বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী | |
|---|---|
| সংক্ষেপে | জামায়াতে ইসলামী |
| আমীর | ডা. শফিকুর রহমান |
| মহাসচিব | অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার |
| প্রতিষ্ঠাতা | আবুল আ'লা মওদুদী |
| প্রতিষ্ঠা | ১৯৪১ (মূল দল) ১৯৪৭ (পাকিস্তানি উপদল) ১৯৫৫ (পূর্ব পাকিস্তানি উপদল) ১৯৭৯ (বর্তমান বাংলাদেশি উপদল)[১] |
| পূর্ববর্তী | জামায়াতে ইসলামী[২] জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান[৩] |
| সদর দপ্তর | ৫০৫ এলিফ্যান্ট রোড, মগবাজার, ঢাকা, বাংলাদেশ |
| ছাত্র শাখা | বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (কার্যত) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা (কার্যত) |
| শ্রমিক শাখা | বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন (কার্যত) |
| চিকিৎসক সংগঠন | ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম |
| ভাবাদর্শ | সামাজিক রক্ষণশীলতা ইসলামবাদ[৪] ইসলামি মৌলবাদ[৫] ইসলামি গণতন্ত্র[৬] সর্ব-ইসলামবাদ ডানপন্থী জনতুষ্টিবাদ |
| রাজনৈতিক অবস্থান | ডানপন্থী[৭] |
| আন্তর্জাতিক অধিভুক্তি | জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান[৮] জামায়াতে ইসলামী হিন্দ[৮] |
| স্লোগান | "আল্লাহর আইন চাই সৎ লোকের শাসন চাই" |
| নির্বাচনী প্রতীক | |
| দলীয় পতাকা | |
| ওয়েবসাইট | |
| jamaat-e-islami.org | |
| বাংলাদেশের রাজনীতি রাজনৈতিক দল নির্বাচন | |
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী[৯] বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে ইসলামি শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন এই দলের উদ্দেশ্য।[১০][১১] দলটি ইকামতে দ্বীন (ইসলাম প্রতিষ্ঠা) নামক মতাদর্শকে মূলভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং একে "রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের মাধ্যমে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা" অর্থে দলীয় ও রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে।[১২][১৩] এটি পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী এবং মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড ( ইখওয়ানুল মুসলিমিন)-এর আদর্শ ধারণ করে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন সম্পর্কিত একটি রুলের রায় দেয়। যা সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করে।[১৪][১৫][১৬][১৭] ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত স্বৈরাচার বিরোধী অসহযোগ আন্দোলনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল।[১৮] তারপর ২৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জামায়াতের উপর অর্পিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দেয়।[১৯]
জামায়াত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং পাকিস্তান বিভক্তির বিরোধীতা করেছিল। প্রায়শই জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতার পিছনে ভারতীয় আধিপত্যের আশঙ্কা এবং ইসলামী আন্দোলনের স্বার্থকে সামনে আনে।[২০][২১] দলটির অনেক নেতাকর্মী সেসময় গঠিত আধা-সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে[২২], যারা গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত।[২৩][২৪][২৫][২৬] জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা আধাসামরিক বাহিনী শান্তি কমিটি গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিল।[২৭]
১৯৭২ সালে সরকার জামায়াতকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং দলের নেতারা পাকিস্তানে নির্বাসনে চলে যান। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর এবং কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর ১৯৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে জামায়াতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। দলটির নেতাকর্মীরা ফিরে আসার অনুমতি পান এবং ১৯৭৯ সালের মে মাসে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা আব্বাস আলী খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য হলো শরিয়াহ ভিত্তিক একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যা পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে লক্ষ্য করা যায়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৯৮০-এর দশকে জামায়াত গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের জন্য বহুদলীয় জোটে যোগদান করে। এসময় দলটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সমসাময়িক বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আন্দোলন করে। পরবর্তীতে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য আন্দোলন করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে বিএনপির সাথে আরো অন্য দুটি দলসহ চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোট জয়লাভ করলে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে জামায়াতের দুজন সদস্য মন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের পর থেকে নেতৃবৃন্দ আটক পরবর্তীতে বিতর্কিত আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের রায়ে দণ্ডিত হওয়ায় দলটি কিছুটা দূর্বল হয়ে যায়। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫টি আসন লাভ করে। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে; ২০১২ সালের মধ্যে দুজন বিএনপি নেতা ও জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান সদস্যসহ ৮ জন নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৩ সালের জুলাই পর্যন্ত জামায়াতের সাবেক সদস্যসহ মোট চার জনকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমকে ৯০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।[২৮][২৯][৩০][৩১] রায়গুলোর প্রতিবাদে জামায়াত দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ করে, যাতে অনেক লোক নিহত হয়।[৩২]
