থেকে উদ্ভূত মেটাথেটিক রূপ বলেও মনে করেন।[৩২]

উৎপত্তি

[সম্পাদনা]
চিত্রশিল্পী ফ্রঁসোয়া-জোসেফ নাভেজ কর্তৃক অঙ্কিত মরুভূমিতে হাজিরা ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (১৮১৯)

আরবি একটি সেমিটিক ভাষা, যা আফ্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। অধিকাংশ ভাষাবিদ মনে করেন, আরব উপদ্বীপই সেমিটিক ভাষার মূল উৎপত্তিস্থল বা উরহেইমাট[৩৩][৩৪][৩৫][৩৬] যদিও কিছু গবেষক লেভান্ট অঞ্চলকেও সম্ভাব্য উৎসস্থল হিসেবে বিবেচনা করেন।[৩৭]

প্রাচীন সেমিটিকভাষী জাতিগণ প্রাচীন নিকটপ্রাচ্যে—যেমন লেভান্ট, মেসোপটেমিয়া ও আরব উপদ্বীপে—খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে প্রাচীনত্বের শেষ পর্যন্ত বসবাস করতেন। প্রোটো-সেমিটিক ভাষা সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দে আরব উপদ্বীপে পৌঁছে এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে।[৩৮] পুরাতন আরবি সেমিটিক ভাষার কেন্দ্রীয় শাখা থেকে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের শুরুতে আলাদা হতে শুরু করে।[৩৯]

কেন্দ্রীয় সেমিটিক ভাষার মধ্যে রয়েছে আরবি, আরামীয় ভাষা, কানানীয়, ফিনিশীয় ভাষা, হিব্রু ভাষা প্রভৃতি।[৪০][৪১] এই ভাষাগুলোর উৎপত্তি আরব উপদ্বীপে এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে বলে একটি তত্ত্ব বলছে, যেমন আক্কাদীয়রা খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের শেষ দিকে মেসোপটেমিয়ায় প্রবেশ করে।[৩৮]

সেমিটিক জনগোষ্ঠীর উৎস বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে বিস্তৃত—যেমন মেসোপটেমিয়া, লেভান্ট, আরব উপদ্বীপ ও উত্তর আফ্রিকা। কেউ কেউ মনে করেন সেমিটিক ভাষার উৎপত্তি লেভান্টে খ্রিস্টপূর্ব ৩৮০০ সালের দিকে, এবং সেখান থেকে তা আফ্রিকার শৃঙ্গ ও উত্তর আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে।[৪২]

ইসলামী ও ইহুদি ধর্মীয় বর্ণনা অনুসারে, ইব্রাহিম নবীহাজিরার পুত্র ইসমাইল আরবদের পূর্বপুরুষ।[৪৩] তাঁকে ইসলামের নবী মুহাম্মদ-এর বংশপুরুষ হিসেবে গণ্য করা হয়। মধ্য আরবের অনেক গোত্র নিজেদেরকে "ইব্রাহিমের জাতি ও ইসমাইলের বংশধর" বলত।[৪৪] ৮ম শতাব্দীর আরব পণ্ডিত ইবন খালদুন আরবদের ইসমাইলীয় উৎস বর্ণনা করেছেন।[৪৫]

কুরআনে বলা হয়েছে, ইব্রাহিম ও ইসমাইল মক্কায় কাবা নির্মাণ করেন, যা পূর্বে আদম কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল।[৪৬] সামারীয় ধর্মগ্রন্থ আসাতীর অনুসারে, ইব্রাহিমের মৃত্যুর পর ইসমাইল ২৭ বছর রাজত্ব করেন এবং তাঁর উত্তরসূরিরা মিশর থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে শাসন করে ও মক্কা নগরী নির্মাণ করে।[৪৭]

টার্গুম অনকেলোস-এর ব্যাখ্যায় (উৎপত্তি ২৫:১৬), ইসমাইলীয়রা ভারত থেকে আরব হয়ে মিশরআসিরিয়ার উত্তরের দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।[৪৮] এই বিবরণ থেকে ধারণা করা যায়, ইসমাইলীয়রা প্রাচীন নিকটপ্রাচ্য জুড়ে বিস্তৃত একটি জনগোষ্ঠী ছিল।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
রাজা আশুরবানিপালের প্রাসাদে খোদাই করা একটি দৃশ্য, যেখানে উটচালিত কেদারীয় আরব যোদ্ধাদের পেছনে তাড়া করছে আসিরীয় সৈন্যরা।

