সন্দ্বীপ উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

স্থানাঙ্ক: ২২°২৯′১৪″ উত্তর ৯১°২৬′৪৭″ পূর্ব / ২২.৪৮৭২২° উত্তর ৯১.৪৪৬৩৯° পূর্ব / 22.48722; 91.44639
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
103.127.93.179-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে ArponMehedi-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল পুনর্বহালকৃত
Hirok Raja-এর করা 4995154 নং সংস্করণে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। (টুইং)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
১৩৩ নং লাইন: ১৩৩ নং লাইন:
* [[মুজফ্‌ফর আহ্‌মেদ (রাজনীতিবিদ)|মুজফ্‌ফর আহ্‌মেদ]] –– রাজনীতিবিদ।
* [[মুজফ্‌ফর আহ্‌মেদ (রাজনীতিবিদ)|মুজফ্‌ফর আহ্‌মেদ]] –– রাজনীতিবিদ।
* [[মুস্তাফিজুর রাহমান (রাজনীতিবিদ)|মুস্তাফিজুর রহমান]] –– রাজনীতিবিদ।
* [[মুস্তাফিজুর রাহমান (রাজনীতিবিদ)|মুস্তাফিজুর রহমান]] –– রাজনীতিবিদ।
*মাস্টার শাহজাহান বি.এ -- বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ
* [[মোহাম্মেদ দিদারুল আলম]] –– [[বীর প্রতীক]] খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
* [[মোহাম্মেদ দিদারুল আলম]] –– [[বীর প্রতীক]] খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
* [[মোহিত কামাল]] –– বাংলাদেশী মনোচিকিৎসক ও লেখক।
* [[মোহিত কামাল]] –– বাংলাদেশী মনোচিকিৎসক ও লেখক।

১৮:২৬, ১০ জুলাই ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সন্দ্বীপ
উপজেলা
সন্দ্বীপ ফেরী ঘাট
সন্দ্বীপ ফেরী ঘাট
স্থানাঙ্ক: ২২°২৯′১৪″ উত্তর ৯১°২৬′৪৭″ পূর্ব / ২২.৪৮৭২২° উত্তর ৯১.৪৪৬৩৯° পূর্ব / 22.48722; 91.44639 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাচট্টগ্রাম জেলা
সংসদীয় আসনচট্টগ্রাম-৩
সরকার
 • সংসদ সদস্যমাহফুজুর রহমান মিতা
 • উপজেলা চেয়ারম্যানমাস্টার মোহাম্মদ শাহাজাহান
আয়তন
 • মোট৪৮৮.৫২ বর্গকিমি (১৮৮.৬২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২,৭৮,৬০৫
 • জনঘনত্ব৫৭০/বর্গকিমি (১,৫০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৫১.৫০%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৪৩০০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ১৫ ৭৮
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

সন্দ্বীপ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত উপজেলা। এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত প্রাচীন একটি দ্বীপ।

ইতিহাস

জেমস রেনেলের তৈরি করা ১৭৭৮ সালের মানচিত্রে সন্দ্বীপ।

ইউরোপীয়দের লেখা ইতিহাসে জানা যায় যে সন্দ্বীপে প্রায় তিন হাজার বছরের অধিককাল ধরে লোক বসতি বিদ্যমান। এমনকি এককালে এর সাথে সংযুক্ত থাকা নোয়াখালীতে মানুষের বসতি স্থাপনের পূর্বেই সন্দ্বীপে জনবসতি গড়ে উঠেছিল।[২][৩]। সন্দ্বীপের লবণশিল্প, জাহাজ নির্মাণ কারখানা ও বস্ত্রশিল্প পৃথিবীখ্যাত ছিল। উপমহাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্রমণকারীরা এই অঞ্চলে এসে তাদের জাহাজ নোঙ্গর করতেন এবং সহজ বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং পরিবহন সুবিধাদি থাকায় এই অঞ্চলে ব্যবসা এবং বসতি স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করতেন। ১৭৭৬ সালের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রতি বছর সন্দ্বীপে উৎপাদিত প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মণ লবণ, তিনশ জাহাজে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হত।[৪][৫]

