বিষয়বস্তুতে চলুন

হাওর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sheikh Tasmia Mehejabin (আলোচনা | অবদান)
Link addition
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
"হাওড়" এর বানান ঠিক করা হয়েছে।
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা অ্যাপ পূর্ণ উৎস
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:BD Surma 4.jpg|350px|right|thumb|[[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] [[সুনামগঞ্জ জেলা|সুনামগঞ্জ জেলায়]] অবস্থিত "আলির হাওর"। দিগন্তে [[মেঘালয়|মেঘালয়ের]] কোলে আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে [[খাসিয়া পাহাড়]]।]]
[[চিত্র:BD Surma 4.jpg|350px|right|thumb|[[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] [[সুনামগঞ্জ জেলা|সুনামগঞ্জ জেলায়]] অবস্থিত "আলির হাওর"। দিগন্তে [[মেঘালয়|মেঘালয়ের]] কোলে আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে [[খাসিয়া পাহাড়]]।]]
'''হাওর''' [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] উত্তর-পূর্ব অংশে একটি [[জলাভূমি]] বাস্তুতন্ত্র, যা গঠনগত একটি [[বাটি]] বা [[গামলা]] আকৃতির অগভীর [[জলাভূমি]] হয়ে থাকে, যা ব্যাক্সওয়াম্প নামেও পরিচিত। <ref name="BA">{{বই উদ্ধৃতি | সম্পাদক = ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, স্বরোচিষ সরকার | শিরোনাম = বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান | প্রকৃত-বছর = ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ | origmonth = ডিসেম্বর | বিন্যাস = প্রিন্ট | সংস্করণ = জানুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ | প্রকাশক = বাংলা একাডেমী | অবস্থান = ঢাকা | ভাষা = বাংলা | আইএসবিএন = 984-07-4222-1 | পাতাসমূহ = ১২২৪ | অধ্যায় = হ}}</ref><ref name="Alam">MK Alam; ''Wave attack in Haor areas of Bangladesh and cement concrete blocks as structural revetment material''; ''Progress in Structural Engineering, Mechanics and Computation: Proceedings'' (ed. Alphose Zingoni); page 325; Taylor & Francis; 2004; {{ISBN|90-5809-568-1}}</ref><ref name="Zone">''Bio-ecological Zones of Bangladesh''; [[International Union for Conservation of Nature]] and Natural Resources, Bangladesh Country Office; page 31; The World Conservation Union (IUCN); 2002; {{ISBN|984-31-1090-0}}</ref><ref name="SDNPLand">[http://www.sdnpbd.org/sdi/international_days/wed/2006/bangladesh/landuse.htm Bangladesh & Desertification] {{webarchive|url=https://web.archive.org/web/20071230040459/http://www.sdnpbd.org/sdi/international_days/wed/2006/bangladesh/landuse.htm|date=2007-12-30}}, Sustainable Development Networking Programme (SDNP), Bangladesh; ''Retrieved: 2007-12-04''</ref><ref name="AWA">{{citation|author=Abdul Wahab Akonda|chapter-url=https://portals.iucn.org/library/sites/library/files/documents/1989-Scott-001.pdf|chapter=Bangladesh|title=A directory of Asian wetlands|publisher=IUCN|year=1989|pages=unpaginated|isbn=2-88032-984-1}}</ref><ref name="FAP6">{{cite book|title=Wetland Specialist Study, Northeast Regional Water Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6|last2=Scott|first2=Derek|chapter-url=http://bicn.com/wei/resources/nerp/wrs/ch3.htm|date=1995|publisher=Bangladesh Water Development Board|chapter=Chapter 3: Interpretive Description of the Region's Wetlands|archive-url=https://web.archive.org/web/20080807174022/http://www.bicn.com/wei/resources/nerp/wrs/ch3.htm|archive-date=2008-08-07|access-date=2007-12-04|last1=Bennett|first1=Sara|last3=Karim|first3=Ansarul|last4=Sobhan|first4=Istiak|last5=Khan|first5=Anisuzzaman|last6=Rashid|first6=S.M.A.}}</ref> প্রচলিত অর্থে হাওর হল [[বন্যা]] প্রতিরোধের জন্য নদীতীরে নির্মিত মাটির [[বাঁধ|বাঁধের]] মধ্যে প্রায় গোলাকৃতি নিম্নভূমি বা [[জলাভূমি]]। তবে হাওর সব সময় নদী তীরবর্তী নির্মিত বাঁধের মধ্যে না-ও থাকতে পারে। হাওরের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিবছর মৌসুমী বর্ষায় বা স্বাভাবিক বন্যায় হাওর প্লাবিত হয়। বছরের কয়েক মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং [[বর্ষা]] শেষে হাওরের গভীরে পানিতে নিমজ্জিত কিছু স্থায়ী [[বিল]] জেগে ওঠে। <ref name="বড়লেখা">{{বই উদ্ধৃতি | লেখক= কাজী রোজানা আখতার | সম্পাদক= কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম | শিরোনাম= বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান | বিন্যাস= প্রিন্ট | সংস্করণ= ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ | বছর= ২০০০ | প্রকাশক= বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড | অবস্থান= ঢাকা | ভাষা= বাংলা | আইএসবিএন= | পাতা=১৭৯-১৯২ | পাতাসমূহ= ৪৮৪ | অধ্যায়= হাকালুকি হাওর}}</ref> [[গ্রীষ্মকাল]]ে হাওরকে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয় ; তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে।
'''হাওড়''' [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] উত্তর-পূর্ব অংশে একটি [[জলাভূমি]] বাস্তুতন্ত্র, যা গঠনগত একটি [[বাটি]] বা [[গামলা]] আকৃতির অগভীর [[জলাভূমি]] হয়ে থাকে, যা ব্যাক্সওয়াম্প নামেও পরিচিত। <ref name="BA">{{বই উদ্ধৃতি | সম্পাদক = ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, স্বরোচিষ সরকার | শিরোনাম = বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান | প্রকৃত-বছর = ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ | origmonth = ডিসেম্বর | বিন্যাস = প্রিন্ট | সংস্করণ = জানুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ | প্রকাশক = বাংলা একাডেমী | অবস্থান = ঢাকা | ভাষা = বাংলা | আইএসবিএন = 984-07-4222-1 | পাতাসমূহ = ১২২৪ | অধ্যায় = হ}}</ref><ref name="Alam">MK Alam; ''Wave attack in Haor areas of Bangladesh and cement concrete blocks as structural revetment material''; ''Progress in Structural Engineering, Mechanics and Computation: Proceedings'' (ed. Alphose Zingoni); page 325; Taylor & Francis; 2004; {{ISBN|90-5809-568-1}}</ref><ref name="Zone">''Bio-ecological Zones of Bangladesh''; [[International Union for Conservation of Nature]] and Natural Resources, Bangladesh Country Office; page 31; The World Conservation Union (IUCN); 2002; {{ISBN|984-31-1090-0}}</ref><ref name="SDNPLand">[http://www.sdnpbd.org/sdi/international_days/wed/2006/bangladesh/landuse.htm Bangladesh & Desertification] {{webarchive|url=https://web.archive.org/web/20071230040459/http://www.sdnpbd.org/sdi/international_days/wed/2006/bangladesh/landuse.htm|date=2007-12-30}}, Sustainable Development Networking Programme (SDNP), Bangladesh; ''Retrieved: 2007-12-04''</ref><ref name="AWA">{{citation|author=Abdul Wahab Akonda|chapter-url=https://portals.iucn.org/library/sites/library/files/documents/1989-Scott-001.pdf|chapter=Bangladesh|title=A directory of Asian wetlands|publisher=IUCN|year=1989|pages=unpaginated|isbn=2-88032-984-1}}</ref><ref name="FAP6">{{cite book|title=Wetland Specialist Study, Northeast Regional Water Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6|last2=Scott|first2=Derek|chapter-url=http://bicn.com/wei/resources/nerp/wrs/ch3.htm|date=1995|publisher=Bangladesh Water Development Board|chapter=Chapter 3: Interpretive Description of the Region's Wetlands|archive-url=https://web.archive.org/web/20080807174022/http://www.bicn.com/wei/resources/nerp/wrs/ch3.htm|archive-date=2008-08-07|access-date=2007-12-04|last1=Bennett|first1=Sara|last3=Karim|first3=Ansarul|last4=Sobhan|first4=Istiak|last5=Khan|first5=Anisuzzaman|last6=Rashid|first6=S.M.A.}}</ref> প্রচলিত অর্থে হাওড় হল [[বন্যা]] প্রতিরোধের জন্য নদীতীরে নির্মিত মাটির [[বাঁধ|বাঁধের]] মধ্যে প্রায় গোলাকৃতি নিম্নভূমি বা [[জলাভূমি]]। তবে হাওর সব সময় নদী তীরবর্তী নির্মিত বাঁধের মধ্যে না-ও থাকতে পারে। হাওড়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিবছর মৌসুমী বর্ষায় বা স্বাভাবিক বন্যায় হাওর প্লাবিত হয়। বছরের কয়েক মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং [[বর্ষা]] শেষে হাওরের গভীরে পানিতে নিমজ্জিত কিছু স্থায়ী [[বিল]] জেগে ওঠে। <ref name="বড়লেখা">{{বই উদ্ধৃতি | লেখক= কাজী রোজানা আখতার | সম্পাদক= কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম | শিরোনাম= বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান | বিন্যাস= প্রিন্ট | সংস্করণ= ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ | বছর= ২০০০ | প্রকাশক= বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড | অবস্থান= ঢাকা | ভাষা= বাংলা | আইএসবিএন= | পাতা=১৭৯-১৯২ | পাতাসমূহ= ৪৮৪ | অধ্যায়= হাকালুকি হাওর}}</ref> [[গ্রীষ্মকাল]]ে হাওড়কে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয় ; তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে।


"সাগর" শব্দটি থেকে "হাওর" শব্দের উৎপত্তি বলে ধরে নেয়া হয়।<ref name="BA"/><ref name="বড়লেখা ২"/>
"সাগর" শব্দটি থেকে "হাওড়" শব্দের উৎপত্তি বলে ধরে নেয়া হয়।<ref name="BA"/><ref name="বড়লেখা ২"/>


== বিবরণ ==
== বিবরণ ==
হাওর মূলত বিস্তৃত প্রান্তর, অনেকটা গামলা আকৃতির জলাভূমি যা প্রতিবছর মৌসুমী বৃষ্টির সময় পানিপূর্ণ হয়ে উঠে। সমগ্র [[বর্ষাকাল]] জুড়ে হাওরের পানিকে [[সাগর]] বলে মনে হয় এবং এর মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলোকে দ্বীপ বলে প্রতীয়মান হয়। বছরের সাত মাস হাওরগুলো পানির নিচে অবস্থান করে। শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ পানি শুকিয়ে গিয়ে সেই স্থানে সরু খাল রেখে যায় এবং শুষ্ক মৌসুমের শেষের দিকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের পুরো প্রান্তর জুড়ে [[ঘাস]] গজায়, গবাদি পশুর বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠে। হাওরে আগত পানি প্রচুর পলিমাটি ফেলে যায় যা [[ধান]] উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী।<ref name="বড়লেখা ২">{{বই উদ্ধৃতি | লেখক= ফওজুল করিম (তারা) | সম্পাদক= কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম | শিরোনাম= বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান | বিন্যাস= প্রিন্ট | সংস্করণ= ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ | বছর= ২০০০ | প্রকাশক= বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড | অবস্থান= ঢাকা | ভাষা= বাংলা | আইএসবিএন= | পাতা=৩৮-৩৯ | পাতাসমূহ= ৪৮৪ | অধ্যায়= বড়লেখা সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র}}</ref> বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাওর অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়।
হাওড় মূলত বিস্তৃত প্রান্তর, অনেকটা গামলা আকৃতির জলাভূমি যা প্রতিবছর মৌসুমী বৃষ্টির সময় পানিপূর্ণ হয়ে উঠে। সমগ্র [[বর্ষাকাল]] জুড়ে হাওড়ের পানিকে [[সাগর]] বলে মনে হয় এবং এর মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলোকে দ্বীপ বলে প্রতীয়মান হয়। বছরের সাত মাস হাওরগুলো পানির নিচে অবস্থান করে। শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ পানি শুকিয়ে গিয়ে সেই স্থানে সরু খাল রেখে যায় এবং শুষ্ক মৌসুমের শেষের দিকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের পুরো প্রান্তর জুড়ে [[ঘাস]] গজায়, গবাদি পশুর বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠে। হাওরে আগত পানি প্রচুর পলিমাটি ফেলে যায় যা [[ধান]] উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী।<ref name="বড়লেখা ২">{{বই উদ্ধৃতি | লেখক= ফওজুল করিম (তারা) | সম্পাদক= কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম | শিরোনাম= বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান | বিন্যাস= প্রিন্ট | সংস্করণ= ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ | বছর= ২০০০ | প্রকাশক= বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড | অবস্থান= ঢাকা | ভাষা= বাংলা | আইএসবিএন= | পাতা=৩৮-৩৯ | পাতাসমূহ= ৪৮৪ | অধ্যায়= বড়লেখা সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র}}</ref> বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাওর অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়।