ইতিহাস
ব্রিটিশ ভারত (১৯৪১-১৯৪৭)
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরের ইসলামিয়া পার্কে সামাজিক-রাজনৈতিক ইসলামি আন্দোলনের অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। জামায়াত ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। জামায়াত ১৯৪৬ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দল মুসলিম লীগকে সমর্থন করেনি।
স্বাধীনতা ও ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর মওদুদী ভারত থেকে পাকিস্তান চলে যান। বর্তমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মূলত পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক জাতীয় পার্টির অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল।
পাকিস্তান সময়কাল (১৯৪৮-১৯৭১)
পাকিস্তান সৃাষ্টির পর জামায়াতে ইসলামী মূলত ভারত ও পাকিস্তান দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের শাখা থেকে সৃষ্টি হয়। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খান প্রণিত মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মওদুদী সহ ৬০ জন জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ১৩ জন জামায়াত নেতা ছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম তাদের একজন। ঐ বছর অক্টোবরেই আবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামী, জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক আইন ঘোষণার সময় পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এবং ১৯৬৫ সালে সর্বদলীয় গণতান্ত্রিক জোট গঠিত হয়।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ প্রদত্ত ছয় দফা এবং মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ১১ দফার তারা তীব্র বিরোধিতা করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পশ্চিম পাকিস্তানে ৪ টি আসন লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ডাঃ আব্দুল মালিক কে গভর্নর করে ১৭ই সেপ্টেম্বার একটি প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হয়।[৩৩] সে সরকারের মন্ত্রী সভায় পরবর্তীকালে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্বাস আলী খান ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।[৩৪]
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ (১৯৭১)
১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। জামায়াতে ইসলামী মুক্তি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে এই দলের সদস্যরা হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িত থাকা সহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মীকে মৃত্যুদন্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।[৩৫]
২৫ মার্চ রাতে সংঘটিত অপারেশন সার্চলাইট এর ছয় দিন পর গোলাম আযম ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে একটি ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি ভারতের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, " ভারত সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করে কার্যত পূর্ব পাকিস্তানিদের দেশপ্রেমকে চ্যালেঞ্জ করেছে।...আমি বিশ্বাস করি যে, এই অনুপ্রবেশকারীরা পূর্ব পাকিস্তানি মুসলমানদের নিকট হতে কোন প্রকার সাহায্য পাবে না।[৩৬]
৩০ জুন লাহোরে সাংবাদিকদের কাছে গোলাম আযম বলেন, "তাঁর দল পূর্ব পাকিস্তানে দুস্কৃতকারীদের তৎপরতা দমন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই দুস্কৃতকারীদের হাতে বহু জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার উদ্দেশ্যে গোলাম আযম পাকিস্তানের সামরিক শাসকের সাথে দেখা করে ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করেন। এর সদস্য ছিলেন পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। গোলাম আযম এই কমিটির নেতা ছিলেন।[৩৭]
১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম এ গোলাম আযমের পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালের একটি সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ দুই কিস্তিতে ছাপা হয়। এই সাক্ষাতকারে তিনি মুক্তিবাহিনীর সাথে তার দলের সদ্স্যদের সংঘর্ষের বিভিন্ন বিবরণ ও পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থতির ওপর মন্তব্য করেন। তিনি বলেন "বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জামায়াতকে মনে করতো পহেলা নম্বরের দুশমন। তারা তালিকা তৈরি করেছে এবং জামায়াতের লোকদের বেছে বেছে হত্যা করছে, তাদের বাড়িঘর লুট করে জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। এতদসত্বেও জামায়াত কর্মীরা দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য। কেননা তারা জানে 'বাংলাদেশে' ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কোনো স্থান হতে পারে না। জামায়াত কর্মীরা শহিদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না।"[৩৮]
