মুকসুদপুর উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৩°১৯′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩″ পূর্ব / ২৩.৩২০২৮° উত্তর ৮৯.৮৬৭৫০° পূর্ব / 23.32028; 89.86750
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুকসুদপুর
উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৯′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩″ পূর্ব / ২৩.৩২০২৮° উত্তর ৮৯.৮৬৭৫০° পূর্ব / 23.32028; 89.86750 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাগোপালগঞ্জ জেলা
আয়তন
 • মোট৩০৯.৬৩ বর্গকিমি (১১৯.৫৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২,৮৯,৪০৬
 • জনঘনত্ব৯৩০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৬.৪৩%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮১৪০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৩৫ ৫৮
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

মুকসুদপুর উপজেলা গোপালগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন গোপালগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে একটি এবং গোপালগঞ্জ জেলার সর্ব উত্তরে অবস্থিত।[২]

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

মুকসুদপুর উপজেলার আয়তন ৩০৯.৬৩ বর্গ কিমি। এটি ২৩°১০´ থেকে ২৩°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৯০°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। মুকসুদপুর উপজেলার উত্তরে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলাভাঙ্গা উপজেলা, দক্ষিণে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাকাশিয়ানী উপজেলা, পূর্বে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলামাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা, পশ্চিমে কাশিয়ানী উপজেলাফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

মুকসুদপুর থানা গঠিত হয়েছিল ১৯৬১ সালে৷ বর্তমানে এটি উপজেলা৷ এই উপজেলার একটি পৌরসভা (১৬.৭৭ বর্গ কিঃ মিঃ), ২২২ টি মৌজা, ২৭০ টি গ্রাম আছে৷ এ উপজেলাটিতে প্রায় ২৮৯৪০৬ জনের বসবাস। শিক্ষার হার প্রায় ৪৭ শতাংশ।

পৌরসভা[সম্পাদনা]

  1. মুকসুদপুর পৌরসভা

ইউনিয়ন[সম্পাদনা]

  1. মুকসুদপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
  2. পশারগাতি ইউনিয়ন
  3. গোবিন্দপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
  4. খান্দারপাড় ইউনিয়ন
  5. বহুগ্রাম ইউনিয়ন
  6. বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
  7. ভাবড়াশুর ইউনিয়ন
  8. মহারাজপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
  9. বাটিকামারী ইউনিয়ন
  10. দিগনগর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
  11. রাঘদী ইউনিয়ন
  12. গোহালা ইউনিয়ন
  13. মোচনা ইউনিয়ন
  14. উজানী ইউনিয়ন
  15. কাশালিয়া ইউনিয়ন
  16. ননীক্ষীর ইউনিয়ন
  17. জলিরপাড় ইউনিয়ন

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

মুকসুদপুর উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি যা মোট আয়ের ৬৩%। এছাড়া আয়ের অন্যান্য উৎসের মধ্যে অকৃষি শ্রমিক ২.১৪%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১৩.০৫%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.২১%, চাকরি ৮.৯%, নির্মাণ ২.৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭% এবং অন্যান্য ৭.৮৫%। এই উপজেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসল হচ্ছে ধান, পাট, সরিষা, ডাল, আখ, গম, পান, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু এবং শাকসবজি ইত্যাদি। উৎপাদিত ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, তাল, পেয়ারা, লেবু, লিচু অন্যতম। এছাড়াও এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে মাছ, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির চাষ করা হয়। এ উপজেলার চান্দার বিল এলাকায় পীট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।[৩]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী মুকসুদপুরের গড় সাক্ষরতার হার শতকরা ৫২.৫%; (পুরুষ ৫৪.৮%, নারী ৫০.৫%)। এ উপজেলায় ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, ৯টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৩টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি সরকারি ও ৪টি বেসরকারি কলেজ, ৮১টি মাদ্রাসা, ৪৪টি কওমি মাদ্রাসা এবং ১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে[৪]-

