কটিয়াদী উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°১৪′৪৯″ উত্তর ৯০°৪৭′২৭″ পূর্ব / ২৪.২৪৬৯৪° উত্তর ৯০.৭৯০৮৩° পূর্ব / 24.24694; 90.79083
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(কটিয়াদি উপজেলা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
কটিয়াদী
উপজেলা
মানচিত্রে কটিয়াদী উপজেলা
মানচিত্রে কটিয়াদী উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৪′৪৯″ উত্তর ৯০°৪৭′২৭″ পূর্ব / ২৪.২৪৬৯৪° উত্তর ৯০.৭৯০৮৩° পূর্ব / 24.24694; 90.79083 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাকিশোরগঞ্জ জেলা
আয়তন
 • মোট২১৯.৩৯ বর্গকিমি (৮৪.৭১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৩,১৪,৫২৯
 • জনঘনত্ব১,৪০০/বর্গকিমি (৩,৭০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড২৩৩০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৪৮ ৪৫
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

কটিয়াদী উপজেলা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

কটিয়াদী উপজেলার আয়তন প্রায় ২১৯.২২ বর্গ কিলোমিটার। কটিয়াদী উপজেলার উত্তরে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলাকরিমগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলামনোহরদী উপজেলা, পূর্বে নিকলী উপজেলাবাজিতপুর উপজেলা, পশ্চিমে পাকুন্দিয়া উপজেলা[২]

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

কটিয়াদী থানা ১৯৮৩ সনে উপজেলায় পরিনত হয় এবং ২০০১ সালে কটিয়াদী ইউনিয়নকে পৌরসভায় পরিণত করা হয়। ১ টি পৌরসভা, ৯ টি ইউনিয়ন, ৯৫ টি মৌজা আর ১৫১ টি গ্রাম নিয়ে কটিয়াদী উপজেলা গঠিত।

এই উপজেলার ইউনিয়ন সমূহঃ[৩]

একটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ছবি
  1. বনগ্রাম ইউনিয়ন
  2. সহশ্রাম ধুলদিয়া ইউনিয়ন
  3. করগাঁও ইউনিয়ন
  4. চান্দপুর ইউনিয়ন
  5. মুমুরদিয়া ইউনিয়ন
  6. আচমিতা ইউনিয়ন
  7. মসূয়া ইউনিয়ন
  8. লোহাজুরী ইউনিয়ন
  9. জালালপুর ইউনিয়ন

ইতিহাস[সম্পাদনা]

কথিত আছে কটিয়াদীতে একজন পাগল বেশে দরবেশ ছিলেন। সবাই তাকে কটি পাগল বলে ডাকতো। তার নাম কটি থেকেই কটিয়াদী হয়েছে।

‌ সড়ক ও রেলপথ[সম্পাদনা]

কটিয়াদী উপজেলা কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যতম সড়করেলপথ সমৃদ্ধ উপজেলা। এর উপর দিয়ে বয়ে গেছে কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক ও রেলপথ এসব সড়করেলপথ উপজেলাকে আশেপাশের জেলা-উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে ভূমিকা রাখে।

সড়ক[সম্পাদনা]

কটিয়াদী উপজেলায় ব্রিটিশ কালের পূর্ব থেকেই সড়ক ব্যবস্থা চালু ছিল এর প্রধান সড়ক হল: ময়মনসিংহ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়ক যা উপজেলার পশ্চিম দিক দিয়ে বিস্তৃত। নিচের সারণিতে কিছু প্রধান সড়ক উল্লেখ করা হয়েছে।

সড়ক ব্যবহার (কটিয়াদী হতে) ধরণ
ময়মনসিংহ-ভৈরব মহাসড়ক কিশোরগঞ্জ সদর, ভৈরব, কুলিয়াচর আঞ্চলিক মহাসড়ক
কটিয়াদী- ঢাকা সড়ক কটিয়াদী আঞ্চলিক সড়ক
কালিয়াচাপড়া-নিকলি সড়ক নিকলি আঞ্চলিক সড়ক
ধূলদিয়া-কিশোরগঞ্জ সড়ক কিশোরগঞ্জ সদর আঞ্চলিক সড়ক

তাছাড়া প্রধান দুটি উপসড়ক হল: কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড-মুমুরদিয়া সড়ক ও কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড-গচিহাটা এছাড়া রয়েছে অসংখ্য ছোট-ছোট উপসড়ক।

রেলপথ[সম্পাদনা]