সন্দ্বীপের উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান তৈরির দৃশ্য

সন্দ্বীপ এককালে কম খরচে মজবুত ও সুন্দর জাহাজ নির্মানের জন্য পৃথিবীখ্যাত ছিল। ইউরোপের বিভিন্ন এলাকায় এই জাহাজ রপ্তানি করা হতো। তুরস্কের সুলতান এই এলাকার জাহাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এখান থেকে বেশ কিছু জাহাজ কিনে নেন।[৬][৭] ভারতবর্ষের মধ্যে সন্দ্বীপ ছিল একটি সমৃদ্ধশালী বন্দর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] লবণ ও জাহাজ ব্যবসা, শস্য সম্পদ ইত্যাদির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে পর্তুগিজরা সন্দ্বীপে উপনিবেশ স্থাপন করেন।[৮] এছাড়া ভ্রমণ ও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ফরাসি ও ওলোন্দাজ পরিব্রাজকরা প্রায়ই সন্দ্বীপে আগমন করতেন।[৯] ১৬১৫ সালে পর্তুগিজদের সাথে আরকান রাজ্যের যুদ্ধে ২০০ জন সৈন্য-সহ পর্তুগিজ সেনাপতি ইমানুয়েল মার্তুস নিহত হযন এবং পর্তুগিজরা সন্দ্বীপ ত্যাগ করলে ১৬১৬ সালে মগরাজ সন্দ্বীপ দখল করে।[১০] এরপর সন্দ্বীপে আরকান ও মগদের প্রাধান্য থাকলেও তাদের পরাধীনতাকে অস্বীকার করে এ অঞ্চলে প্রায় অর্ধ শতাব্দী শাসন করেন দেলোয়ার খাঁ। ১৬৬৬ সালে তার রাজত্বের পতন ঘটে এবং মোগল সরকারের অধীনে জমিদারি প্রথার সূচনা ঘটে, যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ রাজত্বের অবসানের সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়।[১১][১২] সন্দ্বীপের রূপে মুগ্ধ হয়ে যুগে যুগে অনেক কবি, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক, পর্যটক এসেছেন এখানে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৩৪৫ খ্রিষ্টাব্দে ঐতিহাসিক পর্যটক ইবনে বতুতা সন্দ্বীপে আসেন।[৩] ১৫৬৫ সালে ডেনিশ পর্যটক সিজার ফ্রেডরিক সন্দ্বীপে আসেন এবং এর বহু প্রাচীন নিদর্শনের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন।[১৩] ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে জানুয়ারি কাজী নজরুল ইসলাম রাজনীতিবিদ মোজাফ্‌ফর আহমেদের সাথে সন্দ্বীপে আসেন।[১৪][১৫] সন্দ্বীপ ভ্রমণের সময়কার স্মৃতির পটভূমিকাতেই কাজী নজরুল ইসলাম তার মধুবালা গীতিনাট্য রচনা করেন। সন্দ্বীপে বৃক্ষের ছায়াতলে বসে নজরুল তার চক্রবাক কাব্যগ্রন্থের অনেকগুলো কবিতা রচনা করেন।[৩]

এ উপজেলায় ১৭৬৭ সালে আবু তোরাবের নেতৃত্বে বাংলার প্রথম কৃষক-বিদ্রোহ এবং ১৯৩০ সালে কংগ্রেস সভাপতি কালী কেশব ঘোষের নেতৃত্বে আইন অমান্য-আন্দোলন সংঘটিত হয়। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখান থেকে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন। ১৯৭১ সালে এ উপজেলা ১নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১০ মে পাকবাহিনী সন্দ্বীপ শহরে আইনজীবী জাহেদুর রহমানসহ অনেক নিরীহ লোককে গুলি করে হত্যা করে এবং অনেক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় ও লুটপাট করে। ৭ ডিসেম্বর সন্দ্বীপ শত্রুমুক্ত হয়।

নামকরণ

সন্দ্বীপের নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন মতামত শোনা যায়। কারও কারও মতে বারো আউলিয়ারা চট্টগ্রাম যাত্রার সময় এই দ্বীপটি জনমানুষহীন অবস্থায় আবিষ্কার করেন এবং নামকরণ করেন 'শুণ্যদ্বীপ', যা পরবর্তীতে 'সন্দ্বীপে' রুপ নেয়।[১৬] ইতিহাসবেত্তা বেভারিজের মতে চন্দ্র দেবতা 'সোম' এর নামানুসারে এই এলাকার নাম 'সোম দ্বীপ' হয়েছিল যা পরবর্তীতে 'সন্দ্বীপে' রুপ নেয়।[১৭]

