বাঙালি জাতীয়তাবাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সর্ব-বাংলা লাল-সাদা রঙে লেখা "জয় বাংলা"। এটি এক স্লোগান, যা বঙ্গবঙ্গমাতার জন্য জাতীয়তাবাদকে ইঙ্গিত করে।

বাঙালি জাতীয়তাবাদ বা বাঙালিয়ানা হলো এক রাজনৈতিক অভিব্যক্তি বা জাতীয়তাবাদ যার মাধ্যমে প্রাচীন কাল থেকে দক্ষিণ এশিয়াতে বসবাসরত বাঙালি জাতি, তথা বাংলা ভাষাগত অঞ্চলের অধিবাসীদের বুঝানো হয়ে থাকে। বাঙালিরা মূলত বাংলাদেশভারতের ত্রিপুরাপশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বসবাস করে। বাংলাদেশের সংবিধানের আসল সংস্করণের চারটি মূল স্তম্ভের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদ অন্যতম[১] যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে প্রধান অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করছে[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ ও ভারতে বাংলা ভাষা

বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাংলার ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে গৌরবোজ্জ্বল ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলার নবজাগরণ বলতে বাঙালি সমাজের রুপান্তর এবং উন্নয়নে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রচলন শুরু হওয়াকে বোঝানো হয়ে থাকে। বাংলা হয়ে ওঠে আধুনিক সংস্কৃতি, বুদ্ধিজীবী ও বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের, রাজনীতি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। প্রথম দিকের সামাজিক ও ধর্মীয় পুনর্গঠন যেমন বাংলায় ব্রাহ্ম সমাজ এবং রামকৃষ্ণ মিশন ইত্যাদির নেতৃত্বে ছিলেন রাজা রামমোহন রায়, শ্রী অরবিন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংসস্বামী বিবেকানন্দের মত বিভিন্ন জাতীয় নেতা এবং সংস্কারকগণ। বাংলা সাহিত্য, কবিতা, ধর্ম, বিজ্ঞান এবং দর্শনের বিস্তারের ক্ষেত্রে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাইকেল মধুসুদন দত্ত, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, জগদীশ চন্দ্র বসুকাজী নজরুল ইসলামের কাজ ব্যাপক অবদান রাখে। ইয়ং বেঙ্গল এবং যুগান্তর আন্দোলন এবং অমৃত বাজার পত্রিকার মত ভারতের সংবাদপত্রগুলো বুদ্ধিজীবী উন্নয়ন নেতৃত্বে দিয়েছিলো। কলকাতা-ভিত্তিক ভারতীয় ন্যাশনাল এসোসিয়েশন এবং ব্রিটিশ ভারতীয় এসোসিয়েশন ছিল ভারতে প্রথম দিকের রাজনৈতিক সংস্থা।

বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫)[সম্পাদনা]

পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের মানচিত্র

প্রথম বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে আন্দোলনের সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ নামে অধিক পরিচিতি লাভ করে তা মূলত ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ দ্বারাই সংঘটিত হয়।[৩][৪] বঙ্গভঙ্গকে বাঙালি মুসলমানরা সমর্থন করলেও অধিকাংশ বাঙালি বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেন এবং স্বদেশী আন্দোলন এর মত বিভিন্ন ধরনের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন এবং ব্যাপকভাবে ইউরোপীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেন। ব্রিটিশ আধিপত্যকে প্রত্যাখ্যান করে এবং একটি অখণ্ড বাংলা প্রতিষ্ঠার আশায়, বাঙালিরা একটি বিপ্লবী আন্দোলন ডাক দেন, যা বাঙালির জাতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিগণিত হয়। বিপিনচন্দ্র পাল, খাজা সলিমুল্লাহ, চিত্তরঞ্জন দাস, আবুল কালাম আজাদ, সুভাষচন্দ্র বসু, তাঁর ভাই শরৎচন্দ্র বসু, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এর মত রাজনৈতিক নেতাদের উত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলা, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি অন্যতম ভিত্তি হিসেবে গড়ে উঠে।

অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার প্রস্তাব[সম্পাদনা]

হিন্দু–মুসলিম দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়া ও পাকিস্তান মুসলিম রাষ্ট্রের চাহিদা ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠায়, ১৯৪৭ সালের মাঝামাঝিতে ভারত বিভাজনের প্রয়োজনীয়তা প্রবল হয়ে উঠে। শরৎচন্দ্র বসু, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী, কিরণশঙ্কর রায়আবুল হাশিমের মতো বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা এর বিরুদ্ধে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার ডাক দিয়েছিলেন।[৫]

