লরন্স অলিভিয়ে
লরন্স অলিভিয়ে | |
---|---|
Laurence Olivier | |
জন্ম | লরন্স কার অলিভিয়ে ২২ মে ১৯০৭ ডর্কিং, সারে, ইংল্যান্ড |
মৃত্যু | ১১ জুলাই ১৯৮৯ স্টেনিং, ওয়েস্ট সাসেক্স, ইংল্যান্ড | (বয়স ৮২)
সমাধি | ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে |
পেশা | অভিনেতা, পরিচালক |
দাম্পত্য সঙ্গী | জিল এসমন্ড (বি. ১৯৩০–১৯৪০) ভিভিয়েন লেই (বি. ১৯৪০–১৯৬০) জোন প্লাউরাইট (বি. ১৯৬১) |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
লরন্স কার অলিভিয়ে, ব্যারন অলিভিয়ে, ওএম (ইংরেজি: Laurence Olivier, /ˈlɒrəns
অলিভিয়ের সম্মাননার মধ্যে রয়েছে নাইটহুড (১৯৪৭), লাইফ পিরেজ (১৯৭০) এবং অর্ডার অব মেরিট (১৯৮১)। তার চলচ্চিত্র কর্মজীবনের জন্য তিনি চারটি একাডেমি পুরস্কার, দুটি বাফটা পুরস্কার, পাঁচটি এমি পুরস্কার ও তিনটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন। জাতীয় নাট্যমঞ্চের সবচেয়ে বড় অডিটরিয়ামের নামকরণ করা হয় তার নামানুসারে, এবং সোসাইটি অব লন্ডন থিয়েটার প্রতি বছর তার নামের স্মারক হিসেবে লরন্স অলিভিয়ে পুরস্কার প্রদান করে থাকে। তিনি তিনটি বিয়ে করেন; প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী জিল এসমন্ড ১৯৩০ থেকে ১৯৪০ পর্যন্ত, দ্বিতীয় স্ত্রী ভিভিয়েন লেই ১৯৪০ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত এবং তৃতীয় স্ত্রী জোন প্লাউরাইট ১৯৬১ থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত।
জীবনী
[সম্পাদনা]পরিবার ও প্রারম্ভিক জীবন (১৯০৭-১৯২৪)
[সম্পাদনা]অলিভিয়ে ১৯০৭ সালের ২২ই মে সারির ডর্কিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রেভড জেরার্ড কার অলিভিয়ে (১৮৬৯-১৯৩৯) এবং তার মাতা অ্যাগনেস লুইস (জন্মনাম ক্রুকেনডেন, ১৮৭১-১৯২০)। তিনি তার পিতামাতার তিন সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।[১] তার বড় ভাই সাইবিল (১৯০১-১৯৮৯) এবং জেরার্ড ডাক্রেস "ডিকি" (১৯০৪-১৯৫৮)।[২] তার প্র-প্র-পিতামহ ছিলেন ফরাসি হ্যুগেনো বংশোদ্ভূত এবং তার পূর্বপুরুষগণ প্রটেস্ট্যান্ট যাজক ছিলেন।[ক] তার পিতা জেরার অলিভিয়ে একজন স্কুলশিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, কিন্তু তার ত্রিশ বছর বয়সে তিনি ধর্মের প্রতি ভক্তিশীল হয়ে ওঠেন এবং চার্চ অব ইংল্যান্ডের পূজারি হিসেবে নিবেদিত হন।[৪] তিনি উচ্চমাত্রার গির্জা ও ধর্মীয় আচারভিত্তিক অ্যাঞ্জলিকান রীতি পালন করতেন এবং তাকে "ফাদার অলিভিয়ে" নামে সম্বোধন করতে পছন্দ করতেন। এর ফলে অনেক অ্যাঞ্জেলিক রীতি পালনকারীদের কাছে তিনি অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েন,[৪] এবং তার জন্য সাময়িক, ও অন্য পূজারির অনুপস্থিতিতে গির্জার দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হত। এর ফলে তিনি কিছুটা যাযাবর হয়ে পড়েন এবং লরন্স তার প্রথম পাঁচ বছর কোন এক স্থানে বেশি বাস করতে পারেন নি এবং তার কোন বন্ধু ছিল না।[৫]
১৯১২ সালে যখন অলিভিয়ের পাঁচ বছর বয়স, তার পিতা পিমলিকোর সেন্ট স্যাভিয়রে সহকারী যাজক হিসেবে স্থায়ী চাকরি পান। তিনি ছয় বছর এই পদে ছিলেন এবং এর ফলে সেই স্থানে তার পরিবার নিয়ে থিতু হতে সমর্থ হন।[৬] অলিভিয়ে তার মায়ের প্রতি ভক্তিশীল ছিলেন, কিন্তু পিতার প্রতি নয়, কারণ তিনি তার পিতা ছিলেন ঠাণ্ডা মেজাজের ও তার সাথে সম্পর্কের দুরত্ব ছিল।[৭] তদুপরি, তিনি তার পিতার কাছ থেকে পরিবেশন শিল্পকলা বিষয়ে অনেক কিছু শিখেন। যুবক বয়সে জেরার্ড অলিভিয়ে মঞ্চের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং নাটকীয়তার সাথে ধর্ম প্রচার করতেন। অলিভিয়ে লিখেন যে "তাঁর পিতা জানত কখন গলার স্বর উচ্চ থেকে নিম্নে নিয়ে আসতে হবে, কখন অনুভূতিপ্রবণ হতে হবে... ভাবানুভুতি ও আচরণের এই দ্রুত পরিবর্তন আমার মধ্যে ঢুকে যায়, এবং আমি তা কখনো ভুলি নি।"[৮]