কেউ কেউ দ্বীপের উর্বরতা ও প্রাচুর্যের কারণে দ্বীপটিকে 'স্বর্ণদ্বীপ' আখ্যা প্রদান করেন। উক্ত 'স্বর্ণদ্বীপ' হতে 'সন্দ্বীপ' নামের উৎপত্তি হয়েছে বলেও ধারণা করা হয়।[১৬] দ্বীপের নামকরণের আরেকটি মত হচ্ছে পাশ্চাত্য ইউরোপীয় জাতিগণ বাংলাদেশে আগমনের সময় দূর থেকে দেখে এই দ্বীপকে বালির স্তুপ বা তাদের ভাষায় 'স্যান্ড-হিপ' (Sand-Heap) নামে অভিহিত করেন এবং তা থেকে বর্তমান 'সন্দ্বীপ' নামের উৎপত্তি হয়।[১৮]

অবস্থান ও সীমানা

সন্দ্বীপ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি দ্বীপ। এটি বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বকোণে ২২°১৬´ থেকে ২২°৪৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯১°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে[১৯] মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত। চট্টগ্রাম উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে সন্দ্বীপ চ্যানেল অবস্থিত। চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে নদীপথে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এ উপজেলার অবস্থান। সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলের দূরত্ব প্রায় দশ মাইল। নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড সন্দ্বীপ থেকে প্রায় ১২ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। সন্দ্বীপের প্রায় বিশ মাইল পশ্চিমে হাতিয়া দ্বীপের অবস্থান। সন্দ্বীপের সীমানা হচ্ছে পূর্বে সন্দ্বীপ চ্যানেল ও চ্যানেলের পূর্ব পাড়ে সীতাকুণ্ড উপজেলামীরসরাই উপজেলা; উত্তরে বামনী নদী; পশ্চিমে মেঘনা নদী, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, সুবর্ণচর উপজেলাহাতিয়া উপজেলা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর।[২০]

আয়তন

পঞ্চদশ শতাব্দীতে সন্দ্বীপের আয়তন প্রায় ৬৩০ বর্গমাইলের হলেও ক্রমাগত নদী ভাঙনের কারণে বর্তমানে এটি মাত্র ৮০ বর্গমাইলের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপে পরিণত হয়েছে। সন্দ্বীপের দৈর্ঘ্য ২৫ মাইল (৪০ কিলোমিটার) ও প্রস্থ ৩-৯ মাইল (৫-১৫ কিলোমিটার)[২১]। এই অঞ্চলে মোট আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ ৫৬,৫৩০ একর এবং অনাবাদী জমি ২২,৯১১ একর। মোট বনাঞ্চল ১১,২০০ একর।

প্রশাসনিক এলাকা

ছোট জাহাজ ও স্টিমারই সন্দ্বীপ ও অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম

১৮৮০ সালের পূর্ব পর্যন্ত সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে একে নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৫৪ সালে আবারও চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[২০] ১৯৮৪ সালে সন্দ্বীপ থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। সন্দ্বীপে একটি পৌরসভা রয়েছে, যা ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। এ উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ সন্দ্বীপ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম সন্দ্বীপ থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:
বিলুপ্ত এলাকাসমূহ

১৯৫০ হতে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত সন্দ্বীপের ভাঙ্গন অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। তখনও পর্যন্ত নয়ামস্তি, ইজ্জতপুর, বাটাজোড়া, কাটগড়, হুদ্রাখালী ও দীর্ঘাপাড় (বিলুপ্তপ্রায়) ইউনিয়ন পুরাপুরি বিদ্যমান ছিল। ১৯ ইউনিয়নের এই থানা বর্তমানে উড়িরচর বাদে ১৩ ইউনিয়নে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে হরিশপুর, রহমতপুর ও আজিমপুর ইউনিয়ন আকারে একটি গ্রামের চেয়েও ছোট। লোকমুখে শোনা যায়, সন্দ্বীপে ১২টি পুর এর অস্থিত্ব ছিল। বর্তমানে ৫টি পুর বিদ্যমান: হরিশপুর, রহমতপুর, আজিমপুর, সন্তোষপুর, মুছাপুর। যেসব পুর সাগর গর্ভে হারিয়ে গেছে সেগুলো হল: সুধারামপুর, মোহাম্মদপুর, সুলতানপুর, মোক্তারপুর, সৌরভপুর, ইজ্জতপুর ও শফিপুর।