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

  • ১ নং টেংরাখোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়;
  • সাবের মিয়া জসিম উদ্দিন এস.জে. মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়;
  • মুকসুদপুর সরকারি কলেজ;
  • গোবিন্দপুর মৌলভী আব্দুল হাই মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ;
  • এ.পি.এফ. বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়
  • উজানী বি.কে.বি ইউনিয়ন মহাবিদ্যালয়;
  • বঙ্গরত্ন ডিগ্রি কলেজ;
  • কালিনগর উচ্চ বিদ্যালয়;
  • পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয়;
  • গোহালা টি. সি. এ. এল উচ্চ বিদ্যালয়;
  • জে. কে. এম. বি. মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয় ,জলিরপাড়;
  • ইস্ট লখন্ডা জিরাতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ,জিরাতলী;
  • ১১৩ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,জিরাতলী;
  • এম কে বি এইচ উচ্চ বিদ্যালয়, কাশালিয়া;
  • ৮২ নং মালদিয়া কাশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ,মালদিয়া;
  • হাদিউজ্জামান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়।
  • নওহাটা এ.আর.এম উচ্চ বিদ্যালয়

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হার তুলনামূলক কম হলেও এটি মূলত দারিদ্র্যতার সাথে সম্পর্কিত হওয়ায়, এর উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এই অঞ্চলেও অপুষ্টি, পরিবেশগত স্যানিটেশন সমস্যা, ডায়াবেটিস, সংক্রামক রোগ প্রভৃতি বেশি দেখা যায়। উপজেলায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। ১৩টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ১টি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, ১টি মিশনারি হাসপাতাল রয়েছে।[৪]

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

মুকসুদপুর উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। জেলা সদরের সাথে যোগযোগ অত্যন্ত চমৎকার, সড়ক পথে দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার এবং যেতে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। মুকসুদপুর হতে প্রতিদিন বাস জেলা সদরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মুকসুদপুর উপজেলা থেকে গোপালগঞ্জ জেলার দুরত্ব ৬০ কিঃ মিঃ। জেলা সড়ক জেড৭০০৪ (ফরিদপুর (বদরপুর)-সালথা-সোনাপুর-মুকসুদপুর) মুকসুদপুরকে ফরিদপুর জেলার সাথে স্থলপথে সংযুক্ত করেছে।

নদ-নদী[সম্পাদনা]

মুকসুদপুরের উল্লেখযোগ্য নদী কুমার। মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে কুমার নদী বয়ে গেছে। নদীর দুই তীর পানি উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক বেড়ী বাধ নির্মাণ করা আছে। এছাড়াও মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে মধুমতি বিলরুট ক্যানেল বয়ে গেছে।[৫][৬]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

  • রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৮- ১৯৮০) একজন বাঙালি ইতিহাসবিদ। ১৯৩৬-১৯৪২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
  • মোহাম্মদ আবুল খায়ের:বঙ্গবন্ধুর সহচর।
  • মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (চিকিৎসক)
  • কাজী আব্দুর রশীদ (আনু. ১৯৩২–১৪ আগস্ট ২০১৪) বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যিনি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, তৎকালীন ফরিদপুর-৯ ও গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
  • মুন্সি মোহাম্মদ সাবের মিঞা, যিনি মুকসুদপুরের শিক্ষায় এক অনন্য পরিবর্তন ও শিক্ষার প্রতিষ্ঠা করেছেন,উল্লেখযোগ্য তার প্রতিষ্ঠিত সাবের মিঞা জসিমউদ্দীন (এস.জে)উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।তিনি ছিলেন গোপিনাথপুর ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মিয়া পরিবারের ঐতিহ্যের বাহক।
  • মৌলভী আব্দুল মজিদ মিয়া, যিনি ছিলেন টেংরাখোলা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট(বর্তমান মুকসুদপুর পৌরসভা ও পশারগাতী ইউনিয়ন)তিনি মুন্সি মোহাম্মদ সাবের মিয়ার সন্তান।
  • মৌলভী আব্দুল জলিল মিয়া, যিনি ছিলেন বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক, তিনিও পিতার মতন শিক্ষা অনুরাগী ছিলেন, তিনি মুকসুদপুর কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি মোহাম্মদ সাবের মিঞারই অন্যতম সন্তান, তিনি ছিলেন সাবের মিঞা জসিমউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়, মুকসুদপুর বাজার বণিক সমিতির আমৃত্যু সভাপতি, এছাড়া তিনি ছিলেন মুকসুদপুর সদর ঈদগাহের পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
  • জনাব লে.কর্ণেল ফারুক খান (অবঃ) এমপি

ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঐতিহ্য[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মুকসুদপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ 
  2. "মুকসুদপুর উপজেলার পটভূমি"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২০১৯-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫ 
  3. "মুকসুদপুর উপজেলা"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৭ 
  4. "জেলা পরিসংখান ২০১১" (পিডিএফ)বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ডিসেম্বর ২০১৩। ৩ মে ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯
  6. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৬। আইএসবিএন 984-70120-0436-4 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]