প্রারম্ভিক অভিনয় কর্মজীবন (১৯২৪-১৯২৯)
[সম্পাদনা]১৯২৪ সালে জেরার্ড অলিভিয়ে তার পুত্রকে বলেন সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ ট্রেনিং অ্যান্ড ড্রামাটিক আর্টে ভর্তির পাশাপাশি তাকে তার শিক্ষা ও জীবন নিরাবাহের খরচের জন্য বৃত্তি পেতে হবে।[৯] জেরার্ডের বোন সেখানকার শিক্ষার্থীর ছিলেন এবং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এলসি ফোগার্টির প্রিয় ছিলেন। অলিভিয়ে ধারণা করেন যে তার সামর্থ্যের জন্য ফোগার্টি তাকে বৃত্তি প্রদান করেছিলেন।[৯][খ]
স্কুলে অলিভিয়ের সমসাময়িকদের মধ্যে একজন ছিলেন পেগি অ্যাশক্রফ্ট, যিনি বলেন যে অলিভিয়ের স্লিভ খুবই ছোট ছিল এবং তার চুল দাঁড়িয়ে থাকত কিন্তু তিনি খুবই প্রাণবন্ত ও মজার মানুষ ছিলেন।"[১১] ভর্তির পর তিনি খুব বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থী ছিলেন না, কিন্তু ফোগার্টি তাঁকে পছন্দ করতেন এবং পরবর্তীতে বলেন যে তিনি ও অ্যাশক্রফ্ট তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল।[১২] এক বছর পর স্কুল ত্যাগ করার সময়, অলিভিয়ে একটি ছোট পর্যটন কোম্পানিতে চাকরি পান। পরবর্তীতে ১৯২৫ সালে সাইবিল থর্নডিক ও তার স্বামী লুই কাসন তাঁকে তাদের লন্ডন কোম্পানিতে সহকারী মঞ্চ ব্যবস্থাপক হিসেবে তাদের সাথে নিয়ে যান।[১৩] তিনি জেরাল দ্যু মরিয়েকে তাঁর মডেল হিসেবে বেঁচে নেন এবং তার মত করে অভিনয় করতেন এবং তিনি মরিয়ে সম্পর্কে বলেন, "তাকে মঞ্চে মূক মনে হত কিন্তু তার কৌশল ছিল ত্রুটিহীন। যখন আমি শুরু করেছিলাম আমি দ্যু মরিয়ের মত অভিনয় করার ব্যস্ত ছিলাম যে আমি কি বলছিলাম তা কেউ শুনে নি।"[১৪]
উদীয়মান তারকা (১৯৩০-১৯৩৫)
[সম্পাদনা]১৯৩০ সালে আসন্ন বিয়ের কথা মাথায় রেখে অলিভিয়ে দুটি চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে অভিনয় করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করেন।[১৫] এপ্রিলে তিনি লিলিয়ান হার্ভির বিপরীতে অপরাধধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র দ্য টেম্পোরারি উইডো চলচ্চিত্রের ইংরেজি ভাষার সংস্করণের দৃশ্যায়নের জন্য বার্লিন সফরে যান।[গ] মে মাসে তিনি টু মেনি ক্রুকস নামক আরেকটি হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চার রাত সেখানে কাটান।[১৭] দ্বিতীয় চলচ্চিত্রে কাজ করে তিনি £৬০ পারিশ্রমিক পান এবং এই কাজের সময় তিনি লরেন্স ইভান্সের সাথে পরিচিত হন, যিনি পরবর্তীকালে তার ব্যক্তিগত সহকারী হয়েছিলেন।[১৫] অলিভিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় পছন্দ করতেন না, কিন্তু আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মঞ্চে অভিনয়ের চেয়ে বেশি লাভবান ছিল।[১৮]
রাজদরবার ও চিসেস্টার (১৯৫৭-১৯৬০)
[সম্পাদনা]১৯৬০ সালে অলিভিয়ে অভিনীত দুটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। প্রথমটি ১৯৫৯ সালে চিত্রধারণকৃত স্পার্টাকাস, এতে তিনি রোমান সেনাপতি ও রাজনীতিবিদ মার্কাস লিসিনিউস ক্রাসুস চরিত্রে অভিনয় করেন।[১৯] এটি সেই বছরের অন্যতম ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি ছিল দি এন্টারটেইনার, এই সময়ে তিনি করিওলানুস মঞ্চনাটকেও অভিনয় করছিলেন। চলচ্চিত্রটি সমালোচক কর্তৃক সমাদৃত হয়, কিন্তু মঞ্চনাটকটি তার চেয়েও বেশি সমাদৃত হয়েছিল।[২০] দ্য গার্ডিয়ান-এর এক পর্যালোচনায় এই অভিনয়কে ভালো বলে উল্লেখ করে লিখেন, অলিভিয়ে "মঞ্চনাটকের মত পর্দায়ও আর্চি রাইসকে জীবনী প্রদান করেছেন।" দি এন্টারটেইনার চলচ্চিত্রে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্রে
