রামগতি উপজেলা
এই নিবন্ধটির একটা বড়সড় অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশই একটিমাত্র সূত্রের উপর নির্ভরশীল। |
| রামগতি | |
|---|---|
| উপজেলা | |
মানচিত্রে রামগতি উপজেলা | |
| স্থানাঙ্ক: ২২°৩৬′১৬″ উত্তর ৯১°০′৭″ পূর্ব / ২২.৬০৪৪৪° উত্তর ৯১.০০১৯৪° পূর্ব | |
| দেশ | বাংলাদেশ |
| বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
| জেলা | লক্ষ্মীপুর জেলা |
| সরকার | |
| • চেয়ারম্যান | শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল |
| আয়তন | |
| • মোট | ৩৭৫ বর্গকিমি (১৪৫ বর্গমাইল) |
| জনসংখ্যা (২০১১) | |
| • মোট | ২,২৯,১৫৩[১] |
| সাক্ষরতার হার | |
| • মোট | % |
| সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
| প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ৫১ ৭৩ |
| ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
রামগতি উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
আয়তন ও অবস্থান
[সম্পাদনা]রামগতি উপজেলার আয়তন প্রায় ৩৪৭ বর্গ কিলোমিটার। রামগতি উপজেলার উত্তরে কমলনগর উপজেলা, পূর্বে সুবর্ণচর উপজেলা ,দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা এবং পশ্চিমে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলা।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]রামগতি বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার একটি উপকূলীয় উপজেলা, যার ইতিহাস প্রাচীন ঐতিহ্য, নদীভাঙন ও সামুদ্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
প্রাচীন ইতিহাস ও নামকরণ
[সম্পাদনা]রামগতি নামটি এসেছে দুটি শব্দের সংমিশ্রণে: "রাম" (হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র) এবং "গতি" (অর্থ: চলাচল বা গমন)। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এক সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের রামভক্তদের বসবাস ছিল, এবং তাদের পদচারণার পথ হিসেবে নামকরণ হয় "রামগতি"।
এই অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত এক নদীবেষ্টিত জনপদ, যেখানে নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ ও মৎস্য শিকার প্রধান পেশা ছিল।
ব্রিটিশ শাসনামল
[সম্পাদনা]ব্রিটিশ আমলে রামগতি নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। সে সময় এখানে রাজস্ব অফিস, খাজনা আদায় কেন্দ্র এবং নৌ পুলিশ চৌকি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নদীবন্দর গড়ে ওঠে এবং রামগতি হয়ে ওঠে নদীপথে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নদীভাঙন
[সম্পাদনা]রামগতি মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় এটি প্রায়ই নদীভাঙন ও জলোচ্ছ্বাসের শিকার হয়েছে। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৮৮ সালের বন্যায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়, যা এখানকার মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন রামগতি
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে, রামগতি উপজেলার জনগণ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। এখানে গেরিলা আক্রমণ, তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রতিরোধ সংগঠিত হয়। অনেক মানুষ শহীদ হন এবং অনেক পরিবার শরণার্থী হয়ে পড়ে।
উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা
[সম্পাদনা]১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের অংশ হিসেবে রামগতি থানা থেকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এটি লক্ষ্মীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন উপজেলা।
বর্তমান রামগতি
[সম্পাদনা]বর্তমানে রামগতি একটি কৃষিনির্ভর উপজেলা হলেও প্রবাসী অর্থনীতি, মৎস্যচাষ ও নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা এখানকার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যায়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- স্থানীয় ইতিহাসবিদদের সাক্ষাৎকার
- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গণশিক্ষা উপকরণ
- বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বাতায়ন
- জনশ্রুতি ও প্রবীণ ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা
বিভাগ:রামগতি উপজেলা বিভাগ:লক্ষ্মীপুর জেলা বিভাগ:বাংলাদেশের উপজেলা ইতিহাস
প্রশাসনিক এলাকা
[সম্পাদনা]রামগতি উপজেলা ৩৯ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৭৯,০০৯ জন, এর মধ্যে পুরুষ ১,৩৭,৫৫১ জন এবং মহিলা ১,৪১,৪৪৫ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৭৫২ জন। মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২,৪৯,৯৫৮ জন মুসলিম, ১০,৯৮৬ জন হিন্দু, ৪জন বৌদ্ধ, ৫৩জন খ্রিস্টান এবং ০১ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
রামগতি উপজেলার শিক্ষার হার ৬২% এই উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১,৪২,৯২২ জন । এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১,২৫১ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্য ৭১,৬৭১ জন।
ভূমি বিষয়ক তথ্য : রামগতি উপজেলায় উপজেলা ভূমি অফিস ০১ টি,ইউনিয়ন ভূমি অফিস ০৮ টি, মৌজার সংখ্যা -৩০টি। খাস সম্পত্তির পরিমাণ ১০৩৩২.৬০ একর, অর্পিত সম্পত্তি ৫০১.৪৪ একর,খাস পুকুর ০৬ টি।
আশ্রয়ন প্রকল্প : ১৪ (চৌদ্দ) টি উপকারভোগী ২৮০০ (দুই হাজার আটশত) পরিবার।
আদর্শ গ্রাম : ০৪ (চার) টি উপকারভোগী ১৮০ (এক শত আশি) পরিবার।
আবাসন প্রকল্প : ০৩ (তিন) টি উপকারভোগী ১৬০ (এক শত ষাট) পরিবার।