সুধারামপুর ও মোহাম্মদপুর যথাক্রমে ইজ্জতপুর ও রুহিনী গ্রামের পশ্চিমে ছিল। সুলতানপুর গ্রাম নয়ামস্তির দক্ষিণে ও সারিকাইতের পশ্চিমে ছিল। মোক্তারপুর গ্রাম রুহিনী গ্রামের উত্তর পশ্চিমে ছিল। প্রিন্সিপাল জিয়াউল হক এর বাড়ি মোহাম্মদপুর গ্রামে ছিল, শফিপুর গ্রাম বাটাজোড়া ও কাঠগড়ের মাঝামাঝি ছিল। গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সন্দ্বীপের আয়তন ২০০ বর্গমাইলের অধিক ছিল।

জনসংখ্যার উপাত্ত

বিভিন্ন বেসরকারি অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বর্তমানে এই দ্বীপের মোট জনসংখ্যা প্রায় চার লাখ।[২০][২২] ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এই দ্বীপের জনসংখ্যা ২,৭৮,৬০৫ জন। পুরুষ ১,২৮,৬৫৬ জন ও মহিলা ১,৪৯,৯৪৯ জন।[২৩] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৫৭০ জন। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার -০.৪৯%। সন্দ্বীপ পৌরসভার আয়তন প্রায় ৩০.০৩ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৪২,৮৪২ জন।[২৪]

শিক্ষা

সন্দ্বীপ উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫১.৫০%। এ উপজেলায় ৪টি কলেজ (সহপাঠ), ১টি মহিলা কলেজ, ৩টি ফাজিল মাদ্রাসা, ৯টি দাখিল মাদ্রাসা, ২৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, ১৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩১টি আনন্দ স্কুল ও ১৯টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।[২৩]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

যোগাযোগ ব্যবস্থা

বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চল থেকে সন্দ্বীপ উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। মোট নৌপথ ২২ নটিক্যাল মাইল। দ্বীপ থেকে মূল ভুখণ্ডে যাতায়াতের জন্য রয়েছে বি.আই.ডব্লিউ.টি সি. এর ২টি স্টীমার ঘাট (যার একটি প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে) এবং ৫টি জেলা পরিষদ ফেরীঘাট।[২০] এছাড়াও এ উপজেলার অভ্যন্তরে সড়ক যোগাযোগের জন্য ৭৩ কিলোমিটার পাকারাস্তা, ১৯ কিলোমিটার আধা-পাকারাস্তা ও ৮৬২ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা রয়েছে।[১৯]

অর্থনীতি

বর্তমান অর্থনীতি প্রধানত কৃষি, মৎস্য চাষ ও আহরণ এবং ফসল ধান থেকে আসে। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন স্থান হতে পাঠানো প্রবাসী রেমিটেন্স।[১৯] আগেকার দিনে শিল্পের মধ্যে ছিল লবণ উৎপাদন, ধানকল, বরফকল, বিড়ি কারখানা, ছাপাখানা, হোসিয়ারী শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, কাঁসা ও পিতলশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ ইত্যাদি।[১৯] প্রধান রপ্তানিদ্রব্য হলোঃ ধান, মাছ, পান, সুপারি, শাকসবজি।[১৯]

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী

  • সন্দ্বীপ জার্নাল
  • দেশবিদেশ২৪.কম
  • সাপ্তাহিক আলোকিত সন্দ্বীপ
  • দ্বীপের কথা

[১৯]

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সন্দ্বীপে নিহত কিছু মানুষ

সমুদ্রবেষ্টিত দ্বীপ এলাকা হওয়ায় সন্দ্বীপ প্রায়শই ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস, ঢল ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সন্দ্বীপে প্রায় প্রতি বছরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শত শত বছর ধরে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সন্দ্বীপে আঘাত হেনেছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে এসকল ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ থেকে দেখা যায়- ১৪৮৪, ১৫৮৪, ১৭৭৬, ১৭৯৮, ১৮২২, ১৮২৫, ১৮৩২, ১৮৩৫, ১৮৫৫, ১৮৬৪, ১৮৬৭, ১৮৬৯, ১৮৭০, ১৮৭৬, ১৮৯৩, ১৮৯৫, ১৯০৪, ১৯০৫, ১৯১০, ১৯১৯, ১৯৪০, ১৯৪১, ১৯৫৬, ১৯৫৯, ১৯৬০, ১৯৬৩, ১৯৬৫, ১৯৬৬, ১৯৭০, ১৯৮৫ এবং ১৯৯১ সালে সন্দ্বীপে বড় মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।

