বিষয়বস্তুতে চলুন

সাঙ্গু নদী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাঙ্গু নদী
সাঙ্গু নদী
মানচিত্র
অবস্থান
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম
জেলাসমূহবান্দরবান, চট্টগ্রাম
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎসআরাকান পর্বতমালা
  অবস্থানলাগপাই, থানচি, বান্দরবান
  উচ্চতা১৮৩
দৈর্ঘ্য২৯৪ কিলোমিটার

সাঙ্গু নদী বা শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের চট্টগ্রামবান্দরবান জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১১৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক সাঙ্গু নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৫।[] ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গেজেটিয়ার প্রকাশকালে ব্রিটিশ শাসকরা ইংরেজিতে এটিকে সাঙ্গু নাম দেন তবে মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় শঙ্খকে রিগ্রাই খিয়াং অর্থাৎ স্বচ্ছ পানির নদ বলা হয়। বান্দরবানের শঙ্খ-তীরবর্তী লােকজনের ৯০ শতাংশই মারমা। জীবন-জীবিকাসহ দৈনন্দিন কাজে এরা নদীটির ওপর নির্ভরশীল।

প্রবাহ

[সম্পাদনা]

নদীটি দেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী।[] বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম।[] মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনােয়ারা ও বাঁশখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।[] উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার।[]

সাঙ্গু নদী বান্দরবান জেলার প্রধানতম নদী। বান্দরবান জেলা শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত। এ জেলার জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম।

বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের প্রধান কয়েকটি পাহাড়ি নদীর মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। বান্দরবান জেলা এবং চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল এ নদীবিধৌত। বাংলাদেশের বেশির ভাগ নদী উত্তর হতে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। কিন্তু সাঙ্গু নদী বান্দরবানের দক্ষিণাঞ্চলে সৃষ্টি হয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমে বাঁক নিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

সাঙ্গু নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী, যা বান্দরবান জেলা দিয়ে প্রবাহিত। এই নদীটি মায়ানমারের আরাকান পাহাড় থেকে উৎপত্তি লাভ করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়াপটিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে।

সাঙ্গু নদীর ইতিহাস ও ভূমিকা মূলত পার্বত্য অঞ্চলের জীবনযাত্রা, কৃষিকাজ এবং নৌপরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। নদীটির পানি কৃষির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঐতিহাসিকভাবে, এটি স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসতি গঠনে ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়ক ছিল।

এছাড়া সাঙ্গু নদী তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও বিখ্যাত, যা পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। বান্দরবান জেলার রেমাক্রি, থানচি ও অন্যান্য এলাকায় এই নদীর পাশ ঘেঁষে অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়।

গুরুত্ব

[সম্পাদনা]

পার্বত্য অঞ্চলে নদীর মাধ্যমে চলাচলের ক্ষেত্রে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বালি উত্তলনের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব রয়েছে।

পরিবেশ বিপর্যয়গত প্রভাব

[সম্পাদনা]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃ. ২৯১-২৯২। আইএসবিএন ৯৮৪-৭০১২০-০৪৩৬-৪ {{বই উদ্ধৃতি}}: |আইএসবিন= মান: অবৈধ উপসর্গ পরীক্ষা করুন (সাহায্য); |সংগ্রহের-তারিখ= এর জন্য |ইউআরএল= প্রয়োজন (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |আইএসবিএন-ত্রুটি-উপেক্ষা-করুন= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  2. BD Ad Info ওয়েবসাইট[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১১ মার্চ ২০১১ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "UK BD News এর প্রতিবেদণ"। ৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১১
  5. দৈনিক কালের কণ্ঠ

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]