ধর্মীয় উপাসনালয় : মসজিদ ৩৭৬ টি, মন্দির ১১ টি এবং গির্জা ০১টি।
পৌরসভা : ০১টি, রামগতি পৌরসভা।
ইউনিয়ন সমূহ : ০৮ (আট) টি।
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৭৯,০০৯ জন, এর মধ্যে পুরুষ ১,৩৭,৫৫১ জন এবং মহিলা ১,৪১,৪৪৫ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৭৫২ জন। মোট জনসংখ্যার মধ্যে ২,৪৯,৯৫৮ জন মুসলিম, ১০,৯৮৬ জন হিন্দু, ৪জন বৌদ্ধ, ৫৩জন খ্রিস্টান এবং ০১ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
স্বাস্থ্য
[সম্পাদনা]উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আলেকজান্ডার, রামগতি পৌরসভা
শিক্ষা
[সম্পাদনা]এই উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়া ৯৬টি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ০১টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯টি, নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ০২টি, সরকারি কলেজ ০১টি, বেসরকারি কলেজ ০৩টি, দাখিল মাদ্রাসা ০৬টি, আলীম মাদ্রাসা ০৪টি, ফাযিল মাদ্রাসা ০১টি, কামিল মাদ্রাসা ০২টি, স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা ০২টি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : আ স ম আব্দুর সরকারি কলেজ, আহম্মদিয়া ডিগ্রি কলেজ, এম এ হাদী ডিগ্রি কলেজ, আলেকজান্ডার মহিলা কলেজ,চর সেকান্দর সফিক একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়, আলেকজান্ডার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বালুর চর উচ্চ বিদ্যালয়, চর মেহার আজিজয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রামগতি বি.বি. কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রামগতি আছিয়া বালিকা বিদ্যালয়, আলেকজান্ডার কামিল মাদরাসা , রামগতি রাব্বানিয়া ফাজিল মাদরাসা, আব্দুল হামিদ খান হাফিজিয়া মাদ্রাসা, রামগতি মডেল স্কুল, উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
[সম্পাদনা]রামগতি উপজেলার মানুষ প্রধানত নোয়াখাইল্লা ভাষায় কথা বলে, যা স্থানীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ ভাষায় তাদের কথাবার্তা ও আঞ্চলিক রীতিনীতি তুলে ধরে।
এই অঞ্চলের পুরুষরা সাধারণত লুঙ্গি এবং শার্ট বা গেঞ্জি পরিধান করেন। মহিলারা শাড়ি, বোরকা ইত্যাদি পোশাক পরিধানে অভ্যস্ত। পোশাকের এই ঐতিহ্য গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি।
উপজেলার মানুষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবগুলোর মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতিকে জীবন্ত রাখে। ঈদ, পূজা, এবং অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে উদযাপিত হয়। এই উৎসবগুলোতে স্থানীয় খাবার, পোশাক, এবং সংগীতের বিশেষ ভূমিকা থাকে।
রামগতি উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত ও নৃত্যও বিদ্যমান, যা স্থানীয় সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করে। গ্রামীণ মেলা, নৌকা বাইচ, ও হাডুডু এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মেঘনা নদীর তীরবর্তী জীবনধারাও রামগতি উপজেলার ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ দিক। চরাঞ্চলের জীবনধারা স্থানীয় সংস্কৃতিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
কৃষি
[সম্পাদনা]ধান, মরিচ, সয়াবিন, নারিকেল, সুপারি, বাদাম ইত্যাদি
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]এই স্থানটি মৎস উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]- বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন - পাল্কি, গরুর গাড়ি।
- বর্তমানঃ সি এন জি, অটো এবং আধুনিক সড়ক পরিবহন রয়েছে
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]- আ স ম আবদুর রব - স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলক, ডাকসুর সাবেক ভিপি, রাজনীতিবিদ, নৌপরিবহন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য।
- আব্দুর রব চৌধুরী - সাবেক জেলা প্রসাশক, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব, রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।
- মোহাম্মদ তোয়াহা - ছিলেন ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ।
- মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ - রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য।
- সিরাজুল ইসলাম - ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী (হাতিয়া-রামগতি) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
- এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজাম - রাজনীতিবিদ, সাবেক সংসদ সদস্য ।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]রামগতি দ্বায়রা শরিফ, চর টাংকি, ভবানী সাহার মাঠ, মেঘনা বেড়ীবাঁধ, মেঘনা তীর, চর গজারিয়া, বয়ার চর, ঝাঁউবন, মেঘনা সুইচ গেইট।
আলেকজান্ডার বেড়ীবাঁধ, বুড়া কর্তার আশ্রম, আলেকজান্ডার দ্বায়রা শরিফ।
ভুলুয়া নদী, আজাদ নগর ব্রীজ।
*শেকের কিল্লা
আসসালাম জামে মসজিদ।
পীরের কামেল হযরত মাওলানা বশির আহমেদ (রহঃ) মাজার শরীফ ।
জনপ্রতিনিধি
[সম্পাদনা]| সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[২] | সংসদ সদস্য[৩][৪][৫][৬][৭] | রাজনৈতিক দল |
|---|---|---|---|
| ২৭৭ লক্ষ্মীপুর-৪ | কমলনগর উপজেলা এবং রামগতি উপজেলা | শূন্য |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- 1 2 বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে রামগতি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]| এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |