জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা অপারেশনের অংশ হিসাবে একাধিক দেশে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। ১৯৮৮ সালে সর্বপ্রথম দুটি অপারেশনে অংশগ্রহণ করে,একটি হল ইরাক UNIIMOG এবং নামিবিয়া UNTAG।[১] এই সময় তৎকালীন সরকার প্রধান ছিলেন, লেফটেনেন্ট জেনারেল হুসেন মুহাম্মদ এরশাদ এবং ১৯৮৮ সালে UNIIMOG সঙ্গে প্রথমবার এই পদক্ষেপ নেন।

উপসাগরীয় যুদ্ধ্বের সময় UNIKOM যান্ত্রিক পদাতিকবর্গ বাহিনীর অংশ হিসাবে কুয়েত এবং সৌদি আরব বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (আনুমানিক ২১৯৩ জন) পাঠানো হয়েছিলো। তারপর থেকে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী UNPKO অলশ হিসাবে প্রায় চল্লিশটি দেশে ৫৬টি মিশনে অংশ গ্রহণ করেছে।[২] যে সকল দেশের মিশনে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে এর মধ্যে রয়েছে, নামিবিয়া, কাম্বোডিয়া মধ্যে, সোমালিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, মোজাম্বিক, প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া, লাইবেরিয়া, হাইতি, তাজিকিস্তান, পশ্চিম সাহারা, সিয়েরা লিয়ন, কসোভো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর, কঙ্গো, আইভরি ডি ইভয়ার এবং ইথিওপিয়া

সেপ্টেম্বর ২০১০ পর্যন্ত, বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সেনা অংশগ্রহণ করেছে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০,৮৫৫ জন (সামরিক এবং আইন প্রয়োগকারী) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর আওতায় বিভিন্ন দেশে কর্মরত ছিলেন। [৩][৪]

২০১০ সালে প্রথম ৮১ নারী পুলিশ সদস্য বাংলাদেশ এফপিইউ (ফর্মেড পুলিশ ইউনিট) হিসেবে কঙ্গোয় মিশনে যান। এ পর্যন্ত ৭১০ নারী পুলিশ সদস্য মিশন শেষ করে দেশে ফিরেছেন।

শান্তিরক্ষা মিশনের অংশগ্রহণকারী প্রথম পুলিশের নারী কর্মকর্তা ডিআইজি ও বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার  মিলি বিশ্বাস।

শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অবদান ও স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা অভিযানে বাংলাদেশের মোট অষ্টআশি জন শান্তিরক্ষি বাহিনীর সদস্য জীবন হারিয়ে আছে, এদের মধ্যে চুরাশি জন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর, ১ জন বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং তিন জন ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন।[৫] নামিবিয়ায় UNTAG বাংলাদেশ বাহিনীর নেতা লেফটেনেন্ট কর্নেল মোঃ ফয়জুল করিম উইন্ডহোক, নামিবিয়া ১৯৮৯ সালে মারা যান। তিনি ছিলেন শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী প্রথম বাংলাদেশী অফিসার যিনি বিদেশে মিশন যারা মারা যান।

বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশ বাহিনীর অবদানকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বর্ণনা করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের একাধিক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কমান্ডার এবং সিনিয়র সামরিক লিয়াজোঁ অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, শান্তিরক্ষা সম্প্রদায়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সফলতা ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলছে।[২]

জানুয়ারী ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলাদেশে জাতিসংঘের ফোর্সকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর মজ্জ্বা হিসাবে বর্ণনা করেছে।[৬]

২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় শান্তিরক্ষী বাহিনীর ১৫ জন বাংলাদেশি সেনা নিহত হন। ২০০৫ সালে কঙ্গোতে ৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ১৩৪ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত হয়েছেন।[৭]

গ্যাল্যারি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মোমেন, নূরুল. ২০০৬ "বাংলাদেশ জাতিসংঘের পার্টনারশিপ"ডেইলি স্টার। তারিখে সংগৃহীত: ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ - থেকে ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯।
  2. মোমেন, ২০০৬
  3. http://www.ittefaq.com/issues/2010/07/09/news0737.htm
  4. Buerk, Roland (১৮ জানুয়ারি ২০০৬)। "The cream of UN peacekeepers"BBC News 
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১২ 
  6. Buerk, Roland (১৮ জানুয়ারি ২০০৬)। "The cream of UN peacekeepers"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  7. শান্তিরক্ষী (২০১৮)। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান)। বাংলাদেশ: প্রথমা প্রকাশন। আইএসবিএন 9789849326052