কধুরখীল ইউনিয়ন
| কধুরখীল | |
|---|---|
| ইউনিয়ন | |
| বাংলাদেশে কধুরখীল ইউনিয়নের অবস্থান | |
| স্থানাঙ্ক: ২২°২৪′২৩″ উত্তর ৯১°৫৫′৪১″ পূর্ব / ২২.৪০৬৩৯° উত্তর ৯১.৯২৮০৬° পূর্ব | |
| দেশ | বাংলাদেশ |
| বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
| জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
| উপজেলা | বোয়ালখালী উপজেলা |
| সরকার | |
| • চেয়ারম্যান | শফিউল আজম শেফু |
| আয়তন | |
| • মোট | ৯.৯০ বর্গকিমি (৩.৮২ বর্গমাইল) |
| জনসংখ্যা (২০১১) | |
| • মোট | ২৪,৬৯৯ |
| • জনঘনত্ব | ২,৫০০/বর্গকিমি (৬,৫০০/বর্গমাইল) |
| সাক্ষরতার হার | |
| • মোট | ৬৩.২% |
| সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
| পোস্ট কোড | ৪৩৬৮ |
| ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
কধুরখীল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন।
আয়তন
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নের আয়তন ২,৪৪৫ একর (৯.৯০ বর্গ কিলোমিটার)।[১] তবে ২০১২ সালে এ ইউনিয়নের ১নং, ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডকে বোয়ালখালী পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কধুরখীল ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা ২৪,৬৯৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১,৯৮১ জন এবং মহিলা ১২,৭১৮ জন। মোট পরিবার ৪,৯০৬টি।[১]
অবস্থান ও সীমানা
[সম্পাদনা]বোয়ালখালী উপজেলার উত্তর-পশ্চিমাংশে কর্ণফুলীর তীরে কালুরঘাট সেতুর পূর্ব পাশ হতে কধুরখীল ইউনিয়নের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে এ ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। এ ইউনিয়নের দক্ষিণে বোয়ালখালী পৌরসভা, পূর্বে পোপাদিয়া ইউনিয়ন ও চরণদ্বীপ ইউনিয়ন, উত্তরে কর্ণফুলী নদী ও রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে কর্ণফুলী নদী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫নং মোহরা ওয়ার্ড অবস্থিত।
নামকরণ
[সম্পাদনা]বহু আগে এ ইউনিয়নের মিলন মন্দিরে হত রাস উৎসব, ঐ রাস উৎসবটা হত তখন ১০/১৫ দিন ব্যাপী। ঐ উৎসবে হত তখন জনবহুল ঝাঁপি, দূর পাল্লা থেকে আসত লোকজন রাস উৎসবের টানে, লোকজন শ্রোতা মুগ্ধ হতেন পাঁচ মিশালী গানে। ঐ উৎসবে এসেছিলেন তখন উচ্চ পদস্থ কিছু লোক, হাঁটতে হাঁটতে বেহাল দশায় তারা বলেন 'অবুক-রে অবুক'। তখনকার যুগে ছিলনা কোন যানবাহনের ব্যবস্থা বহু ক্রোশ হাঁটতে হত। দীর্ঘতম রাস্তা হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত মনে রুদ্ধনিঃশ্বাসে তারা বলেন 'রাস উৎসবে পৌঁছবো আমরা আর কন্দুর গেলে?' পাছে একজন পথচারী পেয়ে তারা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'রাস উৎসবটাই যেতে ভাইরে আর কতদুর খিল?' লোকটা বলে, দুর নয় আর আছে সামান্য খিল, ঐ দেখা যায় পাড়াটার পরে বড় একটা বিল। সেই থেকে নামকরণ হয় কধুরখীল।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কধুরখীল ইউনিয়নে অংশগ্রহণ বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। বোয়ালখালী উপজেলায় যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের দুইটি অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল যার একটি কধুরখীল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এর আব্দুল মালেক শাহ্ এর বাড়ী। এই ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তাসহ সকল অস্ত্র সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা হত।[৩]
প্রশাসনিক কাঠামো
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়ন বোয়ালখালী উপজেলার আওতাধীন ১নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম বোয়ালখালী থানার আওতাধীন। এটি জাতীয় সংসদের ২৮৫নং নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-৮ এর অংশ। এটি কধুরখীল মৌজা নিয়েই গঠিত। এ ইউনিয়নের গ্রামগুলো হল:[৪]
- পশ্চিম কধুরখীল
- মধ্যম কধুরখীল
- পূর্ব কধুরখীল
শিক্ষা ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]প্রাচীনকাল থেকেই কধুরখীল ইউনিয়ন বোয়ালখালী উপজেলায় শিক্ষার জন্য সুপ্রসিদ্ধ। জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এই এলাকার বহু গুণী শিক্ষাবিদ অবদান রেখে যাচ্ছেন। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ ইউনিয়নের সাক্ষরতার হার ৬৩.২%।[১] এ ইউনিয়নে ১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি দাখিল মাদ্রাসা, ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এ এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন বিদ্যাপীঠটির নাম হল কধুরখীল ইউনাইটেড মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, যা ১৯৪৭ সালে স্থাপিত হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]- মাদ্রাসা[৫]
- কধুরখীল ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী)মাদ্রাসা ও এতিমখানা