আরব উপদ্বীপের যাযাবর জনগণ খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকেই ঊর্বর উপত্যকার প্রান্তে বিস্তৃত হয়ে পড়ে। তবে ‘আরব’ শব্দের প্রথম নির্দিষ্ট ব্যবহার পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ৮৫৩ সালের কারকারের যুদ্ধে একটি আসিরীয় লেখায়, যেখানে আরবদের একটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।[৪৯]

ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবদের ইতিহাস আরব, লেভান্ট, মেসোপটেমিয়া এবং মিশরীয় অঞ্চলে বিস্তৃত। আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় রাজশীলালিপিতে খ্রিস্টপূর্ব ৯ম থেকে ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে আরবদের উল্লেখ পাওয়া যায়।[৫০][৫১] কেদারীয়রা কখনও ‘ইসমাইলীয়’ কখনও ‘আরব রাজা’ নামে বর্ণিত হয়েছে।[৫২][৫৩] সরগনের রাজত্বকালে একটি রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে, আরবদের লোহা বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, কারণ তা দিয়ে অস্ত্র তৈরি করে তারা আসিরীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল।

বাইবেলভিত্তিক উৎস থেকে জানা যায়, আরবরা ইসরায়েলীয়দের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তৎকালীন আরবরা নিজেদের সম্মিলিত জাতিসত্তা হিসেবে উপস্থাপন করত না এবং নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মালিকানার দাবি করত না।[৫৪]

মিদিয়ান অঞ্চলের মানচিত্র

মাগান, মিদিয়ানআদ—এই প্রাচীন আরব গোত্র বা সভ্যতাগুলোর উল্লেখ আরবি সাহিত্যে পাওয়া যায়। মাগান (আরবি: مِجَانُ, Majan) ছিল তামা ও ধাতব পদার্থের জন্য বিখ্যাত, যা প্রাচীন কালে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং কুরআনে মূসা নবীর সফরের স্থান হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে।[৫৫]

মিদিয়ান (আরবি: مَدْيَن, Madyan) ছিল আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি অঞ্চল, যেখানকার মানুষ মূর্তিপূজা করত এবং ঈশ্বরের অবাধ্যতার কারণে শাস্তি পেয়েছিল বলে কুরআনে বলা হয়েছে। মূসা সেখানে বাস করতেন, বিবাহ করেন এবং মেষপালক হিসেবে কাজ করতেন।[৫৬]

আদ (আরবি: عَادَ, ʿĀd) ছিল দক্ষিণ আরবের একটি প্রাচীন ও শক্তিশালী জনপদ, যাদের অগ্রসর প্রযুক্তি ও সম্পদের জন্য পরিচিতি ছিল, কিন্তু অবাধ্যতার কারণে প্রবল ঝড়ে ধ্বংস হয়ে যায়।[৫৭]

হেরোডোটাস আরবদের বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন—তাঁর বর্ণনায় রয়েছে তাদের মসলা, ভূপ্রকৃতি, লোককথা, বাণিজ্য, পোশাক ও অস্ত্রশস্ত্র সম্পর্কে তথ্য। তিনি আরবদের উত্তর আরবে একটি শক্তিশালী জনগোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করেন। স্ত্রাবো, ডিওডোরাস সিকুলুস, প্লিনিসহ অন্যান্য গ্রিক ও রোমান লেখকরাও আরবদের বিষয়ে লিখেছেন।

ইহুদি ইতিহাসবিদ জোসেফাস আরব রাজা ও মিশরের রানি ক্লিওপেট্রার মধ্যে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। আরব রাজা কর প্রদান করতে বিলম্ব করলে হেরোদ রাজা তাতে বাধা দেন।[৫৮]

গেশেম আরবী ছিলেন নেহেমিয়ার প্রতিপক্ষ, যিনি জেরুজালেমের প্রাচীর পুনর্নির্মাণে বাধা দেন। ধারণা করা হয়, তিনি "গুশামু" নামক আরব গোত্রের নেতা ছিলেন, এবং তাঁর প্রভাব উত্তর আরব থেকে ইহুদিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।[৫৯]

