আর্য সমাজ

স্থানাঙ্ক: ২৬°২৭′০০″ উত্তর ৭৪°৩৮′২৪″ পূর্ব / ২৬.৪৪৯৯° উত্তর ৭৪.৬৩৯৯° পূর্ব / 26.4499; 74.6399
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আর্য সমাজ
ও৩ম্- আর্য সমাজের দাপ্তরিক পতাকা ও প্রতিক
নীতিবাক্য"कृण्वन्तो विश्वमार्यम्"
"কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম্"
সমগ্র বিশ্বকে মহৎ(আর্য) করে তোল।
গঠিত১০ এপ্রিল ১৮৭৫ (১৪৮ বছর আগে) (1875-04-10)
বোম্বাই, বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত)
প্রতিষ্ঠাতাস্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
ধরনধর্মীয় সংগঠন
আইনি অবস্থাপ্রতিষ্ঠান
উদ্দেশ্যবৈদিক শিক্ষাবিষয়ক, ধার্মিক অধ্যায়ন, আধ্যাত্মিকতা,
সদরদপ্তরআজমির, রাজস্থান, ভারত
স্থানাঙ্ক২৬°২৭′০০″ উত্তর ৭৪°৩৮′২৪″ পূর্ব / ২৬.৪৪৯৯° উত্তর ৭৪.৬৩৯৯° পূর্ব / 26.4499; 74.6399
এলাকাগত সেবা
বিশ্বব্যাপী
দাপ্তরিক ভাষা
হিন্দি
প্রধান অঙ্গ
श्रीमती परोपकारिणी सभा – শ্রীমতী পরোপকারিণী সভা[১]
ওয়েবসাইটhttp://www.paropkarinisabha.com

আর্য সমাজ (সংস্কৃত: आर्य समाज, ইংরেজি: ārya samāja "Noble Society") হচ্ছে বৈদিক মত পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কর্তৃক ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি হিন্দু সংগঠন ও সংস্কার আন্দোলন[২] দয়ানন্দ সরস্বতী ছিলেন একজন বেদ প্রচারক। আর্য সমাজ মূলত স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী প্রবর্তিত দশটি নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। আর্য সমাজের সদস্যগণ নীতিগুলো মেনে চলেন। একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী সংগঠনটি উপাসনা পদ্ধতি নির্গুণ[৩]

আর্য সমাজ সর্বপ্রথম হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ার প্রচলন করে।[৪][৫] সংস্থাটি ১৮০০ সাল থেকে ভারতে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের বৃদ্ধির দিকেও কাজ করেছে।[৬]

প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]

১৮৭৫ সালের ১০ই এপ্রিল দয়ানন্দ সরস্বতী বোম্বেতে আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠা করেন।[৭]

বৈদিক বিদ্যালয়[সম্পাদনা]

১৮৬৯ থেকে ১৮৭৩ এর মধ্যে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ভারতে নৈষ্ঠিক হিন্দু ধর্মের সংস্কারের জন্য তার প্রথম সংস্কার প্রচেষ্টা চালান। এই প্রচেষ্টা ছিল মূলত “বৈদিক বিদ্যালয়” বা “গুরুকুল” স্থাপনের লক্ষ্যে যা শিক্ষার্থীদের বৈদিক জ্ঞান, সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে গুরুত্ব আরোপ করে। এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রাচীন বৈদিক নীতির ভিত্তিতে ছেলে এবং মেয়েদের আলাদা করে শিক্ষা দেওয়া হতো। বৈদিক বিদ্যালয় ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ব্রিটিশ শিক্ষানীতি থেকে মুক্তি।[৮]

