ফরিদপুর
ফরিদপুর | |
---|---|
শহর | |
বাংলাদেশের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৬′০৭″ উত্তর ৮৯°৪৯′৫৯″ পূর্ব / ২৩.৬০২° উত্তর ৮৯.৮৩৩° পূর্ব | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ (প্রস্তাবিত পদ্মা বিভাগ) |
জেলা | ফরিদপুর জেলা |
উপজেলা | ফরিদপুর সদর উপজেলা |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | ফরিদপুর পৌরসভা |
আয়তন | |
• মোট | ২৬.৬৫ বর্গকিমি (১০.২৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২) | |
• মোট | ২,৩৭,২৬৬ |
• জনঘনত্ব | ৮,৯০০/বর্গকিমি (২৩,০০০/বর্গমাইল) |
পোস্ট কোড | ৭৮০০ |
ফরিদপুর বাংলাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের একটি জেলা শহর ও জেলা সদর। ফরিদপুর বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি ফরিদপুর জেলার সদরদপ্তর ও জেলার সবচেয়ে বড় শহর ও জনবহুল স্থান। ফরিদপুর কুমার নদীর তীরে অবস্থিত। ফরিদপুর পৌরসভার আয়তন ২৬.৬৫ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯০ একর)[১] এবং মোট জনসংখ্যা ২,৩৭,২৬৬ জন।[২]
নামকরণ
[সম্পাদনা]ফরিদপুরের পূর্বে নাম ছিল ফতেহাবাদ। ফরিদপুর নামকরণ করা হয়েছে প্রখ্যাত সাধক এবং দরবেশ খাজা মাইনউদ্দিন চিশতীর শিষ্য ও ফরিদপুরের প্রখ্যাত সুফি সাধক শাহ ফরিদের (শেখ ফরিদুদ্দিন) নামানুসারে।[৩]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কোম্পানি ও ব্রিটিশ শাসন
[সম্পাদনা]১৭৮৬ সালে (মতান্তরে ১৮১৫) ফরিদপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়, নাম ছিল জালালপুর ও সদরদপ্তর ছিল ঢাকা। তখন বর্তমান ফরিদপুরের নাম ছিল ফতেহবাদ। ১৮০৭ সালে ফরিদপুর জেলার সদর দপ্তর ফরিদপুরে স্থানান্তর করা হয়।[৪] ১৮২৫ সালে ফরিদপুর কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়।[৫]

১৮৪০ সালে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এডগার এফ লুথার ‘ইংলিশ সেমিনারি স্কুল’ নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন যা ১৮৫১ সালে ফরিদপুর জিলা স্কুল নামে আত্মপ্রকাশ করে। ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফরিদপুর পৌরসভা। ১৮৭৩ সালে ফরিদপুর টাউন থিয়েটার (বর্তমানে কার্যক্রম বন্ধ) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়ে চৌধুরী ময়েজউদ্দিন বিশ্বাস ফরিদপুরের একজন প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন। তিনি ১৮৮৫ সালে ময়েজ মঞ্জিল নির্মাণ করেন। ফরিদপুর জজ কোর্ট ভবনও এই সময়েই নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮৮৯ সালে ফরিদপুর জিলা স্কুলের পশ্চিম পাশে ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও বর্তমান দক্ষিণ ঝিলটুলিতে হিতৈষী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯৪ সালে ফরিদপুরে কোতয়ালী থানা প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৯৯ সালে কুষ্টিয়া–গোয়ালন্দ ঘাট লাইনের বর্তমান পাচুরিয়া জংশন হতে পুখুরিয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মিত হয়। তখন ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হয়।

১৯১০ সালে ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৭ সালে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। ১৯১৮ সালে অম্বিকাচরণ মজুমদার রাজেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেন।[৬] ১৯২১ সালে ‘ফরিদপুর টাউন হল’ নির্মাণ করা হয়, পরবর্তীতে এই টাউন হলের নাম অম্বিকাচরণ মজুমদারের নামানুসারে অম্বিকা মেমোরিয়াল হল নামকরণ করা হয়। ১৯২৭ ফরিদপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ ও ১৯৩২ সালে বর্তমান হালিমা গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।