রোমান যুগে আরাবিয়া পেত্রেয়া অঞ্চল—বর্তমান জর্দান, ফিলিস্তিন, সিনাই উপদ্বীপ ও উত্তর-পশ্চিম আরব উপদ্বীপ অন্তর্ভুক্ত ছিল
পেত্রা নগরের আল-খাজনে, নাবাতীয় রাজাদের সমাধিস্মারক, প্রথম শতাব্দীতে নির্মিত

প্রাচীন গ্রিক ও ল্যাটিন লেখায় ‘সারাসেন’ শব্দটি ‘আরব’দের বোঝাতে ব্যবহৃত হত, যারা রোমানদের দ্বারা নির্ধারিত আরাবিয়া পেত্রেয়া (লেভান্ট) ও আরাবিয়া ডেজার্টা অঞ্চলে বাস করত।[৬০] আইবেরীয় খ্রিস্টানরা তাদেরকে ‘‘মূর’’ নামে অভিহিত করত। মদিনার আরবরা মরুভূমির যাযাবর গোত্রগুলোকে আ'রাব বলত এবং নিজেদেরকে নগরবাসী মনে করত, যদিও তারা জাতিগতভাবে আত্মীয় ছিল।

হাগারেন শব্দটি সিরিয়াক, গ্রিক এবং আর্মেনীয় লেখায় প্রাথমিক আরব বিজয়ীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে, যাদের ইব্রাহিম ও হাজিরার পুত্র ইসমাইল-এর বংশধর বলা হয়।[৬১]

৭ম শতাব্দীতে আরবদের বিজয় ছিল আকস্মিক ও নাটকীয়, যার ফলে তারা দ্রুত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং স্পেন দখল করে। এটি ইসলামের জন্য এক যুগান্তকারী অধ্যায় ছিল, যা নিজেকে ইহুদিধর্মখ্রিস্টধর্মের উত্তরসূরি হিসেবে দেখত।[৬২]

পরিচয়

[সম্পাদনা]
চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর আরব পুরুষদের পোশাক
চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর আরব নারীদের পোশাক
ইসলাম-পূর্ব যুগে চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর আরব পুরুষ ও নারীদের পোশাকের শিল্পরূপ

আরব পরিচয় ধর্মীয় পরিচয় থেকে স্বতন্ত্র এবং এটি ইসলাম বিস্তারের আগেই গঠিত হয়েছিল। ইতিহাসে প্রমাণিত আছে যে, ইসলাম-পূর্ব যুগে আরব খ্রিস্টান রাজ্য এবং ইহুদি আরব গোত্রের অস্তিত্ব ছিল। তবে বর্তমানে অধিকাংশ আরব মুসলমান, এবং একটি সংখ্যালঘু অংশ খ্রিস্টান, দ্রুজবাহাই ধর্মাবলম্বী।[৬৩][৬৪]

আরব বিশ্বের সামাজিক কাঠামোতে সাধারণত পিতৃসূত্রিক বংশপরিচয়কেই জাতিগোষ্ঠী বা গোত্রের সদস্যপদ নির্ধারণের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৬৫]

আরব পরিচয় গঠিত হয়েছে একাধিক উপাদানের ভিত্তিতে—যেমন: বংশানুক্রম, ইতিহাস, ভাষা, রীতি ও ঐতিহ্য।[৬৬] এই পরিচয় বহুবর্ণিল ইতিহাসের মধ্য দিয়ে গঠিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন, ঔপনিবেশিক শাসন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আরবদের অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তাদের পরিচয় ও গৌরববোধ টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।[৬৭]

বর্তমানে আরব পরিচয় ক্রমাগত পরিবর্তনশীল, কারণ আরব জনগোষ্ঠীগুলো জটিল রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। তথাপি, এই পরিচয় আজও আরব বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে রয়ে গেছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রবাসী আরব সমাজে তা উদযাপন ও সংরক্ষিত হয়ে চলেছে।[৬৮]

