বাজিতপুর উপজেলা
বাজিতপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() মানচিত্রে বাজিতপুর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৩′১৬″ উত্তর ৯০°৫৭′১৬″ পূর্ব / ২৪.২২১১১° উত্তর ৯০.৯৫৪৪৪° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | কিশোরগঞ্জ জেলা |
আসন | বাজিতপুর-নিকলী (কিশোরগঞ্জ-৫) |
সরকার | |
আয়তন | |
• মোট | ১৯৩.৭৬ বর্গকিমি (৭৪.৮১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (1991) | |
• মোট | ১,৯৭,০৮১ |
• জনঘনত্ব | ১,০০০/বর্গকিমি (২,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭৫.৭৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ২৩৩৬ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৪৮ ০৬ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
বাজিতপুর বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা। বায়েজিদ খাঁ বাজিতপুর শহরটি তৈরি করেন। পূর্বে ভৈরব ও কুলিয়ারচর এই জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই উপজেলাটি খাল-বিল, নদীনালা ও হাওরে ভরপুর। একসময় বাজিতপুরে বিশ্ববিখ্যাত মসলিন তৈরি হতো। মসলিন তৈরির কাঁচামাল এখানে সহজলভ্য ছিল। ব্রিটিশ আমলে এখানকার দিলালপুর নদীবন্দর উপমহাদেশে বিখ্যাত ছিল।
এটি পূর্বে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার একটি অংশ ছিল। এটি তাঞ্জাব নামক মসলিনের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখানে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অবস্থিত। এখানে বাজিতপুর বিমানবন্দর নামে একটি বিমানবন্দর রয়েছে, যা বর্তমানে অব্যবহৃত এবং বন্ধ রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অবস্থান ও আয়তন
[সম্পাদনা]কিশোরগঞ্জ জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত বাজিতপুর উপজেলার উত্তরে কটিয়াদী উপজেলা, নিকলী উপজেলা ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে কুলিয়ারচর উপজেলা, ভৈরব উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা, পূর্বে অষ্টগ্রাম উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি উপজেলা। বাজিতপুরকে ভাঁটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার বলা হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বাজিতপুর ১৮২৩ সালে এটি থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এরপর ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় পরিনত হয়।[১]
বাজিতপুর নামকরণ
[সম্পাদনা]বাজিতপুর নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে দু’টি জনশ্রুতি আছে । এর মধ্যে প্রথম টি হলো মুঘল আমলে বায়েজিদ খাঁ নামক জনৈক রাজ কর্মচারী তার অপর তিন ভ্রাতা ভাগল খাঁ, পৈলন খাঁ ও দেলোয়ার খাঁ সহ দিল্লী থেকে এসে এখানে অবস্থান করেন । কিছুদিন পর তারা বাজিতপুর এর আশে পাশে ৪টি স্থানে তাদের স্ব- স্ব বাসস্থান ঠিক করে নেওয়ার পর বায়েজিদ খাঁর বাসস্থানের নামে বায়েজিদপুর, পরে উচ্চারণ বিবর্তনে তা হয় বাজিতপুর । এইরূপে পৈলান খাঁর নামে পৈলানপুর এবং ভাগল খাঁর নামে ভাগলপুর ও দেলোয়ার খাঁর নামে দিলালপুর বলে পরিচিতি লাভ করে । দ্বিতীয় প্রকার জনশ্রুতিতে আছে বায়েজিদ খাঁ নামক মুঘল সেনাপতিকে নাকি প্রেরণ করা হয়েছিল হাওড় অঞ্চলে ঈশা খাঁর অগ্রগতিকে রোধ করার জন্য । ঈশা খাঁ তখন অবস্থান নেন হাওড় এলাকার নদী পরিবেষ্টিত ঘাগরা অঞ্চলে, তখন বায়েজিদ খাঁ অবস্থান নেন ঘোড়াউত্রা নদী হতে দুই মাইল পশ্চিমে বর্তমান বাজিতপুরে । তবে তিনি ঈশা খাঁর সাথে কখনও কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন কিনা কিংবা হলেও যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল সে সম্বন্ধে কোন বিস্তারিত ইতিহাস না থাকায় এটি তেমন বিম্বাস বা সমর্থনযোগ্য বলে মনে হয় না । আর তাছাড়া এখানে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের কোন নিদর্শন পাওয়া যায়না । অস্থায়ী বাসস্থানকে প্রথমে বায়েজিদপুর, পরে বাজিতপুর নামে ডাকা শুরু হতে পারে । তবে প্রথম জনশ্রুতিটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় ।
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/49/Bajitpur_smritiswod.jpg/220px-Bajitpur_smritiswod.jpg)
- বাহেরবালী এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
- দেওয়ানবাড়ী মসজিদ
- ঘাগটিয়া জামে মসজিদ
- পাগলা শংকরের আখড়া
- জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
- ডাক বাংলার মাঠ এবং দীঘি
- কৈলাগ ব্রিজ
- গোলক চন্দ্র সাহার বাসস্থান
- মাইজচর জামে মসজিদ
- দিলালপুর ঘাট
- ভাগলপুর
- সরারচর বিমান বন্দর
- ঘোড়াওত্রা নদী
- নাজিম ভূইঁয়া ঈদগাহ মাঠ
