বিষয়বস্তুতে চলুন

মুহাজিরুন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মুহাজিরুন (আরবি: المهاجرون, একবচনে مهاجر, muhājir) ছিলেন ইসলাম গ্রহণকারী এবং ইসলামের নবী মুহাম্মদ-এর পরামর্শদাতা ও আত্মীয়-স্বজন, যারা মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। ইসলামে এই ঘটনাকে হিজরত নামে অভিহিত করা হয়। মদিনার প্রারম্ভিক মুসলিমদের বলা হয় আনসার অর্থাৎ "সহযোগী"।

মুহাম্মদের সময়কালে

[সম্পাদনা]

হামযার নেতৃত্বে পরিচালিত প্রথম ব্যর্থ কাফেলা অভিযানের প্রায় এক মাস পরে, মুহাম্মদ ৬০ জন মুহাজিরকে নিয়ে একটি অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেন উবায়দাহকে। এই দলটি সিরিয়া থেকে ফেরা একটি কুরাইশ কাফেলাকে লক্ষ্য করে অভিযান চালায়। কাফেলাটি একশ জন রক্ষীর দ্বারা সুরক্ষিত ছিল এবং এর নেতা ছিলেন আবু সুফিয়ান ইবনে হারব। মুসলিম বাহিনী হিজাজ অঞ্চলের থানিয়াতুল-মুররা নামক একটি পানির স্থানে পৌঁছায়। যদিও কোনো যুদ্ধ হয়নি, কারণ কুরাইশরা মুসলিমদের উপস্থিতি থেকে অনেক দূরে ছিল। তবুও, সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস কুরাইশদের দিকে একটি তীর নিক্ষেপ করেন। এটিকে ইসলামের প্রথম তীর হিসেবে ধরা হয়।[] এই হঠাৎ আক্রমণ সত্ত্বেও, যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি এবং মুসলিমরা খালি হাতে ফিরে আসে। কেউ কেউ মনে করেন উবায়দাহই প্রথম ইসলামী পতাকা বহন করেন, আবার অন্যরা বলেন হামজা প্রথম পতাকা ধারণ করেন।[][][]

তৃতীয় অভিযানে নেতৃত্ব দেন সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস। তাঁর দলে প্রায় ২০ জন মুহাজির ছিলেন। এই অভিযানটি আগের অভিযানের প্রায় এক মাস পরে সংঘটিত হয়। সা‘দ ও তাঁর সঙ্গীরা খাররার উপত্যকায় মক্কামুখী সিরিয়ার কাফেলা আক্রমণের জন্য ওত পেতে থাকেন। তবে কাফেলাটি আগেই পার হয়ে যায় এবং মুসলিমরা যুদ্ধ না করেই মদিনায় ফিরে আসেন।[][][][] []

চতুর্থ অভিযান, যা ওয়াদ্দানের অভিযান নামে পরিচিত, এটি ছিল প্রথম আক্রমণাত্মক অভিযান যেখানে মুহাম্মদ নিজে অংশগ্রহণ করেন। এই অভিযানে প্রায় ৭০ জন সৈন্য অংশ নেন, যাদের অধিকাংশই মুহাজির ছিলেন।[] হিজরতের প্রায় এক বছর পর, মুহাম্মদ নিজেই ওয়াদ্দান (বা আল-আবওয়া) অঞ্চলে একটি কাফেলা আক্রমণে নেতৃত্ব দেন। উদ্দেশ্য ছিল কুরাইশদের কাফেলা থামানো। তবে এই অভিযানে কোনো কুরাইশ কাফেলার মুখোমুখি হননি তাঁরা।[][]

পঞ্চম অভিযান ছিল বুওয়াত অভিযান; এটি-ও মুহাম্মদ নিজেই পরিচালনা করেন।[] আবওয়া অভিযানের এক মাস পরে মুহাম্মদ আনুমানিক ২০০ জন সৈন্য নিয়ে বের হন, যাদের মধ্যে মুহাজির ও আনসার উভয়েই ছিলেন। এই অভিযান ছিল কুরাইশ বণিকদের কাফেলার পথ বরাবর বুওয়াত অঞ্চলে। অভিযানে প্রায় ১,৫০০ উট ছিল, এবং কুরাইশ নেতা উমাইয়া ইবনে খালাফ এই কাফেলার নেতৃত্ব দেন। এইসব কাফেলা অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল মক্কা থেকে হিজরত করার সময় মুসলিমদের যে সম্পদ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তা পুনরুদ্ধার করা। কুরাইশরা মুসলিমদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা বিক্রি করে দেয়।[][][] ওই কাফেলার সাথে ১০০ জন কুরাইশ সদস্য ও ২,৫০০টি উট ছিল।[]

তালিকা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সহীহ বুখারী, ৫:৫৭:৭৪ (ইংরেজি)
  2. Mubarakpuri, The Sealed Nectar p. 127
  3. Haykal, Husayn (১৯৭৬), The Life of Muhammad, Islamic Book Trust, পৃষ্ঠা 217–218, আইএসবিএন 978-983-9154-17-7 
  4. Witness Pioneer "Pre-Badr Missions and Invasions"
  5. Mubarakpuri, Sealed Nectar, P 147
  6. Hawarey, Dr. Mosab (২০১০)। The Journey of Prophecy; Days of Peace and War (আরবি ভাষায়)। Islamic Book Trust। ২০১২-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  Book contains a list of battles of Muhammad in Arabic. English version here
  7. Muḥammad Ibn ʻAbd al-Wahhāb, Mukhtaṣar zād al-maʻād, p. 345.
  8. Muḥammad Ibn ʻAbd al-Wahhāb, Mukhtaṣar zād al-maʻād, p. 346.
  9. Mubarakpuri, The Sealed Nectar (Free Version), p. 128
  10. De historische Mohammed, De Mekkaanse verhalen, H. Jansen, BV Uitgeverij De Arbeiderspers, 2005, blz. 209, আইএসবিএন ৯০-২৯৫-৬২৮২-X
  11. Muhammad: A Biography of the Prophet By Karen Armstrong, pg. 151
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Peshawar নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. IslamWeb