লেবু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

লেবু
Citrus limon
লেবু
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
শ্রেণীবিহীন: Tracheophytes
শ্রেণীবিহীন: Angiosperm
শ্রেণীবিহীন: Rosids
বর্গ: Sepindales
পরিবার: Rutaceae
গণ: Citrus
প্রজাতি: C. limon
দ্বিপদী নাম
Citrus limon
(L.) Burm.f.
বিশ্ব মানচিত্রে ২০১২ সালে লেবু ও বাতাবি লেবুর উৎপাদনের দেশভিত্তিক চিত্র
প্রতিশব্দ
লেবুর ইংরেজি প্রতিশব্দ
তালিকা
  • Citrus × aurantium subsp. bergamia (Risso & Poit.) Engl.
  • Citrus aurantium subsp. bergamia (Risso) Wight & Arn.
  • Citrus aurantium var. bergamia (Risso) Brandis
  • Citrus × aurantium var. mellarosa (Risso) Engl.
  • Citrus × bergamia Risso & Poit.
  • Citrus × bergamia subsp. mellarosa (Risso) D.Rivera & al.
  • Citrus × bergamota Raf.
  • Citrus × limodulcis D.Rivera, Obón & F.Méndez
  • Citrus × limonelloides Hayata
  • Citrus × limonia Osbeck
  • Citrus × limonia var. digitata Risso
  • Citrus × limonum Risso
  • Citrus medica var. limon L.
  • Citrus medica f. limon (L.) M.Hiroe
  • Citrus medica f. limon (L.) Hiroë
  • Citrus medica subsp. limonia (Risso) Hook. f.
  • Citrus × medica var. limonum (Risso) Brandis
  • Citrus × medica subsp. limonum (Risso) Engl.
  • Citrus medica var. limonum (Risso) Brandis
  • Citrus × mellarosa Risso
  • Citrus × meyeri Yu.Tanaka
  • Citrus × vulgaris Ferrarius ex Mill.
  • Limon× vulgaris Ferrarius ex Miller

লেবু (সাইট্রাস লিমন ) মূলত রুটেসি পরিবারের ছোট চিরসবুজ সপুষ্পক উদ্ভিদের একটি প্রজাতি। এটি দক্ষিণ এশিয়া সাধারণত, উত্তর পূর্ব ভারতের একটি স্থানীয় গাছ।

এই গাছের উপবৃত্তাকার হলুদ ফলটি সারা বিশ্বে রান্নার কাজ এবং রান্নার কাজ ছাড়াও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়; মূলত এটির রসের জন্য। এটির রস রান্না ও পরিষ্কারের উভয় কাজেই ব্যবহার করা হয়। [১] লেবুর শাঁস এবং খোসাও রান্না এবং বেকিংয়ে ব্যবহৃত হয়। লেবুর রসে প্রায় ২.২ পিএইচ এর প্রায় ৫% থেকে ৬% সাইট্রিক অ্যাসিড, যার কারণে এটি টক স্বাদযুক্ত হয়। লেবুর রস টক স্বাদযুক্ত হওয়ায় এটিকে পানীয় এবং খাবার, যেমন লেবুর শরবত এবং 'লেবু মেরিংয়ে পাইয়ের' মূল উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা হয়। চট্টগ্রাম অঞ্চলে লেবুকে "হঁজি" বলে। নোয়াখালীতে লেবুকে "কাগজী" বলে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

লেবুর বাহিরের পৃষ্ঠ এবং প্রস্থচ্ছেদ

লেবুর উৎপত্তি অজানা, যদিও লেবু আসামে (উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি অঞ্চল), উত্তর বার্মা বা চীনে প্রথম জন্মেছিল বলে ধারণা করা হয়।[১] একটি জিনোমিক গবেষণায়, এটি টক কমলা ও সাইট্রনের মধ্যে একটি সংকর বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।[২] [৩]

খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর পরে, প্রাচীন রোমের সময়কালে, দক্ষিণ ইতালির নিকট হয়ে লেবু ইউরোপে প্রবেশ করে। [১] তবে সেগুলো ব্যাপকভাবে চাষ করা হত না। পরে পারস্য, তারপরে ইরাকমিশরে ৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে লেবুর প্রচলন করা হয়। সাহিত্যে সর্বপ্রথম লেবুর বর্ণনা পাওয়া যায় আরবি ভাষায় লিখিত একটি প্রবন্ধে। ইসলামের প্রাথমিক যুগের বাগানগুলোতে লেবু গাছকে শোভাবর্ধক গাছ হিসেবে লাগানো হত। ১০০০-১১৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এটি আরব ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। স্পেনের আন্দালুসিয়ায় লেবু ও বাতাবিলেবু গাছের চাষ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ ইবনে আল-আওওয়ামের দ্বাদশ শতাব্দীর কৃষি বিষয়ক বই বুক অন এগ্রিকালচারে প্রকাশিত হয়েছে। [৪]

পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপের জেনোভায় প্রথম লেবুর পর্যাপ্ত চাষ শুরু হয়। পরে ১৪৯৩ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস হিস্প্যানিওলায় তাঁর ভ্রমণে লেবুর বীজ নিয়ে আসলে আমেরিকায় লেবুর প্রচলন ঘটে। স্প্যানিশ বিজয় পুরো বিশ্ব জুড়ে লেবুর বীজ ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছিল। এটি মূলত একটি শোভাবর্ধক উদ্ভিদ এবং ওষুধের জন্য ব্যবহৃত হত। [১] উনিশ শতকে ফ্লোরিডা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় ক্রমবর্ধমানভাবে লেবু রোপণ করা হয়।

১৭৪৭ সালে জেমস লিন্ডের স্কার্ভিতে ভুগতে থাকা নাবিকদের উপর করা গবেষণাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ডায়েটে লেবুর রস যুক্ত করা হয়, যদিও ভিটামিন সি তখনও ডায়েটের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হিসাবে পরিচিত ছিল না। [১] [৫]

মধ্যপ্রাচ্য lemon (লেবু) শব্দটির উৎস হতে পারে। [১] শব্দটি আরবি laymūn বা līmūn এবং ফার্সি līmūn থেকে প্রাচীন ফরাসি ভাষায় limon হয়ে তারপর ইতালিয়ান limone হয়;এটি সাইট্রাস জাতীয় ফলের জাতিগত নাম, যার একটি একজাতীয় সংস্কৃত নাম (nimbu, "লেবু ")। [৬]

বৈচিত্র্য[সম্পাদনা]

ফ্রেঞ্জ ইউজেন কোহলারের আঁকা লেবুর শ্রেনিবিন্যাসগত বিস্তারিত চিত্র।

'বনি ব্রাই' জাতের লেবু , আবদ্ধ মসৃণ, পাতলা খোসাযুক্ত এবং বীজবিহীন। [৭] এগুলির বেশিরভাগই আমেরিকার সান দিয়েগো কাউন্টিতে জন্মে। [৮]

'ইউরেকা' জাতটি বছরব্যাপী এবং প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত পায়। এটি সুপারমার্কেটে প্রচলিত লেবু, [৯] সারা বছর জুড়ে একসাথে ফল ও ফুল উৎপাদন হওয়ার কারণে এটি 'ফোর সিজনস' ( কোয়াটর সায়সনস) নামেও পরিচিত। বাসাবাড়িতেও এই জাতের লেবুর গাছ পাওয়া যায়। [১০] বৈচিত্র্যময় সবুজ এবং হলুদ রঙের খোসার গোলাপী শাঁসের ইউরেকা জাতের লেবুও আছে। [১১]

লিসবন লেবুর সাথে ইউরেকা এবং সুপারমার্কেটে অন্যান্য প্রচলিত লেবুর খুব মিল। এটি ইউরেকা জাতটির চেয়ে মসৃণ, খোসা পাতলা এবং এর বীজ কম থাকে বা থাকে না। সাধারণত এটিতে ইউরেকা জাতটির চেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। [১২] [১৩]

'ফেমিনেলো সেন্ট টেরেসা' বা 'সোরেরেন্টো' [১৪] হল ইতালির স্থানীয় লেবুর একটি জাত। এই লেবুর খোসার উপরের অংশ তেলে ভরপুর। ঐতিহ্যগতভাবে এই জাতটি লিমোনসেলো তৈরিতে ব্যবহৃত ।