ব্রিটিশ শাসনের সময় ফরিদপুরের বানিজ্যিক কেন্দ্র ছিল বর্তমানের চকবাজার ও রথখোলা যেখানে বর্তমান হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার তৈরি করা হয়েছে। বাজার দুইটি কুমার নদের দুই পাড়ে হওয়াই ১৯৩৫ সালে আলিমুজ্জামান সেতু নির্মাণ করা হয় যা বর্তমানে 'বেইলি ব্রিজ' নামে পরিচিত।[৭] ১৯৩৬ সালে তৎকালীন ফরিদপুর জজ কোর্টের বিচারক মৌলভি তমিজউদ্দিন খান বর্তমান পুরাতন কোর্ট জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত করেন।[৮]
পূর্ব-পাকিস্তান
[সম্পাদনা]১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় শেখ মুজিবুর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমেদ ফরিদপুর কারাগারে বন্দি হিসেবে ছিলেন।[৯]


১৯৫৬ সালে ফরিদপুর স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। ১৯৬৩ সলে ফরিদপুরে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ১৯৬৬ ফরিদপুরগভঃ কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট ও সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ, ১৯৬৮ সালে ইয়াছিন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়
[সম্পাদনা]জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী ফরিদপুর পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ২,৩৭,২৬৬ জন। যার মধ্যে ১,১৮,৭১৭ জন পুরুষ এবং ১,১৮,৫৪৯ জন মহিলা। ২০০১ সালের এর জনসংখ্যা ছিল ১০১,০৮৪ জন[১০] ও ২০১১ সালের জনসংখ্যা ছিল ১,২২,৪২৫ জন।[১১]
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]- বিশ্ববিদ্যালয়
- কলেজ
- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (১৯৯২)
- ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ (২০০৯)
- ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (২০১০)
- সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ (১৯১৮)
- সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ (১৯৬৬)
- সরকারি ইয়াছিন কলেজ (১৯৬৮)
- ফরিদপুর সরকারি কলেজ (১৯৬৬)
- ফরিদপুর সিটি কলেজ (১৯৯২)
- ফরিদপুর মহাবিদ্যালয় (১৯৯৪)
- অন্যান্য
- বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট
- ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (১৯৬৩)
- ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি
- ফরিদপুর টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট
- মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট
- মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক

- হালিমা গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ (১৯৩২)
- পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৬২)
- ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ (২০২০)
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- ফরিদপুর জিলা স্কুল (১৮৪০)
- ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯)
- ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০)
- হিতৈষী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯)
- ফরিদপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭)
- ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৬)
- সাজেদা কবিরউদ্দিন পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৪)
- সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৬)
- তারার মেলা ঈশান মেমোরিয়াল স্কুল (১৯৭৬)
- ঈশান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (২০০৭)
- নুরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় (২০০০)
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
ঝিলটুলি
-
ফরিদপুর পৌরসভার কার্যালয়
-
ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়
-
ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার-এর কার্যালয়
-
সড়ক উপ-বিভাগ-১, ফরিদপুর
-
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাস টার্মিনাল
-
শহরের ফলের দোকান
-
করোনাযোদ্ধা ভাস্কর্য
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "জিও কোড - ফরিদপুর জেলা" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ২০২২-০৭-০৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০১-২৬।
- ↑ "জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন - বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। পৃষ্ঠা ৩৯০। ২০২৪-০৯-২৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১১।
- ↑ "ফরিদপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য"। bfcks.com/। বৃহত্তর ফরিদপুর চাকরীজিবী কল্যাণ সমিতি। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "জেলা প্রশাসনের পটভূমি"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন - ফরিদপুর জেলা। ২০২৪-০৯-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২৪।
- ↑ নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর (২০২৩-১১-১১)। "ফরিদপুর জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২৪।
|আর্কাইভের-ইউআরএল=
ত্রুটিপূর্ণভাবে গঠিত: flag (সাহায্য) - ↑ হারুন-অর-রশীদ (২০২০-১০-০৪)। "ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস"। বাংলাদেশ জার্নাল। ২০২৫-০২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "দুর্ভোগের নাম বেইলি ব্রিজ"। জাগো নিউজ ২৪। ২০২৩-০৪-১৩। ২০২৩-০৫-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২৪।
- ↑ "ফরিদপুরে ৮৪ বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক কোর্ট জামে মসজিদ"। জাগো নিউজ ২৪। ২০২২-০৪-১২। ২০২২-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২৪।
- ↑ শেখ মুজিবুর রহমান (জানুয়ারি ২০২১)। অসমাপ্ত আত্মজীবনী (পিডিএফ)। ঢাকা: মহিউদ্দিন আহমেদ, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড। আইএসবিএন 9789845061957। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-২৪।
- ↑ "Bangladesh: Divisions and Urban Areas - Population Statistics, Maps, Charts, Weather and Web Information"। www.citypopulation.de। ২০২০-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮।
- ↑ "4.1.11 Faridpur"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৬৮। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।