- বাহেরবালী দারুল উলুম নোমানিয়া মাদ্রাসা
- পিরিজপুর বাজার
- সরারচর শিবনাথ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
- আফতাব উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ # বাজিতপুর সরকারি কলেজ
- বাজিতপুর হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
আয়তন এবং প্রশাসনিক এলাকা
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/d/d6/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE_%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8.jpg/220px-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE_%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8.jpg)
বাজিতপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২৩ সালে এবং উপজেলায় পরিণত হয় ১৯৮৩ সালে। উপজেলার আয়তন ১৯৩.৭৬ বর্গ কি.মি.। বাজিতপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে।
এতে ১টি পৌরসভা, ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৯২টি মৌজা, ১৭৮টি গ্রাম আছে।
ইউনিয়ন:।
- বাজিতপুর পৌরসভা
- মাইজচর ইউনিয়ন
- দিলালপুর ইউনিয়ন
- গাজীরচর ইউনিয়ন
- হুমায়ুনপুর ইউনিয়ন
- দিঘীরপাড় ইউনিয়ন
- হালিমপুর ইউনিয়ন
- সরারচর ইউনিয়ন
- বলিয়ার্দী ইউনিয়ন
- হিলচিয়া ইউনিয়ন
- কৈলাগ ইউনিয়ন
- পিরিজপুর ইউনিয়ন
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]মোট জনসংখ্যা-১৯৭,০৮১ পুরুষ-৫০.৪৯% নারী-৪৯.৫১% মুসলিম-৮৭.৪৯% হিন্দু-১২.৫১% অন্যান্য ধর্মালম্বী-০.০ %
শিক্ষা
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/09/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%9C_%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%95_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%9F_%E0%A6%AE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2_%E0%A6%89%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A_%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC.jpg/220px-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%9C_%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%95_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%9F_%E0%A6%AE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2_%E0%A6%89%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A_%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/35/Jahirul_islam_medical_college1.jpg/220px-Jahirul_islam_medical_college1.jpg)
কলেজ ২, মেডিকেল কলেজ(প্রাইভেট) ১, নার্সিং ইনিস্টউট ১, উচ্চ বিদ্যালয় ১৩, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩, মাদ্রাসা ১০, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৪। বাজিতপুরে মোট শিক্ষার হার ৭৫.৭৫%
- সরকারি কলেজ
বাজিতপুর সরকারি কলেজ স্থাপিতঃ ১৯৬৪ সালে সরকারীকরণ হয় ২০১৮ সালে।
- ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম নার্সিং কলেজ নার্সিং পড়াশোনায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যা ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের মিসেস মমতাজ বেগম ও ভাইস-প্রিন্সিপাল হিসেবে মিসেস আল্পনা আক্তার দায়িত্ব পালন করছেন। এ পর্যন্ত এই নার্সিং কলেজ থেকে ২৫ টির বেশি ব্যাচ বের হয়ে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্সিং অফিসার হিসেবে কর্মরত আছে।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]বাজিতপুরের অর্থনীতির অবস্থা নির্ভর করে এই অঞ্চলের কৃষি এবং ব্যবসার উপর। বাজিতপুরে প্রচুর পরিমাণে আবাদি কৃষি জমি আছে। যার উপর বাজিতপুরের অর্থনীতির অনেকটা অংশ নির্ভর করে। তাছাড়া, বাজিতপুরবাসী ব্যবসার উপরও অনেকটা নির্ভরশীল। তাছাড়াও, বাজিতপুরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাস করে। সব মিলিয়ে বাজিতপুরের অর্থনীতি ভালোর কাতারেই গিয়ে দাঁড়ায়।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]- মোহনকিশোর নমোদাস – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের ব্যক্তিত্ব।
- আবদুল মোনেম খান – পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।
- খান বাহাদুর আবদুল করিম – সাবেক শিক্ষা মন্ত্রি।
- জহুরুল ইসলাম (উদ্যোক্তা) – ইসলাম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
- মোশাররফ হোসেন (ক্রিকেটার) – বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার।
- হারুন-উর রশিদ (বীর প্রতীক) – বাংলাদেশের একজন বীর প্রতীক।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "বাজিতপুর উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৫।