বেতাগী উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২২°২৫′৫″ উত্তর ৯০°১০′৬″ পূর্ব / ২২.৪১৮০৬° উত্তর ৯০.১৬৮৩৩° পূর্ব / 22.41806; 90.16833
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেতাগী
উপজেলা
মানচিত্রে বেতাগী উপজেলা
মানচিত্রে বেতাগী উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২২°২৫′৫″ উত্তর ৯০°১০′৬″ পূর্ব / ২২.৪১৮০৬° উত্তর ৯০.১৬৮৩৩° পূর্ব / 22.41806; 90.16833 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগবরিশাল বিভাগ
জেলাবরগুনা জেলা
আয়তন
 • মোট১৬৭.৭৫ বর্গকিমি (৬৪.৭৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১,২১,৭৫১
 • জনঘনত্ব৭৩০/বর্গকিমি (১,৯০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮৭৪০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
১০ ০৪ ৪৭
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

বেতাগী উপজেলা বাংলাদেশের বরগুনা জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

বেতাগী উপজেলাটি বিষখালী নদীর তীরে অবস্থিত। এর আয়তন ১৬৭.৭৫ বর্গ কি.মি.। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৪´ থেকে ৯০°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এর উত্তরে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা, কাঠালিয়া উপজেলাবরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলাবরগুনা জেলার বামনা উপজেলা। এই উপজেলার প্রধান নদীগুলো হচ্ছেঃ বিষখালী নদীগজালিয়া নদী। এছাড়াও এখানকার উল্লেখযোগ্য জলাশয়ের মধ্যে রয়েছে কাটাখালি খাল ও করুণা খাল।

নামকরণের ইতিহাস[সম্পাদনা]

বেতাগী শব্দের নামকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মত রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশের মতে বেদাগী থেকে বেতাগী নামের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করা হয়। অষ্টাদশ প্রথম দিকে ইংরেজ শাসকরা শত শত নিরীহ লোক ধরে এনে দক্ষিণ জনপদে লবণ চাষ করাতে কৃষকদের উপর নানারকম জোর জবরদস্তি ও নির্যাতন চালাতো। এমনকি তাদেরকে তামাক সেবনেও অভ্যস্ত করতো বলে জানা যায়। এসময় তৎকালীন শাসনামলে বুজুর্গ উমেদপুরের প্রতাপশালী জমিদার ও কৃষক নেতা আইন উদ্দীন সিকদার এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ও গড়ে তোলেন ও কৃষকদের সংগঠিত করে লবণ চাষের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। এতে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় অনেক ইংরেজও মারা যায়। ইংরেজরা আইন উদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে ও তাকে কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে আখ্যায়িত করে। ১৭৮৯ সালে তার জমিদারী কেড়ে নেয়া হয় এবং তাকে গ্রেফতার করে নির্বাসনে পাঠানো হয়। সে সময়ের ধর্মীয় নেতা নেয়ামত শাহের নিকট এলাকার জনসাধারন আইন উদ্দিন সিকদারের মুক্তির জন্য সাহায্য চাইলে তিনি তৎকালীন ঢাকাস্থ মোগল সুবেদার ইসলাম খার নিকট আইন উদ্দিন সিকদারের পক্ষে সুপারিশ করে একটি পত্র প্রেরণ করেন। এ চিঠিতে তাকে দাগী নয়, বেদাগী (অপরাধী নয়) বলে আখ্যায়িত করে। ফরাসী শব্দ বেদাগী থেকেই কালক্রমে বেতাগী শব্দের রুপান্তরিত হয়ে বেতাগীর উদ্ভব হয় বলে ধারণা করা হয়।

এছাড়া বেতাগী অঞ্চলে আগে অনেক বেত পাওয়া যেত এবং বেতের আগা একটি জনপ্রিয় সবজি হিসাবে সকলের কাছে বেশ কদর ছিল। সেই "বেতাগা" এর সূত্র ধরে বেতাগীর উৎপত্তি হতে পারে। বেতাগীর নামকরণে আবার কেউ কেউ মনে করেন, ইংরেজদের কাউকে কোন কাজে বাধ্য না করাতে পারলে চরম বেত্রাঘাত করত। এখানের মানুষ প্রতিবাদী হওয়ার কারণে আরও বেশি বেত্রাঘাতের স্বীকার হত। এই বেত্রাঘাত শব্দানুসারে বেতাগী নামের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশাসন বেতাগী থানা গঠিত হয় ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৮৩ সালে বেতাগী উপজেলা উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মেজর জেনারেল এম এ মুমীন।

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

বেতাগী উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বেতাগী থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বেতাগী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,১৭,১৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৬,৬৮৩ জন এবং মহিলা ৬০,৪৬২ জন। মোট পরিবার ২৭,৯২২টি।[২]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বেতাগী উপজেলার সাক্ষরতার হার ৬০.১%।[২] এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নিম্নরূপঃ

  • কলেজ - ৭টি (১টি সরকারি),
  • মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ২২টি,(১টি সরকারি),
  • প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৪০টি (একটি সরকারি)
  • মাদ্রাসা - ৫৮টি।

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

বিদ্যুৎ ব্যবহারঃ

এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৯.২১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলঃ

এখানে পানীয় জলের ভাল ব্যবস্থা নেই। সমুদ্রতট এর খুব নিকটবর্তী হবার কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েলের পানিতে লবণাক্ত স্বাদ পাওয়া যায়,যার ফলে অধিকাংশ লোকজন নদীর এবং পুকুরের পানি ফুটিয়ে পান করে এবং এই পানি তারা রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করে। পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.২%, ট্যাপ ০.১৫%, পুকুর ৪.৯৩% এবং অন্যান্য ২.৭২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থাঃ

এ উপজেলার ৫৮.৪৭% (গ্রামে ৫৫.৮৪% ও শহরে ৮৪.৫৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৫.৭৭% (গ্রামে ৩৭.৯৯% ও শহরে ১৩.৭৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.৭৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রঃ
  • উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র - ১টি,
  • স্যাটেলাইট ক্লিনিক - ৭টি,
  • ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ৭টি,

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স - ১টি

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

  • শিল্প ও কলকারখানা - রাইসমিল, স’মিল, আইস ফ্যাক্টরি, স্টোরেজ ব্যাটারি ওয়ার্কসপ।
  • কুটিরশিল্প - স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
  • হাটবাজার - ১৮টি।
  • মেলা - ৩টি (কামিনি কবিরাজবাড়ির মেলা, বৈশাখি মেলা ও বুড়া মজুমদার কাঁচারিবাড়ির মেলা)।
  • প্রধান রপ্তানিদ্রব্য - ধান,মাছ, কলা এবং বিভিন্ন মৌসুমী শাকসব্জি

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে বেতাগী উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৬ 
  2. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]