উপগোষ্ঠী

[সম্পাদনা]
ইয়ামান গোত্রসমূহ, যেমন বনু কালব, ঘাসান, জুধাম ও তানুখ, প্রাধান্য বিস্তার করে ফিলাস্তিন, উরদুন ও হিমস অঞ্চলে; অপরদিকে কাইস গোত্রের অবস্থান ছিল আল-জাজিরা, বাইজান্টাইন সীমান্ত এবং কিন্নাসরিন অঞ্চলে।

আরব গোত্রসমূহ আরব উপদ্বীপ, মেসোপটেমিয়া, লেভান্ট, মিশর, মাগরেব, সুদান অঞ্চলআফ্রিকার শৃঙ্গ-এ বিস্তৃত।[৬৯][৬৭][৭০]

লেভান্ট অঞ্চলের আরবদের ঐতিহ্যগতভাবে দুটি প্রধান গোত্রে বিভক্ত করা হয়: কাইসইয়ামান। এই বিভাজন ইসলাম-পূর্ব যুগ থেকেই গোত্রীয় সম্পর্ক ও ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ইয়ামান গোত্রে অন্তর্ভুক্ত ছিল বনু কালব, কিন্দা, ঘাসানিদলাখমিদরা। অপরদিকে কাইস গোত্রে ছিল বনু কিলাব, বনু তায়্য, বনু হানিফা, বনু তামীম ইত্যাদি। ইয়ামানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গোত্রের মধ্যে ছিল বনু হাশিম, বনু মাখজুম, বনু উমাইয়াবনু জুহরা[৭১]

মেসোপটেমিয়া (ইরাক) ও ইরানেও বহু প্রাচীন আরব গোত্রের বসবাস ছিল, যাদের অস্তিত্ব ৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের আরব বিজয়ের বহু আগে থেকেই ছিল।[৭২] ইরানি আরবদের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী হলো আহওয়াজি আরব, যাদের মধ্যে বনু কা’ব, বানী তুরুফমুশাশাইয়্যা সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ফারসের খামসেহ যাযাবর ও খোরাসানের আরবরাও উল্লেখযোগ্য।

মাগরেবে শতাব্দীব্যাপী আরব অভিবাসনের ফলে বহু আরব গোত্র যেমন বনু হিলাল, বনু সুলাইমমাকিল সেখানে বসতি স্থাপন করে। বনু হিলাল প্রথমে প্রায় এক শতাব্দী মিশরের বাস করে, তারপর লিবিয়া, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া হয়ে মরক্কোতে পৌঁছায়।[৭৩]

আরব ঐতিহ্য অনুযায়ী, গোত্রসমূহকে "আরবের করোটিসমূহ" (Arab skulls) নামে বর্ণনা করা হয়, যা শক্তি, সংখ্যাগরিষ্ঠতা, বিজয় ও মর্যাদার প্রতীক। এই মূল গোত্রগুলো থেকে অসংখ্য উপগোত্রের উদ্ভব হয়েছে, যেগুলো পরে স্বতন্ত্র রূপ ধারণ করে।[৭৪][৭৫][৭৬][৭৭][৭৮]

এই প্রধান গোত্রসমূহ হলো:[৭৬]

বনু আদনানের বংশধারার চিত্র।
  • বনু বাকর: আরব ও ইরাকে বর্তমান বংশধর রয়েছে।[৭৯]
  • কিনানা: আরব, ইরাক, মিশর, সুদান, ফিলিস্তিন, তিউনিসিয়া, মরক্কো ও সিরিয়াতে তাদের বংশধর রয়েছে।[৮০]
  • হাওয়াজিন: আরব, লিবিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো, সুদান ও ইরাকে বংশধর রয়েছে।[৮১]
  • বনু তামীম: আরব, ইরাক, ইরান, ফিলিস্তিন, আলজেরিয়া ও মরক্কোতে তাদের বংশধর রয়েছে।[৮২]
  • আজদ: আরব, ইরাক, লেভান্ট ও উত্তর আফ্রিকায় বসতি।[৮৩]
  • ঘাতাফান: আরব উপদ্বীপ ও মাগরেবে বিস্তৃত।[৮৪]
  • মাধহিজ: আরব ও ইরাকে বসতি।[৮৫]
  • আব্দ আল-কাইস: আরবে বসতি।
  • আল কাইস (القيس): আরব উপদ্বীপে বিস্তৃত।
  • কুদা'আ: আরব, সিরিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় বিস্তৃত।

