মুক্তিবাহিনী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুক্তিবাহিনী
মুক্তি
নেতামহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী, প্রধান সেনাপতি
মোহাম্মদ আবদুর রব, সেনাপ্রধান
আবদুল করিম খন্দকার, উপ-সেনা প্রধান
অপারেশনের তারিখমার্চ - ডিসেম্বর ১৯৭১
গোষ্ঠীবাংলাদেশ সেনাবাহিনী
 ∟ কে ফোর্স
 ∟ এস ফোর্স
 ∟ জেড ফোর্স
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
বাংলাদেশ রাইফেলস
বাংলাদেশ আনসার
বাংলাদেশ পুলিশ

বিশেষ গেরিলা বাহিনী
 ∟ ন্যাপ বিশেষ গেরিলা বাহিনী
 ∟ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী
 

গণ বাহিনী
 ∟ মুজিব বাহিনী
 ∟ কাদের বাহিনী
 ∟ হেমায়েত বাহিনী
 ∟ আফসার বাহিনী
দাস পার্টি
ক্র্যাক প্ল্যাটুন
সক্রিয়তার অঞ্চলবাংলাদেশ
মতাদর্শবাঙালি জাতীয়তাবাদ

সমাজতন্ত্র

১৯৭১ বাংলাদেশে গণহত্যা প্রতিরোধ ও প্রতিহত করা[১]
এর অংশ১৯৭১ সালের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার[২]
মিত্র ভারত
বিপক্ষপাকিস্তান
খণ্ডযুদ্ধ ও যুদ্ধগাজীপুরের যুদ্ধ, গোয়ালহাটির যুদ্ধ, গরিবপুরের যুদ্ধ, ধলাইয়ের যুদ্ধ, রাঙ্গামাটির যুদ্ধ, কুষ্টিয়ার যুদ্ধ, দরুইনের যুদ্ধ, অপারেশন বরিশাল, অপারেশন জ্যাকপট


মুক্তিবাহিনী বা মুক্তিফৌজ হল ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়া বাঙালি সেনা, ছাত্র ও সাধারণ জনতার সমন্বয়ে গঠিত একটি সামরিক বাহিনী। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ধীরে ধীরে সাধারণ বাঙ্গালীদের এই বাহিনী গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যরা "বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী" গঠন করেন এবং জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী প্রধান সেনাপতি পদ গ্রহণ করেন।[৩] এই সময় ভারত বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। সাধারণ জনতা যুদ্ধকালীন সময়ে নিরলসভাবে এই বাহিনীকে সাহায্য করে। যুদ্ধের পর পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বাংলাদেশের সকল সেনা ও জনতার বাহিনীকে "মুক্তিবাহিনী" হিসেবে সম্বোধন করা হয়। মুক্তিবাহিনী বেশিরভাগ সময়ই গেরিলা যুদ্ধের নীতি অবলম্বন করে শত্রু পক্ষকে ব্যাতিব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করতো। মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধকৌশল অনেকটা বিপ্লবী চে গুয়েভারার দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলো বলে মনে করা হয়[৪] এবং একে বিভিন্ন সময় ফরাসি মাকি বাহিনী, ভিয়েত কং এবং মার্শাল টিটোর গেরিলা বাহিনীর তুলনা করা হতো এর রণকৌশল ও কার্যকারীতার কারণে।[৫]

মুক্তিবাহিনীর শুরু[সম্পাদনা]

পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৫শে মার্চ ১৯৭১ এর গণহত্যার পর প্রতিরোধের জন্য মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠে। কিন্তু এ ছিলো বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়মাত্র। স্বাধীনতার সংগ্রাম এর আগেই দানা বাধতে শুরু করে ১৯৬৯ এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ১৯৭০ এর শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে তা গণআন্দোলনে রূপ নিতে থাকে। ১৯৭১ এর মার্চে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (পরবর্তীতে বাংলাদেশ) ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অসন্তোষ এবং সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের দাবী তৎকালীন পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী কঠোর হাতে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয়[৬][৭] এবং অপারেশন সার্চলাইটের নীল নকশা আঁটে।[৮]

পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের[৯] মুখে অগণিত অসহায় মানুষ ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে আশ্রয়প্রার্থী হতে থাকে (আনুমানিক ১ কোটি শরণার্থী)[১০][১১] , যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের গতিপ্রকৃতিতে একটা নতুন মাত্রা দেয়। বাংলার মানুষের অসহনীয় মানবিক দূর্যোগের মুখে ভারত সরকার মুক্তিবাহিনীকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করা শুরু করে।

শুরুর দিকে মুক্তিবাহিনী মুক্তিফৌজ নামে পরিচিত হয়; যার “ফৌজ” অংশটি মূলত আরবী;[১২] এটি বাংলা "বাহিনী" শব্দের পরিপূরক, যা পরে বিভিন্ন ভাষার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে।[১৩] এটি আগে বিভিন্ন শহরে ও গ্রামে সংগ্রাম পরিষদ নামে ছাত্র ও যুবকদের উদ্যোগে গঠিত হয় ১৯৭১ এর মার্চের শুরুর দিকে। এটা ঠিক পরিষ্কার নয় কীভাবে মুক্তিফৌজ মুক্তিবাহিনী নামে রূপান্তরিত হয়। তবে, নাম যাই হোক না কেন, এটা বাংলার মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামী বাহিনীকেই নির্দেশ করে।

১৯৬৯ সালের আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে শুরু করে এবং শেখ মুজিবের ছয় দফা আন্দোলনের চূড়ান্তলগ্ন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালিদের ভেতর স্বাধীন হবার আন্দোলন শুরু হয়, যার মূলে ছিলেন জাতীয়তাবাদী ,প্রগতিবাদী এবং বামপন্থিরা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পরবর্তিকালের সংকট এই ভাবনাকে আরো দৃড় করে । শেখ মুজিব নিজে এ বিষয়ে অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর চাপে ছিলেন। বিশেষ করে কট্টর-জাতীয়তাবাদী তরুণ ছাত্র নেতারা চাচ্ছিলেন যে শেখ মুজিব যেন অবিলম্বে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । কয়েকটি বামপন্থি এবং জাতীয়তাবাদী দল সশস্ত্র প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, এবং বাঙ্গালি সেনা অফিসার ও সৈন্যরা পাকিস্তান সেনাবাহিনী ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলো । শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে, ৩রা মার্চ হতে এবং ৭ই মার্চ পরবর্তি দিনগুলোতে, তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ একটি শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দলোনে যোগ দেয় যার ব্যাপ্তিকাল ছিলো ২৫-এ মার্চ ১৯৭১ এর মধ্যরাত পর্যন্ত। সেইদিন-ই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিতে নিরস্ত্র জনতার উপর হামলা চালায় । ২৫-এ মার্চ ১৯৭১ এর রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই হামলার সময়, কিছু স্বল্প ক্ষমতার প্রতিরোধ প্রচেস্টার খবর পাওয়া যায়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ইকবাল হল এবং রাজারবাগ পুলিশ হেডকোয়ার্টার-এ (এখানকার প্রতিরোধের মাত্রা ছিলো তীব্র)। রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বেগবান হয়ে ওঠার সাথে তাল মিলিয়ে, মুক্তিকামী বাঙ্গালি এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের যুদ্ধের পরিবেশ গড়ে উঠল। সেনাবাহিনীর বাঙ্গালী সদস্যরাও পাকিস্তানের পক্ষ ছেড়ে দেশের নানান জায়গায় সমবেত হতে থাকলো।

মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যৌথভাবে মিত্রবাহিনী বলা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল নিয়াজি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

যুদ্ধকালীন সংগঠন[সম্পাদনা]

যদিও অপারেশন সার্চলাইট[১৪] এর পাকিস্তানি পরিকল্পনাকারীরা বাঙ্গালিদের প্রতিরোধ দীর্ঘ হবে বলে প্রত্যাশা করেনি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জনসাধারণের ওপর হামলা করার সময় থেকেই মুক্তিবাহিনী বারবার দৃশ্যপটে থাকলো । প্রথাগত গেরিলা রূপ ধারণ করার পূর্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, কর্নেল (পরবর্তীকালে জেনারেল) আতাউল গণি ওসমানী-এর নেতৃত্বে এই বাহিনীকে গড়ে তোলা হয় মুজিব এর আন্দোলনের সাহায্যকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনী হিসেবে। স্বাধীনতার ঘোষণার পর, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এদেরকে দমন করার চেষ্টা করলেও কিন্তু গোপনে বেড়ে ওঠা এই "বাংলাদেশ সেনাবাহিনী" তে বিদ্রোহী বাঙ্গালি সৈন্যদের সংখ্যা বেড়েই চলছিল। এই বাঙ্গালি সৈন্য ইউনিটগুলো ধীরে ধীরে মুক্তিবাহিনীতে যুক্ত হয় এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডার আরো মজবুত করে।