গচিহাটা রেলওয়ে স্টেশনের একটি‌ ছবি

কটিয়াদী উপজেলায় ১৯১৮ সালে রেল ব্যবস্থা চালু হয় বর্তমানে ময়মনসিংহ-গৌরিপুর-ভৈরব রেল লাইন উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত। কটিয়াদী উপজেলায় বর্তমানে রেলওয়ে স্টেশনের সংখ্যা ২ টি নিচে এগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

রেলওয়ে স্টেশন লাইন প্রতিষ্ঠা
গচিহাটা ময়মনসিংহ-গৌরিপুর-ভৈরব ১৯১৮
মানিকখালী ময়মনসিংহ-গৌরিপুর-ভৈরব ১৯১৮

প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ও ভগ্নাবশেষ[সম্পাদনা]

এখানে ৫ নং মুমুরদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই গ্রামে হযরত শামসুদ্দীন আউলিয়া সুলতান বুখারি এর মাজার অবস্থিত । যিনি ৩৬০ আউলিয়ার একজন । তিনি ছিলেন হযরত শাহজালাল এর সঙ্গী। এটি কুড়িখািই মেলা নামে পরিচিত এবং ৪ নং চান্দপুর ইউনিয়নের সেকের পাড়া গ্রামে হযরত মিয়া চান্দ শাহ এর মাজার অবস্থিত । এ মাজার চূনের মাজার নামে পরিচিত । চান্দপুর ইউনিয়নের মন্ডল ভোগ গ্রামে প্রতি বছরের চৈত্র মাসের প্রথম রবিবার বসে এক রাতের বিশাল মেলা, যা পাগলা মেলা/রহমান শাহ মেলা হিসেবে খ্যাত। এ ছাড়া আচমিতা ইউনিয়নে গোপীনাথ ও লক্ষীনারায়ন মন্দির এখানে অবস্থিত। লোহাজুরি ইউনিয়নে একটি পার্ক রয়েছে মরুদ্বীপ-৭১ স্বাধীনতা পার্ক । সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়ি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা অথবা রিক্সাযোগে ৬ কি.মি.দূরে মসুয়া ইউনিয়নে। কটিয়াদি থেকে মাত্র ৪ কি.মি. দূরে জালালপুর ইউনিয়নে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় নীলচুল্লির ধ্বংসাবশেষ। আচমিতা ইউনিয়নের উখড়াশাল গ্রামে রয়েছে বড় একটা জমিদার বাড়ি যেটা নাকি বড় বাড়ি নামে পরিচিত

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

সিনেমা হল ২টি, নাট্য মঞ্চ ১টি। চরকাউনিয়া সার্গাম সংগীত একাডেমি, লোহাজুরী । নজরুল একাডেমি কটিয়াদি।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

জনসংখ্যার শতকরা ৫১% পুরুষ ও ৪৯% মহিলা। জনসংখ্যার ৯৭.৫% মুসলিম ২% হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের ০.৫% । জনসংখ্যার প্রায় ৫৫% লোক ই কৃষি কাজ করে থাকে।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

কলেজ ৩টি, উচ্চ বিদ্যালয় ২৪টি, কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১টি, মাদ্রাসা ৩৬টি, সরকারী প্রাথমিক স্কুল ১১৩ টি। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ০১ টি - চরকাউনিয়া ইলমা অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়।

কৃতি ব্যক্তি

ডা: আব্দুল মান্নান, সাবেক সংসদ সদস্য।

আখতারুজ্জামান রঞ্জন, সাবেক সংসদ সদস্য।

অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য।

মোঃ আবদুল মান্নান সাবেক স্বাস্থ্য সচিব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয।

নূর মোহাম্মদ, সংসদ সদস্য, সাবেক আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ, সাবেক রাষ্ট্রদূত।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

কৃষিখামার হচ্ছে এই উপজেলার অন্যতম চালিকা শক্তি।প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স এর সাথে বিশাল ভূমিকা পালন করে। মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা,লন্ডন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে এ উপজেলার যুবক। প্রবাসীদের রেমিটেন্স এ এলাকার সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে চলছে। অন্যদিকে পোল্ট্রি,ডেইরি-খামার,মৎস ব্যবসায় কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যান্য কয়েকটি উপজেলার মত এ উপজেলা অনেক অগ্রসর। বলা যেতে পারে উপজেলাটি অনেক সচ্ছল। প্রায় পরিবারে ২/১ জন প্রবাসী।আরো কাজ হল তারা কোন বসে থাকে না

পেশা সমূহ[সম্পাদনা]

উপজেলার মানুষ সমূহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। নিচের তালিকায় কিছু পেশা ও পেশাজীবীদের তথ্য সন্নিবেশিত করা হল:

পেশার তালিকা-
পেশার নাম পেশাদার (%)
কৃষি ও কৃষি শ্রমিক ৭০% (প্রায়)
প্রবাসী ১৯.৫% (প্রায়)
শিক্ষক ও চাকরিজীবী ১.০৫% (প্রায়)
অন্যান্য ৯.৪৫% (প্রায়)

ভূমি ব্যবহার[সম্পাদনা]

আবাদি জমি ১৬২৪৮,৪৮ হেক্টর, পতিত জমি ৪৩০,৫৯ হেক্টর; একক ফসল ১১,৬৮%, ডবল ফসল ৫৫,৩৫% এবং ত্রিগুণ ফসলের জমি ৩২,৯৭% সেচের আওতায় জমি ২৩,২%.

প্রধান শস্য[সম্পাদনা]

ধান, পাট, গম, সরিষা, চিনাবাদাম, রসুন, টমেটো, পেঁয়াজ, মরিচ, আলু, আখ, সবজি. বিলুপ্ত বা প্রায় বিলুপ্ত শস্য তিল, তিসি, তুলো, কৌন, বার্লি এবং কালোজিরা.

ধর্ম ও‌ অনুসারী[সম্পাদনা]

তালিকা
ধর্ম অনুসারী
ইসলাম ৯৭.৫%
হিন্দু ২%
অন্যান্য ০.৫%

হাট, বাজার এবং মেলা[সম্পাদনা]

হাট বাজার আছে ২০টি। উল্লেখযোগ্য বাজার হলো, কটিয়াদী বাজার, মসূয়া বাজার,আচমিতা বাজার, বানিয়াগ্রাম বাজার, চরকাউনিয়া মধ্য বাজার, অরিয়াধর বাজার, লোহাজুরী বাজার, ধুলদিয়া বাজার ও করগাঁও বাজার। মেলা আছে ১৭ টি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] উল্লেখযোগ্য মেলা হলোঃ-

  1. কুড়িখাই মেলা, কুড়িখাই (মাঘ মাস)
  2. রথযাত্রা, অষ্টঘরিয়া (আষাঢ় মাস)
  3. হাইছা পাগলার মেলা, বেতাল।
  4. বৈশাখী মেলা, মসূয়া।
  5. শিব শীতলা মেলা, দাসেরগাঁও জামষাইট
  6. শিতুলীর মেলা, বনগ্রাম
  7. মন্ডলভোগ/পাগলা মেলা, মন্ডলভোগ
  8. নশা লাঠিয়ালের মেলা, দক্ষিণ মুমুরদিয়া
  9. নানি পাগলীর মেরা, মুমুরদিয়া
  10. রহমান লেংটার মেল, মড়লভোগ, চান্দপুর
  11. আনার ফকিরের মেলা, চান্দপুর
  12. লোহাজুরী বাজার মেলা
  13. অরিয়াধর বাজার মেলা
  14. চরকাউনিয়া মধ্য বাজার মেলা।
  15. রসুলপুর বাজার মেলা।
  16. আলাউদ্দিন পাগলের মেলা, শিবের কান্দা।

এনজিও কার্যক্রম[সম্পাদনা]

ব্রাক,আশা, প্রত্যাশা, মসজিদ মিশন, গ্রামীণ ব্যাংক, আহসানিয়া মিশন, পল্লি বিকাশ, প্রশিকা, বিজ ও গ্লোবাল ভিলেজ,পল্লী মঙ্গল ইত্যাদি।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র[সম্পাদনা]

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬টি, গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩টি, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪৩টি।

কুটির শিল্প[সম্পাদনা]

বুনন - শিল্প ২৮১টি, বাঁশের কাজ ৩৪৮টি, কামার ৬২টি, কুমার ৫৭টি, কাঠের কাজ ২৭৬টি, পাট এবং তুলো কাজ ৫৪টি, পিতলের কাজ টি এবং অন্যদের ১৫০৪ টি।

প্রস্তুত কারক[সম্পাদনা]

স মিল ২০টি, চাল কল ৫টি, তৈল মিল ৪৩টি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে কটিয়াদী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. সৈয়দ মোঃ সালেহ উদ্দিন (২০১২)। "কটিয়াদি উপজেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (১১ জুন ২০১৪)। "ইউনিয়ন সমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]