প্রথম বিদ্যালয়টি ১৮৬৯ সালে ফররুখাবাদে[৯] প্রতিষ্ঠিত হয় মাত্র ৫০ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে। প্রারম্ভিক সাফল্যের ফলে মির্জাপুর (১৮৭০), কাসগঞ্জ (১৮৭০), ছলেসার (আলিগড়) (১৮৭০) এবং বারাণসী(১৮৭৩)-তে দ্রুত বেশ কিছু বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বৈদিক বিদ্যালয় সমূহ মূলত স্বামী দয়ানন্দের সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কারের প্রায়োগিক প্রয়াসকেই তুলে ধরে। একদিকে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ঐতিহ্যগত মূর্তিপূজা করতে পারত না, বরং তাদের প্রতিদিন দুবার বৈদিক নিয়ম মেনে সন্ধ্যা বন্দনা ও অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করতে হত। অন্যদিকে তাদের সমস্ত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও বই বিনামূল্যে দেওয়া হতো। তারা ছিল শৃঙ্খলাবদ্ধ। অ-ব্রাহ্মণরাও সংস্কৃত পাঠ করতে পারতো। তাদেরকে প্রধানত বেদ শিক্ষা দেয়া হত। বৈদিক বিদ্যালয়সমূহ দ্রুতই বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়। সেগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী আর্য সমাজ[সম্পাদনা]

সুরিনামে আর্য সমাজ[সম্পাদনা]

আর্য দেবকর মন্দির সুরিনাম

গায়ানায় আর্য সমাজ[সম্পাদনা]

কেন্দ্রীয় বৈদিক মন্দির জর্জটাউন, গায়ানা

আর্যসমাজের মূলনীতি ও বিশ্বাস[সম্পাদনা]

ओ३म् (ও৩ম্), আর্য সমাজ কর্তৃক ব্যবহৃত ঈশ্বরের অন্যতম সর্বোচ্চ নাম।

আর্য সমাজ মূলত স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী প্রবর্তিত দশটি নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। নীতিগুলো হচ্ছে:

  1. সব সত্যবিদ্যা এবং যা পদার্থবিদ্যা দ্বারা জানা যায় সেসবের আদিমূল পরমেশ্বর।
  2. ঈশ্বর সচ্চিদানন্দস্বরূপ, নিরাকার, সর্বশক্তিমান, ন্যায়কারী, দয়ালু, অজন্মা, অনন্ত, নির্বিকার, অনাদি, অণুপম, সর্বাধার, সর্বেশ্বর সর্বব্যাপক, সর্বান্তর্যামী, অজর, অমর, অভয়, নিত্য, পবিত্র ও সৃষ্টিকর্তা, একমাত্র তারই উপাসনা করা উচিত।
  3. বেদ সব সত্যবিদ্যার পুস্তক, বেদের পঠন-পাঠন, শ্রবণ ও শ্রাবণ সকল আর্যের পরম ধর্ম।
  4. সত্য গ্রহণে ও অসত্য পরিত্যাগে সদা উদ্যত থাকবে।
  5. সব কাজ ধর্মানুসারে অর্থাৎ সত্য ও অসত্য বিচারপূর্বক করা উচিত।
  6. সংসারের উপকার করা এই সমাজের মুখ্য উদ্দেশ্য অর্থাৎ শারীরিক, আত্মিক ও সামাজিক উন্নতি করা।
  7. সকলের সঙ্গে প্রীতিপূর্বক ধর্মানুসারে যথাযোগ্য ব্যবহার করা উচিত।
  8. অবিদ্যার নাশ ও বিদ্যার বৃদ্ধি করা উচিত।
  9. প্রত্যেককে নিজের উন্নতিতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত নয়, কিন্তু সবার উন্নতিতে নিজের উন্নতি ভাবা উচিত।
  10. সব মানুষকে সামাজিক সর্বহিতকারী নিয়ম পালনে পরতন্ত্র এবং প্রত্যেক হিতকারী নিয়মে সবাইকে স্বতন্ত্র থাকা উচিত।[১০]

ধর্মচর্চা[সম্পাদনা]

