কপোতাক্ষ নদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কপোতাক্ষ নদ
কপোতাক্ষ নদ
কপোতাক্ষ নদ
কপোতাক্ষ নদ
দেশ  বাংলাদেশ
অঞ্চল খুলনা বিভাগ
জেলা চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরাখুলনা জেলা
উপনদী
 - বাঁদিকে বুড়িভদ্রা নদী
উৎস মাথাভাঙ্গা নদী
মোহনা শিবসা নদী
দৈর্ঘ্য ২৩৮ কিলোমিটার (১৪৮ মাইল)

কপোতাক্ষ নদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের অন্যতম বড় নদ। নদীটি চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরাখুলনা জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয় । বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক কপোতাক্ষ নদের প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২৩৮ ।[১][২]

== উৎপত্তি ==কপোতাক্ষ নদ এর উৎপত্তি চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে এবং এটি পরে যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব ও কপোতাক্ষ দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় কাছে শিবসা নদীতে গিয়ে পতিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ২৩৮ কিলোমিটার (১৪৮ মাইল), গড় প্রস্থ ১৫০ মিটার (৪৯০ ফুট), গভীরতা ৩.৫ থেকে ৫ মিটার (১১.৫ থেকে ১৬.৪ ফুট)। এই নদ ৮০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত।[২]

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

স্থানীয় মানুষের নদবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড এবং অসচেতনতা, স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা নদের তীরবর্তী জায়গা দখল, পলি জমে ভরাট ইত্যাদি কারণে বর্তমানে নদটি মৃতপ্রায়।[৩][৪] ২০১১ সালে চার বছরের মধ্যে কপোতাক্ষ নদ খনন করে শেষ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু সাড়ে তিন বছরে সেই খনন কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩৮ ভাগ।

সাহিত্যে কপোতাক্ষ নদ[সম্পাদনা]

মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার শৈশব কাটিয়েছেন এই নদের তীরে। পরবর্তীতে তিনি যখন ফ্রান্সে ছিলেন, শৈশবের কথা স্মরণ করে প্রখ্যাত কপোতাক্ষ নদ নামের সনেট (চতুর্দশপদী কবিতা) রচনা করেছেন ।[৫]

কবিতাটি নিম্নরূপ:

কপোতাক্ষ নদ

-মাইকেল মধুসূদন দত্ত

সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে

সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।

সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে

শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে

জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।

বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে

দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।

আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে

প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে

বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে

বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।

নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে

লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ২২। আইএসবিএন 984-70120-0436-4 
  2. তাহমিনা আহমেদ (২০১২)। "কপোতাক্ষ নদ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. সাব্বির, মীর (১০ এপ্রিল ২০১৬)। "কেমন আছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতাক্ষ নদ?"BBC News বাংলা 
  4. "কপোতাক্ষ নদ"প্রথম আলো। ১৬ এপ্রিল ২০১৪। 
  5. "কপোতাক্ষ দখল করে মাছের আড়ত!"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৪