বখশী হামিদ মসজিদ
বখশী হামিদ মসজিদ | |
---|---|
![]() | |
ধর্ম | |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
অবস্থান | |
অবস্থান | ইলশা,বাঁশখালী উপজেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থাপত্য | |
সৃষ্টিকারী | সুলাইমান খাঁন কররাণী (তবে লোকমুখে এটি বকশি হামিদ মসজিদ নামে পরিচিত) |
স্থাপত্য |
তালিকা |
স্থাপত্য শৈলী |
মসজিদের তালিকা |
অন্যান্য |
তালিকা |

বখশী হামিদ মসজিদ চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর ইলশা গ্রামে একটি দীঘির পাড়ে নির্মিত প্রাচীন একটি মসজিদ।মসজিদটির মূল প্রবেশপথে আরবীতে একটি শিলালিপি আছে।শিলালিপিতে কররাণী রাজবংশের শাসক সুলাইমান খাঁন কররাণীর আমলে নির্মিত বলে উল্লেখ আছে।নির্মাণকাল ৯ রমজান ৯৭৫ হিজরী যা ১৫৬৮ সালের ৯ মার্চের সাথে মিলে যায়।[১][২] মিহরাবের উপর স্থাপিত আরবী শিলালিপির বক্তব্য মতে, এটি সুলায়মান খান কররানী কর্তৃক প্রতিষ্ঠা করার কথা থাকলেও লোকমুখে বখশী হামিদের নির্মিত মসজিদ বলে পরিচিত। [৩] বর্তমান এ মসজিদ এর পাশে একটি হেফজখানা রয়েছে।মসজিদ এবং হেফজখানার পরিচালনায় আছেন মাওলানা মুজিবুর রহমান।
চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় বাহারচরা ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে বখশী হামিদ মসজিদের অবস্থান।এটি তথ্য,প্রামাণ্যচিত্রে চট্টগ্রামের সর্ব প্রাচীনতম মসজিদ ও বটে।এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে হযরত বখশী হামিদ (রহ:) একজন সুফী ধর্মপ্রচারক ছিলেন এবং উক্ত এলাকায় ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্য এসেছিলেন।পরবর্তীতে সেখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মসজিদে স্থাপিত ফলকে আরবিতে লেখা রয়েছে ‘বানাল মাসজিদুল মোকারেম ফি আহমিদ মূলক, ইসনাদুল মিলাত ওয়াদ্দিন সুলতানুল মুয়াজ্জাম সুলাইমান (কররানি) সালামালাহু আনিল ওয়াফাত ওয়াল বলিয়্যাতি মুরেখাত তিসযু রমজান, খামছুন ও সাবয়িনা ওয়া তিসআতু মিআত হিজরি আলাইহিস সালাম।[৪]
যার বাংলায় অর্থ দাঁড়ায়-এ মসজিদ নির্মাণ হয়েছে সেই বাদশাহর যুগে, যাকে উপাধি দেওয়া হয়েছে দ্বীন এবং মিল্লাতের সুলতানুল মুয়াজ্জম তথা মহান সম্রাট হিসাবে আর তিনি হলেন সুলাইমান কররানি (আল্লাহ তাকে বিপদাপদ থেকে মুক্ত রাখুন), তারিখ ৯৭৫ হিজরি সালের ৯ রমজান এবং ১৫৬৮ সালের ৯ মার্চ। এ ফলক থেকে সুলাইমান কররানি কর্তৃক প্রতিষ্ঠা করার কথা স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও প্রাচীনকাল থেকে লোকমুখে বখশী হামিদের নির্মিত মসজিদ বলে পরিচিত লাভ করে মসজিদটি।
বখশী হামিদের পুরো নাম মুহাম্মদ আবদুল হামিদ। বখশী তার উপাধি। বখশী ফার্সি শব্দ। এর অর্থ কালেক্টর বা করগ্রহীতা। স্থানীয় প্রবীণ মুরব্বিদের থেকে জানা যায়, তারা বংশপরম্পরায় জেনে আসছেন তৎকালীন বখশী হামিদ এ অঞ্চলের কালেক্টর ছিলেন। তারা বলেন, তৎকালীন এ এলাকায় জনবসতি কম ছিল।গৌড়ের জনৈক আমির। শাহ্ আবদুল করিম নামক এক সুফির সঙ্গে উপযুক্ত বাসস্থানের সন্ধানে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে বাঁশখালীতে অবতরণ করেন।
এরপর বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশার দরগাহ বাড়ির স্থানে পৌঁছলে শাহ্ আবদুল করিম সেখানে বসবাসের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং বসবাস শুরু করেন। বখশী আবদুল হামিদ ওই শাহ্ বংশেরই একজন বলে প্রাচীনকাল থেকে স্থানীয়দের মাঝে প্রচলিত রয়েছে। আর তিনিই এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন এবং পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে গেছেন। মসজিদের ছাদের গম্বুজগুলোর চূড়া পদ্মফুলের মতো। বড় গম্বুজটির ভেতরে লতাপাতার অলংকরণ।
মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এ মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট। মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড় এবং ছোট গম্বুজ দুটি ধনুকের মতো করে ছাদের সঙ্গে যুক্ত। প্রাচীন এ মসজিদটির সামনে লাগোয়া বিশাল বকশি হামিদ দিঘীতে রয়েছে শানবাঁধানো ঘাট। এর সচ্ছ পরিষ্কার পানি দিয়ে ওজু করেন মুসল্লিরা। পূর্ব-উত্তরে গড়ে উঠেছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স। এ কমপ্লেক্সের নাম রাখা হয় দারুল কুরআন মুহাম্মদিয়া শাহ আবদুল হামিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানা। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করার জন্য দূরদূরান্ত থেকে হাজারও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি সমবেত হন এ মসজিদে।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
পাখির চোখে বখশী হামিদ মসজিদ
-
বক্সি হামিদ মসজিদ এর দিঘি
-
মসজিদের গম্বুজ
-
মসজিদের পেছনের অংশ
-
মসজিদের সামনের অংশ
-
মসজিদের ভেতরের অংশ
-
স্থাপত্যে তথ্য
-
শিলালিপি
-
মসজিদের সামনে বিশাল বখশী হামিদ দিঘি
-
মসজিদের পুরনো ছবি
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ কায়সার, ওমর (২৯ আগস্ট ২০২২)। প্রথম আলো https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/g7wj3cmmcn। সংগ্রহের তারিখ ০৭-১২-২৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য);|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "বাংলাপিডিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "দৈনিক আমার দেশ"। ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ রাহাতুর ইসলাম, মুহাম্মদ (১৯ এপ্রিল ২০২৪)। "সাড়ে চারশ বছরের পুরনো বকশি হামিদ মসজিদ"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০২৪।