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তার জন্য রাজাকার বাহিনী গঠনের পেছনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন বলে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন নেতা এ কে এম ইউসুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।যিনি পরবর্তীতে দলটির নায়েবে আমির হন। তিনি খুলনায় শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা দানকারী নিন্দিত আধা-সামরিক বাহিনী আল-বদরের সাথে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা-কর্মীরা সম্পৃক্ত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও জামায়াত প্রায়শই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ফলেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে বলে উল্লেখ করে থাকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক ইতোমধ্যেই এই সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ফাঁসি ও অন্যান্য দন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। যদিও এই রায়কে আন্তর্জাতিক মহল তৎকালীন সরকারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় বলে অভিহিত করেছেন।
বাংলাদেশ অধ্যায় (১৯৭১-বর্তমান)
১৯৭১ সালের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াত ও এর আওতায় পড়ে। ১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমান সরকার সকল ধরনের রাজনৈতিক দলের রাজনীতি উন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। এ সময় ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ নামক একটি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত ছিল। পরে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গঠিত হয়। এসময় এর ভারপ্রাপ্ত আমীরের পদ লাভ করেন আব্বাস আলী খান। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এটি ৩০০ আসনের মধ্যে ১৮ টি আসন লাভ করে।পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে গঠিত চার দলীয় ঐক্যজোটের অন্যতম শরিক হিসেবে সরকার গঠনে ভূমিকা পালন করে। এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এটি ৩০০ আসনের মধ্যে ২ টি আসন লাভ করে।
জামায়াতে ইসলামী এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে সমাবেশ করে। এরপর তারা শুধু জটিকা মিছিলে সীমাবদ্ধ ছিল। ১০ জুন ২০২৩ শনিবার দীর্ঘ এক দশক অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকায় দলটি প্রকাশ্যে সমাবেশ করে।[৩৯][৪০]
আমীর ও সেক্রেটারি জেনারেলদের তালিকাঃ
| নং | আমীর | সেক্রেটারি জেনারেল | |||||
|---|---|---|---|---|---|---|---|
| অখন্ড ভারত জামায়াতে ইসলামী | |||||||
| ০১ | সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী
(২৬ আগষ্ট ১৯৪১ – অক্টোবর ১৯৭২) |
মিয়াঁ তুফাইল মোহাম্মদ
(মার্চ ১৯৪৪ – ডিসেম্বর ১৯৬৫) | |||||
| পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী | |||||||
| ০১ | চৌধুরি আলী আহমদ | মাওলানা আবদুর রহিম[৪১] | |||||
| ০২ | মাওলানা আবদুর রহিম
(১৯৫৬ – ১৯৬০) |
অধ্যাপক গোলাম আযম | |||||
| ০৩ | অধ্যাপক গোলাম আজম | আব্দুল খালেক | |||||
| বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী | |||||||
| ০১ | আব্বাস আলী খান (ভারপ্রাপ্ত) | শামসুর রাহমান | |||||
| ০২ | অধ্যাপক গোলাম আজম | একেএম ইউসুফ | |||||
| ০৩ | মতিউর রহমান নিজামী | আলী আহসান মুজাহিদ | |||||
| ০৪ | মকবুল আহমদ (ভারপ্রাপ্ত) | এ. টি. এম. আজহারুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত)
ডা. শফিকুর রহমান (ভারপ্রাপ্ত) | |||||
| মকবুল আহমদ | ডা. শফিকুর রহমান | ||||||
| ০৫ | ডা. শফিকুর রহমান | অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার | |||||
সংগঠনের মৌলিক বিশ্বাস
এই সংগঠনের সকল কার্যাবলীর প্রেরণা হল আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে, তাকে একমাত্র উপাস্য, কল্যাণকারী, আশ্রয়দাতা, সাহায্যকারী, রক্ষাকর্তা মেনে নেয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কোরআনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রে ইসলামের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা তথা শরিয়াহ আইন প্রবর্তন করা।[৪২][অকার্যকর সংযোগ]
তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে। নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে দলটি গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল প্রদর্শিত ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে।[৪৩]
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর গঠনতন্ত্র অনুসারে, কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর আইন অনুসারে সমগ্র রাষ্ট্রে পরিপূর্ণ ইসলামি শাসনতন্ত্র কায়েম করা। ইসলামকে বিভক্তির হাত থেকে রক্ষা করে সমগ্র রাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে কায়েম করিবার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করা এবং আল্লাহর নির্দেশিত অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত ইত্যাদি পালনে নাগরিকদের সচেতন করা। এসবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সর্বপ্রকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক হুমকি এবং বিশৃংখলা হইতে রক্ষা করিবার চেষ্টা করা। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে শোষনহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা এবং বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।[৪২]