পূর্ব পাকিস্তান[সম্পাদনা]

উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের পর চার দশক ব্যাপী বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সমগ্র এলাকাকে কাঁপিয়েছিল, যার মধ্যে বাংলা ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ গঠন।[৬][২]

বাংলা ভাষা আন্দোলন[সম্পাদনা]

রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার অধিকার আদায়ে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় আয়োজিত মিছিল

বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে পূর্ব বাংলায় মাতৃভাষা বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাকে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের (প্রায় ১২৪৩ মাইল) অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলাকে ইসলামীকরণ তথা আরবিকরণের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে আরবি হরফে বাংলা লিখন অথবা সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।[৭] আবার, সমগ্র পাকিস্তানের সকল ভাষা লাতিন হরফে লেখার মাধ্যমে বাংলার রোমানীকরণের প্রস্তাবও করা হয়।[৮][৯] এসকল ঘটনার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ মাতৃভাষা বাংলার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক,[১০] সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এম.এ. ক্লাসের ছাত্র বরকতআব্দুল জব্বারসহ[১১][১২] আরও অনেকে। এছাড়া ১৭ জন ছাত্র-যুবক আহত হয়। শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২১শে ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২শে ও ২৩শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র, শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে এবং সভা-শোভাযাত্রাসহ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন শফিউর রহমান শফিক, রিক্সাচালক আউয়াল এবং অলিউল্লাহ নামক এক কিশোর। ২৩শে ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও পুলিশ অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়। এ নির্লজ্জ, পাশবিক, পুলিশি হামলার প্রতিবাদে মুসলিম লীগ সংসদীয় দল থেকে সেদিনই পদত্যাগ করেন। ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে রাতারাতি ছাত্রদের দ্বারা গড়ে ওঠে শহীদ মিনার, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা। ২৬শে ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন।

ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলাউর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লিখিত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রবর্তিত হয়। সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন জারি করে।[১৩] ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা বৈশ্বিক পর্যায়ে সাংবার্ষিকভাবে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদ্‌যাপন করা হয়।[১৪]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হলো বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রচারিত একটি মতাদর্শ। ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে এই মতাদর্শটি উত্থাপিত হয় এবং এই মতবাদটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)'র প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি।[১৫]

ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিকতা বিরোধী আন্দোলনের সময় হতেই এদেশে জাতীয়তাবাদের চর্চা পরিলক্ষিত হয়। এর পরে খুব শীঘ্রই ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের একটি ধারণা উত্থান লাভ করে, যা পরবর্তীতে জাতিগত জাতীয়তাবাদে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে জিয়াউর রহমানের মতো নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ মতাদর্শটির প্রচার শুরু করেন। যা মূলত বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের আত্মিক বন্ধনের ওপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।[১৬]

ভারত[সম্পাদনা]

বাংলা পক্ষের প্রথম জাতীয় সম্মেলন

১৯৮১ সালে উত্তরপূর্ব ভারতে বাঙালি বিদ্বেষী হিংসার সময় আমরা বাঙালি সংগঠন আন্দোলন করতে শুরু করেছিল।[১৭] এই সমাজ-রাজনৈতিক দলটি প্রভাতরঞ্জন সরকারের প্রগতিশীল ব্যবহারিক তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।[১৮][১৯] দলটির মূলমন্ত্র হলো আসাম ও উত্তরপূর্বে বাঙালিদের উচ্ছেদ বন্ধ করা। তারা নির্বাচনে কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত লাভ করেছিল। ১৯৮০-এর দশকে এটি ত্রিপুরা বিধানসভা লাভ করেছিল। আমরা বাঙালি সংগঠন বাঙালিদের জন্য পৃথক রাজ্যের প্রস্তাব করেছিল যেখানে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহৃত হবে।[২০]