==শ্রেণিবিভাগ==
==শ্রেণিবিভাগ==

১৪:৪০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত "আলির হাওর"। দিগন্তে মেঘালয়ের কোলে আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে খাসিয়া পাহাড়

হাওড় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অংশে একটি জলাভূমি বাস্তুতন্ত্র, যা গঠনগত একটি বাটি বা গামলা আকৃতির অগভীর জলাভূমি হয়ে থাকে, যা ব্যাক্সওয়াম্প নামেও পরিচিত। [][][][][][] প্রচলিত অর্থে হাওড় হল বন্যা প্রতিরোধের জন্য নদীতীরে নির্মিত মাটির বাঁধের মধ্যে প্রায় গোলাকৃতি নিম্নভূমি বা জলাভূমি। তবে হাওর সব সময় নদী তীরবর্তী নির্মিত বাঁধের মধ্যে না-ও থাকতে পারে। হাওড়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিবছর মৌসুমী বর্ষায় বা স্বাভাবিক বন্যায় হাওর প্লাবিত হয়। বছরের কয়েক মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং বর্ষা শেষে হাওরের গভীরে পানিতে নিমজ্জিত কিছু স্থায়ী বিল জেগে ওঠে। [] গ্রীষ্মকালে হাওড়কে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয় ; তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে।

"সাগর" শব্দটি থেকে "হাওড়" শব্দের উৎপত্তি বলে ধরে নেয়া হয়।[][]

বিবরণ

হাওড় মূলত বিস্তৃত প্রান্তর, অনেকটা গামলা আকৃতির জলাভূমি যা প্রতিবছর মৌসুমী বৃষ্টির সময় পানিপূর্ণ হয়ে উঠে। সমগ্র বর্ষাকাল জুড়ে হাওড়ের পানিকে সাগর বলে মনে হয় এবং এর মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলোকে দ্বীপ বলে প্রতীয়মান হয়। বছরের সাত মাস হাওরগুলো পানির নিচে অবস্থান করে। শুষ্ক মৌসুমে অধিকাংশ পানি শুকিয়ে গিয়ে সেই স্থানে সরু খাল রেখে যায় এবং শুষ্ক মৌসুমের শেষের দিকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের পুরো প্রান্তর জুড়ে ঘাস গজায়, গবাদি পশুর বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠে। হাওরে আগত পানি প্রচুর পলিমাটি ফেলে যায় যা ধান উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী।[] বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাওর অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়।

শ্রেণিবিভাগ

ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান বা এলাকার বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে হাওরকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়:

১. পাহাড়ের পাদদেশে বা পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত হাওর
২. প্লাবিত এলাকার হাওর
৩. গভীর পানিতে প্লাবিত এলাকার হাওর।

