গাজীপুর জেলা
উইকিপিডিয়ার ভূমিকাংশ নীতিমালা অনুসারে, এই নিবন্ধের ভূমিকাংশটি পুনরায় পরিষ্কার করে লেখা প্রয়োজন। |
গাজীপুর জেলা | |
---|---|
জেলা | |
বাংলাদেশে গাজীপুর জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°০′০″ উত্তর ৯০°২৫′৪৮″ পূর্ব / ২৪.০০০০০° উত্তর ৯০.৪৩০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ |
সংসদীয় আসন | ৫টি |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | নাফিসা আরেফীন |
আয়তন | |
• মোট | ১,৭৭০.৫৮ বর্গকিমি (৬৮৩.৬২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২)[১] | |
• মোট | ৪৪,০৩,৯১২ |
• জনঘনত্ব | ২,৫০০/বর্গকিমি (৬,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৮৫.৭৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৩৩ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
গাজীপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। অবস্থানগত কারণে এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা।[২] ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংশ্লেষে কালোত্তীর্ণ মহিমায় আর বর্ণিল দীপ্তিতে ভাস্বর অপার সম্ভাবনায় ভরপুর গাজীপুর জেলা। মোগল-ব্রিটিশ-পাকিস্তান আমলে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে গাজীপুরের রয়েছে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বে গাজীপুরেই সংঘটিত হয় প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। গাজীপুরে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তরসহ ১৯টি কেপি আই, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়, ২টি ক্যান্টনমেন্ট ও দেশের একমাত্র হাইটেক পার্কসহ বহু সংখ্যক সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র/মাঝারী ও ভারী শিল্পকারখানা সহ দেশের তৈরী পোশাক শিল্পের বিরাট অংশ। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন, যার আয়তন ৩৩০ বর্গ কিঃমিঃ। গাজীপুরের মধ্যেই দেশের ৭৫ শতাংশ গার্মেন্টস শিল্প অবস্থিত। মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও রয়েছে একটি জাতীয় উদ্যান ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ও এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় সাফারি পার্ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক গাজীপুরে অবস্থিত। বাংলাদেশের একমাত্র টাকশাল বা টাকা তৈরির কারখানা, যেখানে দেশের সকল টাকা তৈরি করা হয় তা গাজীপুরে অবস্থিত। বাংলাদেশের একমাত্র অস্ত্র তৈরির কারখানাও গাজীপুরে অবস্থিত। বাংলাদেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার গাজীপুরে অবস্থিত। গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ তুলা গবেষণা ইন্সটিটিউট অবস্থিত। এছাড়াও বাংলাদেশের একমাত্র সমরাস্ত্র কারখানা গাজীপুর জেলায় অবস্থিত।[৩]
অবস্থান ও আয়তন
[সম্পাদনা]গাজীপুর জেলার উত্তরে ময়মনসিংহ জেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ঢাকা জেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা, পূর্বে কিশোরগঞ্জ জেলা ও নরসিংদী জেলা, পশ্চিমে ঢাকা জেলা ও টাঙ্গাইল জেলা।[৪]
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
[সম্পাদনা]গাজীপুর জেলা ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটির একটি সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন রয়েছে এবং নিম্নলিখিত উপজেলাগুলিতে বিভক্ত:
ইতিহাস
[সম্পাদনা]গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, কালিয়াকৈর, কালিগঞ্জ ও কাপাসিয়া এই ৫টি উপজেলা নিয়ে ঢাকা জেলা থেকে বিভক্ত হয়ে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ গাজীপুর জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[৩] ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে গাজী নামে এক কুস্তিগির এখানে থাকতো আর তার নাম থেকেই সম্ভবত এই অঞ্চলের নাম হয়েছে গাজীপুর। আবার এই মতের বিরোধিতা করে অনেকে বলেন যে সম্রাট আকবরের সেনাপতি ঈশা খাঁর ছেলে ফজল গাজীর নামে এই জনপদের নামকরণ করা হয়েছে।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]গাজীপুরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রয়েছে বহুসংখ্যক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :-
- বিশ্ববিদ্যালয়
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়
- ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
- জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়
- কলেজ ও উচ্চবিদ্যালয়-
- ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ
- টংগী সরকারি কলেজ
- গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
- রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
- বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
- ভাওয়াল রাজবাড়ী, গাজীপুর সিটি
- নুহাশ পল্লী, গাজীপুর সদর
- কাশিমপুর জমিদার বাড়ি, গাজীপুর সদর
- আনসার একাডেমী, কালিয়াকৈর
- শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ী, কালিয়াকৈর
- বলিয়াদী জমিদার বাড়ী, কালিয়াকৈর
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]- মেঘনাদ সাহা - তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
- মোঃ সামসুল হক - স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি[৫]
- ফকির শাহাবুদ্দীন - বাংলাদেশের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল।
- তাজউদ্দিন আহমেদ - বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
- হুমায়ূন ফরীদি - জাতীয় চলচ্চিত্র ও একুশে পদক প্রাপ্ত অভিনেতা।
- ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহ - রাজনীতিবিদ, সাবেক পাটমন্ত্রী।
- আহসানউল্লাহ মাস্টার - রাজনীতিবিদ; সাবেক সংসদ সদস্য।
- এম জাহিদ হাসান - পদার্থবিদ, ভাইল ফার্মিয়ন কণার আবিষ্কারক। ল ফার্মিয়ন কণার আবিষ্কারক।
- আবু জাফর শামসুদ্দীন - একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
- আর্চবিশপ পৌলিনুস ডি কস্তা - বাংলাদেশের প্রাক্তন সর্বোচ্চ ক্যাথলিক ধর্মীয় নেতা।
- আ.ক.ম মোজাম্মেল হক - এমপি (গাজীপুর ১) এবং মাননীয় মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
- জাহিদ আহসান রাসেল - এমপি গাজীপুর আসন নং ২ ও মাননীয় প্রতিমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
- আনিছুর রহমান মিঞা - অবসরপ্রাপ্ত সচিব; চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
- মেহের আফরোজ চুমকি - রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য।
- সিমিন হোসেন রিমি - সাংসদ গাজীপুর আসন নং ৪।
- রহমত আলী - রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- ইকবাল হোসেন সবুজ - সাংসদ গাজীপুর আসন নং ৩।
- মারাজ হোসেন অপি - খেলোয়াড়।
- জায়েদা খাতুন - মাননীয় মেয়র (নগর মাতা), গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন।
- চৌধুরী তানবীর আহমেদ সিদ্দিকী - বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।
- মোহাম্মদ ওবাইদ উল্লাহ - রাজনীতিবিদ; সাবেক সংসদ সদস্য।
- সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন - বাংলাদেশী মহিলা রাজনীতিবিদের মধ্যে অন্যতম।
- রুমানা আলী - রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য মহিলা আসন।
- ফকির আবদুল মান্নান শাহ - রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী।
- মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (গাজীপুরের রাজনীতিবিদ) - বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য (সাবেক)।
- এ কে এম ফজলুল হক মিলন - রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।
- মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (চিকিৎসক) - সাবেক সংসদ সদস্য।
- এম. এ. মান্নান (গাজীপুরের রাজনীতিবিদ) - রাজনীতিবিদ এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী।
- মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন - আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পরিচালনাকারী।
- জাহাঙ্গীর আলম - সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন।
- হাসান উদ্দিন সরকার - সাবেক সাংসদ, গাজীপুর আসন নং ২।
- তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ - সাবেক প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
- মোঃ আতাবুল্লাহ - বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে জেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "জেলার পটভূমি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৬ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২।