অসংখ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝে ১৮২৫, ১৮৭৬, ১৯৮৫ এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সন্দ্বীপের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধিত হয়। স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়টি ২৯শে এপ্রিল সন্দ্বীপসহ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। সন্দ্বীপের ওপর দিয়ে এ ঝড়টি ঘণ্টায় প্রায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আক্রমণ করে। এই ঘূর্ণিঝড়ে সন্দ্বীপের উপকূলীয় অঞ্চলের কমপক্ষে ৬০ হাজার এবং ঝড়ের পড়ে অনাহারে ও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া রোগে আরো প্রায় ২০-৩০ হাজার লোক প্রাণ হারায়।[২৫]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

সংসদীয় আসন

সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[২৬] সংসদ সদস্য[২৭][২৮][২৯][৩০][৩১] রাজনৈতিক দল
২৮০ চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ উপজেলা মাহফুজুর রহমান মিতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সংসদ সদস্যগণের তালিকা
ক্রম নং নির্বাচন সন নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাজনৈতিক দল
১ম ১৯৭৩ এম ওবায়দুল হক বাংলাদেশ জাতীয় পরিষদের প্রথম নির্বাচিত সংসদ সদস্য
২য় ১৯৭৯ একেএম রফিকউল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
৩য় ১৯৮৬ একেএম শামসুল হুদা জাতীয় পার্টি
৪র্থ ১৯৮৮ একেএম শামসুল হুদা জাতীয় পার্টি
৫ম ১৯৯১ মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
৬ষ্ঠ ১৯৯৬ (ফেব্রুয়ারি) মোস্তফা কামাল পাশা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
৭ম ১৯৯৬ (জুন) মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
৮ম ২০০১ মোস্তফা কামাল পাশা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
৯ম ২০০৮ মোস্তফা কামাল পাশা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
১০ম ২০১৪ মাহফুজুর রহমান মিতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
১১শ ২০১৮ মাহফুজুর রহমান মিতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন

ক্রম নং. পদবী নাম
০১ উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ শাহাজাহান বিএ
০২ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাইন উদ্দীন
০৩ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বেগম জেবুন্নেছা চৌধুরী জেসি
০৪ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বৌধি চাকমা
উপজেলা চেয়ারম্যানগণের তালিকা
ক্রম নং. উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম মেয়াদকাল
০১ রফিক উল্লাহ চৌধুরী ১৯৮৫-১৯৯০
০২ মোস্তফা কামাল পাশা ১৯৯০-১৯৯৫
০৩ মাস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান ২০০৯-বর্তমান

[৩২]

গ্যালারি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৯ 
  2. Noakhali District Gazetteers, 1911 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ মে ২০১৪ তারিখে p. 14
  3. "Dainikdestiny.com"www.dainikdestiny.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  4. Purchas p. 313
  5. Noakhali District Gazetteers, 1911 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ মে ২০১৪ তারিখে p. 38
  6. A Statistical Account of Bengal, Hunter p. 318
  7. "Sandwip Island"www.ebbd.info। ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  8. Protapaditya p. 450
  9. History of Bengal, Stewart
  10. History of Sandwip p. 37
  11. A Statistical Account of Bengal, Hunter p. 248
  12. Letter of Cook, April 20, 1882
  13. History of Backergunge, Beveridge p. 35
  14. http://timenewsbd.com/literature/2013/05/25/2265[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  15. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৯ 
  16. History of Sandwip, Sri Rajkumar Chakrabarty & Sri Anangamohan Das, 1924 p. 9
  17. History of Backergunge, Beveridge. P-35
  18. History of Sandwip, Sri Rajkumar Chakrabarty & Sri Anangamohan Das, 1924 p. 8
  19. "সন্দ্বীপ উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  20. "Sandwip Island"। Ebbd.info। ২০১৩-০৬-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-০৭ 
  21. "Sandwip Island - island, Bangladesh"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  22. "কালের কন্ঠ"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  23. "এক নজরে সন্দ্বীপ - সন্দ্বীপ উপজেলা - সন্দ্বীপ উপজেলা"sandwip.chittagong.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  24. "Sandwippourashava.com"www.sandwippourashava.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  25. "The Yellow page of Sandwip - প্রাকৃতিক দূর্যোগ"। ২৬ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৭ 
  26. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd 
  27. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  28. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  29. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  30. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  31. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  32. http://sandwip.chittagong.gov.bd/site/page/c7e3ad16-2144-11e7-8f57-286ed488c766/%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%A6-%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A6%A3

বহিঃসংযোগ