২০১৯ সালে হিন্দিউর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় রাশিবিজ্ঞান সংস্থার অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বাংলা পক্ষ গঠন করেছিলেন। সংগঠনটি সরকারি চাকরিতে পশ্চিমবঙ্গবাসীদের ১০০% সংরক্ষণ[২১] এবং অন্যান্য চাকরি, শিক্ষা, সামরিক বাহিনী ও প্রশাসনে ৯০% সংরক্ষণের দাবি করেছিল।[২২] বাংলা পক্ষের দাবির ফলে কলকাতা[২৩]যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোমিসাইল সংরক্ষণ[২৪] এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) বাঙালিদের উচ্ছেদ বাতিল হয়েছিল।[২৫] এছাড়া তারা বাঙালি বিদ্বেষিতার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপির) নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করেছিল। তারা দাবি করেছিল যে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯ (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) চালু করে বিজেপি বাঙালিদের সংখ্যা হ্রাস করতে চাইছে এবং তাদের মতে, এনআরসির তালিকায় আসামের ১৩ লক্ষ বাঙালির নাম নথিভুক্ত নয়। বাংলা পক্ষ ও কাঞ্চনপুর নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ ত্রিপুরায় এক বড় আন্দোলন শুরু করেছিল, যেখানে ৩০,০০০ বাঙালি ভিড় করেছিল, যা ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালিদের সামাজিক লাঞ্ছনার অভিযোগ করেছিল।[২৬]

৯ ডিসেম্বর ২০১৯-এ বাংলা পক্ষ থেকে পৃথক হয়ে জাতীয় বাংলা সম্মেলন গঠিত হয়েছিল। হিন্দি ও উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি "আরোপ"-এর বিরুদ্ধেই জাতীয় বাংলা সম্মেলন ও বাংলা পক্ষ গঠিত হয়েছিল।[২৭] জাতীয় বাংলা সম্মেলন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে সিএএর বিরোধিতা করেছিল।[২৮] ২০২০ সালে জাতীয় বাংলা সম্মেলন রবীন্দ্র সরোবরসুভাষ সরোবরের মতো সংবেদনশীল হ্রদে ছট পূজার বিরোধিতা করেছিল। যদিও ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবিউনাল (এনজিটি) এই হ্রদগুলিতে পূজা করা নিষিদ্ধ করেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবীন্দ্র সরোবরে ছট পূজার জন্য এনজিটিকে আবেদন করেছিল এবং এর জন্য ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছিল। কিন্তু আবেদনটি বাতিল হয়েছিল এবং সর্বোচ্চ আদালত রাজ্য সরকারকে কোনো ক্ষতিপূরণ করেনি। সংগঠনটি হ্রদের প্রবেশদ্বারে রাতভর নজরদারি রেখেছিল যাতে করে কেউ সেখানে যেতে না পারে। কয়েক হাজার ভক্তগণ হ্রদে প্রবেশ করে পূজা সম্পন্ন করেছিলেন। এমনকি কলকাতা পুলিশের কর্মীরাও এনজিটির আদেশ বলবৎ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না এবং হ্রদে অলসভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।[২৯] জাতীয় বাংলা সম্মেলন দাবি করেছিল পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজাকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হলেও বিহার এবং উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি উৎসবগুলিকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি এবং এটিকে "ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির জন্য সরকারের অবাঙালি তোষণ"। জাতীয় বাংলা সম্মেলন কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে "হিন্দি আরোপ"-এর বিরোধিতা করেছিল। এই আন্দোলনগুলির উদ্দেশ্য হলো বাঙালিদের উপর "হিন্দি আরোপ" ও কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা।[৩০][৩১]

বাংলা ভাষা আন্দোলন[সম্পাদনা]

ভারতের বিভিন্ন অংশে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে বাঙালি জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন শুরু করে। অবিভক্ত ভারতে ১৯১২[৩২] সালে মানভূম জেলাকে ভারতের বিহার ও ওড়িশার সাথে যুক্ত করা হয়। সে সময় মানভূমবাসী তাদের জেলাকে বাংলার সাথে যুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। বাংলার সাথে যুক্ত হওয়ার এ আন্দোলন থেকেই মানভূমে ভাষা দাবিও যুক্ত হয়।[৩৩] সে সময় যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল তা ১৯৫৬ সালে সাময়িক ভাবে নতুন জেলা গঠনের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের আন্দোলনকারীদের দাবি মিটে গেলেও ভারতের অন্যান্য প্রদেশে বাংলা ভাষা আন্দোলন আজও বিদ্যমান। ভারতের বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে মানভূম ও আসামের নাম প্রথম উঠে আসে। এছাড়াও ঝাড়খণ্ড, বিহার, ছত্তিশগড়, কর্ণাটকদিল্লিতে বাঙালি মাতৃভাষার দাবিতে লড়াই করছে।