তবে ২০১২ সালের অক্টোবরে গঠনতন্ত্রে আনীত সংশোধন অনুযায়ী এই দলটি ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে।[৪৩]
সাংগঠনিক কাঠামো
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সংগঠন নিম্নলিখিত পদের সমন্বয়ে গঠিত:
- কেন্দ্রীয় রুকন (সদস্য)
- আমীরে জামায়াত
- কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা
- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ
- কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ[৪২]
অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন
| শিরোনাম | সংগঠন |
|---|---|
| অঙ্গ সংগঠন | |
| যুব সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগ |
| মহিলা সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগ |
| ওলামা সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ওলামা বিভাগ |
| সমাজ কল্যাণ সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাজকল্যাণ বিভাগ |
| পেশাজীবী সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পেশাজীবী বিভাগ |
| স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্বেচ্ছাসেবক বিভাগ |
| অমুসলিম সহযোগী সংগঠন | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অমুসলিম বিভাগ |
| সহযোগী সংগঠন (স্বতন্ত্র) | |
| ছাত্র সংগঠন | বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির |
| ছাত্রী সংগঠন | বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা |
| শ্রমিক সংগঠন | বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন |
| আইনজীবী সংগঠন | বাংলাদেশ ল'ইয়ার্স কাউন্সিল |
| সাংস্কৃতিক সংগঠন | সমন্বিত সাংস্কৃতিক সংসদ (সসাস) |
| চিকিৎসক সংগঠন | ন্যাশনাল ডক্টরস' ফোরাম (এনডিএফ) |
| মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন | জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ |
| শিক্ষক সংগঠন | বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন |
| মসজিদ সংগঠন | বাংলাদেশ মসজিদ মিশন |
জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জামায়াতের কতিপয় নেতা ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ৬ জন প্রার্থী জয়ী হন। ১৯৭৯ সালে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে এ দলটি পুনরায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয় এবং আব্বাস আলী খানকে দলের ভারপ্রাপ্ত আমীর নির্বাচন করা হয়।
১৯৭৯ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসনে জয়লাভ করে। জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কৌশল হিসেবে জামায়াতের ১০ জন সংসদ সদস্য ১৯৮৭ সালের ৩ ডিসেম্বর সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীরা ৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৮টি আসনে বিজয়ী হয় এবং সরকার গঠনের জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সমর্থন দেয়। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসনের মধ্যে জামায়াত ২টি আসন লাভ করে।[৪৪]
১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাথে যুগপৎভাবে আন্দোলন করে স্বার্থক হয়। এবং নির্বাচন করে তিনটি সংসদীয় আসন লাভ করে। এই নির্বাচনে তারা ছিলেন চতুর্থ অবস্থানে।[৪৫]
২০০১ সালের অষ্টম জতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে অংশগ্রহণ করে ১৭ টি সংসদীয় আসন লাভ করে। এবং মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দু'জন সদস্য মন্ত্রী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে।[৪৬]
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০০৮ এ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী অংশগ্রহণ করে দুইটি আসন লাভ করে। এ নির্বাচনে ভোট অনুযায়ী তারা চতুর্থ এবং আসন অনুযায়ী পঞ্চম অবস্থানে ছিলো।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন
| নির্বাচনের তারিখ | দলীয় প্রার্থী | প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা | ভোটের শতাংশ | আসন সংখ্যা | অবস্থান |
|---|---|---|---|---|---|
| প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | নিষিদ্ধ | ||||
| দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ | ১৯,৪১,৩৯৪ | ১০.০৭% | ৬ / ৩৫০ | অতিরিক্ত বিরোধী দল |
| তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ১৩,১৪,০৫৭ | ৪.৬১% | ১০ / ৩৫০ | অতিরিক্ত বিরোধী দল | |
| চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | |||||
| পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ৪১,৩৬,৬৬১ | ১২.১৩% | ১৮ / ৩৫০ | জোট সরকার | |
| ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ৪১,৩৬,৬৬১ | ০ / ৩৫০ | বর্জন | ||
| সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ৩৬,৫৩,০১৩ | ৪.৬১% | ৩ / ৩৫০ | অতিরিক্ত বিরোধী দল | |
| অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ২৩,৮৫,৩৬১ | ৪.২৮% | ১৭ / ৩৫০ | চার দলীয় জোট সরকার | |
| নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ৩২,৮৯,৯৬৭ | ৪.৭% | ২ / ৩৫০ | অতিরিক্ত বিরোধী দল | |
| দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ০ / ৩৫০ | ভোট বর্জন | |||
| একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | বিশ দলীয় জোট | ০ / ৩৫০ | ভোট বর্জন | ||
| দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ০০ / ৩৫০ | ভোট বর্জন |
নিবন্ধন বাতিল ও ফেরত
কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের ২৫ জন সদস্য জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের হাই কোর্ট একটি রুল জারি করে। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলে আদালতের বেঞ্চ। পরবর্তীতে ১লা আগস্ট ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রুলের রায় ঘোষণা করে এতে সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং সংগঠনটিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।[৪৭]
১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল পুনর্বহাল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে জামায়াত।[৪৮]
১ জুন ২০২৫ তারিখে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে, দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।[৪৯] আর ২৪ জুন ২০২৫ তারিখে জামায়াতে ইসলামীর জন্য পুরনো প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ পুনরায় নিবন্ধন ফেরত সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।[৫০]
নিষিদ্ধ ঘোষণা
২০২৪ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন মতে, সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়।[৫১][৫২]
২০২৪ সালে জুলাইয়ে বাংলাদেশে সংগঠিত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির জড়িত মর্মে অভিযোগ করে আসছিল সরকার। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ জুলাই ২০২৪ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সভায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন নেতারা। বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে ১ আগস্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।[৫৩]
তবে ১৪ দলীয় জোটের সভায় জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে দাবি করে আসছে দলটি।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন,
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। একটি রাজনৈতিক দল বা জোট অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন ও সংবিধান কাউকে এ এখতিয়ার দেয়নি। কোনো দল বা জোট অন্য কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার ধারা চালু হলে এক দল অন্য দলকে নিষিদ্ধ করতে থাকবে। তখন রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না।
সরকারের নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে। নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন,
সরকার ছাত্রদের অরাজনৈতিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য দেশে দলীয় ক্যাডার ও রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালায়। সরকারের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশের শিক্ষকসমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। বিশ্বসম্প্রদায় এই গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নির্বাহী আদেশবলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে।
২৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জামায়াতের উপর অর্পিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দেয়।[৫৬]
নিষিদ্ধাদেশ প্রত্যাহার
২০২৪ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন মতে, সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়।
পরবর্তী ২৬ দিনের মাথায় এই আদেশটি প্রত্যাহার করে নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে।[৫৭]
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের (২০২৩-২০২৫) কার্যকালের সদস্যগণ।[৫৮]
| পদ | সদস্য |
|---|---|
| আমীর | ডা. শফিকুর রহমান |
| নায়েবে আমীর | |
| সেক্রেটারি জেনারেল | অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার |
| সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল |
|
| প্রধান - কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগ | এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের |
| সেক্রেটারি - কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগ | এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ |
| নির্বাহী পরিষদ সদস্য |
|
| ঢাকা মহানগরীর আমীর |
|
ইসলামি পণ্ডিতদের দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর ভূমিকা মূল্যায়ন করে, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন:
জামাআতে ইসলামী উপমহাদেশের প্রাচীনতম ইসলামি রাজনৈতিক দল। দলটি বেশ কিছু ইতিবাচক কাজ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে: (১) তারা প্রমাণ করেছে যে ইসলাম একটি সম্পূর্ণ জীবন বিধান, এটি একটি বাস্তব ব্যবস্থা, এবং এটি সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থা; ২) তারা নিজেদেরকে যুবক-যুবতীদের এবং শিক্ষিত লোকদেরকে ইসলাম সম্পর্কে এই সত্যগুলি বোঝার জন্য সক্ষম করেছে, (৩) তারা মূলত ইসলামি অর্থনীতি, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে; (৪) তারা সমাজে বিদ্যমান কুসংস্কার, যেমন ব্যক্তি, পীর, কবর পূজার বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে সফল হয়েছে।
পাশাপাশি জাহাঙ্গীর এর নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বলেন,