১৯৭১ সালের ১২ই এপ্রিল কর্নেল আতাউল গণি ওসমানী তেলিয়াপাড়া ( সিলেট ) হেডকোয়ার্টারে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১২ই এপ্রিল ওসমানীকে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। ১১-১২ই জুলাই এর মধ্যে বাংলাদেশ মুক্তি বাহিনীকে সংঘটিত করবার গুরুতর পদক্ষেপ নেয়া হয়। কোলকাতাতে সেক্টর কমান্ডারদের একটি সভায় যুদ্ধের কৌশল , বিদ্যমান সমস্যা এবং ভবিষ্যৎ প্রতিরোধ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করে চারটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেগুলো ছিলো :

  • যোদ্ধাদের গঠন এবং কৌশল হবে এরকম :
    • প্রতিটি গেরিলা দলে ৫ থেকে ১০ জন প্রশিক্ষিত যোদ্ধা থাকবে যাদের বাংলাদেশ এর নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হবে।
    • সাধারণ যোদ্ধারা শত্রুদের ওপর সম্মুখ হামলা চালাবে। এদের ৫০ থেকে ১০০ ভাগের কাছে অস্ত্র থাকবে। স্বেচ্ছাসেবক গোয়েন্দাদের নিয়োজিত করা হবে শত্রুদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে। এদের ৩০ ভাগ অস্ত্রে সজ্জিত থাকবে।
  • নিয়মিত বাহিনীকে ব্যটেলিয়ন এবং সেক্টর এ বিভক্ত করা হবে।
  • সামরিক অভিযানকালে নিম্নে বর্নিত কৌশলগুলো গ্রহণ করা হবে :
    • বিপুল সংখ্যক গেরিলাকে পাঠানো হবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আকস্মিক এবং ওঁৎ পেতে আক্রমণ চালাতে।
    • শিল্প কারখানাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করতে হবে এবং বৈদ্যুতিক সরবরাহ ব্যাহত করা হবে।
    • পাকিস্তানিদের কাঁচামাল এবং প্রস্তুতকৃত পণ্য রপ্তানিতে বাধা দেয়া হবে ।
    • কৌশলগত সুবিধার জন্য শত্রুকে ছত্রভঙ্গ করতে হবে ।
  • পুরো বাংলাদেশ কে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হবে।

মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা প্রশিক্ষিত এবং অস্ত্রে সজ্জিত মুক্তিবাহিনী-এর বাইরেও পৃথক ( জাতীয়তাবাদী বা বামপন্থি ) নেতৃত্বে কিছু স্বতন্ত্র গেরিলা বাহিনী সফলভাবে কিছু জায়গা নিয়ন্ত্রণ করছিলো।

নিয়মিত ও অনিয়মিত বাহিনী[সম্পাদনা]

মুক্তিবাহিনীর "নিয়মিত বাহিনী" গঠন করা হয়েছিল ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (EBR), ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস (পরবর্তীতে বাংলাদেশ রাইফেলস বা BDR), পুলিশ, অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ জনগণ নিয়ে। এই বাহিনী বাংলাদেশব্যাপি ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল এবং নিয়ন্ত্রণ ছিলো সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে। যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে নিয়ন্ত্রিত এবং সংঘবদ্ধ আক্রমণের জন্য তিনটি শক্তিশালী বাহিনী গঠন করা হয় - মেজর (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে জেড-ফোর্স, মেজর (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার) খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে কে-ফোর্স এবং মেজর (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) কে. এম. শফিউল্লাহের নেতৃত্বে এস-ফোর্স.