[সম্পাদনা]পাদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ জেরার্ডের পিতা হেনরি আর্নল্ড অলিভিয়ে (১৮২৬-১৯১২) ছিলেন একজন পূজারি এবং তার আট সন্তান ছিল, তার অন্য সকল সন্তানেরা ভিন্ন ভিন্ন স্তরে সফলতা লাভ করেছিল: সিডনি ছিল জামাইকার গভর্নর ও পরে ভারতের সচিব, হার্বার্ট ছিলেন একজন সফল চিত্রশিল্পী, এবং হেনরি (১৮৫০–১৯৩৫) সেনবাহিনীতে যোগ দেন এবং কর্নেল পদ থেকে অবসর নেন।[৩]
- ↑ Olivier's biographers W. A. Darlington and Anthony Holden both suggest another reason: Fogerty's determination to recruit more male students, there being at the time only six boys to seventy girls enrolled at the school.[১০]
- ↑ একই নামের একটি জার্মান ভাষার চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল, যেটিতে অলিভিয়ে অভিনয় করেননি।[১৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ বিলিংটন ২০০৪।
- ↑ হোল্ডেন ১৯৮৮, পৃ. ১২।
- ↑ হোল্ডেন ১৯৮৮, পৃ. ১১।
- ↑ ক খ ডার্লিংটন ১৯৬৮, পৃ. ১৩।
- ↑ বেকেট ২০০৫, পৃ. ২।
- ↑ হোল্ডেন ১৯৮৮, পৃ. ১৪।
- ↑ বেকেট ২০০৫, পৃ. ৬।
- ↑ কিয়েরনান ১৯৮১, পৃ. ১২।
- ↑ ক খ হোল্ডেন ১৯৮৮, পৃ. ২৯।
- ↑ ডার্লিংটন ১৯৬৮, p. ১; হোল্ডেন ১৯৮৮, p. ২৯.
- ↑ বিলিংটন ২০০৪; মুন ২০০৭, p. ২৩.
- ↑ হোল্ডেন ১৯৮৮, পৃ. ৩২।
- ↑ বেকেট ২০০৫, পৃ. ১৮–১৯।
- ↑ মর্টিমার ১৯৮৪, পৃ. ৬১।
- ↑ ক খ অলিভিয়ে ১৯৯৪, পৃ. ৮১-৮২।
- ↑ টানিচ ১৯৮৫, পৃ. ৩৬।
- ↑ কোলম্যান ২০০৬, পৃ. ৩৮-৩৯।
- ↑ মুন ২০০৭, পৃ. ৩৮।
- ↑ কোলম্যান ২০০৬, পৃ. ৩১৮।
- ↑ মুন ২০০৭, পৃ. ২৩।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- লরন্স অলিভিয়ে
- ১৯০৭-এ জন্ম
- ১৯৮৯-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ অভিনেতা
- ইংরেজ অ্যাংলো ক্যাথলিক
- ইংরেজ চলচ্চিত্র অভিনেতা
- ইংরেজ চলচ্চিত্র পরিচালক
- ইংরেজ টেলিভিশন অভিনেতা
- ইংরেজ মঞ্চ অভিনেতা
- ইংরেজ মঞ্চ পরিচালক
- ইংরেজ শেকসপিয়ারীয় অভিনেতা
- সারি কাউন্টির অভিনেতা
- সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ অ্যান্ড ড্রামার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ব্রিটিশ নাইটহুড প্রাপ্ত অভিনেতা
- শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী
- একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার বিজয়ী
- গোল্ডেন গ্লোব সেসিল বি. ডামিল পুরস্কার বিজয়ী
- গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা অভিনেতা - নাট্য চলচ্চিত্র) বিজয়ী
- গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা পার্শ্ব অভিনেতা - চলচ্চিত্র) বিজয়ী
- সীমিত ধারাবাহিক বা টিভি চলচ্চিত্রে সেরা প্রধান অভিনেতা বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার বিজয়ী
- সীমিত ধারাবাহিক বা টিভি চলচ্চিত্রে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার বিজয়ী
- শ্রেষ্ঠ ব্রিটিশ অভিনেতার জন্য বাফটা পুরস্কার বিজয়ী
- বাফটা ফেলো
- ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সমাধিস্ত
- শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কার বিজয়ী
- দাভিদ দি দোনাতেল্লো বিজয়ী
- ফরাসি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
- নাইটস ব্যাচেলর
- ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সমাধিস্থ
- দ্বিতীয় এলিজাবেথের সৃষ্ট ব্রিটিশ সংসদের উচ্চকক্ষের আজীবন সদস্য