বান্দরবান জেলা
বান্দরবান | |
---|---|
জেলা | |
বাংলাদেশে বান্দরবান জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২১°৪৮′ উত্তর ৯২°২৪′ পূর্ব / ২১.৮০০° উত্তর ৯২.৪০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮ এপ্রিল ১৯৮১ |
সংসদীয় আসন | ৩০০ পার্বত্য বান্দরবান |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | বীর বাহাদুর উশৈ সিং |
• চেয়ারম্যান | ক্য শৈ হ্লা |
আয়তন | |
• মোট | ৪,৪৭৯.০২ বর্গকিমি (১,৭২৯.৩৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২) | |
• মোট | ৪,৮১,১০৯ |
• জনঘনত্ব | ১১০/বর্গকিমি (২৮০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৩.৬৪ |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৬০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ০৩ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি একটি পার্বত্য জেলা। বান্দরবান জেলার মোট আয়তন ৪৪৭৯.০২ বর্গ কিলোমিটার।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রতিষ্ঠাকাল
[সম্পাদনা]এই অঞ্চল সম্পর্কে সর্বপ্রাচীন তথ্য পাওয়া যায় তুংগো সাম্রাজ্য-এর হাইসাওয়াদি রাজ্যের প্রথম সার্কেল প্রধান বা গভর্নর, তবাং শোয়েথী-এর দিনলিপি থেকে, যিনি ১৫৩১ খ্রিষ্টাব্দে নিযুক্ত হন। ব্রিটিশ সরকার পঞ্চম বোমং, কং হ্লা প্রু-কে (১৭২৭-১৮১১) সার্কেল প্রধান বা গভর্নর চিহ্নিত এবং ষষ্ঠ বোমং, সাক থাই প্রুকে স্বীকৃতি প্রদান করে। পরবর্তী কালে, চিটাগং হিল ট্রাক্টস রেগুলাশন ১৯০০-এর মাধ্যমে তথা আইন প্রয়োগ করে এই অঞ্চলের স্বকীয়তার প্রকাশ করা হয়, যা এখনো পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।[২]
১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর, বান্দরবান জেলা ১৯৫১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মহকুমা হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করে। এটি রাঙ্গামাটি জেলার প্রশাসনিক ইউনিট ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর সমগ্র বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। পরর্বতীতে ১৯৮১ সালের ১৮ এপ্রিল, তৎকালীন লামা মহকুমার ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক সীমানাসহ সাতটি উপজেলার সমন্বয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।[৩]
নামকরণ
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের প্রচলিত রূপকথায় আছে, এ এলাকায় একসময় অসংখ্য বানর বাস করত। আর এই বানরগুলো শহরের প্রবেশমুখে ছড়ার পাড়ে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত লবণ খেতে আসত। এক সময় অনবরত বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বানরের দল ছড়া পাড় হয়ে পাহাড়ে যেতে না পারায় একে অপরকে ধরে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পার হয়। বানরের ছড়া পারাপারের এই দৃশ্য দেখতে পায় এই জনপদের মানুষ। এই সময় থেকে এই জায়গাটির পরিচিতি লাভ করে ম্যাঅকছি ছড়া নামে। অর্থাৎ মারমা ভাষায় ম্যাঅক অর্থ বানর আর ছি অর্থ বাঁধ। কালের প্রবাহে বাংলা ভাষাভাষির সাধারণ উচ্চারণে এই এলাকার নাম রুপ লাভ করে বান্দরবান হিসাবে। বর্তমানে সরকারি দলিল পত্রে বান্দরবান হিসাবে এই জেলার নাম স্থায়ী রূপ লাভ করেছে। তবে মারমা ভাষায় বান্দরবানের নাম রদ ক্যওচি ম্রো।[৩]
সাধারণ ইতিহাস
[সম্পাদনা]বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রামের অংশ। এই অঞ্চলটি ১৫৫০ সালের দিকে প্রণীত বাংলার প্রথম মানচিত্রে বিদ্যমান ছিল। তবে এর প্রায় ৬০০ বছর আগে ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা এই অঞ্চল অধিকার করেন। ১২৪০ সালের দিকে ত্রিপুরার রাজা এই এলাকা দখল করেন। ১৫৭৫ সালে আরাকানের রাজা এই অঞ্চল আক্রমণ করে কিছু এলাকা পুনর্দখল করেন, এবং ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত অধিকারে রাখেন। মুঘল সাম্রাজ্য ১৬৬৬ থেকে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত এলাকাটি সুবা বাংলার অধীনে শাসন করে। ১৭৬০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে আনে। ১৮৬০ সালে এটি ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়। ব্রিটিশরা এই এলাকার নাম দেয় চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস বা পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ হিসাবে বাংলা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। মূলত চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলাসন ১৯০০ দ্বারা এই অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে আরাকান রাজ্যের অংশ থেকে তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আওতায় আসে এবং চাকমা সার্কেল, মং সার্কেল ও বোমাং সার্কেল প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রত্যেক সার্কেলে সার্কেল চীফ বা রাজা নিযুক্ত করা হয়। বান্দরবান জেলা ছিল বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত। বোমাং রাজ পরিবার ১৬ শতক থেকেই এই অঞ্চল শাসন করছিল। তাই এ জেলার আদি নাম বোমাং থং।[৪]
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলায় পাকবাহিনী ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতন চালায়। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমুক্রু পাড়া ও সোনাইছড়ি জুমখোলা পাড়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল।[১]
- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
- স্মৃতিস্তম্ভ: ২টি[১]
আয়তন ও অবস্থান
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২১°১১´ থেকে ২২°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৪´ থেকে ৯২°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে বান্দরবান জেলার অবস্থান।[১] রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৩২৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে রাঙ্গামাটি জেলা, দক্ষিণে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য, পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা ও মিয়ানমারের চিন রাজ্য, পশ্চিমে কক্সবাজার জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলা ৭টি উপজেলা, ৭টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৩৩টি ইউনিয়ন, ৯৬টি মৌজা, ১৪৮২টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।[৩]
বান্দরবান জেলায় মোট ৭টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:[৫]
ক্রম নং | উপজেলা | আয়তন[১] (বর্গ কিলোমিটারে) |
প্রশাসনিক থানা | আওতাধীন এলাকাসমূহ |
---|---|---|---|---|
০১ | আলীকদম | ৮৮৫.৭৮ | আলীকদম | ইউনিয়ন (৪টি): আলীকদম সদর, চৈক্ষ্যং, নয়াপাড়া এবং কুরুকপাতা |
০২ | থানচি | ১০২০.৮২ | থানচি | ইউনিয়ন (৪টি): রেমাক্রী, তিন্দু, থানচি সদর এবং বলিপাড়া |
০৩ | নাইক্ষ্যংছড়ি | ৪৬৩.৬১ | নাইক্ষ্যংছড়ি | ইউনিয়ন (৫টি): নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, বাইশারী, ঘুমধুম, দোছড়ি এবং সোনাইছড়ি |
০৪ | বান্দরবান সদর | ৫০১.৯৮ | বান্দরবান সদর | পৌরসভা (১টি): বান্দরবান |
ইউনিয়ন (৬টি): রাজবিলা, কুহালং, বান্দরবান সদর, সুয়ালক, টংকাবতী এবং জামছড়ি | ||||
০৫ | রুমা | ৪৯২.১০ | রুমা | ইউনিয়ন (৪টি): পাইন্দু, রুমা সদর, রেমাক্রীপ্রাংসা এবং গ্যালেংগ্যা |
০৬ | রোয়াংছড়ি | ৪৪২.৮৯ | রোয়াংছড়ি | ইউনিয়ন (৪টি): রোয়াংছড়ি সদর, তারাছা, আলেক্ষ্যং এবং নোয়াপতং |
০৭ | লামা | ৬৭১.৮৪ | লামা | পৌরসভা (১টি): লামা |
ইউনিয়ন (৭টি): গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর, সরই, রূপসীপাড়া এবং ফাইতং |
সংসদীয় আসন
[সম্পাদনা]সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৬] | সংসদ সদস্য[৭][৮][৯][১০][১১] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
৩০০ পার্বত্য বান্দরবান | বান্দরবান জেলা | শূণ্য |
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের সবচেয়ে কম জনবসতিপূর্ণ জেলা। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ জেলার মোট জনসংখ্যা ৪,৮০,৬৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৪৬,৫৯০ জন এবং মহিলা ২,৩৪,০৩৫ জন। মোট পরিবার ৮০,১০২টি।[১২] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১০৭জন।[১]