অনিয়মিত বাহিনী, যাকে "গণ বাহিনী" নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে, গঠন করা হয়েছিলো গেরিলা যুদ্ধে প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদের নিয়ে। এই বাহিনীর সদস্যরা ছিলো মূলত ছাত্র, কৃষক, শ্রমজীবী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা। তাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষনের পর বিভিন্ন সেক্টরে বিন্যস্ত করা হয়েছিলো। তাদের মূল দায়িত্ব ছিলো বাংলাদেশের ভেতরে পাকিস্তানি আর্মির বিরুদ্ধে গেরিলা কায়দায় চকিত আক্রমণ চালানো এবং যথাসম্ভব ক্ষতিসাধণ। নিয়মিত বাহিনী গতানুগতিক সম্মুখযুদ্ধে নিয়োজিত ছিলো।

মুক্তিবাহিনী মূলত দু'টি উৎস থেকে গড়ে উঠেছিলো - তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং শহর ও গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক তরুণ ও যুবকেরা। এছাড়াও সংগ্রাম পরিষদ, আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, বামপন্থী-সমাজতান্ত্রিক দল ও উগ্রপন্থী কিছু দলের যুব ও ছাত্র সংগঠন সমূহও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। মুক্তিবাহিনীর বেশ কয়েকটি ভাগ ছিলো। প্রথমত, একটি ভাগ ছিলো নিয়মিত সেনাসদস্যদের সংগঠিত করে তৈরি করা অংশ, যাদের "মুক্তিযোদ্ধা" বলা হয়ে থাকে। অপর একটি ভাগ ছিলো বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস (Bangladesh Liberation Forces - BLF) (বাংলা:বাংলাদেশ স্বাধীনতা বাহিনী) নামে, যারা ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগের চার যুবনেতার দ্বারা সংগঠিত ছিলো। এর চলতি নাম ছিল মুজিব বাহিনী৤ আরেকটি ভাগের নাম ছিলো "বিশেষ গেরিলা বাহিনী" (Special Guerrilla Forces (SGF)), যা বামপন্থী দলসমূহের (বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (Communist Party of Bangladesh), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (National Awami Party), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (Bangladesh Students Union)) দ্বারা সংগঠিত হয়েছিলো। এই গেরিলা বাহিনী একত্রে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ গেরিলা আক্রমণ চালাতো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো চকিত আক্রমণ দ্বারা পাকবাহিনীর যথাসম্ভব ক্ষতিসাধণ করা। এই বাহিনীর কার্যক্রম সামাল দেওয়ার জন্য পাকবাহিনী কিছু সমান্তরাল আধা-সামরিক বাহিনী তৈরি করে, যেমন রাজাকার বাহিনী, আল-বদর বাহিনী, আল-শামস(মূলত তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী|জামাত-ই-ইসলামী]] ও অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের সদস্যদের নিয়ে) বাহিনী। এছাড়াও তারা স্বাধীনতা-বিরোধী বাঙ্গালী ও বিহারীদেরকেও কাজে লাগায়। এই বিহারীরা ৪৭ এর দেশবিভাগের সময় ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে বসত গড়েছিলো। এই সব আধা-সামরিক বাহিনীগুলো জুন-জুলাইয়ে বর্ষার সময় পাকিস্তান বাহিনীর উপর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ কিছুটা হলেও ঠেকাতে পেরেছিলো।

বাংলাদেশ নৌ বাহিনী[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠন করা হয়। প্রাথমিকভাবে, দু'টি জাহাজ ও ৪৫ জন নৌ-সেনা নিয়ে গড়ে তোলা হয় এই বাহিনী। এই দু'টি জাহাজ পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজের উপরে অনেক সফল আক্রমণ চালায়। ১০ই ডিসেম্বর জাহাজ দু'টি মংলা বন্দর আক্রমণের জন্য অগ্রসর হচ্ছিলো, কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ভারতীয় যুদ্ধবিমান এই দু'টি জাহাজকে পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ মনে করে ধ্বংস করে দেয়।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী[সম্পাদনা]

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে সেপ্টেম্বর, ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন এয়ার কমোডর এ.কে. খন্দকার। প্রাথমিকভাবে, ১৭ জন অফিসার, ৫০ জন টেকনিশিয়ান, ২টি বিমান ও ১টি হেলিকপ্টার দিয়ে এই বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। বিমান বাহিনী পাকিস্তানি লক্ষ্যের উপর বারোটিরও বেশি সফল আক্রমণ চালায় এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে অত্যন্ত সফলতার সাথে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণের সাথে সমন্বয় রাখে।

স্বতন্ত্র বাহিনীসমূহ[সম্পাদনা]