হিন্দি বিরোধী আন্দোলন[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গের হিন্দি বিরোধী আন্দোলন ভারতে ধারাবাহিকভাবে সংগঠিত হয়। আন্দোলনগুলি মূলত সামাজিক মাধ্যম ও পথসভা বা বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন জমাদানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। পথসভা বা বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন জমাদানের কর্মসূচি প্রারম্ভিক সময়ে মূলত কলকাতা শহর বা কলকাতা মহানগর অঞ্চল কেন্দ্রিক হলেও পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে বিস্তার লাভ করে। এই সকল আন্দোলনগুলি আমরা বাঙালি, বাংলা পক্ষজাতীয় বাংলা সম্মেলনের মত সংগঠনের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল।[৩৪][৩৫][৩৬]

একবিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকের শেষের সমকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামফল, জাতীয় সড়কের ও কলকাতা মেট্রোর নির্দেশনা ফলক বাংলা ব্যতিরকে হিন্দি বা হিন্দি ও ইংরেজি ভাষার ব্যবহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংগঠন পথসভা ও আন্দোলন পরিচালনা করেছে। কলকাতা মেট্রো রেলের স্মার্ট কার্ডে শুধু মাত্র হিন্দি ও ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হত। এই বিষয়ে বাংলা পক্ষ প্রতবাদে অবতীর্ণ হয়েছিল এবং বাংলা ভাষী রাজ্যে বাংলা ভাষা ব্যবহার না হওয়া ও সেই সঙ্গে বাংলাকে ব্যতি রেখে হিন্দি ব্যবহাররে বিষয়টি তুলে ধরেছিল। এই প্রতিবাদের পরে বাংলা ভাষাকে কলকাতা মেট্রো রেলের স্মার্ট কার্ডে স্থান দেওয়া হয়েছিল। [৩৪]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "9.Nationalism"bdlaws.minlaw.gov.bdConstitution of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২৫ 
  2. Schuman, Howard (১৯৭২)। "A Note on the Rapid Rise of Mass Bengali Nationalism in East Pakistan"American Journal of Sociology78 (2): 290–298। এসটুসিআইডি 143759579জেস্টোর 2776497ডিওআই:10.1086/225325 
  3. John R. McLane, "The Decision to Partition Bengal in 1905," Indian Economic and Social History Review, July 1965, 2#3, pp 221–237
  4. Encyclopedia Britannica, "Partition of Bengal" http://www.britannica.com/EBchecked/topic/60754/partition-of-Bengal
  5. Craig Baxter (১৯৯৭)। Bangladesh: From a Nation to a State। Westview Press। পৃষ্ঠা 56। আইএসবিএন 0-8133-2854-3Some Bengalis had a different plan: a third unit to be carved out of India that would include a united and independent Bengal. Congress leader Sarat Chandra Bose opposed the possible division of Bengal ... He was joined by other members of the Congress, including Kiran Shankar Roy. In time, Suhrawardy and Abul Hashem and others who were allied with them took up the cause ... On May 20, 1947, Abul Hashem and Sarat Bose signed an agreement spelling out the terms for an independent Bengal ... The British statement of June 3 that provided for the division of both Bengal and the Punjab provided the practical end to the fantasy of a united Bengal. 
  6. Asahabur Rahman (১৭ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Partition, 1947—Whodunnit?"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২৫ 
  7. প্রিনস, এরশাদুল আলম (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "বাংলা হরফের ওপর শয়তানি আছর"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২২ 
  8. হোসেন, সেলিনা; বিশ্বাস, সুকুমার; চৌধুরী, শফিকুর রহমান, সম্পাদকগণ (২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬)। একুশের স্মারকগ্রন্থ’ ৮৬। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৫২–৭৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০২২ 
  9. আল-হেলাল, বশীর (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯)। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস (২য় সংস্করণ)। বাংলাবাজার, ঢাকা: আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৬৮৫–৬৯১। আইএসবিএন 984-401-523-5। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০২২ 
  10. ইতিহাস, কবির উদ্দিন আহমেদ. পৃ-২২৫-২৬
  11. "ভাষা আন্দোলন"বাংলাপিডিয়া - বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ। এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। ২০১৬-০৪-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০২-১০ 
