চন্দ্রনাথ মন্দির
চন্দ্রনাথ মন্দির | |
---|---|
![]() | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
অবস্থান | |
অবস্থান | চন্দ্রনাথ পাহাড়, সীতাকুণ্ড |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২২°৩৮′০১″ উত্তর ৯১°৪১′০২″ পূর্ব / ২২.৬৩৩৭০৬° উত্তর ৯১.৬৮৩৯৯৮° পূর্ব |
উচ্চতা | ৩১০ মি (১,০১৭ ফু) |


বাংলাদেশের সীতাকুন্ডের নিকটে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম বিখ্যাত শক্তিপীঠ। সীতাকুণ্ড অপরূপ প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি। এখানের সর্বোচ্চ পাহাড় চুড়ায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির। এখানে হিন্দু পবিত্র গ্রন্থ অনুসারে সতী দেবীর দক্ষিণ হস্তার্ধ পতিত হয়েছিল।[১][২]
গুরুত্ব[সম্পাদনা]
সত্য যুগে দক্ষ যজ্ঞের পর দেবী সতী যজ্ঞকুণ্ডে দেহত্যাগ করলে মহাদেব সতীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করলে বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দ্বারা সতীর মৃতদেহ খণ্ডিত করেন। এতে দেবী সতীর দেহখন্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত হয় এবং এ সকল স্থানসমূহ শক্তিপীঠ হিসেবে পরিচিতি পায়। [৩]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
রাজমালা অনুসারে প্রায় ৮০০ বছর পূর্বে গৌরের বিখ্যাত আদিসুরের বংশধর রাজা বিশ্বম্ভর সমুদ্রপথে চন্দ্রনাথে পৌঁছার চেষ্টা করেন। ত্রিপুরার শাসক ধন মানিক্য এ মন্দির থেকে শিবের মূর্তি তার রাজ্যে সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিভিন্ন তথ্য অনুসারে এখানের ইতিহাস সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য জানা যায়। প্রাচীন নব্যপ্রস্তর যুগে সীতাকুণ্ডে মানুষের বসবাস শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। এখান থেকে আবিষ্কৃত প্রস্তর যুগের বাঙালী জনগোষ্ঠীর হাতিয়ার গুলো তারই স্বাক্ষর বহন করে। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীতে সম্পূর্ণ চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। এর পরের শতাব্দীতে এই অঞ্চলের শাসনভার চলে যায় পাল সম্রাট ধর্মপাল দ্বারা এর হাতে (৭৭০-৮১০ খ্রিঃ)। সোনারগাঁও এর সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ্ (১৩৩৮-১৩৪৯ খ্রিঃ) ১৩৪০ খ্রিষ্টাব্দে এ অঞ্চল অধিগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে সুর বংশের শের শাহ্ সুরির নিকট বাংলার সুলতানি বংশের শেষ সুলতান সুলতান গীয়াস উদ্দীন মুহাম্মদ শাহ্ পরাজিত হলে হলে এই এলাকা আরাকান রাজ্যের হাতে চলে যায় এবং আরাকানীদের বংশধররা এই অঞ্চল শাসন করতে থাকেন। পরবর্তীতে পর্তুগীজরাও আরাকানীদের শাসনকাজে ভাগ বসায় এবং ১৫৩৮ খ্রি: থেকে ১৬৬৬ খ্রি: পর্যন্ত এই অঞ্চল পর্তুগীজ ও আরাকানী বংশধররা একসাথে শাসন করে। প্রায় ১২৮ বছরের রাজত্ব শেষে ১৬৬৬ খ্রি: মুঘল সেনাপতি বুজরুগ উন্মে খান আরাকানীদের এবং পর্তুগীজদের হটিয়ে এই অঞ্চল দখল করে নেন।[৪]
শিব চতুর্দশী মেলা[সম্পাদনা]
এই মন্দিরে প্রতিবছর শিবরাত্রি তথা শিবর্তুদশী তিথিতে বিশেষ পূজা হয়; এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশাল মেলা হয়। সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় এলাকা বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসে (ইংরেজি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস) বড় ধরনের একটি মেলার আয়োজন করে থাকে। যেটি শিবর্তুদশী মেলা নামে পরিচিত। এই মেলায় বাংলাদেশ,ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য সাধু-সন্ন্যাসী নারী-পুরুষ যোগদান করেন।এই মেলা দোলপূর্ণিমা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। প্রতি বছর পবিত্র এই তীর্থস্থানে মেলা কমিটির ধারণা করে থাকেন ১০-২০ লক্ষাধিক তীর্থযাত্রীর আগমণ ঘটে।
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "চন্দ্রনাথ মন্দিরের ইতিহাস I"। বৈদিক সনাতন হিন্দুত্ববাদ। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৫।
- ↑ "চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির ঘিরে আছে যত রহস্য"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৫।
- ↑ "Introduction and Preface"। www.sacred-texts.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৫।
- ↑ "রাজমালা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-০১।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

