নেত্রকোণা সরকারি কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নেত্রকোণা সরকারি কলেজ
নেত্রকোণা সরকারি কলেজ.png
নীতিবাক্যজ্ঞানই শক্তির উৎস
ধরনসরকারি কলেজ
স্থাপিত১৯৪৯
অধ্যক্ষপ্রফেসর নুরুল বাসেত [১]
ঠিকানা
সাতপাই
, ,
শিক্ষাঙ্গনউশহর
সংক্ষিপ্ত নামনে.স.ক
অধিভুক্তিজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ময়মনসিংহ
ওয়েবসাইটওয়েবসাইট

নেত্রকোণা সরকারি কলেজ সাতপাই নেত্রকোণা জেলা বাংলাদেশের একটি সরকারি কলেজ । এই কলেজটি নেত্রকোণা কলেজ নামে পরিচিত।[২] আধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ শ্রেণীকক্ষ, গবেষণাগার, গ্রন্থাগার এবং সাধারণ কক্ষ রয়েছে। কলেজ রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত ফলে কলেজটি উপজেলার অন্যতম কলেজের স্বীকৃতি পেয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মহুয়া মলুয়ার দেশে সবুজে ঘেরা নেত্রকোণা সরকারী কলেজ, নেত্রকোণা জেলার একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশবিভাগ পূর্বকালে এই জেলায় আধুনিক শিক্ষার সূচনা হলেও ব্রিটিশ শাসন আমলে এখানে কোন কলেজ প্রতিষ্ঠা যায়নি। ফলে বিদ্যমান স্কুল গুলো থেকে প্রতিবছর অসংখ্য মেধাবী, প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রী বেরিয়ে এলেও বিত্তবান পরিবারের সন্তানেরাই ময়মনসিংহ, ঢাকা বা কলকাতায় গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেত। আর এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হত অসংখ্য গরীব মেধাবী ছাত্রছাত্রী। এ অবস্থায় এলাকার তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। দেশ বিভাগোত্তর কালে নেত্রকোণা মহকুমা প্রশাসক জনাব গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ সিএসপি এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন জনাব আছান আলী এমএলএ , জনাব আকবর আলী এমএলএ, এ. কে . ফজলুল হক, প্রফুল চৌধুরী, ডাঃ ছমির উদ্দিন ও বীরেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ( সন্দেশ বাবু)। উদ্যোক্তাদের প্রথম সভাতেই তৎকালীন রৌহার জমিদার বীরেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ( সন্দেশ বাবু) সাতপাইয়ের যে স্থানে কলেজটির অবস্থান , সে জমিটুকু কলেজের জন্য দান করেন। পরবর্তীকালে নিজস্ব ভূমিতে কলেজের অবকাঠামোর নির্মান কাজ শুরু হলে আরো কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি কলেজের জন্য ভুমি দান করেন। এ ছাড়া নির্মাণকাজে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেন নেত্রকোণা অঞ্চলের কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষ।সর্বাত্মক সরকারী সহযোগিতা প্রদান করেন মহকুমা প্রশাসক জনাব গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ সিএসপি। পরবর্তীতে জনাব খানে আলম খান মহকুমা প্রশাসক হিসাবে নেত্রকোণায় যোগদান করলে তার নিরলস প্রচেষ্টায় কলেজের উত্তরোত্তর বিকাশ ঘটে। ১৯৪৯ সালে উদ্যোক্তাদের প্রথম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঐ বছরই ছাত্র ভর্তি শুরু হয়। নাম করণ করা হয় ‘‘নেত্রকোণা কলেজ’’। কলেজর অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন জনাব প্রিয়ভূষন বণিক। কলেজর প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হত দত্ত হাই স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে। ক্লাস অনুষ্ঠিত হত স্থানীয় আঞ্জুমান হাইস্কুল ও ইউ.সি. পাবলিক হলে। পরবর্তীকালে ১৯৫৪ সালে বর্তমান স্থানে নিজস্ব গৃহে কলেজ স্থানান্তরিত হয়। অধ্যক্ষ সহ ৭ জন শিক্ষক, ১ জন কেরানি, ৩ জন পিয়ন ও স্বল্প সংখ্যক ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করে নেত্রকোণা কলেজ।[৩] ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে মানবিক ও বাণিজ্য শাখা ছাড়া অন্য কোন শাখা ছিল না। ১৯৬০-৬১ সালে বিজ্ঞান শাখা খোলা হয়। ১৯৬৩ সালের শেষের দিকে কলেজটিকে ডিগ্রী কলেজে উন্নীত করা হয়। ১৯৬৫ সালে বি.কম এবং ১৯৬৮ সালে বি.এস.সি কোর্স খোলা হয়। ১৯৮০ সালে কলেজটিকে সরকারীকরণ করা হয়। নাম করণ করা হয়‘ নেত্রকোণা সরকারি কলেজ’।[৪]

প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]

নেত্রকোণা সরকারি কলেজ সরকারিকরণের পর প্রথম অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন জনাব তছদ্দক আহমাদ ( টি. আহমাদ) । ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষে বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয় এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে চালু করা হয় মাস্টার্স কোর্স। অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করার ক্ষেত্রে তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আতাহার আলী দেওয়ান , প্রফেসর মজিবুর রহমান এবং প্রফেসর জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া’র ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে কলেজে দশটি বিষয়ে অনার্স ও ৯টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। প্রায় আট হাজার ছাত্রছাত্রী ও ৬৯ শিক্ষকপদ নিয়ে কলেজের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্বাধীনতাযুদ্ধ সহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের সুযোগ ছাত্র-শিক্ষকগণের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। প্রকৃত অর্থে নেত্রকোণা সরকারি কলেজই হল নেত্রকোণার শিক্ষা-সংস্কৃতি র্চ্চার এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা তথা নেত্রকোণার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যোবোধের প্রতীক। নেত্রকোণার শিক্ষানুরাগী বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের সমবেত ও সামগ্রিক প্রচেষ্টায় কলেজটি যেমন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, আজও তাদের সার্বিক সহযোগিতায় কলেজটি উত্তরোত্তর উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি সাধিত হচ্ছে।

অনুষদ সমূহ[সম্পাদনা]

সরকারি কলেজে উইকিপিডিয়া শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীবৃন্দ

ডিগ্রী পাশ

  • বি. এ,
  • বি. এস. এস,
  • বি. এসসি,
  • বি. বি. এস,

স্নাতক

  • বাংলা
  • ইংরেজি
  • ইতিহাস
  • ইসলামের ইতিহাস
  • পিলোসপি
  • সামাজিক বিজ্ঞান
  • অর্থনীতি
  • হিসাববিজ্ঞান
  • ব্যবস্থাপনা
  • ফিলোসপি
  • কেমেস্ট্রির
  • বায়োলজি
  • উদ্ভিদ বিজ্ঞান
  • জোলজি
  • গণিত

স্নাতকোত্তর

  • বাংলা
  • ইতিহাস
  • ইসলামের ইতিহাস
  • দর্শন
  • রাষ্ট্র বিজ্ঞান
  • অর্থনীতি
  • হিসাববিজ্ঞান
  • ব্যবস্থাপনা
  • রসায়ন
  • উদ্ভিদ বিজ্ঞান
  • প্রাণিবিদ্য
  • গণিত

অর্জন[সম্পাদনা]

প্রতিবছর এই কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যোগ্যতার প্রমাণ রাখছে। এছাড়া অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্সেও ভাল ফলাফল করছে।

ভবিষৎ পরিকল্পনা[সম্পাদনা]

আরও ৫টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু করা। শিক্ষকদের পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]

নেত্রকোনায় অবস্থিত সরকারি কলেজের বিভিন্ন সময়ের শিক্ষার্থী, যারা স্বীয় ক্ষেত্রে সফলতার পরিচয় দিয়ে উল্লেখযোগ্যতা অর্জন করেছেন তাঁদের ভেতরে রয়েছেন ।

আব্দুল খালেক (নেত্রকোনার রাজনীতিবিদ):১৯৭০'এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক। নেত্রকোনা মহুকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং নেত্রকোনা সরকারি কলেজের প্রথম জিএস ছিলেন।

,আশরাফ আলী খান খসরু: রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সংসদ সদস্য এবং মাননীয় প্রতিমন্ত্রী,গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। আশরাফ উদ্দিন খান: রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. NETRAKONA GOVT. COLLEGE - 4801 এনইউ ইনফো
  2. নেত্রকোণা জেলা বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন
  3. "২১৩ শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক!"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  4. নেত্রকোণা সরকারী কলেজ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]