'ইয়েন বেন' হল লেবুর একটি অস্ট্রেলিয়ান জাত। [১৫]

লেবু,কাঁচা,খোসা ছাড়া
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি১২১ কিজু (২৯ kcal)
৯.৩২ g
চিনি২.৫ g
খাদ্য আঁশ২.৮ g
০.৩ g
১.১ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
থায়ামিন (বি)
৩%
০.০৪ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
২%
০.০২ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
১%
০.১ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
৪%
০.১৯ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৬%
০.০৮ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
৩%
১১ μg
কোলিন
১%
৫.১ মিগ্রা
ভিটামিন সি
৬৪%
৫৩ মিগ্রা
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
৩%
২৬ মিগ্রা
লৌহ
৫%
০.৬ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
২%
৮ মিগ্রা
ম্যাঙ্গানিজ
১%
০.০৩ মিগ্রা
ফসফরাস
২%
১৬ মিগ্রা
পটাশিয়াম
৩%
১৩৮ মিগ্রা
জিংক
১%
০.০৬ মিগ্রা

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

পুষ্টি এবং ফাইটোকেমিক্যালস[সম্পাদনা]

লেবু ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস, যা ১০০ গ্রাম রেফারেন্স পরিমাণে (টেবিল) দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ৬৪% সরবরাহ করে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলি পরিমাণে কম থাকে।

লেবুতে পলিফেনলস, টের্পেনস এবং ট্যানিন সহ অসংখ্য ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। [১৬] লেবুর রসে বাতাবিলেবুর রসের চেয়ে কিছুটা বেশি সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে (প্রায় ৪৭ গ্রাম/লিটার)। লেবুর রসে জাম্বুরার রসের প্রায় দ্বিগুণ এবং কমলার রসের প্রায় পাঁচগুণ বেশি সাইট্রিক এসিড পাওয়া । [১৭]

রন্ধনসম্পর্কীয় ব্যবহার[সম্পাদনা]

লেবুর রস, বহিরাবরণ এবং খোসা বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয়তে ব্যবহৃত হয়। মারমালেড, লেবু দই এবং লেবু লিকার তৈরি করতে লেবুর সব অংশ ব্যবহৃত হয়। লেবু টুকরা এবং লেবুর খোসা খাবার এবং পানীয়ের গার্নিশ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। লেবুর খোসার উপরের অংশ বা ফলের খোসার উপরের অংশ ঝাঁঝরি করে পাওয়া অংশ বেকড করা পণ্য, পুডিং, ভাত এবং অন্যান্য খাবারের স্বাদ যোগ করতে ব্যবহৃত হয়।

রস[সম্পাদনা]

লেবুর রস শরবত, কোমল পানীয় এবং ককটেল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি মাছ মেরিনেড করার জন্য ব্যবহৃত হয়,এটির অ্যাসিড মাছের অ্যামাইনো যৌগগুলোকে অনুদ্বায়ী অ্যামোনিয়াম লবণে রূপান্তর করার মাধ্যমে নিরপেক্ষ করে। এটির অ্যাসিড মাংসের শক্ত কোলাজেন ফাইবারকে আংশিক হাইড্রোলাইজ করে এটিকে কোমল করে তোলে। [১৮] যুক্তরাজ্যে, বিশেষত শ্রোভ মঙ্গলবারে, প্যানকেকে প্রায়শই লেবুর রস ব্যবহার করা হয়, ।

লেবুর রস কিছু নির্দিষ্ট খাবার যেগুলো কেটে রাখলে বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে রাসায়নিকভাবে যুক্ত হয় এবং বাদামী হয়ে যায় (এনজাইমেটিক ব্রাউনিং ) সেগুলোর ক্ষেত্রে স্বল্প-মেয়াদী প্রিজারভেটিভ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় যেমন: আপেল, কলা এবং অ্যাভোকাডো। কারণ এর অ্যাসিড এনজাইমগুলোর কার্যকারিতা নষ্ট করে ।

খোসা[সম্পাদনা]