বেশিরভাগ আরব মুসলমান, যাদের মধ্যে সুন্নি সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং শিয়া সম্প্রদায় সংখ্যালঘু। এর ব্যতিক্রম হলো ওমানের ইবাদি মুসলমানেরা, যারা সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ।[৮৬]

আরব খ্রিস্টানরা সাধারণত গ্রিক অর্থোডক্স চার্চগ্রিক ক্যাথলিক চার্চের অনুসারী হলেও, সামান্য সংখ্যক প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানও রয়েছেন।[৮৭] দ্রুজবাহাই সম্প্রদায়ভুক্ত আরবরাও আছেন।[৮৮] অতীতে আরব বিশ্বে উল্লেখযোগ্য ইহুদি আরব জনগোষ্ঠীরও বসবাস ছিল।

ইসলামের আগমনের পূর্বে, বেশিরভাগ আরব বহুদেবতাবাদী ধর্ম পালন করতেন। তাদের দেবতাদের মধ্যে হুবাল, ওয়াদ্দ, আল-লাত, মানাতউজ্জা অন্যতম। কিছু ব্যক্তি, যাদের হানিফ বলা হতো, তারা বহুদেবতাবাদ পরিত্যাগ করে নিরপেক্ষ একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করতেন। কিছু গোত্র খ্রিস্টানইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। ইসলাম-পূর্ব সময়ে ঘাসানিদলাখমিদ রাজ্য ছিল উল্লেখযোগ্য আরব খ্রিস্টান রাজ্য। ৪র্থ শতকে হিমিয়ার রাজা ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করলে, তাদের অধীনস্থ কিন্দা গোত্রও আংশিকভাবে ইহুদিতে ধর্মান্তরিত হয়। ইসলামের বিস্তারের সাথে সাথে আরবরা দ্রুত ইসলামে ধর্মান্তর হন এবং প্রাচীন বহুদেবতাবাদী রীতিনীতি বিলুপ্ত হতে থাকে।[৮৯][৯০]

কাবা, মক্কার মসজিদুল হারাম-এ অবস্থিত, ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান

বর্তমানে, সুন্নি ইসলাম লেভান্ট, উত্তর আফ্রিকা, পশ্চিম আফ্রিকাআফ্রিকার শৃঙ্গে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। বাহরাইনদক্ষিণ ইরাকে শিয়া মুসলমানেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যদিও উত্তর ইরাকে সুন্নিরাই প্রধান। লেবানন, ইয়েমেন, কুয়েত, সৌদি আরব, উত্তর সিরিয়া ও ওমানের আল-বাতিনাহ অঞ্চলে শিয়া জনগোষ্ঠী রয়েছে।[৯১] ইবাদিঅ-সম্প্রদায়ভুক্ত মুসলমানরাও অল্প সংখ্যায় বিদ্যমান।[৮৬] দ্রুজ সম্প্রদায় মূলত লেভান্ট অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।[৯২]

ইসলামের আগমনের পূর্বে আরবদের মধ্যে বাহরাইনি জনগণ, নাজরানের খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং ইয়েমেন ও উত্তর আরবের বেশ কিছু গোত্র যেমন ঘাসানিদ, লাখমিদ, তাঘলিব, বনু আমেলা, বনু জুধাম, তানুখিদতায়্য—খ্রিস্টান ধর্ম পালন করতেন। প্রাচীন খ্রিস্টীয় যুগে আরব অঞ্চলকে Arabia heretica বলা হতো, কারণ এই অঞ্চল বিভিন্ন খ্রিস্টীয় মতবাদের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।[৯৩]

খ্রিস্টানরা পশ্চিম এশিয়াউত্তর আফ্রিকার জনসংখ্যার প্রায় ৫.৫% গঠন করে।[৯৪] লেবাননে খ্রিস্টানদের সংখ্যা প্রায় ৪০.৫%, সিরিয়াতে ১০%, ফিলিস্তিনে ৮% ও ০.৭%, মিশরে ১০% এবং ইরাকে ০.১%।[৯৫][৯৬][৯৭][৯৮][৯৯]