আর্য সমাজ কর্তৃক অগ্নিহোত্র

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Shvikarpathra ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জুলাই ২০১৮ তারিখে Paropkarini Sabha website. Accessed 3 February 2017.
  2. Hastings, James; John A. Selbie (Ed.) (2003). Encyclopedia of Religion and Ethics, Part 3. Kessinger Publishing. p. 57. আইএসবিএন ০-৭৬৬১-৩৬৭১-X.
  3. Thursby, G. R. (১৯৭৫)। Hindu-Muslim relations in British India : a study of controversy, conflict, and communal movements in northern India 1923–1928। Leiden: Brill। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 9789004043800 
  4. Thursby, G. R. (১৯৭৭)। Hindu-Muslim relations in British India : a study of controversy, conflict, and communal movements in northern India 1923–1928। Brill। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 9789004043800 
  5. Gyanendra Pandey (২৫ মার্চ ২০১৩)। A History of Prejudice: Race, Caste, and Difference in India and the United States। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 64। আইএসবিএন 978-1-107-02900-2 
  6. Bidyut Chakrabarty, Rajendra Kumar Pandey (১১ এপ্রিল ২০০৯)। Modern Indian Political Thought: Text and Context। SAGE। পৃষ্ঠা 338। আইএসবিএন 9788132104292 
  7. E News Aryasamaj website 2 March 2010.
  8. Sharma R. N and Sharma R. K. Problems of Education in India Atlantic 2006 p. 356 আইএসবিএন ৮১৭১৫৬৬১২X
  9. Saxena G. S. Arya Samaj movement in India, 1875–1947 Commonwealth publishers 1990 p. 47
  10. Pt. Chamupati, M.A., Ten Commandments of Arya Samaj, New Delhi: D.A.V. Publications (2001)

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Pt. Chamupati, M.A., Ten Commandments of Arya Samaj, New Delhi: D.A.V. Publications (2001)
  • J.T.F. Jordens, Dayanada Saraswati, Delhi: Oxford University Press (1978).
  • Lajpat Rai, The Arya Samaj: An Account of its Aims, Doctrine and Activities, with a Biographical Sketch of the Founder, D.A.V. College Managing Committee, New Delhi (1915), আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৮৫০৪৭-৭৭-৫.
  • Lajpat Rai, A History of the Arya Samaj, (Rep.) New Delhi (1993), আইএসবিএন ৮১-২১৫-০৫৭৮-X
  • M. Ruthven, Fundamentalism: A Very Short Introduction, Oxford University Press, USA (2007), আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৯২১২৭০-৫.
  • J.M. Sharma, Swami Dayanand: A Biography, USB Publishers Distributors Ltd., India (1998), আইএসবিএন ৮১-৭৪৭৬-২১২-৪.
  • Rajender Sethi, "Rashtra Pitamah Swami Dayanand Saraswati" published by M R Sethi Educational Trust Chandigarh
  • The Origin, Scope and Mission of the Arya Samaj, by Ganga Prasad Upadhyaya. Published by Arya Samaj, 1954.
  • The Arya Samaj: , by Vaidyanath Shastri. Published by Sarvadeshik Arya Pratinidhi Sabha, 1967.
  • The Arya Samaj and Indian Nationalism, 1875–1920, by Dhanpati Pandey. Published by S. Chand, 1972.
  • A Critical Study of the Contribution of the Arya Samaj to Indian Education, by Saraswati Shantipriya Pandit. Published by Sarvadeshik Arya, Pratinidhi Sabha, 1975.
  • Arya Samaj and Indians Abroad, by Nardev Vedalankar, Manohar Somera. Published by Sarvadeshik Arya Pratinidhi Sabha, 1975.
  • The Arya Samaj: Hindu Without Hinduism, by D. Vable. Published by Vikas, 1983. আইএসবিএন ০-৭০৬৯-২১৩১-৩.
  • Social Movements and Social Change: A Study of Arya Samaj and Untouchables in Punjab, by Satish Kumar Sharma. Published by B.R. Publishing, 1985.
  • Arya Samaj and the Freedom Movement: 1875–1918, by Kripal Chandra Yadav, Krishan Singh Arya. Manohar Publications, 1988. আইএসবিএন ৮১-৮৫০৫৪-৪২-৮.
  • Arya Samaj Movement in India, 1875–1947, by Gulshan Swarup Saxena. Published by Commonwealth Publishers, 1990. আইএসবিএন ৮১-৭১৬৯-০৪৫-৯.
  • Rashtra Pitamah Swami Dayanand Saraswati by Rajender Sethi, published by M R Sethi Educational Trust Chandigarh
  • "Hinduism Today" by R. M. Chopra, 2009.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]