মরোক্কোতে লেবুগুলি বয়াম বা নুনের পিপায় সংরক্ষণ করা হয়। লবণ খোসা ভেদ করে, সেটাকে নরম করে এবং তাদের ঠিক রাখে করে যাতে তারা প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থায়ী হয়। [১৯] সংরক্ষিত লেবুগুলো বিভিন্ন ধরনের খাবারে ব্যবহৃত হয়। সিসিলিয়ান, ইতালিয়ান, গ্রীক এবং ফরাসি খাবারগুলিতেও সংরক্ষণ করা লেবু পাওয়া যেতে পারে।

পেকটিন তৈরিতেও খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।পেকটিন হল একধরনের পলিস্যাকারাইড যা জেলিং এজেন্ট এবং স্ট্যাবিলাইজার হিসাবে খাবার বা অন্যান্য পণ্যে ব্যবহৃত হয়। [২০]

তেল[সম্পাদনা]

লেবুর খোসার তেলযুক্ত কোষ থেকে লেবুর তেল বের করা হয়। একটি মেশিনে কোষগুলিকে ভাঙা হয় এবং সব তেল বের করে আনতে পানির স্প্রে ব্যবহার করা হয় ।সেন্ট্রিফিউগেশন এর মাধ্যমে তেল জলের মিশ্রণটি ফিল্টার করে তেল আলাদা করা হয়। [২১]

পাতা[সম্পাদনা]

লেবু গাছের পাতা চা তৈরি করতে এবং রান্না করা মাংস ও সামুদ্রিক খাবার প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য ব্যবহার[সম্পাদনা]

শিল্প[সম্পাদনা]

গাঁজন- ভিত্তিক প্রক্রিয়াগুলো উন্নত হওয়ার আগে লেবু সাইট্রিক অ্যাসিডের প্রাথমিক বাণিজ্যিক উৎস ছিল। [২২]

সুগন্ধ[সম্পাদনা]

লেবুর তেল অ্যারোমাথেরাপিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। লেবুর তেলের সুগন্ধ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না, [২৩] তবে উদ্বেগ মুক্ত করতে অবদান রাখতে পারে। [২৪]

অন্যান্য[সম্পাদনা]

এমন একটি শিক্ষামূলক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায রয়েছে যেখানে একটি লেবুতে তড়িৎদ্বার সংযুক্ত করে সেটিকে বিদ্যুত উৎপাদন করার জন্য ব্যাটারি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যদিও খুব কম শক্তি উৎপন্ন হয়,তবে বেশ কয়েকটি লেবু ব্যাটারি হিসেবে কাজ করে একটি ছোট ডিজিটাল ঘড়িকে চালু রাখতে পারে। [২৫] এই পরীক্ষাগুলো অন্যান্য ফল এবং শাকসবজির ক্ষেত্রেও কাজ করে।

তাপ প্রদান করে লেবুর রসকে সাধারণ অদৃশ্য কালি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। [২৬]

লেবুর রস চুলের স্বর্ণাভ রঙ বাড়াতে ব্যবহার করা যায়।আর্দ্রতাযুক্ত চুল সূর্যের আলোতে প্রকাশিত হওয়ার পর এটি প্রাকৃতিকভাবে রঙটি লক্ষণীয় করে তোলে। সাইট্রিক অ্যাসিড ব্লিচ হিসাবে কাজ করার কারণে এটি ঘটে। [২৭] [২৮]

উদ্যানপালনবিদ্যা[সম্পাদনা]

লেবুর বেড়ে উঠতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ৭ °সে (৪৫ °ফা) থাকা প্রয়োজন, তাই তারা সারাবছর উষ্ণ জলবায়ুতে শক্ত থাকে না, তবে তারা পরিণত হওয়ার সাথে সাথে শক্ত হয়ে ওঠে। [২৯] সাইট্রাস জাতীয় উদ্ভিদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে লম্বা ডালটি উপর থেকে কেটে কেটে গাছটিকে ঝোপের মতো বৃদ্ধি পেতে দিতে হয় এবং অন্তত বেশি লতাপাতা যুক্ত ডালগুলো ছাঁটাই করতে হয়। পুরো গ্রীষ্ম জুড়ে সবচেয়ে সতেজভাবে বর্ধনশীল অংশগুলোর আগা ভেঙে দিলে তা গাছটি অনেক বেশি আচ্ছাদিত হয়ে বেড়ে ওঠানিশ্চিত করে। যেহেতু পরিপক্ব গাছে অযাচিত, দ্রুত বর্ধনশীল ছোট ছোট কচি ডাল বেড়ে উঠতে পারে ("ওয়াটার শুট" নামেও পরিচিত), তাই সেগুলো গাছের নীচের বা মাঝের মূল শাখা থেকে তুলে ফেলা হয়।

রঙ-ভিত্তিক সহানুভূতিমূলক যাদুর ফলস্বরূপ লেবু গাছের কাছে প্রস্রাব করার প্রথাটি [৩০] [৩১] [৩২] চালু হয়ে পারে থাকতে পারে।

যুক্তরাজ্যের "মায়ার" [৩৩] এবং "ভ্যারিগাটা" [৩৪] জাত দুটির চাষাবাদে রয়্যাল হর্টিকালচারাল সোসাইটির অ্যাওয়ার্ড গার্ডেন মেরিট অর্জিত হয়েছে (২০১৭ সালে নিশ্চিতকৃত )। [৩৫]

উৎপাদন[সম্পাদনা]

লেবুর উৎপাদন, ২০১৮

(লক্ষ টন)

দেশ
২০১৮
 ভারত
৩১
 মেক্সিকো
২৫
 গণচীন
২৫
 আর্জেন্টিনা
২০
 ব্রাজিল
১৫
 তুরস্ক
১১
বিশ্বে
১৯৪

২০১৮ সালে, বিশ্বে লেবুর উৎপাদন ( প্রতিবেদনের জন্য বাতাবিলেবুর সাথে একত্রে হিসাব করে) ছিল ১৯.৪ মিলিয়ন টন[৩৬] শীর্ষ উৎপাদক ছিল ভারত, মেক্সিকো, চীন, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং তুরস্ক; যারা সম্মিলিতভাবে বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের ৬৫% উৎপাদন করেছিল। [৩৬]

একজাতীয় ফল[সম্পাদনা]

অনেক গাছের স্বাদ বা গন্ধ লেবুর মতো হয়ে থাকে।

  • বাতাবিলেবু হল আরেকটি প্রচলিত টক সাইট্রাসজাতীয় ফল, লেবুর মতো একইভাবে ব্যবহার করা হয়।
  • কাফির লেবুর পাতা: পূর্ব এশিয়ার প্রচলিত খাবার
  • তুলসীর নির্দিষ্ট কিছু জাত
  • সুমাক ফল, ইউরোপীয়দের লেবু সম্পর্কে জানার অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হত
  • সাইম্বোপোগন (লেমনগ্রাস)
  • লেমন বাল্ম, ল্যামিয়াসি পরিবারের পুদিনার মতো বহুবর্ষজীবী ভেষজ উদ্ভিদ
  • সুগন্ধি জেরানিয়ামের দুটি প্রকারভেদ: পেলের্গোনিয়াম ক্রিসপাম (লেমন জেরানিয়াম) এবং পেরারগনিয়ামমেলিসিনাম (লেমন বাল্ম)
  • লেবুর সুগন্ধি পত্রযুক্ত গুল্ম [৩৭]
  • লেবু গুল্ম
  • পুদিনার নির্দিষ্ট কিছু জাত
  • ম্যাগনোলিয়া গ্র্যান্ডিফ্লোরা গাছের ফুল

অন্যান্য যেসব সাইট্রাসকে 'লেবু' বলা হয়[সম্পাদনা]

  • চ্যাপ্টা লেবু,এটি মান্ডারিন একটি সংকর জাত
  • মায়ার লেবু, একটি সিট্রন এবং ম্যান্ডারিন / পোমেলোর মধ্যে সংকরায়নে প্রাপ্ত এক ধরনের লেবু যা টক বা মিষ্টি কমলা থেকে আলাদা। [৩৮] এটির নামকরণ ফ্রাঙ্ক এন.মায়ারের নামানুসারে করা হয়, তিনিই এটি প্রথম ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবর্তন করেছিলেন। মায়ার লেবু পাতলা চামড়াযুক্ত ও লিসবন এবং ইউরেকা লেবুগুলির তুলনায় কিছুটা কম অ্যাসিডিক। শিপিংয়ের সময় মায়ার লেবুর ক্ষেত্রে বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয় না। মায়ার লেবু পরিপক্ব হলে প্রায়শই হলুদ-কমলা রঙের হয়। তারা কিছুটা বেশি হিম-সহনশীল।
  • পন্ডেরোসা লেবু, এই জাতের লেবু আসল লেবুর চেয়ে বেশি শীত সংবেদনশীল; ফলগুলো ঘন চামড়াযুক্ত এবং খুব বড়। জিনগত বিশ্লেষণে এটিকে সিট্রন এবং পোমেলোর একটি জটিল সংকর হিসাবে দেখা যায়।
  • রুক্ষ লেবু, এটি সিট্রন-ম্যান্ডারিন এর সংকরায়নে তৈরি, শীত-সহনশীল এবং প্রায়শই সাইট্রাসের কলম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • মিষ্টি লেবু বা মিষ্টি বাতাবিলেবু হল একটি মিশ্র শ্রেণী, যাতে রয়েছে লুমিয়া (নাশপাতি লেবু), লিমেটা, এবং ফিলিস্তিনি মিষ্টি লেবু । তাদের মধ্যে জাফা লেবুও আছে যেটি পোমেলো-সিট্রন এর একটি সংকর জাত।
  • ভোলকামার লেবু, রুক্ষ লেবুর মতোই তবে এটি সিট্রন-মান্ডারিন এর সংকর।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

জ্যাকব ফপ্পেন ভ্যান এস: লাইফ স্টিল উইথ পিচার

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Julia F. Morton (১৯৮৭)। "Lemon in Fruits of Warm Climates"। Purdue University। পৃষ্ঠা 160–168। 
  2. Gulsen, O.; M. L. Roose (২০০১)। "Lemons: Diversity and Relationships with Selected Citrus Genotypes as Measured with Nuclear Genome Markers": 309–317। ডিওআই:10.21273/JASHS.126.3.309অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  3. Genetic origin of cultivated citrus determined: Researchers find evidence of origins of orange, lime, lemon, grapefruit, other citrus species", Science Daily, January 26, 2011 (Retrieved February 10, 2017).
  4. Ibn al-'Awwam, Yaḥyá (১৮৬৪)। Le livre de l'agriculture d'Ibn-al-Awam (kitab-al-felahah) (ফরাসি ভাষায়)। A. Franck। পৃষ্ঠা 300–301 (ch. 7 – Article 32)। ওসিএলসি 780050566  (pp. 300–301 (Article XXXII)
  5. James Lind (১৭৫৭)। A treatise on the scurvy. Second edition.। A. Millar। 
  6. Douglas Harper। "Online Etymology Dictionary" 
  7. Spalding, William A. (১৮৮৫)। The orange: its culture in California। Press and Horticulturist Steam Print। পৃষ্ঠা 88। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২, ২০১২ 
  8. Carque, Otto (২০০৬)। Rational Diet: An Advanced Treatise on the Food QuestionKessinger Publishing। পৃষ্ঠা 195। আইএসবিএন 978-1-4286-4244-7। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২, ২০১২ 
  9. "Complete List of Four Winds Dwarf Citrus Varieties"। Fourwindsgrowers.com। সংগ্রহের তারিখ জুন ৬, ২০১০ 
  10. Buchan, Ursula (জানুয়ারি ২২, ২০০৫)। "Kitchen garden: lemon tree"The Daily Telegraph। London। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৪, ২০১৪ 
  11. Vaiegated pink ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে at the Citrus Variety Collection.
  12. "frostlisbon"citrusvariety.ucr.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  13. says, 3 Easy Tips: How to Plant Lemon Seeds at Home Indoors or Outdoors (২০০৭-০২-০১)। "Eureka Lemon and Lisbon Lemon: Kitchen Basics"Harvest to Table (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৭ 
  14. "Taste of a thousand lemons"Los Angeles Times। সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২১, ২০১১ 
  15. "New Zealand Citrus"। ceventura.ucdavis.edu। জুন ১০, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৩, ২০১০ 
  16. Rauf A, Uddin G, Ali J (২০১৪)। "Phytochemical analysis and radical scavenging profile of juices of Citrus sinensis, Citrus anrantifolia, and Citrus limonum": 5। ডিওআই:10.1186/2191-2858-4-5পিএমআইডি 25024932পিএমসি 4091952অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  17. Penniston KL, Nakada SY, Holmes RP, Assimos DG (২০০৮)। "Quantitative Assessment of Citric Acid in Lemon Juice, Lime Juice, and Commercially-Available Fruit Juice Products": 567–570। ডিওআই:10.1089/end.2007.0304পিএমআইডি 18290732পিএমসি 2637791অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  18. "Fruit enzymes tenderise meat"Science Learning Hub (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৪ 
  19. Moskin, Julia। "Preserved Lemons Recipe"NYT Cooking (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১৪ 
  20. Dimopoulou, Maria; Alba, Katerina (২০১৯-১১-০১)। "Pectin recovery and characterization from lemon juice waste streams": 6191–6198। আইএসএসএন 1097-0010ডিওআই:10.1002/jsfa.9891পিএমআইডি 31250441 
  21. Tranchida, Peter Quinto (২০১০), "Advanced Analytical Techniques for the Analysis of Citrus Oils", Citrus Oils, CRC Press, পৃষ্ঠা 482–516, আইএসবিএন 978-1-4398-0029-4, ডিওআই:10.1201/b10314-16 
  22. M. Hofrichter (২০১০)। Industrial Applications। Springer। পৃষ্ঠা 224। আইএসবিএন 978-3-642-11458-8 
  23. Kiecolt-Glaser, J. K.; Graham, J. E. (২০০৮)। "Olfactory influences on mood and autonomic, endocrine, and immune function": 328–39। ডিওআই:10.1016/j.psyneuen.2007.11.015পিএমআইডি 18178322পিএমসি 2278291অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  24. Cooke, B; Ernst, E (২০০০)। "Aromatherapy: A systematic review": 493–6। পিএমআইডি 10962794পিএমসি 1313734অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  25. "Lemon Power"। California Energy Commission। মে ১৯, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৭, ২০১৪ 
  26. Mirsky, Steve (এপ্রিল ২০, ২০১০)। "Invisible Ink and More: The Science of Spying in the Revolutionary War"Scientific American। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০১৬ 
  27. "Here's how to lighten your hair at home with lemon juice (it actually works)"Glamour UK। Bianca London। ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টে ২০২০ 
  28. "Does lemon juice really lighten hair?"। Klorane Laboratories। ২০২০। ২২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টে ২০২০ 
  29. "Citrus"। Royal Horticultural Society। ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৭ 
  30. Capomolla, Fabian; Pember, Matthew (২০১১)। "Lemon"। The Little Veggie Patch Co.। Plum। পৃষ্ঠা 129। আইএসবিএন 9781742628417। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৭ 
  31. Capomolla, Fabian (২০১৭)। Growing Food the Italian Way। The Hungry Gardener। Plum। পৃষ্ঠা 168। আইএসবিএন 9781760554903। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৭ 
  32. The World's Fastest Indian - "Munro was never known to actually urinate on his lemon tree; film director Roger Donaldson added that detail as a tribute to his own father, who did."
  33. "RHS Plantfinder - Citrus × limon 'Meyer'"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ 
  34. "RHS Plantfinder - Citrus × limon 'Variegata'"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ 
  35. "AGM Plants - Ornamental" (পিডিএফ)। Royal Horticultural Society। জুলাই ২০১৭। পৃষ্ঠা 20। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ 
  36. "World production of lemons and limes in 2018; Crops/Regions/World/Production Quantity from pick lists"। Food and Agriculture Organization of the United Nations, Statistics Division (FAOSTAT)। ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  37. Lisa Baker Morgan; Ann McCormick (১৫ জানুয়ারি ২০১৫)। Homegrown Herb Garden: A Guide to Growing and Culinary Uses। Quarry Books। পৃষ্ঠা 148–। আইএসবিএন 978-1-59253-982-6 
  38. Curk, Franck; Ollitrault, Frédérique (২০১৬)। "Phylogenetic origin of limes and lemons revealed by cytoplasmic and nuclear markers": 565–583। ডিওআই:10.1093/aob/mcw005পিএমআইডি 26944784পিএমসি 4817432অবাধে প্রবেশযোগ্য 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]