মুক্তিবাহিনীর সাথে সাথে কিছু স্বতন্ত্র বাহিনীও বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং কিছু এলাকা দখলমুক্ত করে। এদের মধ্যে একটি ছিলো ভারতে গড়ে ওঠা মুজিব বাহিনীভারতীয় সেনা বাহিনীর মেজর জেনারেল ওবান এবং ছাত্রলীগ নেতা সেরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, কাজী আরিফ আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আ. স. ম. আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, নুর-এ-আলম সিদ্দিকীআব্দুল কুদ্দুস মাখন প্রমূখ এই বাহিনী গড়ে তোলেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে "কাদেরিয়া বাহিনী", ময়মনসিংহের আফসার বাহিনীআফতাব বাহিনী, সিরাজগঞ্জের লতিফ মির্জা বাহিনী, মাগুরার আকবর হোসেইন বাহিনী, বরিশালের কুদ্দুস মোল্লা ও গফুর বাহিনী, ফরিদপুরের হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে হেমায়েত বাহিনী মানিকগঞ্জের ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরী এর নেতৃত্বে হালিম বাহিনী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও কিছু সমাজতান্ত্রিক/বামপন্থী দলও পাকিস্তান বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে এবং কিছু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে।

বামপন্থী দলসমূহ[সম্পাদনা]

উল্লেখিত স্বতন্ত্র বাহিনীগুলোর সাথে সাথে ন্যাপ ও কম্যুনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু বাহিনী গড়ে উঠে। তাদের মধ্যে সিরাজ শিকদার একটি শক্তিশালী গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলেন যা বরিশালের পায়ারাবাগানে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। যদিও এই বামপন্থী দলগুলোর মাঝে বাংলাদেশের স্বাধীনতার গতিপ্রকৃতি এবং করনীয় নিয়ে আদর্শগতভাবে বিপুল মতপার্থক্য ছিলো (তার মধ্যে সোভিয়েতপন্থী ও চীনপন্থী ফারাক এবং চীনপন্থীদের আন্তঃদল মতবিভেদ), মুক্তিবাহিনীর সাধারণ সদস্য ও নেতৃত্বস্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই বামপন্থী ভাবধারায় গভীরভাবে উদ্‌বুদ্ধ ছিলেন। যে কারণে, ভারতীয় সরকার ও আওয়ামী লীগের সদস্যরা এই বামপন্থী দলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছুটা উদ্‌বিগ্ন ছিলেন। যাই হোক না কেন, পরবর্তীতে বামপন্থী দলগুলো নিজেদের মতপার্থক্য ভুলে ঐক্যবদ্ধ হন এবং মুক্তিবাহিনীর মূল অংশটিকে কেন্দ্র করে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যান।

সাংস্কৃতিক যোদ্ধারা[সম্পাদনা]

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা (এম আর আখতার মুকুল, আপেল মাহমুদ (সংগীতশিল্পী), আব্দুল জব্বার (সংগীতশিল্পী), মোহাম্মদ শাহ প্রমূখ) মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার বিপুল উৎস ছিলেন। তাদের "সাংস্কৃতিক যোদ্ধা" বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরবিন্যাস[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পরপরই তা পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের দিকে মনোনিবেশ করে। ১১ই জুলাই ১৯৭১ মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, লেফটেনেন্ট কর্নেল আব্দুর রবকে সেনা বাহিনী প্রধান ও ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে বিমান বাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

এই বৈঠকে বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে [১৫] ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেকটি সেক্টরের জন্য একজন সেক্টর কমাণ্ডার নিয়োগ দেয়া হয়। ১০নং সেক্টরকে সর্বাধিনায়কের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দেয়া হয় এবং এতে নৌ-সেনা ও সর্বাধিনায়কের নিজস্ব বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পাকিস্তান আর্মি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। এইসব প্রশিক্ষিত সেনা কর্মকর্তারা গেরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অপ্রশিক্ষিতদের প্রশিক্ষন দিতেন। এই প্রশিক্ষনকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগই সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় ছিলো এবং ভারত সরকারের সরাসরি সহায়তায় পরিচালিত হতো।

যুদ্ধে সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য প্রতিটি সেক্টরকে আবার কয়েকটি উপ-সেক্টরে ভাগ করা হয়। নিচের ছকে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরগুলোকে তাদের সেক্টর কমাণ্ডারের নামসহ তালিকাভুক্ত করা হলোঃ