জামায়াত-ই-ইসলামীর রাজনীতিতে বেশ কিছু ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায় (১) তারা রাজনীতিকে জিহাদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটি মাওলানা মওদুদী প্রথম করেন। (২) তারা ইকামতে দ্বীনের (ধর্ম প্রতিষ্ঠা) ধারণার অর্থকে একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় হ্রাস করে মারাত্মক ভুল করেছে; (৩) দলটি তার আদর্শের সাথে আপস করেছে এবং ক্ষমতার রাজনীতিতে আরও মনোনিবেশ করেছে এবং ক্ষমতার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ দল এবং জনগণের সাথে জোট করেছে এবং (৪) মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত এমন এক দলের সমর্থন করেছিল এবং তার পক্ষে অস্ত্র নিয়েছিল যাকে আগে এরা "অমুসলিম "তাগুতি" (অত্যাচারী) সরকার" বলে অভিহিত করেছিল।" এটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় ভুল।[৫৯]
জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ১৯৭১-এ শুধু জামআতে ইসলামী নয়, পাশাপাশি পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য অধিকাংশ ইসলামি
দল ও গোষ্ঠী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল, কারণ অধিকাংশ ইসলিমী দল ও গোষ্ঠী পাকিস্তানের বিভাজনকে ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেছিল।[৫৯]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ (ফরাসি ভাষায়) Jamaat-e-Islami Bangladesh ; Parti islamiste du Bangladesh (fondé en 1941) (interdit entre 1971 et 1978, puis en 2013 par la Cour suprême)
- ↑ "About Jamaat"। Jamaat-e-Islami Hind (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ২২ জুন ২০১২। ১৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ Haqqani, Pakistan: Between Mosque and Military, 2010: p.171
- ↑ Riaz, Ali (২০০৮)। Islamist Militancy in Bangladesh: A Complex Web। Routledge। পৃ. ১৬, ১৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৪১৫-৪৫১৭২-৭।
- ↑ "Jamiat Ulema-e-Islam (JUI) history"। Islamopediaonline.org website। ১ জানুয়ারি ২০১৫। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০২০।
- ↑ Campo, Juan Eduardo (২০০৯)। Encyclopedia of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Infobase Publishing। পৃ. ৩৯০। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৩৮১-২৬৯৬-৮।
- ↑ "Interim govt revokes ban on Bangladesh Jamaat-e-Islami"। The Tribune (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২৪।
- 1 2 জামায়াতে ইসলামীর বিদেশী বন্ধু কারা? [Who are the foreign friends of Jamaat-e-Islami?]। BBC Bangla। ১১ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ "জামায়াত তার নাম পরিবর্তন করেছে। দ্য ডেইলি নিউ নেশন, ২১ অক্টোবর, ২০০৮"। ১৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০০৯।
- ↑ "The tenacity of hope"। The Economist। আইএসএসএন 0013-0613। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Blighted at birth"। The Economist। আইএসএসএন 0013-0613। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ Islam, Md Saidul; Islam, Nazrul (২০১০)। Islam and Democracy in South Asia: The Case of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Springer Nature। পৃ. ২৭১, ২৭২, ২৭৩। আইএসবিএন ৯৭৮-৩-০৩০-৪২৯০৯-৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০২০।
- ↑ Esposito, John L.; Shahin, Emad El-Din; Roul, Animesh; Raghavan, R. K. (২০১৬)। The Oxford Handbook of Islam and Politics (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃ. ৩২৮। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-০৬৩১৯৩-২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২০।
- ↑ "Jamaat loses registration - bdnews24.com"। ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bangladesh court declares Jamaat illegal - Central & South Asia"। Al Jazeera English। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "BBC News - Bangladesh high court restricts Islamist party Jamaat"। Bbc.co.uk। ১ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "Bangladesh high court declares rules against Islamist party - CNN.com"। Edition.cnn.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করলো"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার"। মানবজমিন। ২৮ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০২৪।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক) - ↑ জনতার আদালতে জামাতে ইসলামী- দিব্য প্রকাশ, ৩৮/২ ক, বাংলাবাজার, ঢাকা, পৃষ্ঠা-১৮
- ↑ দৈনিক পাকিস্তান, ২৮শে নভেম্বর, ১৯৭১, সাভারে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডারদের ট্রেনিং শেষে জেনারেল নিয়াজী বলেনঃ "একদিকে তাদের ভারতীয় চরদের সকল চিহ্ন মুছে ফেলতে হবে, অন্যদিকে বিপথগামী যুবকদের সঠিক পথে আনতে হবে।"
- ↑ Rubin, Barry A. (২০১০)। Guide to Islamist Movements। M.E. Sharpe। পৃ. ৫৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৬৫৬-৪১৩৮-০। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "Bangladesh party leader accused of war crimes in 1971 conflict"। The Guardian। ৩ অক্টোবর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Charges pressed against Ghulam Azam"। New Age। ১২ ডিসেম্বর ২০১১। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Ghulam Azam was 'involved'"। দ্য ডেইলি স্টার। ২ নভেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Bangladesh: Abdul Kader Mullah gets life sentence for war crimes"। BBC News। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "ভারতীয় চক্রান্ত বরদাস্ত করব না (We will never tolerate Indian conspiracy)"। The Daily Sangram। ১৩ এপ্রিল ১৯৭১।