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার৫২.৬৮ মুসলিম, ৩.৪২ হিন্দু, ২৯.৫২ বৌদ্ধ এবং ৯.৭৮ খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। মুসলিম ও হিন্দুরা বাংলাভাষী। এছাড়াও এ জেলায় মারমা, চাকমা, চাক, বম, মুরং, ত্রিপুরা, খেয়াং, খুমি, লুসাই প্রভৃতি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[১]
শিক্ষা ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ জেলার সাক্ষরতার হার ৩৫.৯%।[১২] এ জেলায় রয়েছে:
- কলেজ : ৬টি
- মাদ্রাসা : ৮টি
- টেক্সটাইল ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট : ১টি
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ২৭টি
- কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ২টি
- প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৩৬৯টি
- বিশ্ববিদ্যালয় : ১টি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]ভূ-প্রকৃতি
[সম্পাদনা]বান্দরবান অঞ্চলের পাহাড়গুলো মূলত টারসিয়ারী যুগের। পারতপক্ষে ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটনিক পাত-এর সংঘর্ষের ফলে বান্দরবানের নৈসর্গিক পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। কর্কট ক্রান্তি ও বিষুবরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এখানকার জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ।
নদ-নদী
[সম্পাদনা]এই জেলার অন্যতম নদী সাঙ্গু নদী, যা সাংপো বা শঙ্খ নামেও পরিচিত। এই নদীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এটি বাংলাদেশের একমাত্র নদী যা দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হয়। অন্যান্য নদীর মধ্যে রয়েছে মাতামুহুরী নদী এবং বাঁকখালী নদী।[১৫]
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলায় যোগাযোগের প্রধান দুইটি সড়ক চট্টগ্রাম-বান্দরবান মহাসড়ক এবং চন্দ্রঘোনা-বান্দরবান সড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।[১৬] এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ সংযোগ সড়কগুলো হল চিম্বুক-রুমা, বান্দরবান-রোয়াংছড়ি-রুমা, আজিজনগর-গজালিয়া-লামা, খানহাট-ধোপাছড়ি-বান্দরবান, বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি-আলীকদম-বাইশারী-ঘুমধুম এবং চিম্বুক-টংকাবতী-বার আউলিয়া। প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম সিএনজি চালিত অটোরিক্সা।[১৬]
ভাষা ও সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]সরকারি ও কথ্য ভাষা হিসেবে বাংলা প্রচলিত। স্থানীয় চাটগাঁইয়ারা চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে। এছাড়াও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, বম, লুসাই, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, খিয়াং, খুমি, পাংখুয়া ইত্যাদি প্রচলিত।
বান্দরবানের মারমাদের বর্ষবরণ উৎসবের নাম সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উৎসবের নাম বৈসু। এছাড়া বড় উৎসবের মধ্যে রয়েছে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা,ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, দূর্গা পূজা ইত্যাদি ধর্মীয় উৎসব।
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]বান্দরবান পার্বত্য জেলা দুর্গম পাহাড়ী এলাকা হলেও এটি প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বিধায় জাতীয় পর্যায়ে এ জেলার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। বিস্তীর্ণ পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত অশ্রেণীভুক্ত বনাঞ্চল মূল্যবান কাঠ ও বনজ সম্পদে পরিপূর্ণ। একই সঙ্গে এ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী উৎপাদিত বনজ সম্পদ আহরণ ও বিপননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ জেলার উৎপাদিত প্রধান বনজ দ্রব্যের মধ্যে সেগুন, গামারী, গর্জন, শিল কড়ই, তৈলসুর ইত্যাদি মূল্যবান কাঠ ও বাঁশ প্রধান।
কৃষিজ দ্রব্যের মধ্যে আনারস, কলা, পেঁপে, কমলা, লেবু ও আলু সর্বোচ্চ উৎপাদিত ফসল। তবে এই অঞ্চলের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য প্রচুর বিন্নি চাল উৎপাদন। সাদা, লাল ও কালো এই তিন রকমের বিন্নি চালের উৎপাদন এই অঞ্চলে দেখা যায়। তাছাড়া, এই অঞ্চলের জুমের ভুট্টার স্বাদ বেশ সুস্বাদু।
মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যের সমাহার ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সমৃদ্ধ বান্দরবান পার্বত্য জেলা ঠিক যেন ছবির মত। দেশের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গসহ সর্বত্র সবুজ-শ্যামলিমা গিরিশ্রেণীর এক অপরূপ দৃশ্য এ জেলায়। ভারত ও মায়ানমার এ দুটি দেশের আন্তর্জাতিক সীমানায় অবস্থিত দেশের সর্বাধিক সংখ্যক উপজাতির বসবাস সংবলিত এ জেলা স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত। এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরে ধীরে পর্যটন-কেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। এর ফলে পর্যটকদের সমাগম বেড়ে উঠছে এবং সাথে সাথে প্রাকৃতিক দূষণের হারও বাড়ছে।
পত্র পত্রিকা
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের একটি তালিকা নিচে দেয়া হল:[১৭]
পত্রিকা/ম্যাগাজিনের নাম | সম্পাদক |
---|---|
দৈনিক সচিত্র মৈত্রী | মোহাম্মদ ওসমান গনি |
পাক্ষিক সাংগু | আইরিন বম |
দৈনিক নতুন বাংলাদেশ | আফাজ উল্লাহ খান |
মাসিক চিম্বুক | মোহাম্মদ বাদশা মিয়া |
মাসিক নীলাচল | মোহাম্মদ ইসলাম |
মাসিক বান্দরবান | মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক |
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]বান্দরবান জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- আমিয়াখুম জলপ্রপাত
- কিয়াচলং লেক
- ঋজুক জলপ্রপাত
- কেওক্রাডং
- চিম্বুক পাহাড় ও পাহাড়ি গ্রাম
- চিংড়ি ঝর্ণা
- জাদিপাই ঝর্ণা
- জীবননগর
- ডামতুয়া ঝর্ণা
- ডিম পাহাড়
- তমা তুঙ্গী
- তাজিংডং
- তিনাপ সাইতার
- ত্লাবং ঝর্ণা
- দেবতাখুম
- নাফাখুম জলপ্রপাত
- নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র
- নীলাচল
- বগাকাইন হ্রদ
- বান্দরবান সরকারি কলেজ
- বান্দরবান সেনানিবাস
- বুদ্ধ ধাতু জাদি
- রাজবিহার এবং উজানিপাড়া বিহার
- রেমাক্রী
- লুং ফের ভা সাইতার
- শৈলপ্রপাত
- সাকা হাফং
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]- অং শৈ প্রু চৌধুরী,১৫তম বোমাং রাজা, প্রাক্তন সাংসদ।
- ইউ কে চিং, বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
- জাফর ইকবাল (ফুটবলার)
- বীর বাহাদুর উশৈ সিং, রাজনীতিবিদ।
- ক্য শৈ হ্লা, রাজনীতিবিদ।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
বুদ্ধ ধাতু জাদি মন্দিরের মূল অংশ
-
কোনাগমণ বুদ্ধ, বুদ্ধ ধাতু জাদি
-
সেতুর উপর থেকে সাঙ্গু নদী
-
শীতের মেঘে ঢাকা নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র
-
নীলাচল
-
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "বান্দরবান জেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org।
- ↑ "At a glance of bohmong's family & the glory of Kambawazathardi golden palace, by Nu Shwe Prue"
- ↑ ক খ গ "এক নজরে বান্দরবান - বান্দরবান জেলা - বান্দরবান জেলা"। www.bandarban.gov.bd। ২১ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ Chittagong Hill Tracts, বাংলাপিডিয়া হতে।
- ↑ "উপজেলা ও ইউনিয়ন - বান্দরবান জেলা - বান্দরবান জেলা"। www.bandarban.gov.bd। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ https://en.parbattanews.com/population-census-2022-a-cht-demographic-analysis/ [অনাবৃত ইউআরএল]
- ↑ https://bbs.gov.bd/site/page/2888a55d-d686-4736-bad0-54b70462afda/-
- ↑ "নদ নদী - বান্দরবান জেলা - বান্দরবান জেলা"। www.bandarban.gov.bd। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ ক খ "যোগাযোগ ব্যবস্থা - বান্দরবান জেলা - বান্দরবান জেলা"। www.bandarban.gov.bd। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ বান্দরবান জেলা তথ্য বাতায়ন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ অক্টোবর ২০১২ তারিখে, বান্দরবান জেলা তথ্য বাতায়ন