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরসমূহ
সেক্টর এলাকা সেক্টর কমাণ্ডার
চট্টগ্রাম জেলা, চট্টগ্রাম পাহাড়ী এলাকা, এবং মুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকার নোয়াখালীর পূর্বাঞ্চল। মেজর জিয়াউর রহমান, পরবর্তীতে মেজর রফিকুল ইসলাম দ্বারা প্রতিস্থাপিত
ঢাকা জেলা, কুমিল্লা জেলা, ফরিদপুর জেলা, এবং নোয়াখালী জেলার অংশবিশেষ। মেজর খালেদ মোশাররফ, পরবর্তীতে মেজর এ টি এম হায়দার দ্বারা প্রতিস্থাপিত।
উত্তরে শ্রীমঙ্গলের কাছে চুরামন কাঠি থেকে সিলেট জেলা থেকে শুরু করে দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিংগারবিল পর্যন্ত। মেজর কে এম সফিউল্লাহ, পরবর্তীতে মেজর এ এন এম নুরুজ্জামান দ্বারা প্রতিস্থাপিত
উত্তরে হবিগঞ্জ জেলার কিছু এলাকা থেকে শুরু করে দক্ষিণে ১০০ কিলোমিটার ভারত সীমান্ত বরাবর কানাইঘাট পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত, পরবর্তীতে ক্যাপ্টেন এ রব দ্বারা প্রতিস্থাপিত
দুর্গাপুর থেকে তামাবিল (সিলেট জেলা) এবং সিলেট জেলার পূর্ব সীমান্তের সমগ্র এলাকা। মেজর মীর শাখাওয়াত আলী
রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর অংশবিশেষ। উইং কমাণ্ডার এম খাদেমুল বাশার
রাজশাহী জেলা, পাবনা জেলা, বগুড়া জেলা এবং দিনাজপুর অংশবিশেষ। মেজর নাজমুল হক, পরবর্তীতে সুবেদার মেজর এ রব এবং কাজী নুরুজ্জামান দ্বারা প্রতিস্থাপিত।
১৯৭১ এর এপ্রিলে, এই সেক্টরের এলাকা ছিলো কুষ্টিয়া জেলা, যশোর জেলা, খুলনা জেলা, বরিশাল জেলা, ফরিদপুর জেলা এবং পটুয়াখালী জেলা. মে মাসের শেষের দিকে একে কুষ্টিয়া জেলা, যশোর জেলা, খুলনা জেলা, সাতক্ষীরা জেলা এবং ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে পুনর্বিন্যাস করা হয়। মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, পরবর্তীতে মেজর এম এ মঞ্জুর দ্বারা প্রতিস্থাপিত।
বরিশাল জেলা, পটুয়াখালী জেলা, এবং খুলনাফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ। মেজর এম এ জলিল, পরবর্তীতে মেজর এম এ মঞ্জুর ও মেজর জয়নাল আবেদিন দ্বারা প্রতিস্থাপিত।
১০ নৌ-সেনাদের নিয়ে এই সেক্টরটি গঠন করা হয় ভারতীয় কমাণ্ডার এম এন সুমন্ত।
১১ ময়মনসিংহ জেলা এবং টাঙ্গাইল জেলা। মেজর জিয়াউর রহমান, পরবর্তীতে মেজর এম আবু তাহের, স্কোয়াড্রন লিডার হামিদুল্লাহ দ্বারা প্রতিস্থাপিত[১৫]
Source: সেক্টরসমূহের তালিকা

মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী[সম্পাদনা]

পাকিস্তানী লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ. এ. কে নিয়াজি আত্মসমর্পণ দলিলে ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার উপস্থিতিতে স্বাক্ষর করছেন। তারিখ: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১। ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর বিভিন্ন সদস্য পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন।

১৯৭১ এর অক্টোবর থেকে মুক্তিবাহিনী, পাক হানাদার বাহিনীর উপর তীব্র আঘাত হানতে থাকে। আগস্ট মাসে ইন্দো-সোভিয়েত চুক্তির পর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত উত্তরোত্তর আগ্রহ দেখাতে থাকে। পশ্চিম সীমান্তের কিছু শহরে পাকিস্তানের স্বতপ্রণোদিত বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত হয় ডিসেম্বরের ৩ তারিখ থেকে। বস্তুত, ভারতীয় সৈন্যরা নভেম্বর থেকেই ছদ্মবেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বেলোনিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী পরিকল্পনা করে যে, যুদ্ধ এড়িয়ে সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে ঢাকা দখল করা যায়। মুক্তিবাহিনী দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাকবাহিনীকে যুদ্ধে আটকে রেখে ভারতীয় বাহিনীর জন্য কাজটি অনেক সহজ করে দেয়।