এই তিন শ্রেণীর হাওর এলাকার মৎস্য সম্পদ, পানি সম্পদ, কৃষি এবং আর্থ-সামাজিক শর্তগুলো আলাদা আলাদাভাবে প্রতীয়মান হয়।[]

হাওরের তালিকা

টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ।

বাংলাদেশ

IUCN-এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রায় ৪০০ হাওর রয়েছে।[] বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি হাওর রয়েছে সিলেট বিভাগে। বাংলাদেশের হাওরগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

হাকালুকি হাওর

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর। এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা (৬০%), কুলাউড়া (১২%), ফেঞ্চুগঞ্জ (১০%), গোলাপগঞ্জ (১০%) এবং জুরি উপজেলা (৮%) জুড়ে বিস্তৃত। ভূতাত্ত্বিকভাবে এর অবস্থান, উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড় এবং পূর্বে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশে। ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে উজানে প্রচুর পাহাড় থাকায় হাকালুকি হাওরে প্রায় প্রতি বছরই আকস্মিক বন্যা হয়। এই হাওরে ২৭৩টি ছোট, বড় ও মাঝারি বিল রয়েছে।[] শীতকালে এসব বিলকে ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।[]

টাঙ্গুয়ার হাওর

টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি হাওর। প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই হাওরটি বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান, প্রথমটি সুন্দরবন। এটি মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং সুনামগঞ্জের ধর্মপাশাতাহিরপুর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরনা এসে মিশেছে এই হাওরে। দুই উপজেলার ১৮টি মৌজায় ৫১টি হাওরের সমন্বয়ে ৯,৭২৭ হেক্টর এলাকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর জেলার সবচেয়ে বড় জলাভূমি। পানিবহুল মূল হাওর ২৮ বর্গকিলোমিটার এবং বাকি অংশ গ্রামগঞ্জ ও কৃষিজমি।

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

  1. ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, স্বরোচিষ সরকার (সম্পাদক)। "হ"। বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (প্রিন্ট) (জানুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ১২২৪। আইএসবিএন 984-07-4222-1  অজানা প্যারামিটার |origmonth= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  2. MK Alam; Wave attack in Haor areas of Bangladesh and cement concrete blocks as structural revetment material; Progress in Structural Engineering, Mechanics and Computation: Proceedings (ed. Alphose Zingoni); page 325; Taylor & Francis; 2004; আইএসবিএন ৯০-৫৮০৯-৫৬৮-১
  3. Bio-ecological Zones of Bangladesh; International Union for Conservation of Nature and Natural Resources, Bangladesh Country Office; page 31; The World Conservation Union (IUCN); 2002; আইএসবিএন ৯৮৪-৩১-১০৯০-০
  4. Bangladesh & Desertification ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৭-১২-৩০ তারিখে, Sustainable Development Networking Programme (SDNP), Bangladesh; Retrieved: 2007-12-04
  5. Abdul Wahab Akonda (১৯৮৯), "Bangladesh" (পিডিএফ), A directory of Asian wetlands, IUCN, পৃষ্ঠা unpaginated, আইএসবিএন 2-88032-984-1 
  6. Bennett, Sara; Scott, Derek; Karim, Ansarul; Sobhan, Istiak; Khan, Anisuzzaman; Rashid, S.M.A. (১৯৯৫)। "Chapter 3: Interpretive Description of the Region's Wetlands"Wetland Specialist Study, Northeast Regional Water Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6। Bangladesh Water Development Board। ২০০৮-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০৪ 
  7. কাজী রোজানা আখতার (২০০০)। "হাকালুকি হাওর"। কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম। বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (প্রিন্ট) (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। পৃষ্ঠা ১৭৯-১৯২। 
  8. ফওজুল করিম (তারা) (২০০০)। "বড়লেখা সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র"। কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম। বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (প্রিন্ট) (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯। 
  9. A Directory of Aisan Wetlands: Bangladesh, A. W. Akhand; IUCN, Gland, Switzerland and Cambridge; p. 541-581