- ↑ "গোলাম আযম দোষী প্রমাণিত, ৯০ বছরের কারাদণ্ড"। বিবিসি বাংলা। ১৫ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৩।
- ↑ "90 years for Jamaat guru Ghulam Azam"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড"। সময় টিভি। ঢাকা। ১৫ জুলাই ২০১৩। ১৬ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৩।
- ↑ "গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড"। দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা। ১৫ জুলাই ২০১৩। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৩।
- ↑ "Bangladesh PM Sheikh Hasina rejects blasphemy law"। BBC News (ব্রিটিশ ইংরেজি ভাষায়)। ৭ এপ্রিল ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "profile-bengal.com"। profile-bengal.com। ৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "profile-bengal.com"। profile-bengal.com। ৫ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "British Muslim leader sentenced to death in Bangladesh"। The Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ দৈনিক সংগ্রাম, ৭ এপ্রিল ১৯৭১
- ↑ "গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ"। BBC News বাংলা। ১২ ডিসেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৪।
- ↑ দৈনিক সংগ্রাম ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতের সমাবেশ, সরকার ও বিরোধীদের নিয়ে ঐক্যের ডাক"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১১ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২৩।
- ↑ প্রতিনিধি, বিশেষ (১০ জুন ২০২৩)। "এক দশক পর সমাবেশের অনুমতি পেল জামায়াত"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২৩।
- ↑ খান, আব্বাস আলী। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস। শতাব্দী প্রকাশন।
- 1 2 3 http://shujan.org/2009/07/20/জামায়াতে-ইসলামী-বাংলাদেশ/
- 1 2 "নিবন্ধন বাচাঁতে 'আল্লাহ-রসুল' বাদ দিল জামায়াত"। ৮ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৮।
- ↑ "৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে আ.লীগও জোট করেছিল : মঈন খান"। RTV Online। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "বিএনপি ও জামায়াত কি আবারো জোটবদ্ধ হওয়ার দিকে এগুচ্ছে"। বিবিসি বাংলা। ৬ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ সুলাইমান নিলয়, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। "নিবন্ধন অবৈধ, নির্বাচনে 'অযোগ্য' জামায়াত - bdnews24.com"। Bangla.bdnews24.com। ১০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪।
- ↑ "নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের রিভিউ আবেদন"। ডেইলি স্টার। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ "১ যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াতে ইসলামী"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১ জুন ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২৫।
- ↑ Pratidin, Bangladesh (২৪ জুন ২০২৫)। "দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত, ইসির প্রজ্ঞাপন | | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। bd-pratidin.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০২৫।
- ↑ প্রথম আলো (১ আগস্ট ২০২৪)। "অবশেষে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করল সরকার"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ বাংলানিউজ (১ আগস্ট ২০২৪)। "জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করল সরকার"। বাংলানিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ বিডিনিউজ (১ আগস্ট ২০২৪)। "জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, 'সন্ত্রাসী সত্তা' ঘোষণা"। বিডিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট (১ আগস্ট ২০২৪)। "নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে যে প্রতিক্রিয়া জানাল জামায়াত"। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ দৈনিক যুগান্তর (১ আগস্ট ২০২৪)। "নিষিদ্ধ হওয়ার পর জামায়াতের প্রতিক্রিয়া"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "জামায়াত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন"। ডেইলি স্টার। ২৮ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার"। সময় টিভি। ২৮ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ ঢাকা পোস্ট (৩ ডিসেম্বর ২০২৩)। "জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন"। ঢাকা পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২৪।
- 1 2 Islam, Md Nazrul; Islam, Md Saidul (২০ মার্চ ২০২০)। Islam and Democracy in South Asia: The Case of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Springer Nature। পৃ. ২৭১, ২৭২। আইএসবিএন ৯৭৮-৩-০৩০-৪২৯০৯-৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২।