  12. "ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাবেশের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন ছাত্রসহ চার ব্যক্তি নিহত ও সতেরো ব্যক্তি আহত"। দৈনিক আজাদ। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২। 
  13. "বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭"আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৯-০৫-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২২ 
  14. গ্লাসি, হেনরি এবং মাহমুদ, ফিরোজ। ২০০৮। লিভিং ট্রাডিশন [জীবন্ত ঐতিহ্য]। কালচারাল সার্ভে অফ বাংলাদেশ সিরিজ-২। এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। ঢাকা। পৃষ্ঠা ৫৭৮।
  15. van Schendel ও Guhathakurta 2013, পৃ. 332।
  16. Uddin 2006, পৃ. 138।
  17. Van Schendel, Willem (২০০৫)। The Bengal Borderland: Beyond State and Nation in South Asia। Anthem Press। পৃষ্ঠা 197। আইএসবিএন 978-1-84331-145-4Bengali-speaking Indian citizens living in India ... resented being portrayed as infiltrators ... Fearing for their position, they began creating organizations to protect their interests, e.g. 'Amra Bangali' ... 'If the eviction of Bengalis from Assam does not stop, all Bengal will be set afire!' Slogan of the political group Amra Bangali ... 1981. 
  18. "Amra Bangali" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-০৩-১৫। ২০২০-০৪-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-১৬ 
  19. "Who are the Amra Bangalis?"Indian Express। ১৩ জুন ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  20. Chakravarti, Sudeep (জানুয়ারি ২২, ২০২০)। "Opinion | 'Bangalistan' may take Tripura back to its bloody past" 
  21. "'Bangla Pokkho' seeks job, education reservation ahead of Bengal polls - The New Indian Express"Newindianexpress.com 
  22. "'Bangla Pokkho' seeks job, education reservation for Bengalis in Bengal - Times of India"The Times of India। ১৮ জানুয়ারি ২০২১। 
  23. "Calcutta University sets domicile term for tech entry"Telegraphindia.com 
  24. [১][অকার্যকর সংযোগ]
  25. Chakraborty, Ritika (অক্টোবর ১৭, ২০২০)। "ইংরেজি না বলার অপরাধে আয়কর দফতর থেকে ছাঁটাই পাঁচ কর্মী, প্রতিবাদ বাংলা পক্ষের"। অক্টোবর ২৫, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৬, ২০২১ 
  26. "ত্রিপুরায় আমন্ত্রিত বাংলা পক্ষ, জনসভায় ভিড় ৩০,০০০ বাঙালির"Aajkaal.in/। ১২ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২৩ 
  27. "বাংলা পক্ষে ভাঙন, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির অভিযোগ এনে তৈরি হল পৃথক সংগঠন"Anandabazar Patrika। ডিসেম্বর ১০, ২০১৯। 
  28. Scroll Staff (৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "CAA: Several detained after scuffle at Calcutta Book Fair, mob beats up police officer"Scroll.in 
  29. "Bengali Ethnic Groups Set Up Vigils, Prevent Chhath Puja In Kolkata's Lakes"Outlookindia.com/। ২১ নভেম্বর ২০২০। 
  30. "बंगाल की विकट जंग, ममता- मोदी में किसका दांव पड़ेगा भारी"Outlookhindi.com/ (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জানুয়ারি ২০২১। 
  31. Desk, Bengali (৮ সেপ্টেম্বর ২০২০)। "শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে মশাল মিছিল জাতীয় বাংলা সম্মেলনের"Kolkata24x7। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০২১ 
  32. নন্দদুলাল আচার্য (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "ভাষা আন্দোলনে মানভূম"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৩ 
  33. "The Official Website of Purulia District"www.purulia.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-১৭ 
  34. "Anti-Hindi movement re-surfaces in Bengal, leader says BJP's rise a threat to regional languages"www.hindustantimes.com (ইংরেজি ভাষায়)। হিন্দুস্তান টাইমস। ৬ জুলাই ২০১৮। ১২ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২২ 
  35. "পশ্চিমবঙ্গে হিন্দির আগ্রাসনের অভিযোগ"www.dw.com। ২৯ অগাস্ট ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২২ 
  36. অমিতাভ ভট্টশালী (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "পশ্চিমবঙ্গে প্রবল হচ্ছে 'হিন্দির আগ্রাসন' বিরোধী প্রচারণা, রাজ্যে থাকার শর্ত 'বাংলা জানা'"www.bbc.com। কলকাতা: বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২২ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]