ইসরায়েলে আরব খ্রিস্টানরা মোট জনসংখ্যার ২.১% এবং আরব জনসংখ্যার প্রায় ৯%।[১০০] জর্দানে এদের সংখ্যা প্রায় ৮%।[১০১] উত্তর আমেরিকাদক্ষিণ আমেরিকার বেশিরভাগ আরবই খ্রিস্টান,[১০২] ঠিক যেমন অস্ট্রেলিয়ার প্রায় অর্ধেক আরব, যাদের উৎস লেবানন, সিরিয়াপ্যালেস্টাইন থেকে। তিফলিসের পৃষ্ঠপোষক সাধু সেন্ট আবো এই সম্প্রদায়ের একজন খ্যাতিমান সদস্য।[১০৩] অনেক আরব খ্রিস্টান নাজারেথ, বেথলেহেম, জেরুজালেমের খ্রিস্টান পাড়া ও অন্যান্য পবিত্র স্থানসমৃদ্ধ গ্রামে বাস করেন।

সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]
কায়রোর একদল নৃত্যশিল্পী, ডেভিড রবার্টস-এর চিত্রাঙ্কন

আরব সংস্কৃতি একটি প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের প্রতিফলন, যা হাজার বছরের ইতিহাসজুড়ে গড়ে উঠেছে। এই সংস্কৃতির বিস্তার আটলান্টিক মহাসাগর থেকে শুরু করে পূর্বে আরব সাগর, উত্তরে ভূমধ্যসাগর থেকে দক্ষিণ-পূর্বে আফ্রিকার শৃঙ্গভারত মহাসাগর পর্যন্ত। আরবদের ইতিহাসে তারা যে বিভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করেছে, এবং বিভিন্ন সাম্রাজ্য ও রাজ্য যে আরব সভ্যতার নেতৃত্ব দিয়েছে—সেসবই আধুনিক আরব সংস্কৃতির গঠন ও জাতিগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আরব সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত প্রধান উপাদানসমূহ হলো ভাষা, সাহিত্য, গ্যাস্ট্রোনমি, চিত্রকলা, স্থাপত্য, সঙ্গীত, আধ্যাত্মিকতা, দর্শনগূঢ়তত্ত্ব। এসব উপাদান আরবদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে এবং বহুমাত্রিক রূপ দিয়েছে।[১০৪]

জিনতত্ত্ব

[সম্পাদনা]

আরবরা জিনতাত্ত্বিকভাবে বৈচিত্র্যময় একটি জনগোষ্ঠী। ইসলামের বিস্তার পরবর্তী সময়ে তারা মধ্যপ্রাচ্যউত্তর আফ্রিকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তঃবিবাহ ও মিশ্রণের মাধ্যমে এই বৈচিত্র্য অর্জন করে।[১০৫][১০৬] আরব উপদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জিনগত বৈশিষ্ট্য উত্তর আফ্রিকায় পশ্চিম থেকে পূর্বে বিস্তারের একটি ধারা প্রদর্শন করে। একই ধারা নাইল নদী উপত্যকায় সুদানদক্ষিণ সুদান পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে আরব উপদ্বীপের জনগণের সঙ্গে জিনগত সম্পর্ক দক্ষিণমুখে ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।[১০৭]

এই জিনগত প্রবণতার উৎপত্তি আরব অভিবাসন ও ইসলামিক বিস্তারকালীন সময়ে ঘটে বলে মনে করা হয়।[১০৭] গবেষণায় দেখা গেছে, প্যালেস্টিনি আরবইহুদি জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ জিনগত সম্পর্ক রয়েছে, এবং তাদের পূর্বপুরুষের একটি অংশ অভিন্ন।[১০৮][১০৯][১১০]

একটি ২০১৬ সালের গবেষণায় বলা হয়েছে, আরব উপদ্বীপের স্থানীয় আরবরা আউট অব আফ্রিকা অভিবাসনএর পর ইউরেশিয়ার প্রথম জনবসতির উত্তরসূরি এবং আধুনিক ইউরেশিয়ানদের তুলনায় তারা জিনগতভাবে আলাদা, যদিও সামান্য ইউরোপীয় মিশ্রণের চিহ্নও পাওয়া যায়।[১১১]

