বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(বাংলাদেশ রাইফেলস থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ
বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মনোগ্রাম
সক্রিয়১৭৯৫ থেকে বর্তমান
দেশ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (১৭৯৫-১৮৭৩)
ব্রিটিশ ভারত ব্রিটিশ ভারত (১৮৭৩–১৯৪৭)
পাকিস্তান পাকিস্তান (১৯৪৭–১৯৭১)
বাংলাদেশ বাংলাদেশ (১৯৭১–বর্তমান)
আনুগত্যবাংলাদেশের সংবিধান
শাখাসীমান্তরক্ষী বাহিনী
ধরনআধাসামরিক
আকার৬৭০০০+
গ্যারিসন/সদরদপ্তরপিলখানা
ডাকনামবিজিবি
পৃষ্ঠপোষকরাষ্ট্রপতি
নীতিবাক্যসীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী
রংমেরুন, মোচা, গাঢ় সবুজ, কালো
                
বার্ষিকী২৬শে মার্চ
সরঞ্জামাদিবর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সরঞ্জামের তালিকা
যুদ্ধসমূহ
সজ্জা১. বীর শ্রেষ্ঠ
২. বীর উত্তম
৩. বীর বিক্রম
৪. বীর প্রতীক
কমান্ডার
মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, এনডিসি, পিএসসি
অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বেনাজীর আহমেদ, বিজিবিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি
প্রতীকসমূহ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পতাকা
বিমানবহর
হেলিকপ্টারএমআই-১৭১ই
বেনাপোল বন্দরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্য

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বাংলা অর্থ:বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষক) বাংলাদেশের একটি আধাসামরিক বাহিনী। এর কাজ হল মূলত বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা করা। এর সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বে এর নাম ছিল ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্‌স (ইপিআর)।[১] বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালে এর নাম হয় 'বাংলাদেশ রাইফেলস' (বিডিআর)।[২] ২০১১ সালে পুনরায় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ' (বিজিবি)।[৩] ২০১৬ সালে এই বাহিনীতে সর্বপ্রথম নারী সৈনিক যুক্ত হয়।[৪][৫][৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৭৯৫ সালের ২৯ জুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গোড়াপত্তন হয়েছিল। তখন বাহিনীর নাম ছিল রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন। সৈন্যসংখ্যা ছিল ৪৪৮। ছয় পাউন্ড গোলা, চারটি কামান এবং দুটি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়। সীমান্ত এলাকায় সমস্যা বৃদ্ধির কারণে এ বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের অভিযানে অংশ নেয়।

১৮৬১ সালে পূর্বাঞ্চলের নিয়মিত-অনিয়মিত পুলিশ বাহিনীর এক হাজার ৪৫৪ জনের সমন্বয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়নকে পুনর্গঠিত করে নাম রাখা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস। এর সদর দপ্তর ছিল চট্টগ্রাম; কামরূপ, গোয়ালপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিলেট ও ত্রিপুরা সীমান্ত-ফাঁড়িগুলো এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৭৯ সালে স্পেশাল কোম্পানি নামে এই বাহিনীর তৎকালীন সদস্যরা পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন করেন। ১৮৯১ সালে এ বাহিনীকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে ফ্রন্টিয়ার গার্ডসের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ। বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে চারটি কোম্পানিতে ভাগ করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯১৯ সাল পর্যন্ত। ১৯২০ সালে বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করে নাম রাখা হয় ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলস। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসকে ১৬টি প্লাটুনে ভাগ করে সীমান্ত রক্ষায় নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত করা হয়। এর স্থায়িত্বকাল ছিল ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত বিভাগের পর ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলসের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস। এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয় ইপিআর। কলকাতা মেট্রোপলিটন আর্মড পুলিশের একটি দল এবং বাঙালি ও পশ্চিম পাকিস্তানের এক হাজার সেনা এ বাহিনীতে যোগ দেয়। দক্ষ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার জন্য ইপিআরে সামরিক বাহিনী থেকে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ ইপিআর বাহিনীকে পুনর্গঠন করে এর নাম রাখা হয় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)। ১৯৮০ সালের ৩ মার্চ থেকে এ বাহিনীর স্বীকৃতি হিসেবে সরকার একে জাতীয় পতাকা প্রদান করে। ১৯৯৭ সালের ১৬ মার্চ বিডিআর বাহিনীর জন্য তিন রঙের সংমিশ্রণে ছাপা কাপড়ের ইউনিফর্মের প্রবর্তন করা হয়। ২০০৯ সালে পিলখানা সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া ইতিহাসের বিভীষিকাময় নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিডিআরের ২১৫ বছরের গৌরবময় অধ্যায়ের ছন্দপতন ঘটে। এ বাহিনীর নাম ও পোশাক পরিবর্তন করে নতুন আইনও প্রবর্তন করা হয়। ২৩ জানুয়ারি ২০১১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিবির পতাকা উত্তোলন করেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে বিডিআরের কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জওয়ান সংঘটিত করেন ইতিহাসের বিভীষিকাময় নারকীয় হত্যাকাণ্ড।[৭][৮][৯][১০] কিন্তু বিডিআর আইনে দোষীদের নগণ্য শাস্তির বিধান থাকায় আইন পরিবর্তনেরও প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) সদস্যরা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ বাহিনীর রয়েছে গৌরবময় অবদান। স্বাধীনতাযুদ্ধে ইপিআরের ৮০০ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখবীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আবদুর রউফ

সরঞ্জাম[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bangladesh Rifles to get new name"BBC News। ১ মার্চ ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১০ 
  2. "Maj Gen Abul Hossain appointed Border Guard Bangladesh chief"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৩ 
  3. "বিডিআর বদলে যেভাবে হলো বিজিবি"newsbangla24.com। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১। 
  4. "বিজিবিতে নিয়োগ পেলেন ৯৭ জন নারী সৈনিক"প্রথম আলো। ৬ জুন ২০১৬। 
  5. "৯৭ জন নারী সৈনিকের যাত্রা শুরু হচ্ছে বিজিবিতে"bbc.com। ৫ জুন ২০১৬। 
  6. "সীমান্তে বিজিবির প্রথম নারী সৈনিক"bdnews24.com। ১ আগস্ট ২০১৬। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  7. "Archived copy"। ২০১৪-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০১-২২ 
  8. "Bangladesh becomes battle zone"BBC। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬ 
  9. "Bangladesh tries 800 soldiers for bloody 2009 mutiny"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬ 
  10. "Dozens feared dead in Bangladesh mutiny - CNN.com"edition.cnn.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]