দ্বিজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দ্বিজ হিসেবে দীক্ষা উপলক্ষে উপনয়ন অনুষ্ঠান।

দ্বিজ (সংস্কৃত: द्विज) অর্থ "দুই জন্ম"- প্রথম জন্ম শারীরিক, অন্য জন্ম আধ্যাত্মিক।[১][২][৩] উত্তরণের আচারের মাধ্যমে মানুষ আধ্যাত্মিকভাবে জন্মগ্রহণ করে।[৪][৫] হিন্দু সমাজ ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়বৈশ্য এই তিন বর্ণের সদস্যদের উপনয়ন দীক্ষার সংস্করকে দ্বিতীয় বা আধ্যাত্মিক জন্ম বলে।।[৪][৫]

দ্বিজ শব্দটি বেদ, উপনিষদ এবং শ্রৌতসূত্র বা গৃহ্যসূত্রের মতো বেদাঙ্গ সাহিত্যে পাওয়া যায় না।[৬] ধর্মসূত্র সাহিত্যে এই শব্দটি খুব কমই দেখা যায়।[৬] এর ক্রমবর্ধমান উল্লেখ ধর্মশাস্ত্র পাঠ্যের মধ্য থেকে শেষের প্রথম সহস্রাব্দ খৃষ্টাব্দের পাঠ্যগুলিতে রয়েছে। দ্বিজ শব্দের উপস্থিতি চিহ্নিতকারী পাঠ্যটি সম্ভবত মধ্যযুগের ভারতীয় পাঠ্য।।[৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

দ্বিজ এর সমতুল্য যেমন দ্বিজাতি, বেদ, উপনিষদ বা বেদাঙ্গ সাহিত্যে যেমন ব্যাকারণশিক্ষানিরুক্ত, ছন্দ, শ্রৌত-সূত্র বা গৃহ্য-সূত্রে পাওয়া যায় না।[৭] ঋগ্বেদের ১.৬০-এ দ্বিজন্মন্ (द्विजन्मन्)-এর মতো শব্দের উপস্থিত হয়েছে, কিন্তু প্রসঙ্গটি মানুষের নয়।[৭]

শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর পূর্ববর্তী সমস্ত ধর্মতাত্ত্বিক ও আচার-সংক্রান্ত গ্রন্থে, এবং প্রাচীনতম ধর্মসূত্র গ্রন্থে অনুপস্থিত। এটি গৌতম ধর্মসূত্রে প্রথম আবির্ভাব ঘটায় কিন্তু প্রসঙ্গে পরে বোঝা যায় না।[৬]

দ্বিজ শব্দের প্রথম উল্লেখ মনুস্মৃতিতে ১৬৬ বার। যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি শব্দটি ৪০ বার উল্লেখ করে। হিন্দু মহাকাব্য, রামায়ণমহাভারত যথাক্রমে দ্বিজ শব্দটি ২১৪ ও ১৫৩৫ বার উল্লেখ করেছে।[৭][টীকা ১] প্যাট্রিক অলিভেল বলেন, দ্বিজ হিন্দুধর্মের বৈদিক বা প্রাচীন ঐতিহ্য নয়, বরং এক নতুনত্ব যা খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে আবির্ভূত হয়েছিল।[৭] এই শব্দটি মধ্যযুগীয় ভারত থেকে সম্ভাব্য পাঠ্য চিহ্নিত করার জন্য উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত চিহ্নিতকারী।[৬]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. The Mahabharata has about 1.8 million words. The word Dvija appears at an average frequency of once every 1170 words.

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Julia Leslie (২০০৩)। Authority and Meaning in Indian Religions: Hinduism and the Case of Vālmīkiবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Ashgate Publishing, Ltd.। পৃষ্ঠা 189আইএসবিএন 978-0-7546-3431-7। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  2. Radha Kumud Mookerji (১৯৮৯)। Ancient Indian Education। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 67–68, 133। আইএসবিএন 978-81-208-0423-4 
  3. Joel Mlecko (1982), The Guru in Hindu Tradition, Numen, Volume 29, Fasc. 1, pages 33-61
  4. Dvija, Encyclopedia Britannica (2014)
  5. Manilal Bose (১৯৯৮)। Social and Cultural History of Ancient India। Concept। পৃষ্ঠা 55–56। আইএসবিএন 978-81-7022-598-0 
  6. Patric Olivelle (২০১২)। Silvia D'Intino, Caterina Guenzi, সম্পাদক। Aux abords de la clairière: études indiennes et comparées en l'honneur de Charles Malamoud। Volume 7 of Bibliothèque de l'École des Hautes Études, Sciences Religieuses: Série Histoire et prosopographie। Brepols, Belgium। পৃষ্ঠা 117–132। আইএসবিএন 978-2-503-54472-4 
  7. Patric Olivelle (২০১২)। Silvia D'Intino, Caterina Guenzi, সম্পাদক। Aux abords de la clairière: études indiennes et comparées en l'honneur de Charles Malamoud। Volume 7 of Bibliothèque de l'École des Hautes Études, Sciences Religieuses: Série Histoire et prosopographie। Brepols, Belgium। পৃষ্ঠা 124–126। আইএসবিএন 978-2-503-54472-4 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে দ্বিজ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।