জলপাই
| জলপাই Elaeocarpus serratus | |
|---|---|
| বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
| জগৎ: | উদ্ভিদ |
| বিভাগ: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
| শ্রেণী: | Eudicots |
| বর্গ: | Oxalidales |
| পরিবার: | Elaeocarpaceae |
| গণ: | Elaeocarpus |
| প্রজাতি: | E. serratus |



জলপাই একটি হেমন্তকালীন টক ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus serratus[১]। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত[২]। ভারতীয় উপমহাদেশ, বাংলাদেশ, ইন্দোচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফল উৎপাদিত হয়।
জলপাই অনেকেই জয়তুন-এর সাথে এক করে ফেলে, যদিও এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ফল।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]জলপাই গাছ মাঝারি আকারের, ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।[৩] শীতকালে পাতা ঝরে পড়ে, ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে নতুন পাতা আসে। সেই সঙ্গে আসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা ফুল।
জলপাই ফলের জন্য বিখ্যাত হলেও এর ফুলের সৌন্দর্য অসাধারণ। সারা গাছজুড়ে অসংখ্য ফুলের যে মেলা বসে, তার সৌন্দর্য উপেক্ষা করা কঠিন। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি মলিন সাদা রঙের থোকা থোকা ফুলগুলো ফোটে। ফল খাবার উপযোগী হয় শরৎ-হেমন্তে। তখন ফলের বাইরের আবরণ সবুজের কাছাকাছি একটি বিশেষ রঙ ধারণ করে। এ কারণে জলপাই রঙ সবার কাছে একটি বিশেষ রঙ হিসেবে পরিচিত। জলপাইয়ের গড়ন প্রায় আমড়ার মতোই। তবে আমড়ার চেয়ে আকারে ছোট। এর পাতলা আবরণের ভেতর থাকে খাবার উপযোগী শাঁস ও একটি শক্ত আঁটি বা বীজ।
কাঁচা ফলের শাঁস কিছুটা টক, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি ভিটামিন সি এর একটি ভাল উৎস। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ফল খনিজ, ভিটামিন, ফাইবার এবং মূল্যবান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
একটি ফলের ওজন ১৫.৭৮ থেকে ২২.৪৬ গ্রাম, দৈর্ঘ ৪.০৭ থেকে ৪.৪৯ সে:মি:, ব্যাস ২.৬২ থেকে ২.৮৯ সে:মি: হয়ে থাকে[৪]। ফলের রং হয় গাঢ় সবুজ, একটি বাদামী বীজ থাকে ফলের মধ্যখানে, বীজের চারপাশ ঘিরে থাকে টক-মিষ্টি স্বাদের শাঁস।
পুষ্টিগুণ
[সম্পাদনা]প্রতি ১০০ গ্রাম জলপাইয়ে খাদ্যশক্তি ৭০ কিলোক্যালরি, ৯ দশমিক ৭ শর্করা, ৫৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। [৫]
উপকারিতা
[সম্পাদনা]ব্যবহার
[সম্পাদনা]জলপাই বাংলাদেশে একটি সুপরিচিত ফল। কাঁচা জলপাই বেশ পুষ্টিকর, প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। কাঁচা ফল টাটকা, রান্না করে ও আচার তৈরী করে খাওয়া হয়। ভিটামিন সি' জাতীয় ফল হলো জলপাই। মোটামুটি শীতকালীন সময়েই এই জলপাইয়ের দেখা পাওয়া যায়। তবে সারা বছর তো আর জলপাই পাওয়া যায় না। তাই জলপাইয়ের আচার তৈরি করে এটি অনেকদিন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এই আচার যেকোন সময়ে ভাত, খিচুড়ির সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।[৭]
জলপাই আচারের জন্য দুর্দান্ত। জিভে জল আনা জলপাই আচার তৈরির জন্য কাঁচা ফলগুলি প্রথমে সেদ্ধ করা হয়। তারপর কড়াইতে তেল গরম করে তাতে বিভিন্ন মসলার মধ্যে ঢেলে দিয়ে পরে চিনি ও জল দিয়ে আবার কিছুক্ষণ রান্না করার পর ঠাণ্ডা করে পরিবেশন বা সংরক্ষণ করা হয়।[৮]
জলপাই গাছ বহুবর্ষজীবী গাছগুলির মধ্যে একটি। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সুবিধার কারণে এটি একটি সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয়। এর ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে, কারণ এটি একটি সম্পূর্ণ খাদ্য।আর এটি থেকে তেল বের করা হয়, যার স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও প্রসাধনী উপকারিতা রয়েছে। এর অনেক রেফারেন্সে উল্লেখ করা হয়েছে এবং অনেক গবেষণা এটিকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে। এর একটি বিশেষ পবিত্রতা রয়েছে সমস্ত ইব্রাহিমীয় ধর্ম সম্বন্ধে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Elaeocarpus serratus L. — The Plant List"। www.theplantlist.org। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "Ceylon Olive - Elaeocarpus serratus | Sub-Tropical Fruit Club of Qld Inc."। stfc.org.au। ৩১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "অনন্য জলপাই"। সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "(PDF) Fruiting characteristics of jalpai-the Indian olive (Elaeocarpus floribundus Blume.)"। ResearchGate (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৮।
- 1 2 "প্রথম আলো ১১ ডিসেম্বর ২০১৬"। ১১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ যুগান্তর ১০ নভেম্বর ২০১৫
- ↑ "প্রথম আলো ২৬ নভেম্বর ২০১৩"। ১১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ webdesk@somoynews.tv। "জিভে জল আনা জলপাই আচারের রেসিপি"। somoynews.tv (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৯।