দেশী আচার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দক্ষিণ এশীয় আচার
গুজরাটি শৈলীতে আমের আচার
অন্যান্য নামআচার, পাচ্চাড়ি, লঞ্চা, উরুগাই, আভাকাই
ধরনআচার
প্রকারচাটনি
উৎপত্তিস্থলভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা
অঞ্চল বা রাজ্যভারতীয় উপমহাদেশ
প্রধান উপকরণফল (আম, বরই), শাকসবজি বা মাংস
সাধারণত ব্যবহৃত উপকরণতেল, মরিচ গুঁড়া, মশলা, সরিষার বীজ, মৌরি বীজ
ভিন্নতাআকার, আতচার

দক্ষিণ এশীয় আচার, যা অবলেহিকা, পাচ্চাড়ি, আচার, (কখনও কখনও আচার বা আচায়ার নামেও বানান হয়), আথানু, লঞ্চা, ওরুগাই বা আভাকাই নামেও পরিচিত, এটি ব্রাইন, ভিনেগার, ভোজ্য তেল এবং বিভিন্ন দক্ষিণ এশীয় মশলায় সংরক্ষিত একটি আচারযুক্ত খাবার যা বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল থেকে তৈরি করা হয়। আচার দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশ জুড়ে অনেক আঞ্চলিক রূপ নিয়ে বেশ জনপ্রিয়।

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

দক্ষিণ এশিয়ায় আচারের ব্যুৎপত্তি আঞ্চলিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন হয়। আচার কন্নড় ভাষায় উপ্পিনাকায়ি, তেলুগুতে আভাকায়া, তামিলে উরুগাই, মালয়ালম ভাষায় উপপিলিতুথু, মারাঠিতে লোঞ্চা, গুজরাটি ভাষায় আথানু এবং হিন্দুস্তানি (হিন্দি-উর্দু), নেপালিবাংলায় আচার নামে পরিচিত।[১] প্রারম্ভিক সংস্কৃত ও তামিল সাহিত্যে আচারের জন্য অবলেহিকা, উপদমজম, সন্ধিতা এবং অবলেহা শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে।[২]

মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে আচারের জন্য হিন্দুস্তানি শব্দ হিসেবে ফার্সি থেকে উদ্ভুত একটি ঋণ শব্দ আচার এর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।[৩] ফার্সি ভাষায়, আচার শব্দটিকে "গুঁড়া বা লবণযুক্ত মাংস, আচার বা ফল, লবণ, ভিনেগার, মধু বা শরবতে সংরক্ষিত" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আয়ুর্বেদিকসঙ্গম যুগের পাঠ্যগুলিতে প্রাথমিক আচারের প্রস্তুতপ্রণালীতে আমের আচারের প্রাচীনতম উল্লেখ সহ বিভিন্ন ধরণের আচারের উল্লেখ রয়েছে।[২] ৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ত্রিবিক্রম ভট্টের লেখা একটি সংস্কৃত মহাকাব্য নালাচাম্পু-তে সবুজ আম, সবুজ মরিচ, লম্বা মরিচ, কাঁচা এলাচ, লেবু, চুন, মাইরোবালান, হগ বরই, পাথরের আপেল ও সুগন্ধি ম্যাঞ্জাক থেকে তৈরি আচারের বর্ণনা দেয়। [৫] লোকোপকার (১০২৫ খ্রিস্টাব্দ), মনসোল্লাসা (১১৩০ খ্রিস্টাব্দ), পাকদর্পণ (১২০০ খ্রিস্টাব্দ) ও সুপ শাস্ত্র (১৫০৮ খ্রি.), ক্ষেমাকুতুহলা (১৫৪৯ খ্রিস্টাব্দ) এর মতো প্রাথমিক মধ্যযুগীয় রান্নার বইগুলিতে সবুজ আম, সবুজ মরিচ, লেবু, লম্বি, লেবু চুন, হলুদের মূল, আম-আদার মূল, আদা, মুলা, করলা, শসা, পদ্মমূল এবং বাঁশের অঙ্কুর ব্যবহার করে আচারের প্রস্তুতপ্রণালীর উল্লেখ করা হয়েছে। গুরুলিঙ্গ দেশিকার (১৫৯৪ খ্রি.) ধর্মীয় গ্রন্থ লিঙ্গপুরাণে পঞ্চাশটিরও বেশি আচারের উল্লেখ রয়েছে।[৬] ভোজ্য ফুল থেকে তৈরি অনন্য আচারের কথা নি'মাত্নামা (১৫০০ খ্রিস্টাব্দ) রান্নার বইতেও উল্লেখ করা হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. A Brief History Of The Humble Indian Pickle https://theculturetrip.com/asia/india/articles/a-brief-history-of-the-humble-indian-pickle/
  2. The Story of Our Food by K.T. Achaya (2003)
  3. Mohsen Saeidi Madani (১৯৯৩)। Impact of Hindu Culture on Muslims। M.D. Publications Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 153–। আইএসবিএন 978-81-85880-15-0 
  4. "A Brief History Of The Humble Indian Pickle"Culture Trip। ২৮ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  5. Social Life in Medieval Karnāṭaka, pg7, Jyotsna K. Kamat · 1980
  6. Culinary Traditions of Medieval Karnatak The Soopa Shastra of Mangarasa III By Maṅgarasa. N. P. Bhat, Nerupama Y. Modwel, Es. En Kr̥ṣṇajōyis (2012)
  7. From night jasmine to banana blossoms: India’s centuries-old love affair with edible flowers by Priyadarshini Chatterjee Jul 13, 2018 https://scroll.in/magazine/881094/from-night-jasmine-to-banana-blossoms-indias-centuries-old-love-affair-with-edible-flowers