বাংলাদেশের কঠিন ভূ-প্রকৃতি স্বত্বেও যুদ্ধজয় তুলনামূলকভাবে অনেক তাড়াতাড়িই হয়। মাত্র দুই সপ্তাহ সময়ের ব্যবধানে ঢাকা মুক্ত হয়। ভারতীয় বাহিনীর এই জয়ের পিছনে মুক্তিবাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদানই ছিলো অন্যতম। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে বেশ কয়েকটি সফল আক্রমণ এবং পাকিস্তানপন্থী, বাঙ্গালী-বিরোধী ও পূর্ব-পাকিস্তানের ভূতপূর্ব গভর্নর মোনায়েম খান নিধন মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের কার্যকারিতা ও সক্ষমতার প্রমাণ রাখে।

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে মিরপুর ব্রিজের কাছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৪ ডিভিশনের মেজর জেনারেল জামশেদ ভারতীয় জেনারেল নাগরার কাছে আত্ম-সমর্পণ করেন। বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে ভারতীয় বাহিনী এবং কাদের সিদ্দিকীর বাহিনী ঢাকা শহরে প্রবেশ করে। এর মাধ্যমে ৯ মাস-ব্যাপী যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়। কিন্তু দেশের কিছু কিছু এলাকায় তখনো ছাড়া ছাড়া কিছু সংঘর্ষ মুক্তিবাহিনী এবং পাকিস্তানী বাহিনীর মধ্যে চলছিল ।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের কমাণ্ডার লেফটেনেন্ট জেনারেল এ. এ. কে. নিয়াজি ভারতীয়-বাংলাদেশী যৌথবাহিনীর কমাণ্ডার ও ভারতীয় বাহিনীর পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্ম-সমর্পণ করেন। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ.কে. খন্দকার

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://books.google.com.bd/books?id=dQ_lAAAAQBAJ&printsec=frontcover#v=onepage&q&f=false
  2. *Lal, PC, My Years with the IAF, Lancer Publishers LLC, পৃষ্ঠা 168, আইএসবিএন 978-1-935501-75-6 
    • Oakley, Don। "East pakistan's unheeded agony"The Daily Star। The Nevada Daily Mail। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৬ 
    • "Mujibnagar: History's first Bengali government"The Opinion Pages। ২৮ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  4. Dangerous Liaison by Raza Naeem, Frontline, Volume 26 - Issue 15, July 18–31 2009
  5. Why the Movement for Bangladesh Succeeded: A military appreciation ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ মার্চ ২০০৯ তারিখে by Mumtaz Iqbal
  6. Genocide in Bangladesh, 1971. Gendercide Watch.
  7. Emerging Discontent, 1966-70. Country Studies Bangladesh
  8. 'Anatomy of Violence: Analysis of Civil War in East Pakistan in 1971: Military Action: Operation Searchlight Bose S Economic and Political Weekly Special Articles, October 8, 2005' ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ মার্চ ২০০৭ তারিখে
  9. The Pakistani Slaughter That Nixon Ignored , Syndicated Column by Sydney Schanberg, New York Times, May 3, 1994
  10. Crisis in South Asia - A report by Senator Edward Kennedy to the Subcommittee investigating the Problem of Refugees and Their Settlement, Submitted to U.S. Senate Judiciary Committee, November 1, 1971, U.S. Govt. Press.pp6-7
  11. "India and Pakistan: Over the Edge. TIME Dec 13, 1971 Vol. 98 No. 24"। মে ২০, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২১, ২০০৯ 
  12. http://www.ovidhan.org/b2b/ফৌজ ফৌজ শব্দের উৎপত্তি।
  13. আলমু'জামুল ওয়াফী পৃ. ৭৬৮
  14. Pakistan Defence Journal, 1977, Vol 2, p2-3
  15. সেক্টরসমূহের তালিকা

আরও জানতে[সম্পাদনা]

মুকতিফৌজ কি??

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]