প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, নাতুফীয়দের সঙ্গে আধুনিক ও প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের জিনগত সম্পর্ক বিদ্যমান। ২০২১ সালের এক গবেষণায় জানা যায়, সৌদিইয়েমেনের জনগণের পূর্বপুরুষ মূলত স্থানীয় শিকারি-সংগ্রাহক নাতুফীয়দের থেকে আগত, এবং তাদের আনাতোলিয়ান পূর্বপুরুষের অবদান লেভান্টের তুলনায় কম। নিওলিথিক ইরানীয় জিনতাত্ত্বিক উপাদানের উপস্থিতি ব্রোঞ্জ যুগের অভিবাসনের ফল।[১১২] এছাড়াও, নাতুফীয়দের ম্যাগরেব অঞ্চলের ইবেরোমাউরাসিয়ান সংস্কৃতির টাফোরাল্ট শিকারি-সংগ্রাহকদের সঙ্গেও পূর্বপুরুষগত সম্পর্ক রয়েছে।[১১৩]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Margaret Kleffner Nydell Understanding Arabs: A Guide For Modern Times, Intercultural Press, 2005, আইএসবিএন ১৯৩১৯৩০২৫২, page xxiii, 14
  2. total population 450 million, CIA Factbook estimates an Arab population of 450 million, see article text.
  3. "Saudi Aramco World :The Arabs of Brazil"। ২৬ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪ 
  4. France's ethnic minorities: To count or not to count. The Economist (2009-03-26). Retrieved on 2013-07-12.
  5. "The Arab American Institute"। Aaiusa.org। ১ জুন ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  6. "A2 : Population by ethnic group according to districts, 2012"Department of Census & Statistics, Sri Lanka। ২৮ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪ 
  7. "65th Independence Day - More than 8 Million Residents in the State of Israel" (পিডিএফ)Israel Central Bureau of Statistics। ১৪ এপ্রিল ২০১৩। ২৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  8. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WhoIsAnArab নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  9. Bureš, Jaroslav (২০০৮)। Main characteristic and development trends of migration in the Arab world। Prague: Institute of International Relations। আইএসবিএন 978-8086506715 
  10. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AncientArabRefs নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; DilmunTrade নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Qedarites নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; SouthArabKingdoms নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; IshmaelLineage নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Palmyra নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; OsroeneHatra নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Arbayistan নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  18. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Emesenes নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; LateAntiquityTribes নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ArabEmpires নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ArabLeagueFormation নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  22. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ArabIdentity নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  23. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ArabContribution নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  24. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; PreIslamicReligion নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  25. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ReligiousDemographics নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  26. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Retsop105 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  27. Wehr, Hans এবং J. M. Cowan. A Dictionary of Modern Written Arabic (৩য় সংস্করণ)। Ithaca, NY: Spoken Language Services। পৃ. ৬০১।
  28. ABADY_Yemen_Archaeology_9_12। পৃষ্ঠা ১২৭–১২৮। 
  29. Bowden, William (২০০৪)। Recent Research on the Late Antique Countryside। Brill। পৃষ্ঠা 91। আইএসবিএন 978-9004136076 
  30. Ira M. Lapidus (২০১৪)। A History of Islamic Societies। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 29। আইএসবিএন 978-0521514309 
  31. Salles, Jean-François; Healey, J.F. (২০১৫)। "Arabs"। Oxford Research Encyclopedia of Classicsআইএসবিএন 978-0199381135ডিওআই:10.1093/acrefore/9780199381135.013.644 
  32. "The meaning of Arab land in the historical sources"। ১৫ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  33. Gray, Louis Herbert (2006) Introduction to Semitic Comparative Linguistics
  34. Courtenay, James John (2009) The Language of Palestine and Adjacent Regions
  35. Kienast, Burkhart. (2001). Historische semitische Sprachwissenschaft
  36. Bromiley, Geoffrey W. (1995) The International Standard Bible Encyclopedia
  37. Murtonen, A.। Early Semitic... 
  38. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; :0 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  39. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; academia.edu নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  40. Aaron D. Rubin...।  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  41. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; academia.edu3 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  42. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AK1 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  43. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; EoR-Ishmael নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  44. Stacey, Aisha...উদ্ধৃতি খালি (সাহায্য) 
  45. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Levity নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  46. কুরআন ১৪:৩৭
  47. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Gaster নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  48. Onkelos। ... 
