চারপত্র মুড়া

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৬′১৯″ উত্তর ৯১°০৭′৪৫″ পূর্ব / ২৩.৪৩৮৬৬৯২° উত্তর ৯১.১২৯২৯৮৫° পূর্ব / 23.4386692; 91.1292985
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চারপত্র মুড়া
অবস্থানময়নামতী, কুমিল্লা সদর, কুমিল্লা, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°২৬′১৯″ উত্তর ৯১°০৭′৪৫″ পূর্ব / ২৩.৪৩৮৬৬৯২° উত্তর ৯১.১২৯২৯৮৫° পূর্ব / 23.4386692; 91.1292985
ধরনহিন্দু মন্দির
যার অংশময়নামতী
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠিত১১ - ১২ শতাব্দী
সংস্কৃতিহিন্দু সংস্কৃতি
স্থান নোটসমূহ
খননের তারিখ১৯৫৫ - ১৯৫৭
অবস্থাধ্বংসপ্রাপ্ত
মালিকানাসরকারি
ব্যবস্থাপনাবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
জনসাধারণের প্রবেশাধিকারহ্যাঁ
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীমিশ্র বাংলা স্থাপত্য
অবৈধ উপাধি
প্রাতিষ্ঠানিক নামচারপত্র মুড়া
ধরনসাংস্কৃতিক

চারপত্র মুড়া বা লড়হমাধব মন্দির[১] বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনস্থল। বাংলাদেশের গবেষকদের মতে পাহাড়পুর বিহারের পর এটি দেশের অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তিস্থল,[২][৩] যেটি আনুমানিক একাদশ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীতে স্থাপিত হয়েছিল।[৪]

বিবরণ[সম্পাদনা]

মুড়াটি কুমিল্লা সেনানিবাসের মধ্যস্থলে এবং লালমাই শৈলশিরার উত্তরাংশে ময়নামতীতে অবস্থিত। ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৭ সালের মধ্যে[৫] খনন করার ফলে এই মুড়া থেকে একটি ৪৫.৭ মিটার (১৫০ ফু) × ১৬.৮ মিটার (৫৫ ফু) আয়তনের ক্ষুদ্র হিন্দু পীঠস্থান বা মন্দিরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মন্দিরটির নির্মাণ পরিকল্পনা, আকৃতি, স্থাপত্যশৈলী এবং অলঙ্করণের দিক থেকে এটি ময়নামতীর বৌদ্ধ স্থাপত্য এবং গুপ্ত আমলের কিংবা অন্যান্য ভারতীয় সনাতন হিন্দু মন্দির স্থাপত্য থেকে ভিন্ন। মিশ্র বাংলা স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত মন্দিরটিতে বিবর্তনশীল উদ্ভবের ক্রমান্বয়ে স্থানীয় বৌদ্ধ স্থাপত্যের নানা উপাদান ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে।[১][৩]

স্থাপত্যশৈলী[সম্পাদনা]

দুইটি অংশ বিভক্ত মন্দিরটির একটি অংশে রয়েছে উন্মুক্ত স্তম্ভশ্রেণির সজ্জিত হলঘর, যেটির সম্মুখভাগ যথেষ্টভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। মন্দিরের পেছনে, পশ্চিম দিকের অন্য অংশে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র মন্দির ঘর। ঘরটির শেষের দিকের অংশটি তুলনামূলক স্বল্প ক্ষতিগ্রস্ত বা ক্ষয়প্রাপ্ত অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছিল। মন্দিরের বহির্ভাগে রয়েছে জটিল ও বিচিত্র আকৃতির বিভিন্ন নকশা। জ্যামিতিক কোণ ও কোণার সমন্বয়ে কৃত এর কশিকাজগুলি আকৃতিগতভাবে প্রতিসম নানা অভিক্ষেপে এবং পার্শ্ব ও উল্লম্ব সমতলে ভারসাম্য লাভ করেছে।[১][৩]

নিদর্শন[সম্পাদনা]

খননরের ফলে চারপত্র মুড়া থেকে অল্পসংখ্যক তাৎপর্যপূর্ণ নিদর্শন পাওয়া গেছে; যার মধ্যে রয়েছে, একটি ব্রোঞ্জনির্মিত অলঙ্কৃত শবাধার বা রত্নপাত্র এবং চারটি তাম্রশাসন মঞ্জুরি। চারটি তাম্রশাসনের তিনটি প্রদান করেন চন্দ্র সাম্রাজ্যের শেষ দুই রাজা গোবিন্দপালপালপাল এবং চতুর্থটি দান করেছেন দেববংশীয় রাজা। মূলত এসকল দানপত্র প্রদান করা হয়েছিল দেবপর্বতে অবস্থিত লড়হমাধব (বিষ্ণু) মন্দিরের অনুকূলে। ঐতিহাসিকভাবে প্রাপ্ত দলিলে উক্ত স্থানের নাম পট্টিকেরা উল্লিখিত রয়েছে, যা থেকে অনুমান করা যায় লোকালয়টি লালমাই-ময়নামতী এলাকাতেই পুরনো দেবপর্বত নগরীর একাংশ এবং এই লড়হমাধব মন্দিরটি বর্তমান চারপত্র মুড়া। ধারণা করা হয় চারটি তাম্রশাসনের কারণে এটির নাম চারপত্র মুড়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।[১][৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. এম. হারুনুর রশিদ (২০১২)। "চারপত্র মুড়া"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. "প্রত্নতাত্ত্বিক ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ কুমিল্লা"। ittefaq.com। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৬ 
  3. "চারপত্র মুড়া"archaeology.portal.gov.bdবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  4. "পুরাকীর্তির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা"comilla.gov.bdবাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৪ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  5. "এক নজরে"archaeology.bogra.gov.bdবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়, বগুড়া। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]