- আল কুরআন একাডেমী দাখিল মাদ্রাসা
- তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুলতান মোস্তফা কমপ্লেক্স দাখিল মাদ্রাসা
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়[৬]
- কধুরখীল ইউনাইটেড মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়
- কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- পশ্চিম কধুরখীল স্কুল এন্ড কলেজ
- পূর্ব কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়
- প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল ইউ এম এস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল ইউনাইটেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল ইমামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল বড়ুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল শিকদারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কধুরখীল হাজী আমজাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পশ্চিম কধুরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পূর্ব কধুরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কিন্ডারগার্টেন[৭]
- ইমাম গাজ্জালী একাডেমী
- কথাকলি স্কুল
- কধুরখীল কিন্ডারগার্টেন
- হোমল্যান্ড গ্রামার স্কুল
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নে যোগাযোগের প্রধান সড়ক কালুরঘাট-চৌধুরীহাট সড়ক। প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম সিএনজি চালিত অটোরিক্সা।
ধর্মীয় উপাসনালয়
[সম্পাদনা]খাল ও নদী
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নের পশ্চিম পাশ ঘিরে বয়ে চলেছে কর্ণফুলী নদী। কর্ণফুলী নদীর পূর্বপাড়ে অর্থাৎ পশ্চিম কধুরখীল এর পাশ দিয়ে দুইটি খাল বয়ে চলেছে, একটি কধুরখীল সংলগ্ন পাড় ঘেঁষে চৌধুরী হাট হয়ে কধুরখীল ইউনিয়ন ও চরণদ্বীপ ইউনিয়ন এর মাঝখানে ভাণ্ডালজুড়ি খাল, অপরটি কালুরঘাট হয়ে কধুরখীল ও পূর্ব গোমদণ্ডীর মাঝখানে হাওলা খাল।[১০]
হাট-বাজার
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নের প্রধান হাট/বাজার হল চৌধুরী হাট।[১১]
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:[১২]
- কালুরঘাট সেতু
- কর্ণফুলী নদী
- মুক্তিযোদ্ধা রিভার-ভিউ
- সুলতান মোস্তফা জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা
- মিলন মন্দির
- কধুরখীল লোকনাথ মন্দির
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
[সম্পাদনা]কধুরখীল ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগণের মধ্যে রয়েছে:[১৩]
- আশুতোষ চৌধুরী –– কবি ও লোকগীতি সংগ্রাহক।
- মহেন্দ্রলাল বিশ্বাস –– ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
- সুচরিত চৌধুরী –– সংগীত শিল্পী ও কথা সাহিত্যিক।
জনপ্রতিনিধি
[সম্পাদনা]- বর্তমান চেয়ারম্যান: মোহাম্মদ ইদ্রিচ[১৪]
- চেয়ারম্যানগণের তালিকা[১৫]
| ক্রম নং | চেয়ারম্যানের নাম | সময়কাল |
|---|---|---|
| ০১ | জালাল আহমদ | ১৯৭৪-১৯৭৭ |
| ০২ | সুলতান আহমদ চৌধুরী | ১৯৭৭-১৯৭৮ |
| ০৩ | মোহাম্মদ হারুন মিয়া | ১৯৭৮-১৯৭৯ |
| ০৪ | মোহাম্মদ ইলিয়াছ | ১৯৮০-১৯৮৪ |
| ০৫ | মোহাম্মদ হারুন মিয়া | ১৯৮৪-১৯৯২ |
| ০৬ | মোহাম্মদ ইলিয়াছ | ১৯৯২-১৯৯৮ |
| ০৭ | এম এ ঈছা | ১৯৯৮-২০০৩ |
| ০৮ | মোহাম্মদ ইদ্রিচ | ২০০৩-বর্তমান |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- 1 2 3 "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২০।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: বট: মূল ইউআরএলের অবস্থা অজানা (লিঙ্ক) - ↑ "কধুরখীল ইউনিয়নের ইতিহাস - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (১৬ খন্ড)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- ↑ "১ নং কধুরখীল ইউনিয়ন এর গ্রামভিত্তিক লোকসংখ্যা - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "আল কুরআন একাডেমী - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "মাধ্যমিকবিদ্যালয় - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd।
- ↑ "অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্টানসমূহ - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "মসজিদ - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "মন্দির - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "খাল ও নদী - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "হাট বাজারের তালিকা - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd।
- ↑ "দর্শনীয়স্থান - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "জনাব মোহাম্মদ ইদ্রিচ - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "পূর্বতম চেয়ারম্যান বৃন্দ - কধুরখীল ইউনিয়ন - কধুরখীল ইউনিয়ন"। kandhurkhilup.chittagong.gov.bd। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