  49. "HISTORY OF THE ARABS"। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২৩ 
  50. Delitzsche (১৯১২)। Assyriesche Lesestuche 
  51. Montgomery (১৯৩৪)। Arabia and the Bible 
  52. Winnet (১৯৭০)। Ancient Records from North Arabia 
  53. Stetkevychc (২০০০)। Muhammad and the Golden Bough 
  54. "The Arabs of North Arabia in later Pre-Islamic Times..."। 
  55. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; The Archeology Fund নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  56. Dever, W. G., ... 
  57. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Brill1 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  58. "Josephus: Antiquities of the Jews..."। 
  59. "Geshem the Arabian"। 
  60. Retsö, Jan। The Arabs in Antiquity... 
  61. "Ibn Khaldun and The Myth of "Arab Invasion""। 
  62. "HISTORY OF THE ARABS"। 
  63. Stendel, Ori (১৯৯৬)। The Arabs in Israel। পৃষ্ঠা 45। 
  64. Khalil, Mohammad Hassan (২০১৩)। Between Heaven and Hell...। পৃষ্ঠা 297। 
  65. Parolin, Gianluca Paolo (২০০৯)। Citizenship in the Arab World...। পৃষ্ঠা 127। 
  66. Phillips, Christopher (২০১৩)। Everyday Arab identity... 
  67. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Imagining the Arabs : Arab identity and the rise of Islam নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  68. Carmichael, Joel (২০১৬)। The shaping of the Arabs... 
  69. "ص204 – كتاب الأعلام للزركلي..."। 
  70. Hourani, Albert। A History of the Arab Peoples... 
  71. Hugh Kennedy (2013)...
  72. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; IranicaDaniel2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  73. "François Decret, Les invasions hilaliennes en Ifrîqiya..."। 
  74. Al Andulsi, Ibn Abd Rabuh (৯৩৯)। Al Aqid Al Fareed 
  75. Al-Qthami, Hmood (১৯৮৫)। North of Hejaz 
  76. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; المفصل فى تاريخ العرب قبل الإسلام22 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  77. Al Zibeedi, Murtathi (১৯৬৫)। Taj Al Aroos... 
  78. Al Hashimi, Muhammed... (৮৫৯)। Al Mahbar 
  79. Trudy Ring et al., 1995, p.190
  80. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Brill2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  81. "نهاية الأرب..."। 
  82. "ص204 – كتاب الأعلام..."। 
  83. "قلائد الجمان..."। 
  84. G̲h̲aṭafān... 
  85. আব্বাস আল-আজাওয়ী, আশায়ের আল-ইরাক
  86. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ahmadi2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  87. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Christi2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  88. The Bahá'í World Centre... 
  89. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; MSNU2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  90. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; EncyRe2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  91. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Shia2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  92. Middle East Patterns... 
  93. A House of Many Mansions... 
  94. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Pacini2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  95. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; CIA World Factbook: Lebanon2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  96. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; CIA World Factbook: Syria2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  97. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; FactbookGazaStrip2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  98. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; FactbookWestBank2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  99. Arab Christians – Who are they?
  100. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WFIS2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  101. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WFJord2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  102. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AAIUSA2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  103. Mgaloblishvili, Tamila। Ancient Christianity in the Caucasus... 
  104. Behrens-Abouseif, Doris (১৯৯৯)। Beauty in Arabic Culture। Markus Wiener Publishers। আইএসবিএন 978-1558761995 
  105. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; :2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  106. Teebi, Ahmad S.।  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  107. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; :3 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  108. "Jews and Arabs Share Recent Ancestry..."। 
  109. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Nebel2000 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  110. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Behar2010 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  111. Rodriguez-Flores।  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  112. Almarri।  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  113. Salem।  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

Price-Jones, David. The Closed Circle: an Interpretation of the Arabs. Pbk. ed., with a new preface by the author. Chicago: I. R. Dee, 2002. xiv, 464 p. আইএসবিএন ১-৫৬৬৬৩-৪৪০-৭ pbk Ankerl, Guy. Coexisting Contemporary Civilizations: Arabo-Muslim, Bharati, Chinese, and Western. INU PRESS, Geneva, 2000. আইএসবিএন ২-৮৮১৫৫-০০৪-৫.

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি