এশিয়া
| আয়তন | ৪,৪৫,৭৯,০০০ কিমি২ (১,৭২,১২,০০০ মা২) (১ম)[১] |
|---|---|
| জনসংখ্যা | ৪,৫৬০,৬৬৭,১০৮ (২০১৮; ১ম)[২][৩] |
| জনঘনত্ব | ১০০/কিমি২ (২৬০/বর্গ মাইল) |
| জিডিপি (পিপিপি) | $৯৪.৬৬ ট্রিলিয়ন (২০২৫ প্রাক্কলন; ১ম)[৪] |
| জিডিপি (মনোনীত) | $৪১.০২ ট্রিলিয়ন (২০২৫ অনুমান; ১ম)[৫] |
| মাথাপিছু জিডিপি | $৯,১৮০ (২০২৫ অনুমান; ৪র্থ)[৬] |
| ধর্ম |
|
| জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | এশীয় |
| দেশসমূহ |
|
| অধীনস্থ অঞ্চলসমূহ | |
| অস্বীকৃত অঞ্চলসমূহ | |
| ভাষাসমূহ | ভাষার তালিকা |
| সময় অঞ্চলসমূহ | ইউটিসি+০২:০০ থেকে ইউটিসি+১২:০০ |
| ইন্টারনেট টিএলডি | .asia |
| বৃহত্তম শহরসমূহ | |
| ইউএন এম৪৯ কোড | 142 – এশিয়া001 – বিশ্ব |
এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম ও সর্বাধিক জনবহুল মহাদেশ। প্রাথমিকভাবে এটি পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি পৃথীবী পৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষের এই আবাসভূমিতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করে।[৮] ঐতিহাসিক কাল থেকেই এই মহাদেশে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বসবাস করে আসছে। আধুনিক যুগেও এশিয়ার জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উচ্চ। বিংশ শতাব্দীতে সামগ্রিক বিশ্ব জনসংখ্যার মতোই এশিয়ার জনসংখ্যাও প্রায় চারগুণ বেড়েছে।[৯]
ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা না থাকায় এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়। ভৌগলিকভাবে ইউরোপ ও এশিয়া একটি অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন করে, যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী ও ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা, কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে।[১০][১১] এটি পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণ সাগর ও ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কিমি চওড়া; অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কিমি
১ম খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চীন ও ভারত সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে। মানবসভ্যতার অধিকাংশ ইতিহাসজুড়ে চীন একটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি ছিল। ১৫০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ মাথাপিছু জিডিপি তাদেরই ছিল।[১২][১৩][১৪] সিল্ক রুট এশিয়ার অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে প্রধান পূর্ব–পশ্চিম বাণিজ্য পথ হয়ে ওঠে; পাশাপাশি মালাক্কা প্রণালী ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ। ২০শ শতকে এশিয়া শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে, তবে পরবর্তী সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে।[১৫] এশিয়াই বিশ্বের অধিকাংশ প্রধান ধর্মের জন্মস্থান; যেমন বৌদ্ধধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, কনফুসীয়বাদ, হিন্দুধর্ম, ইসলাম, জৈনধর্ম, ইহুদিধর্ম, শিখধর্ম, তাওবাদ, জরথুস্ত্রবাদ এবং আরও অনেক ধর্ম।
এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জাতিগত গোষ্ঠী, সংস্কৃতি, পরিবেশ, অর্থনীতি, ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈচিত্র্য রয়েছে। এখানকার আবহাওয়াও বহুরকম; দক্ষিণের নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে শুরু করে পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার উষ্ণ মরুভূমি অঞ্চল, পূর্ব ও অভ্যন্তরীণ মহাদেশীয় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল, এবং উত্তর এশিয়ার বিস্তীর্ণ উপ-আর্কটিক ও মেরু অঞ্চল পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের জলবায়ুর মিশ্রণ রয়েছে এশিয়া মহাদেশে।
সংজ্ঞা এবং সীমানা
[সম্পাদনা]গ্রিক তিন-মহাদেশ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]


এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সীমান্ত ঐতিহাসিকভাবে কেবল ইউরোপীয়দের দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে। পুরাতন বিশ্বকে আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপ—এই তিন ভাগে বিভক্ত করার প্রথা খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকেই চালু। আনাক্সিমান্দ্রোস ও হেকাটিয়াসের মতো গ্রিক ভূগোলবিদদের দ্বারা এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৬] প্রাচীন গ্রিকরা এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য করতে এবং সীমানা নির্ধারণ করতে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন এজিয়ান সাগর, দার্দানেলেস প্রণালি, মার্মারা সাগর, বসফরাস প্রণালি, কৃষ্ণ সাগর, কের্চ প্রণালি এবং আজভ সাগর ব্যবহার করত। কেউ কেউ নীল নদকে এশিয়া ও আফ্রিকার সীমানা মনে করলেও, অনেক ভূগোলবিদ লোহিত সাগরকেই আরও উপযুক্ত সীমানা বলে ধরে নেন।[১৭] নীল নদ লোহিত সাগরের মধ্যে দারিউসের খাল এই ধারণায় যথেষ্ট প্রকরণ সৃষ্টি করে। ১৫শ শতকের দিকে নীল নদ ও লোহিত সাগর ধীরে ধীরে আফ্রিকা ও এশিয়ার সীমারেখা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।[১৭]
এশিয়া–ইউরোপ সীমানা
[সম্পাদনা]আনাক্সিমান্দ্রোস ফাসিস নদীকে (বর্তমানে রিওনি নদী) ককেশাস অঞ্চলের জর্জিয়ায় এশিয়া ও ইউরোপের সীমানা হিসেবে নির্ধারণ করেন। এই নদী কৃষ্ণ সাগর উপকূলের পোতি থেকে শুরু হয়ে সুরামি পাস অতিক্রম করে কুরা নদী পর্যন্ত গিয়ে কাস্পিয়ান সাগরে পতিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকেও হেরোডোটাস এই ধারণা অনুসরণ করেন।[১৮] পরে হেলেনীয় যুগে এই সীমা পরিবর্তিত হয়ে টানাইস নদী (বর্তমান দোন নদী) ইউরোপ ও এশিয়ার সীমানা হিসেবে স্বীকৃত হয়। পোসিডোনিয়াস, স্ট্রাবো ও টলেমির মতো রোমান যুগের পণ্ডিতরাও এই মতই গ্রহণ করেন।[১৯]
রাশিয়ার জার পিটার দ্য গ্রেট পশ্চিমে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সুইডেন, পূর্বাঞ্চলে উসমানীয় সাম্রাজ্যকে পরাজিত করার পাশাপাশি সাইবেরিয়ার উপজাতিদের সশস্ত্র প্রতিরোধ দমন করলে, নদ-নদী ভিত্তিক সীমানা তখন উত্তর ইউরোপীয়দের জন্য একপ্রকার অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বিজয়ের ফলেই ১৭২১ সালে একটি নতুন রুশ সাম্রাজ্য গঠিত হয়, যা ইউরাল পর্বতমালা পেরিয়ে আরও পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। রুশ সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রধান ভূগোলবিদ ছিলেন এক প্রাক্তন সুইডিশ যুদ্ধবন্দী; ১৭০৯ সালের পোল্টাভা যুদ্ধে বন্দী তাকে করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে তোবলস্কে পাঠানো হয়; সেখানে তিনি পিটারের নিযুক্ত সাইবেরিয়ার গভর্নর ভাসিলি তাতিসচেভের সঙ্গে কাজ করেন। সেখানে তিনি তার নির্দেশে বই রচনার উদ্দেশ্যে ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক গবেষণার স্বাধীন সুযোগ পান।
পিটার দ্য গ্রেটের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর, ১৭৩০ সালে সুইডেনে ফিলিপ জোহান ফন স্ট্রালেনবার্গ একটি নতুন অ্যাটলাস প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি উরাল পর্বতমালাকে এশিয়ার সীমানা হিসেবে প্রস্তাব করেন। তাতিশচেভের দাবি অনুযায়ী তিনিই স্ট্রালেনবার্গকে এই ধারণা দিয়েছিলেন। স্ট্রালেনবার্গ নিম্ন সীমানা হিসেবে এম্বা নদী প্রস্তাব করেন। পরবর্তী এক শতাব্দীতে বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হলেও, উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে উরাল নদীকেই সীমানা হিসেবে চূড়ান্তভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এতে সীমানা কৃষ্ণ সাগর থেকে কাস্পিয়ান সাগর পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়।[২০] ককেশাস পর্বতমালার শীর্ষ বরাবর সাধারণত কৃষ্ণ সাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মধ্যকার সীমারেখা ধরা হলেওও কখনও কখনও এটি আরও উত্তরে নির্ধারণ করা হয়।[২১]
এশিয়া–আফ্রিকা সীমানা
[সম্পাদনা]এশিয়া ও আফ্রিকার সীমানা হলো সুয়েজ খাল, সুয়েজ উপসাগর, লাল সাগর এবং বাব আল মান্দেব প্রণালী।[২২] এ কারণে মিশর একটি মহাদেশান্তর রাষ্ট্র, যার সিনাই উপদ্বীপ এশিয়ায় এবং দেশের বাকি অংশ আফ্রিকায় অবস্থিত।
এশিয়া–ওশেনিয়া সীমানা
[সম্পাদনা]
এশিয়া ও ওশেনিয়ার মধ্যকার সীমানা সাধারণত ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জের কোথাও, বিশেষ করে পূর্ব ইন্দোনেশিয়ায় ধরা হয়। ওয়ালেস রেখা এশীয় ও ওয়ালেসিয়া জীব-ভূগোলিক অঞ্চলের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে। ওয়েবার রেখা প্রাণীর উৎসভিত্তিকভাবে অঞ্চলটিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে; একটি এশীয় ও অন্যটি অস্ট্রেলীয়-নিউগিনীয়। লিডেকার রেখা সহুল মহাদেশের পূর্ব সীমা নির্দেশ করে।[২৩] মালুকু দ্বীপপুঞ্জ (শুধু আরু দ্বীপপুঞ্জ বাদে) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সীমানায় অবস্থিত বলে ধরা হয়, আর আরু দ্বীপপুঞ্জ ও পশ্চিম নিউগিনি (লিডেকার রেখার পূর্বে অবস্থিত) ওশেনিয়ার অন্তর্ভুক্ত, কারণ এগুলো অস্ট্রেলীয় মহাদেশীয় প্লেটে অবস্থিত।[২৪] সাংস্কৃতিকভাবে ওয়ালেসিয়া অঞ্চলটি অস্ট্রোনেশীয় জনগণ ও মেলানেশীয় জনগণের মধ্যে রূপান্তর অঞ্চল ছিল বলে সেখানে দুই জনগোষ্ঠীর মিশ্র প্রভাব দেখা যায়। সাধারণত পশ্চিম ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে অস্ট্রোনেশীয় প্রভাব বেশি এবং পূর্ব ও অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে মেলানেশীয় প্রভাব বেশি।[২৫] ১৯শ শতকে গঠিত “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া” ও “ওশেনিয়া” পরিভাষাগুলোর ভৌগোলিক অর্থ সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। কোন ইন্দোনেশীয় দ্বীপগুলো এশিয়ার অংশ, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা ছিল ঔপনিবেশিক অবস্থান। লিউইস ও উইগেন বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বর্তমান সীমানায় সংকোচন ছিল এক ধীর প্রক্রিয়া।”[২৬]
এশিয়া–উত্তর আমেরিকা সীমানা
[সম্পাদনা]
বেরিং প্রণালী ও বেরিং সাগর এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার স্থলভাগকে পৃথক করে, একই সঙ্গে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সীমানাও গঠন করে। ডায়োমিড দ্বীপপুঞ্জ এই সীমানায় অবস্থিত—বিগ ডায়োমিড রাশিয়ায় এবং লিটল ডায়োমিড যুক্তরাষ্ট্রে। অ্যালিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আলাস্কা উপদ্বীপ থেকে রাশিয়ার কমান্ডোরস্কি দ্বীপপুঞ্জ ও কামচাটকা উপদ্বীপ পর্যন্ত প্রসারিত। এর অধিকাংশই উত্তর আমেরিকার অংশ, তবে পশ্চিম প্রান্তের নিয়ার দ্বীপপুঞ্জ এশীয় মহাদেশীয় শেলফে অবস্থিত হওয়ায় কখনও কখনও এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত ধরা হয়। খুবই বিরল ক্ষেত্রে এটিকে ওশেনিয়ার সঙ্গেও যুক্ত করা হয়, কারণ এগুলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটের নিকটে অবস্থিত। তবে এটি অস্বাভাবিক, কারণ এখানকার জীববৈচিত্র্য অ-উষ্ণমণ্ডলীয় এবং বাসিন্দারা ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিত।[২৭]
সেন্ট লরেন্স দ্বীপ উত্তর বেরিং সাগরে অবস্থিত এবং এটি আলাস্কা রাজ্যের অংশ। এটি দুই মহাদেশের যেকোনো একটির সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, কিন্তু সাধারণত উত্তর আমেরিকার অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যেমন অ্যালিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের র্যাট দ্বীপপুঞ্জ। আলাস্কা ও রাশিয়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব সর্বনিম্ন স্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার (২.৫ মাইল)।
চলমান সংজ্ঞা
[সম্পাদনা]
ভূগোলগতভাবে “এশিয়া” শব্দটি ইউরোপীয় ধারণা থেকে উদ্ভূত একটি সাংস্কৃতিক ধারণা, যা প্রাচীন গ্রিকদের মাধ্যমে শুরু হয়ে অন্য সংস্কৃতিতেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি সুনির্দিষ্ট নয় এবং প্রায়ই বিতর্কের জন্ম দেয়, কারণ এটি সাংস্কৃতিক সীমানার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না।[২৮]
হেরোডোটাস-এর সময় থেকেই কিছু ভূগোলবিদ তিন-মহাদেশ তত্ত্ব (ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া) প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ তাদের মতে এই তিন মহাদেশের মধ্যে প্রকৃত কোনো ভৌত বিভাজন নেই।[২৯] উদাহরণস্বরূপ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোপীয় প্রত্নতত্ত্বের এমেরিটাস অধ্যাপক স্যার ব্যারি কানলিফ বলেন, ইউরোপ ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে কেবল “এশীয় মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তের একটি সম্প্রসারণ।”[৩০]
ভূগোল অনুসারে, এশিয়া হলো ইউরেশিয়া মহাদেশের প্রধান পূর্বাঞ্চল, আর ইউরোপ তার উত্তর-পশ্চিমের উপদ্বীপ। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা একত্রে একটি অবিচ্ছিন্ন স্থলভাগ গঠন করেছে। এই আফ্রো-ইউরেশিয়া একটি সাধারণ মহীসোপান রয়েছে। ইউরোপের প্রায় পুরো অংশ ও এশিয়ার বৃহৎ অংশ ইউরেশীয় পাতের উপর অবস্থিত; এর দক্ষিণে রয়েছে আরবীয় প্লেট ও ভারতীয় প্লেট, এবং চেরস্কি পর্বতমালার পূর্বের সাইবেরিয়ার অংশ উত্তর আমেরিকান প্লেটের উপর অবস্থান করছে।
ব্যুৎপত্তি
[সম্পাদনা]এশিয়া মূলত গ্রিক সভ্যতার একটি ধারণা।[৩১] "এশিয়া", অঞ্চলের নাম, আধুনিক ভাষার বিভিন্ন আকারের মাঝে এর চূড়ান্ত উৎপত্তিস্থল অজানা। এর ব্যুৎপত্তি এবং উৎপত্তির ভাষা অনিশ্চিত। এটা নথিভুক্ত নামগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রাচীন নামের একটি। অনেকগুলো তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। ল্যাটিন সাহিত্য থেকে ইংরেজি সাহিত্যের গঠন হওয়ার সময়কালে ইংরেজি এশিয়ার খোঁজ পাওয়া যায়, তখনও একই গঠন ছিল এশিয়া। সমস্ত ব্যবহার এবং নামের গঠন রোমান সাম্রাজ্যের ল্যাটিন থেকে আহরণ করা কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু বলা যায় না।
ধ্রুপদি সভ্যতা
[সম্পাদনা]লাতিন Asia ও গ্রিক Ἀσία একই শব্দ হিসেবে বিবেচিত হয়। রোমান লেখকেরা Ἀσία শব্দটির অনুবাদ হিসেবে “এশিয়া” ব্যবহার করেছিলেন। রোমানরা তাদের এক প্রদেশের নামও “এশিয়া” রাখে, যা বর্তমান তুরস্কের পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ছিল। সেই হিসেবে আধুনিক তুরস্কের পশ্চিমাংশ তথা আনাতোলিয়া ছিল এশিয়া মাইনর, এবং এর পূর্বদিকে অবস্থিত বৃহত্তর ভূমিখণ্ডকে বলা হতো এশিয়া মেজর।
নামটির প্রাচীনতম প্রমাণ গ্রিক ভাষায় পাওয়া যায়। সম্ভবত Ἀσία শব্দটি থেকেই “এশিয়া” নামটি এসেছে, যদিও প্রাচীন অনুবাদে আক্ষরিক অর্থ ও প্রেক্ষাপটের অভাবে এর সঠিক ব্যুৎপত্তি নির্ধারণ করা কঠিন। এ বিষয়ে প্রাচীন ভূগোলবিদ ও ঐতিহাসিকদের রচনায় উল্লেখ পাওয়া যায়, যেমন হেরোডোটাসের লেখায়। তারা সবাই গ্রিক ছিলেন, আর রোমান সভ্যতাও গ্রিক প্রভাব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত ছিল। প্রাচীন গ্রিক লেখকেরাই “এশিয়া” শব্দটির প্রাথমিক ও সমৃদ্ধ ব্যবহারিক উদাহরণ সংরক্ষণ করেছেন।[৩২]
হেরোডোটাস প্রথম ইতিহাসবিদ যিনি প্রায় ৪৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে “এশিয়া” শব্দটিকে মহাদেশ হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি শব্দটি উদ্ভাবন করেননি; তবে তার Ἱστορίαι (ইস্তোরিয়াই,ইতিহাস) নামক গ্রন্থে শব্দটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তিনি পূর্ববর্তী ভূগোলবিদদের অনুসরণ করে সতর্কতার সঙ্গে “এশিয়া”র সীমারেখা নির্ধারণ করেন,[৩৩] যদিও যেসব রচনা তিনি উদ্ধৃত করেছিলেন, তার অনেকগুলোই আজ আর সংরক্ষিত নেই। হেরোডোটাসের লেখায় “এশিয়া” বলতে বোঝানো হয়েছে আনাতোলিয়া ও পারস্য সাম্রাজ্য, যা গ্রিস ও মিশরের বিপরীতে অবস্থান করছে।
হেরোডোটাস আরোও বলেন, তিনি বিভ্রান্তবোধ করেন যে কেন তিন জন নারীর নামে "ভূভাগের নামকরণ করা হবে"। তিনটি মহাদেশের নামই—ইউরোপা, এশিয়া ও লিবইয়া (আফ্রিকা) ছিল নারীদের নামে। অধিকাংশ গ্রিক বিশ্বাস করতেন, দেবতা প্রমিথিউসের স্ত্রী হেসিওনের নাম থেকেই “এশিয়া” নামটির উৎপত্তি; অপরদিকে লিডিয়ানরা মনে করত, কট্যাসের (Cotys) পুত্র এশিজের (Asies) নামে এর নামকরণ করা হয়।[৩৪]
গ্রিক পুরাণে “এশিয়া” (Ἀσία) বা “এশিয়” (Asie) (Ἀσίη) ছিলেন টাইটান বংশভুক্ত এক নাইম্ফ বা লিডিয়ার দেবী।[৩৫]
হেরোডোটাসের ভৌগোলিক বিভ্রান্তি সম্ভবত দ্বিমত প্রকাশ করার একটি রূপ। সকল শিক্ষিত লোকের মত তিনিও যেহেতু গ্রীক কাব্য পড়েছেন, তাই তিনি ভালভাবেই বুঝে থাকবেন যে, কেন অঞ্চলগুলোর নামে নারীদের নামে হবে। এথেন্স, মাইসিনি ও থিবস সহ আরও অনেক স্থানের নাম নারীদের নামে ছিলো। প্রাচীন গ্রিক ধর্মে, অঞ্চলগুলো নারী দেবদূতের অধীনে ছিলো; এটি অভিভাবক দেবদূতের সমান্তরাল। কবিরা তাদের কার্যকলাপ বর্ণনা করতেন, পরবর্তী প্রজন্ম তা রূপকধর্মী গল্পে রূপ দিত, এবং এই গল্পগুলোই পরে নাট্যকারদের হাতে “গ্রিক পুরাণ”-এর আকার পায়। উদাহরণস্বরূপ, হেসিয়ড তাঁর থিওগনি গ্রন্থে তেথুস ও অকেয়ানোসেরর কন্যাদের উল্লেখ করেছেন। তাদের মাঝে একটি "পবিত্র সঙ্গ" আছে, "যারা প্রভু অ্যাপোলোর সাথে এবং নদীরা তাদের তারুণ্য রেখে দিয়েছে।"[৩৬] তাদের অনেকেি ছিলেন ভৌগোলিক দেবী, যেমন ডোরিস, রোডা, ইউরোপ ও এশিয়া। হেসিয়ড লিখেছেনঃ[৩৭]
"তিন হাজার ঝরঝরে গোড়ালির মহাসাগর-কন্যা দিগন্তজুড়ে ছড়িয়ে আছে; তারা পৃথিবী ও গভীর জলের রক্ষক হিসেবে সেবা করে।"
এছাড়া ইলিয়াড-এ (হোমার-এর নামে প্রচলিত প্রাচীন গ্রিক মহাকাব্য) ট্রোজান যুদ্ধের প্রসঙ্গে দুটি ফ্রিজীয় গোত্রের উল্লেখ রয়েছে—“আসিউস” (Ἄσιος, অর্থাৎ ‘এশিয়ান’)[৩৮] এবং “আসিওস” নামের এক জলাভূমি অঞ্চল[৩৯], যা লিডিয়ার নিম্নভূমিতে অবস্থিত।
ব্রোঞ্জ যুগ
[সম্পাদনা]গ্রিক কবিতার আগে এজিয়ান সাগর অঞ্চল ছিল গ্রিক অন্ধকার যুগে। এর আগে ব্রোঞ্জ যুগের বিভিন্ন নথিতে আসিরীয় সাম্রাজ্য, হিট্টাইট সাম্রাজ্য এবং গ্রিসের মাইসিনীয় রাজ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। এটি নিঃসন্দেহে এশিয়া, বিশেষত আনাতোলিয়া ও লিডিয়া অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত। এসব নথি মূলত প্রশাসনিক, কাব্যমূলক নয়।
খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ সালের দিকে অজানা আক্রমণকারীদের হাতে মাইসিনীয় রাজ্য ধ্বংস হয়। অনেক গবেষকের মতে, একই সময়ে সংঘটিত ডরিয়ান আক্রমণই এর জন্য দায়ী। প্রাসাদ ধ্বংসের নিদর্শন এবং দৈনন্দিন প্রশাসনিক নথির অবশিষ্টাংশ গ্রিক দলমাত্রিক লিপিতে (লিনিয়ার বি) পোড়ামাটির ফলকে লেখা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই লিপি পাঠোদ্ধারের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তরুণ সাংকেতিক লিপিকর মাইকেল ভেন্ট্রিস, তাকে সহায়তা করেছিলেন ভাষাবিদ জন চ্যাডউইক। প্রাচীন পাইলসে প্রত্নতত্ত্ববিদ কার্ল ব্লেজিন আবিষ্কার করেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গুপ্তভান্ডার, যেখানে বিভিন্ন উপায়ে গঠিত শত শত পুরুষ ও নারীর নাম সংরক্ষিত ছিল।
এই নথিগুলির কিছুতে নারীদের দাস হিসেবে বন্দী অবস্থায় দেখানো হয়েছে (যা সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণার অন্যতম বিষয়)। তাদের শ্রমে নিয়োজিত করা হতো, বিশেষ করে কাপড় তৈরি ইত্যাদি কাজে। অনেকে সন্তানসহ সেখানে অবস্থান করতেন। তাদের মধ্যে কিছু নারীর নামের সঙ্গে যুক্ত বিশেষণ ছিল লাওইয়াইয়াই (lawiaiai) বা "বন্দী," যা তাদের উৎসকে নির্দেশ করে। নথিতে তাদের কিছু জাতিগত নামও পাওয়া যায়; বিশেষ করে আশ্বিনি (aswiai) "এশিয়ার নারী" বলে চিহ্নিত।[৪০] ধারণা করা হয়, এরা এশিয়ায় বন্দী হয়েছিল। অন্যদিকে মিলাতিয়াইরা মিলেটাস থেকে আগত। এটি ছিল এমন একটি গ্রিক উপনিবেশ, যেখানে গ্রীক দ্বারা ক্রীতদাসদের জন্য অভিযান চালানো হয়নি। এসব নাম আসলে তাদের ভূগোলিক উৎসকে নির্দেশ করে, যেখান থেকে ওই বিদেশি নারীরা কেনা হয়েছিল।[৪১] আশ্বিয়া (Aswia) নামটি একবচন এবং এর দ্বারা একটি দেশ ও তার অধিবাসী নারী উভয়কেই বোঝায়। এর একটি পুংলিঙ্গ আছে আশ্বিওস (aswios)। এই আশ্বিয়া (Aswia) শব্দটি হিট্টাইটদের কাছে পরিচিত আশুয়া (Assuwa) নামের অঞ্চল থেকে আগত, লিডিয়া তথা "রোমান এশিয়া" অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। এই নাম আশুয়া (Assuwa) থেকেই মহাদেশ "এশিয়া" নামের উৎপত্তি।[৪২] আশুয়া লীগ ছিল পশ্চিম আনাতোলিয়ার একটি কনফেডারেশন রাজ্য। এটি প্রথম তুদহালিয়ার নেতৃত্বে হিট্টিটদের কাছে প্রায় ১৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পরাজিত হয়।
আরেকটি ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এশিয়া শব্দটির উৎস আক্কাদীয় শব্দ (w)aṣû(m), যার অর্থ “বাইরে যাওয়া” বা “আরোহণ করা”। মধ্যপ্রাচ্যে সূর্যোদয়ের দিক নির্দেশে এটি ব্যবহৃত হতো। এটি ফিনিশীয় শব্দ asa-র সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে, যার অর্থ “পূর্ব”। এর বিপরীতে ইউরোপ শব্দটির উৎপত্তির জন্য একই ধরণের যুক্তি দেওয়া হয়, আক্কাদীয় erēbu(m) শব্দ থেকে আগত, যার অর্থ “প্রবেশ করা” বা “ডুবে যাওয়া (সূর্য)”।
টি.আর. রিড এই দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটিকে সমর্থন করেছেন। তাঁর মতে, asu শব্দটি থেকে প্রাচীন গ্রিক নামটির উৎপত্তি, যার অর্থ আসিরীয়ায় “পূর্ব”; আর ereb থেকে এসেছে “ইউরোপ” শব্দটি, যার অর্থ “পশ্চিম”।[৪৩] “পাশ্চাত্য” (Occidental) শব্দটি এসেছে লাতিন Occidens থেকে, যার অর্থ “ডুবন্ত”, এবং “প্রাচ্য” (Oriental) শব্দটি এসেছে লাতিন Oriens থেকে, যার অর্থ “উঠন্ত”। উভয়ই আসলে ইউরোপীয় ধারণা, যা “পশ্চিমা” ও “পূর্ব” সভ্যতার মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।[৪৩]
রিড আরও উল্লেখ করেন, এই ধারণা এশিয়ার সকল জনগোষ্ঠী ও সংস্কৃতিকে একক শ্রেণিতে ফেলার পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে, যেন ইউরেশীয় মহাদেশের পশ্চিম ও পূর্ব সভ্যতার পার্থক্য নির্ধারণের এক প্রচেষ্টা।[৪৩] এই প্রসঙ্গে ওগুরা কুজকো ও তেনশিন ওকাকুরা নামের দুইজন জাপানি চিন্তাবিদ স্পষ্টভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করেছিলেন।[৪৩]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাগৈতিহাসিক যুগ
[সম্পাদনা]

প্রায় ১৮ লক্ষ বছর আগে হোমো ইরেক্টাস আফ্রিকা মহাদেশ ত্যাগ করে[৪৪] ধারণা করা হয়, এই প্রজাতি প্রায় ১৮ লক্ষ বছর আগে থেকে ১,১০,০০০ বছর আগ পর্যন্ত পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাস করেছিল।[৪৫]
গবেষকদের মতে, আধুনিক মানুষ বা হোমো স্যাপিয়েন্স প্রায় ৬০,০০০ বছর আগে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে ভারত মহাসাগর বরাবর অভিবাসন শুরু করে।[৪৬] আধুনিক মানুষ আন্তঃপ্রজনন করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডেনিসোভান নামে পরিচিত এক প্রাচীন মানব প্রজাতির সঙ্গে।[৪৭] আধুনিক মানুষের আগেই ফ্লোরেস দ্বীপে বসবাস করত একটি ক্ষুদ্রাকৃতির প্রাচীন মানব প্রজাতি হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস।[৪৮]
প্রাচীন পূর্ব ইউরেশীয়দের পূর্বপুরুষরা প্রায় ৪৬,০০০ বছর আগে ইরানি মালভূমিতে থাকা কেন্দ্র থেকে প্রাচীন পশ্চিম ইউরেশীয়দের থেকে আলাদা হয়ে যায়।[৪৯] পূর্ণ জিনোম বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমেরিকার প্রথম জনগোষ্ঠী প্রায় ৩৬,০০০ বছর আগে প্রাচীন পূর্ব এশীয়দের থেকে পৃথক হয়ে সাইবেরিয়ার দিকে অভিবাসন করে। সেখানে তারা প্রাচীন উত্তর ইউরেশীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে প্যালিওসাইবেরীয় জনগণ ও প্রাচীন বেরিঙ্গীয় (অর্থাৎ প্রাচীন আমেরিকান) জনগোষ্ঠীর জন্ম দেয়।[৫০]
আধুনিক দক্ষিণ এশীয়রা পশ্চিম ইউরেশীয় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর (বিশেষত নবপ্রস্তর যুগের ইরানীয় ও পশ্চিম তৃণভূমির রাখাল) সঙ্গে একটি স্থানীয় প্রাচীন পূর্ব ইউরেশীয় উপাদানের মিশ্রণ। তাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষ দক্ষিণ ভারতীয় বলা হয়। এরা আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসী এবং পূর্ব এশীয় ও অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের থেকে দূরসম্পর্কিত।[৫১]
প্রাচীন যুগ
[সম্পাদনা]
এশিয়ার ইতিহাসকে বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলের পৃথক ইতিহাস হিসেবে দেখা যায়: পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়া। এই উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেই বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির জন্ম হয়েছিল। এগুলো সবই উর্বর নদী উপত্যকাকে ঘিরে গড়ে ওঠে। মেসোপটেমিয়া, সিন্ধু সভ্যতা ও হুয়াংহো নদীর সভ্যতার মধ্যে অনেক মিল ছিল। তারা গণিত ও চাকার মতো ধারণা ও প্রযুক্তি বিনিময় করতে পারে। তবে লিপির উদ্ভাবন প্রতিটি অঞ্চলে আলাদাভাবে হয়েছিল। ধীরে ধীরে নগর, রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে।
মধ্য এশিয়ার তৃণভূমিতে ঘোড়সওয়ার যাযাবররা বাস করত। তারা স্তেপ তৃণভূমি অতিক্রম করে এশিয়ার সব অঞ্চলে পৌঁছাতে পারত। ইন্দো-ইউরোপীয়দের অভিবাসনকেই এই অঞ্চলের প্রাথমিক সম্প্রসারণ হিসেবে ধরা হয়। তারা তাদের ভাষা পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও চীনের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তার করেছিল।[৫১] সবচেয়ে প্রান্তিক অঞ্চলে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষী টোকারীয়রা বাস করত। উত্তর এশিয়ার অনেক অংশ, বিশেষত সাইবেরিয়া, ঘন বন, ঠান্ডা আবহাওয়া ও তুন্দ্রার কারণে এই যাযাবরদের জন্য অনেকটাই অগম্য ছিল।
পর্বত ও মরুভূমি এশিয়ার মধ্যাঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলিকে আলাদা রেখেছিল। ককেশাস ও হিমালয় পর্বতমালা এবং কারাকুম মরুভূমি ও গোবি মরুভূমি ছিল স্বাভাবিক বাধা, যা অতিক্রম করা কঠিন ছিল। নগরবাসীরা প্রযুক্তি ও সমাজব্যবস্থায় উন্নত হলেও যাযাবর অশ্বারোহী বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করা তাদের পক্ষে কঠিন ছিল। তবে সমতল ভূমিতে ঘোড়ার খাদ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘাস না থাকায় বড় অশ্ববাহিনী বজায় রাখা সম্ভব হতো না। ফলে, যারা চীন, ভারত বা মধ্যপ্রাচ্যে রাষ্ট্র দখল করত, তারা পরবর্তীতে স্থানীয় সমৃদ্ধ সংস্কৃতিতে আত্মীকৃত হয়ে যেত।
মধ্যযুগ
[সম্পাদনা]
সপ্তম শতকে ইসলামী খিলাফত বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ও পারস্যকে পরাজিত করে পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়ার দক্ষিণাংশ ও দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ইসলাম বাণিজ্যের মাধ্যমে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতের দক্ষিণাংশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।[৫৩][৫৪] ত্রয়োদশ শতকে মঙ্গোল সাম্রাজ্য চীন থেকে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল এলাকা দখল করে। মঙ্গোল আক্রমণের আগে সং রাজবংশে প্রায় ১২ কোটি জনসংখ্যা ছিল; ১৩০০ সালের জনগণনায় তা কমে প্রায় ৬ কোটি হয়।[৫৫]
মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী মহামারীগুলোর একটি ব্ল্যাক ডেথ বা কালো মৃত্যু মধ্য এশিয়ার শুষ্ক তৃণভূমি থেকে উৎপত্তি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়, যা পরে সিল্ক রোড ধরে ছড়িয়ে পড়ে।[৫৬]
আধুনিক যুগ
[সম্পাদনা]আবিষ্কারের যুগ থেকে ইউরোপের এশিয়ায় প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকে। ক্রিস্টোফার কলম্বাস ও ভাস্কো দা গামার মতো অভিযাত্রীরা অ্যাটলান্টিক ইউরোপ থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে নতুন বাণিজ্যপথ উন্মুক্ত করেন।[৫৭] ১৭শ শতক থেকে রুশ সাম্রাজ্য উত্তর-পশ্চিম এশিয়ায় সম্প্রসারিত হতে থাকে এবং ১৯শ শতকের শেষ নাগাদ সাইবেরিয়া ও মধ্য এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নেয়।
অ-ইউরোপীয় সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে উসমানীয় সাম্রাজ্য ১৬শ শতকের মাঝামাঝি থেকে আনাতোলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও বলকান অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রাখে। ১৭শ শতকে মানচুরা চীন দখল করে ছিং রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে। ইসলামী মুঘল সাম্রাজ্য (যা ১৩শ থেকে ১৬শ শতকের শুরু পর্যন্ত দিল্লি সালতানাত দ্বারা পূর্ববর্তী ছিল)[৫৮] এবং হিন্দু মারাঠা সাম্রাজ্য যথাক্রমে ১৬শ ও ১৭শ শতকে ভারতের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেছিল।[৫৯]
আঠারো শতক থেকে বিশ শতক পর্যন্ত এশিয়ায় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার ঘটেছিল। একই সময়ে পশ্চিমে তখন শিল্প বিপ্লব ঘটে এবং ভারত ও চীন বিশ্বের প্রধান অর্থনীতি হিসেবে তাদের অবস্থান হারায়।[৬০] ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রথমে দক্ষিণ এশিয়ায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। ১৮শ শতকের শেষ ও ১৯শ শতকের শুরুর দিকে ব্রিটিশ বণিকরা অঞ্চলটি দখল করে এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর ভারত সরাসরি ব্রিটিশ রাজের অধীনে আসে। ১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল উদ্বোধনের ফলে ব্রিটেনের ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়, যা পরবর্তীতে আফ্রিকা ও এশিয়ায় ইউরোপীয় প্রভাব আরও বাড়ায়।[৬১]
এই সময়ে পশ্চিমা শক্তিগুলো চীনের ওপর প্রভাব বিস্তার শুরু করে, যা পরে অপমানের শতাব্দী নামে পরিচিত হয়। ব্রিটিশদের সমর্থিত আফিম বাণিজ্য এবং পরবর্তী আফিম যুদ্ধ চীনকে এমন এক অবস্থায় ফেলেছিল, যার ফলে তারা রপ্তানির চেয়ে বেশি আমদানি করতে বাধ্য হয়।[৬২][৬৩]
চীনে বিদেশি প্রভাব আরও বাড়ায় জাপানি উপনিবেশ সাম্রাজ্য। এটি পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু অংশ এবং অল্প সময়ের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করেছিল। এর আগে এই অঞ্চলগুলো ব্রিটিশ, ডাচ ও ফরাসিরা দখল করেছিল।[৬৪] জাপান নিউ গিনি ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জও নিয়ন্ত্রণ করে। জাপানের এই আধিপত্য সম্ভব হয় মেইজি যুগের দ্রুত শিল্পায়নের মাধ্যমে। সেসময় তারা পশ্চিমা প্রযুক্তি শিখে তা প্রয়োগ করার ফলে এশিয়ার বাকি অংশের চেয়ে অনেক এগিয়ে যায়।[৬৫][৬৬] জাপানের ওপর সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। তারা উনিশ শতকের প্রথমার্ধে পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ শেষে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তার শুরু করে।[৬৭] প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন বিশ শতকের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যকেও ব্রিটিশ ও ফরাসিদের মধ্যে বিভক্ত করে দেয়।[৬৮]
সমসাময়িক যুগ
[সম্পাদনা]
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, ইউরোপ ও জাপানের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অনেক এশীয় দেশ দ্রুত স্বাধীনতা অর্জন করে।[৬৯] ভারতের স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠিত হয়, যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে বিভক্ত হয়ে যায়।[৭০] এশিয়ায় স্নায়ুযুদ্ধ ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ককে উত্তেজিত করে এবং পুরো এশিয়ার রাজনীতিকে প্রভাবিত করে।[৭১] স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর ১৯৯১ সালে মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ স্বাধীনতা লাভ করে।[৭২]
কিছু আরব দেশ তাদের ভূখণ্ডে তেল আবিষ্কারের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক শক্তি অর্জন করে ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে।[৭৩] তবে ১৯৪৮ সাল থেকে আরব–ইসরায়েল সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ অঞ্চলটির স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করেছে।[৭৪][৭৫]
পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো (এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর) উচ্চ প্রবৃদ্ধির "বাঘ অর্থনীতি" হিসেবে সমৃদ্ধ হয়;[৭৬] তেং শিয়াওফিংয়ের অধীনে বাজারভিত্তিক সংস্কার কার্যকর হওয়ার পর চীন ২১শ শতকে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির একটিতে পরিণত হয়।[৭৭] ভারতও ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক উদারীকরণ শুরু করার পর দ্রুত উন্নতি করেছে,[৭৮] এবং এখন চরম দারিদ্র্য ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।[৭৯] ভারত ও চীনের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও বেড়েছে, এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এখন চীন ও তার বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে সক্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র।[৮০][৮১]
- গ্রিক ভূগোলবিদ যেমন আনাক্সিমান্দ্রোস ও হেকাটিয়াসের কারণে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতক থেকেই পুরাতন বিশ্বকে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায় বিভক্ত করে দেখা হতো।
- সিডনি এডওয়ার্ডস মরস কর্তৃক ১৮২৫ সালের এশিয়ার মানচিত্র
- ১৮৮৫ সালের পশ্চিম, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার মানচিত্র[৮২]
- ১৭৯৬ সালের এশিয়ার মানচিত্র, যেখানে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল (তখন নিউ হল্যান্ড নামে পরিচিত)
- ১৮৯০ সালের এশিয়ার মানচিত্র
ভূগোল ও জলবায়ু
[সম্পাদনা]
এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ। এটা পৃথিবীর মোট ভূপৃষ্ঠের ৮.৮% ভাগ (বা ৩০% ভাগ স্থল), এবং বৃহত্তম তটরেখা ৬২,৮০০ কিলোমিটার (৩৯,০২২ মাইল)। এশিয়া সাধারণত ইউরেশিয়ার পাঁচ ভাগের চার ভাগ নিয়ে পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটা সুয়েজ খাল ও ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, ককেশাস পর্বতমালা, কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে অবস্থিত।[১১][৮৩] এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। এশিয়া মহাদেশে ৪৮টি দেশ আছে, এদের মধ্যে চারটি (রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুরস্ক, এবং আজারবাইজান) দেশের ইউরোপে অংশ আছে।
এশিয়ার অত্যন্ত বিচিত্র জলবায়ু এবং ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য আছে। জলবায়ুর পরিধি আর্কটিক, উপআর্কটিক (সাইবেরিয়া) থেকে দক্ষিণ ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রান্তীয় অবধি বিস্তৃত। এর দক্ষিণ-পূর্ব অংশ জুড়ে আর্দ্র ও অভ্যন্তরে শুষ্ক। পশ্চিম এশিয়ায় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দৈনিক তাপমাত্রা পরিসর দেখা যায়। হিমালয় পর্বমালার কারণে মৌসুমি সঞ্চালন দক্ষিণ ও পূর্ব অংশ জুড়ে প্রাধান্য পায়। মহাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ উষ্ণ। উত্তর গোলার্ধের মধ্যে সাইবেরিয়া অন্যতম শীতলতম অঞ্চল, এবং উত্তর আমেরিকা জন্য আর্কটিক বায়ুভরের একটি উৎস হিসাবে কাজ করে। ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের জন্য পৃথিবীতে সবচেয়ে সক্রিয় জায়গা উত্তরপূর্বে ফিলিপাইন ও দক্ষিণ জাপান। চীন-মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি এশিয়ার বৃহত্তম মরুভূমি। এছাড়া আরব মরুভূমি মধ্যপ্রাচ্যের অনেকটা জুড়ে প্রসারিত। চীনের ছাং চিয়াং (ইয়াংসি) নদী মহাদেশের দীর্ঘতম নদী। নেপাল ও চীনের মধ্যকার হিমালয় পর্বতমালা বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ও সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণী। বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বনাঞ্চল দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে প্রসারিত ও সরলবর্গীয়, পর্ণমোচী বনাঞ্চ উত্তরে প্রসারিত।
- কেরল লোনা পানি
- মঙ্গোলিয় প্রান্তর
- দক্ষিণ চীন কার্স্ট
- হুনজা উপত্যকা
প্রধান অঞ্চল
[সম্পাদনা]
এশিয়ার আঞ্চলিক বিভাজনের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বিভাগ (UNSD) নিম্নলিখিত অঞ্চল-বিভাজন ব্যবহার করে। জাতিসংঘ কর্তৃক এশিয়ার এই অঞ্চলে বিভক্তি কেবল পরিসংখ্যানগত কারণে করা হয়েছে। এটি দেশ বা অঞ্চলের রাজনৈতিক বা অন্যান্য সংযুক্তি সম্পর্কে কোনও অনুমানকে বোঝায় না। [৮৪]
জলবায়ু
[সম্পাদনা]
এশিয়ার জলবায়ু অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। সাইবেরিয়ার আর্কটিক ও সাব-আর্কটিক থেকে দক্ষিণ ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চল পর্যন্ত জলবায়ু বিস্তৃত। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আর্দ্রতা বেশি থাকলেও অভ্যন্তরীণ বেশিরভাগ অংশে শুষ্কতা দেখা যায়। পৃথিবীর বৃহত্তম কিছু দৈনিক তাপমাত্রার পার্থক্য এশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ঘটে থাকে। মৌসুমি বায়ুর সঞ্চালন দক্ষিণ ও পূর্ব অংশ জুড়ে প্রাধান্য পায়। হিমালয়ের উপস্থিতি তাপীয় নিম্নচাপ সৃষ্টি করে গ্রীষ্মকালে আর্দ্রতা টেনে নেয়। মহাদেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ বেশ উষ্ণ। সাইবেরিয়া উত্তর গোলার্ধের সবচেয়ে ঠান্ডা স্থানগুলির মধ্যে একটি। এটি উত্তর আমেরিকার জন্য আর্কটিক বায়ু ভরের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। এই মহাদেশেই ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় স্থান ফিলিপাইনের উত্তর-পূর্বে এবং জাপানের দক্ষিণে অবস্থিত।
জলবায়ু পরিবর্তন
[সম্পাদনা]

এশিয়া মহাদেশ মানব জনসংখ্যার বেশিরভাগেরই নিবাস হওয়ায় এখানকার জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিংশ শতাব্দীর পর থেকে উষ্ণায়নের ফলে সমগ্র মহাদেশে তাপপ্রবাহের হুমকি বাড়ছে।[৮৯] :১৪৫৯ তাপপ্রবাহের ফলে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০৮০ সালের মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শহরগুলোতে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ প্রতি বছর প্রায় এক মাস চরম তাপদাহের সম্মুখীন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। [৮৯] :১৪৬০ পানিচক্রের উপর এর প্রভাব আরও জটিল। পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে আরও বেশি খরা দেখা দেবে। অন্যদিকে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার যেসব অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়, সেসব স্থানে বন্যা দেখা দিবে।[৮৯] :১৪৫৯
এশিয়ার চারপাশের জলরাশি অন্যান্য স্থানের মতো বর্ধিত উষ্ণতা ও সমুদ্রের অম্লীকরণের শিকার হচ্ছে। [৯০] :১৪৬৫এই অঞ্চলে অনেক প্রবাল প্রাচীর থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এগুলি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।[৯০] :১৪৫৯ তাপমাত্রা ১.৫ degrees Celsius change (২.৭ degrees Fahrenheit change) সেলসিয়াসের বেশি হলেই কার্যত সবগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।[৯১] [৯২] এশিয়ার স্বতন্ত্র ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্রগুলোও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকিতে আছে। [৯০] :১৪৫৯অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় এশিয়ায় উপকূলীয় জনসংখ্যার দেশ বেশি। তাই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে এখানে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে। [৯০] :১৪৫৯ "এশিয়ান ওয়াটার টাওয়ার" নামে পরিচিত বিশাল হিমবাহগুলো ধীরে ধীরে গলে যাওয়ার ফলে হিন্দুকুশ অঞ্চলে পানি সরবরাহ আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। [৯০] :১৪৫৯ পানিচক্রের এই পরিবর্তনগুলো ভেক্টর-বাহিত রোগের বিস্তারকেও প্রভাবিত করে। ফলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর ক্রান্তীয় ও উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে আরও প্রকট হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। [৯০] :১৪৫৯ খাদ্য নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যের অস্থিরতার কারণে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। [৯০] :১৪৯৪
ঐতিহাসিকভাবে এশিয়া থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার তুলনায় কম। তবে একবিংশ শতাব্দীতে চীন এককভাবে বৃহত্তম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশে পরিণত হয়। পাশাপাশি ভারত বিশ্বে তৃতীয়। সামগ্রিকভাবে বর্তমানে এশিয়া বিশ্বের প্রাথমিক জ্বালানি ব্যবহারের ৩৬%-এর জন্য দায়ী। ২০৫০ সালের মধ্যে তা ৪৮%-এ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে এটি বিশ্বের কয়লার ৮০% এবং বিশ্বের প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের ২৬%-এ পৌঁছাবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। [৯৩] :১৪৬৮ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম তেল গ্রাহক হলেও ২০৫০ সালের মধ্যে এটি চীন ও ভারতের পরে তৃতীয় স্থানে চলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।[৯৩]:১৪৭০ তবে বিশ্বের নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকই এশিয়ায় হলেও[৯৩] :১৪৭০ তা প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। তারা ইঙ্গিত দেয়, ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ার মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৩৫% হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। [৯৩] :১৪৭১
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ইতিমধ্যেই অনেক এশীয় দেশের জন্য একটি বাস্তবতা। তাই মহাদেশ জুড়ে বিস্তৃত কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করা হচ্ছে। [৯৪] :১৫৩৪গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু দেশে জলবায়ু-স্মার্ট কৃষির ক্রমবর্ধমান বাস্তবায়ন বা চীনে "স্পঞ্জ সিটি" পরিকল্পনা নীতি। [৯৪] :১৫৩৪ কিছু দেশ বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান বা জাপানের জলবায়ু অভিযোজন আইনের মতো বিস্তৃত কাঠামো তৈরি করলেও[৯৪] :১৫০৮ অন্যরা এখনও স্থানীয় পদক্ষেপের উপর নির্ভর করে। [৯৪] :১৫৩৪
বৈশ্বিক ঝুঁকি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ম্যাপলক্রফটের ২০১০ সালে সম্পাদিত একটি জরিপে ১৬টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছে। প্রতিটি দেশের ঝুঁকি ৪২টি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সূচক দ্বারা নির্ণিত, যা পরবর্তী ৩০ বছর সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে। এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা, ১৬টি দেশের মধ্যে ছিল যারা জলবায়ু পরিবর্তনে চরম ঝুঁকির সম্মুখীন। কিছু পরিবর্তন ইতোমধ্যেই ঘটছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের ক্রান্তীয় অংশে আধা-শুষ্ক জলবায়ুতে ১৯০১ থেকে ২০০৩-এর মধ্যে তাপমাত্রা ০.৪ °সে বেড়েছে। ২০১৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর সেমি-এ্যারিড ট্রপিক্স (ICRISAT)-এর একটি গবেষণায়, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এশিয়ার কৃষি ব্যবস্থায় বৈজ্ঞানিক পন্থা ও কৌশল খোঁজার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। গবেষণায় সুপারিশ করা হয় স্থানীয় পরিকল্পনার মধ্যে জলবায়ু তথ্য ব্যবহারের উন্নতি এবং আবহাওয়া ভিত্তিক কৃষি পরামর্শ সেবা শক্তিশালীকরণ, গ্রামীণ পরিবারের আয়ের বহুমুখীকরণ উৎসাহী করা, উন্নত প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ তথা ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি পূর্ণ করা, বন আচ্ছাদন করা, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের প্রণোদনা প্রদান।[৯৫]
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাদেশীয় অর্থনীতি এশিয়া নামমাত্র জিডিপি এবং ক্রয়ক্ষমতা সমতা উভয় দিক থেকেই শীর্ষে আছে। এটি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনৈতিক অঞ্চলও বটে।[৯৬] ২০২৫-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ], চীন মহাদেশটির সবচেয়ে বড় অর্থনীতি। এর পরেই রয়েছে ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও তাইওয়ান। এরা সবাই নামমাত্র ও পিপিপি উভয় মান অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত।[৯৭] ২০১১ সালের গ্লোবাল অফিস লোকেশন অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ৫ অফিস শহরের মধ্যে ৪টিই এশিয়ায়—হংকং, সিঙ্গাপুর, টোকিও ও সিওল। প্রায় ৬৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক কোম্পানির অফিস হংকং-এ অবস্থিত।[৯৮]
১৯৯০-এর দশকের শেষ ও ২০০০-এর শুরুর দিকে চীনের অর্থনীতি[৯৯] গড়ে প্রতি বছর ৮ শতাংশেরও বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ অ্যাঙ্গাস ম্যাড্ডিসন উল্লেখ করেন, ১৯শ শতাব্দীর পূর্বে প্রায় তিন হাজার বছর ধরে ভারত ছিল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, এবং বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশ শিল্প উৎপাদন ভারতের ছিল।[১০০][১০১][১০২] চীনও দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও উন্নত অর্থনীতি ছিল; পাশাপাশি ভারতও সেই মর্যাদায় অংশীদার ছিল।[১০৩] বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে কয়েক দশক ধরে জাপান ছিল এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বিশ্বের যেকোনো একক দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। ১৯৬৮ সালে তারা জার্মানিকে এবং ১৯৯০ সালে তারা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ছাড়িয়ে যায়। (উল্লেখ্য: ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (নাফটা) বা এপেক-এর মতো কিছু আন্তঃরাষ্ট্রিক অর্থনীতি আরও বড়)। ২০১০ সালে জাপানের একক আধিপত্যের পরিসমাপ্তি ঘটে। তখন চীন জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়। ২০২৫ সালে, ভারত নামমাত্র জিডিপি অনুযায়ী জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়।
১৯৮০-এর দশকের শেষ ও ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে মুদ্রা বিনিময় হারে জাপানের জিডিপি প্রায় পুরো এশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির সমান ছিল।[৯৬] ১৯৯৫ সালে ইয়েনের মূল্য প্রতি মার্কিন ডলারে ৭৯ ইয়েনে পৌঁছালে এক দিনের জন্য জাপানের অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান প্রায় হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রধানত জাপান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় বৃত্তে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং ও সিঙ্গাপুরে কেন্দ্রীভূত ছিল। এই চারটি অঞ্চল চার এশিয়ান টাইগার নামে পরিচিত। এগুলো বর্তমানে উন্নত দেশ এবং এশিয়ার সর্বোচ্চ মাথাপিছু জিডিপি অর্জনকারী।[১০৪]

এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাদেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। এখানে প্রচুর পেট্রোলিয়াম, অরণ্য, মাছ, পানি, ধান, তামা ও রূপা পাওয়া যায়। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অতীতকাল থেকেই শিল্প-উৎপাদনে শক্তিশালী। বিশেষত চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, ফিলিপাইন ও সিঙ্গাপুরে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এখনো আধিপত্য বজায় রেখেছে, তবে চীন ও ভারত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বহু কোম্পানি এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশে সস্তা শ্রম ও উন্নত অবকাঠামোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে।[১০৫]
২০১১ সালে সিটিগ্রুপ জানায় যে গ্লোবাল গ্রোথ জেনারেটরস তালিকার ১১টির মধ্যে ৯টি দেশ এশিয়ার; তাদের প্রবৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও আয় বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। এই দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম।[১০৬] এশিয়ায় তিনটি প্রধান আর্থিক কেন্দ্র রয়েছে—হংকং, টোকিও ও সিঙ্গাপুর। কল সেন্টার ও ব্যবসা প্রক্রিয়া আউটসোর্সিং (বিপিও) শিল্প ভারত ও ফিলিপাইনে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ এখানে দক্ষ ও ইংরেজি জানা কর্মীর সহজলভ্যতা আছে। আউটসোর্সিং ব্যবহারের বৃদ্ধি ভারত ও চীনের আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে উত্থানে সহায়তা করছে। শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কারণে ভারত এখন বৈশ্বিক আউটসোর্সিংয়ের প্রধান কেন্দ্র।
এশিয়া ও অন্যান্য মহাদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রধানত সমুদ্রপথে হয়। প্রধান রুটটি চীনের উপকূল থেকে দক্ষিণে হ্যানয় হয়ে জাকার্তা, সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুর পেরিয়ে মালাক্কা প্রণালী দিয়ে কলম্বো পর্যন্ত যায়। এরপর এটি মালে হয়ে ভারতের দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে মোম্বাসা (পূর্ব আফ্রিকা) পৌঁছায় (ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল দেখুন)। সেখান থেকে জিবুতি হয়ে লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল পেরিয়ে ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। এরপর হাইফা, ইস্তানবুল ও এথেন্স হয়ে ত্রিয়েস্তেতে পৌঁছায়। সেখানে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ও পূর্বাঞ্চলে রেল সংযোগ রয়েছে। এরপর বার্সেলোনা ও স্পেন-ফ্রান্স ঘুরে ইউরোপের উত্তরের বন্দরগুলোতে পৌঁছায়। তুলনামূলকভাবে অল্প কিছু পণ্য দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে ইউরোপে যায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় বৃত্তে লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ অভিমুখেও উল্লেখযোগ্য পণ্য পরিবহন হয়। আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলায় নতুন জাহাজ চলাচলের পথ খুলছে, যা উত্তর-পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় বাণিজ্য সহজ করছে।[১০৭] ইউরোপের স্থলপথেও কিছু নির্মাণ প্রকল্প চলছে, যদিও সেগুলোর পরিসর তুলনামূলকভাবে ছোট। এশিয়ার অভ্যন্তরীণ (সমুদ্রসহ) বাণিজ্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১০৮]
২০১০ সালে, এশিয়ায় ছিল ৩৩ লক্ষ মিলিয়নেয়ার (যাদের নেট সম্পদ ছিল অন্তত ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার, বসতবাড়ি বাদে)। এটি উত্তর আমেরিকার ৩৪ লক্ষের তুলনায় সামান্য কম। ২০১১ সালে এশিয়া ইউরোপকে অতিক্রম করে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যায় শীর্ষে উঠে আসে।[১০৯] সিটিগ্রুপের ২০১২ সালের ওয়েলথ রিপোর্টে বলা হয়, প্রথমবারের মতো ১০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদধারী এশীয়দের মোট সম্পদ উত্তর আমেরিকার ধনীদের চেয়ে বেশি হয়েছে। ২০১১ সালের শেষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন ও জাপানে প্রায় ১৮,০০০ জনের অন্তত ১০ কোটি ডলারের ব্যবহারযোগ্য সম্পদ ছিল। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকায় ১৭,০০০ জন ও পশ্চিম ইউরোপে ১৪,০০০ জন ছিল।[১১০]
| ক্রম | দেশ | জিডিপি(নামমাত্র, শীর্ষ বছর) লক্ষ মার্কিন ডলার |
শীর্ষ বছর |
|---|---|---|---|
| ১ | ১৯,২৩১,৭০৫ | ২০২৫ | |
| ২ | ৬,২৭২,৩৬৩ | ২০১২ | |
| ৩ | ৪,১৮৭,০১৭ | ২০২৫ | |
| ৪ | ২,২৯৫,৫২৭ | ২০২২ | |
| ৫ | ১,৯৪২,৩১৪ | ২০২১ | |
| ৬ | ১,৪৩৭,৪০৬ | ২০২৫ | |
| ৭ | ১,৪২৯,৭৪৩ | ২০২৫ | |
| ৮ | ১,২৩৯,০৭৫ | ২০২২ | |
| ৯ | ৮০৪,৮৮৯ | ২০২৫ | |
| ১০ | ৬৪৪,০১৯ | ২০১২ |
| ক্রম | দেশ | জিডিপি (ক্রয়ক্ষমতা সমতা, শীর্ষ বছর) লক্ষ মার্কিন ডলার |
শীর্ষ বছর |
|---|---|---|---|
| ১ | ৪০,৭১৬,৪৪৮ | ২০২৫ | |
| ২ | ১৭,৬৪৭,০৫০ | ২০২৫ | |
| ৩ | ৭,১৯১,৭১৮ | ২০২৫ | |
| ৪ | ৬,৭৪১,১৯২ | ২০২৫ | |
| ৫ | ৫,০০৯,৪৮৩ | ২০২৫ | |
| ৬ | ৩,৭৬৭,২৩০ | ২০২৩ | |
| ৭ | ৩,৩৬৫,০৫২ | ২০২৫ | |
| ৮ | ২,৫১৪,৯১৩ | ২০২৫ | |
| ৯ | ২,৩৭১,৫৩০ | ২০২৫ | |
| ১০ | ১,৯৬৫,৮৩৯ | ২০২৫ |
পর্যটন
[সম্পাদনা]
চীনা পর্যটকদের আধিপত্যে আঞ্চলিক পর্যটন দ্রুত বাড়ছে। মাস্টারকার্ড–এর ২০১৩ সালের গ্লোবাল ডেস্টিনেশন সিটিজ ইনডেক্স অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ২০ পর্যটন গন্তব্যের মধ্যে ১০টি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত। প্রথমবারের মতো ব্যাংকক শহরটি শীর্ষে ওঠে। সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৫৯.৮ লক্ষ।[১১৬]
পর্যটন
[সম্পাদনা]
মাস্টারকার্ড বৈশ্বিক গন্তব্য শহর সূচক ২০১৩ প্রকাশ করে, যেকানে ২০টি শহরের মধ্যে ১০টি এশিয়ার এবং এশিয়ার কোনো শহর (ব্যাংকক) শীর্ষস্থানীয় অবস্থায় ছিলো, ১৫.৯৮ আন্তর্জাতিক পর্যটক নিয়ে।[১১৭]
রাজনীতি
[সম্পাদনা]|
০.৯০০–১.০০০
০.৮০০–০.৮৯৯
০.৭০০–০.৭৯৯
|
০.৬০০–০.৬৯৯
০.৫০০–০.৫৯৯
০.৪০০–০.৪৯৯
|
০.৩০০–০.৩৯৯
০.২০০–০.২৯৯
০.১০০–০.১৯৯
|
০.০০০–০.০৯৯
তথ্য নেই
|
ভি-ডেম গণতন্ত্র সূচক–এর ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ার সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দেশ হলো জাপান, তাইওয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়া।[১১৮]
রাষ্ট্র ও অঞ্চলের তালিকা
[সম্পাদনা]| প্রতীক | পতাকা | নাম | জনসংখ্যা[২][৩] (২০১৮) |
ক্ষেত্রফল (বর্গ কিলোমিটার) |
রাজধানী |
|---|---|---|---|---|---|
| আফগানিস্তান | ৩৭,১৭১,৯২১ | ৬,৫২,৮৬৪ | কাবুল | ||
| আর্মেনিয়া | ২,৯৫১,৭৪৫ | ২৯,৭৪৩ | ইয়েরেভান | ||
| আজারবাইজান[টীকা ২] | ৯,৯৪৯,৫৩৭ | ৮৬,৬০০ | বাকু | ||
| বাহরাইন | ১,৫৬৯,৪৪৬ | ৭৬০ | মানামা | ||
| বাংলাদেশ | ১৬১,৩৭৬,৭০৮ | ১,৪৭,৫৭০ | ঢাকা | ||
| ভুটান | ৭৫৪,৩৮৮ | ৩৮,৩৯৪ | থিম্পু | ||
| ব্রুনাই | ৪২৮,৯৬৩ | ৫,৭৬৫ | বন্দর সেরি বেগাওয়ান | ||
| কম্বোডিয়া | ১৬,২৪৯,৭৯২ | ১,৮১,০৩৫ | নমপেন | ||
| গণচীন | ১,৪২৭,৬৪৭,৭৮৬ | ৯৫,৯৬,৯৬১ | বেইজিং | ||
| সাইপ্রাস | ১,১৮৯,২৬৫ | ৯,২৫১ | নিকোসিয়া | ||
| মিশর[টীকা ২] | ৯৮,৪২৩,৫৯৮ | ১০,০১,৪৪৯ | কায়রো | ||
| জর্জিয়া[টীকা ২] | ৪,০০২,৯৪২ | ৬৯,৭০০ | তিবিলিসি | ||
| ভারত | ১,৩৫২,৬৪২,২৮০ | ৩২,৮৭,২৬৩ | নয়াদিল্লি | ||
| ইন্দোনেশিয়া[টীকা ২] | ২৬৭,৬৭০,৫৪৩ | ১৯,০৪,৫৬৯ | জাকার্তা | ||
| ইরান | ৮১,৮০০,১৮৮ | ১,৬৪৮,১৯৫ | তেহরান | ||
| ইরাক | ৩৮,৪৩৩,৬০০ | ৪৩৮,৩১৭ | বাগদাদ | ||
| ইসরায়েল | ৮,৩৮১,৫১৬ | ২০,৭৭০ | জেরুজালেম (সীমিত স্বীকৃতি) | ||
| জাপান | ১২৭,২০২,১৯২ | ৩৭৭,৯১৫ | টোকিও | ||
| জর্ডান | ৯,৯৬৫,৩১৮ | ৮৯,৩৪২ | আম্মান | ||
| কাজাখস্তান[টীকা ২] | ১৮,৩১৯,৬১৮ | ২,৭২৪,৯০০ | আস্তানা | ||
| কুয়েত | ৪,১৩৭,৩১২ | ১৭,৮১৮ | কুয়েত সিটি | ||
| কিরগিজস্তান | ৬,৩০৪,০৩০ | ১,৯৯,৯৫১ | বিশকেক | ||
| লাওস | ৭,০৬১,৫০৭ | ২,৩৬,৮০০ | ভিয়েনতিয়েন | ||
| লেবানন | ৬,৮৫৯,৪০৮ | ১০,৪০০ | বৈরুত | ||
| মালয়েশিয়া | ৩১,৫২৮,০৩৩ | ৩২৯,৮৪৭ | কুয়ালালামপুর | ||
| মালদ্বীপ | ৫১৫,৬৯৬ | ২৯৮ | মালে | ||
| মঙ্গোলিয়া | ৩,১৭০,২১৬ | ১৫,৬৪,১১৬ | উলানবাটর | ||
| মিয়ানমার | ৫৩,৭০৮,৩২০ | ৬৭৬,৫৭৮ | নেপিডো | ||
| নেপাল | ২৮,০৯৫,৭১৪ | ১,৪৭,১৮১ | কাঠমান্ডু | ||
| উত্তর কোরিয়া | ২৫,৫৪৯,৬০৪ | ১,২০,৫৩৮ | পিয়ংইয়ং | ||
| ওমান | ৪,৮২৯,৪৭৩ | ৩,০৯,৫০০ | মাস্কাট | ||
| পাকিস্তান | ২১১,১০৩,০০০ | ৮,৮১,৯১৩ | ইসলামাবাদ | ||
| ফিলিপাইন | ১০৬,৬৫১,৩৯৪ | ্৪৩,৪৪৮ | ম্যানিলা | ||
| প্রতীক | কাতার | ২,৭৮১,৬৮২ | ১১,৫৮৬ | দোহা | |
| রাশিয়া[টীকা ৩] | ১৪৫,৭৩৪,০৩৮ | ১,৭০,৯৮,২৪২ | মস্কো[টীকা ৪] | ||
| সৌদি আরব | ৩৩,৭০২,৭৫৬ | ২১,৪৯,৬৯০ | রিয়াদ | ||
| সিঙ্গাপুর | ৫,৭৫৭,৪৯৯ | ৬৯৭ | সিঙ্গাপুর | ||
| দক্ষিণ কোরিয়া | ৫১,১৭১,৭০৬ | ১,০০,২১০ | সিউল | ||
| শ্রীলঙ্কা | ২১,২২৮,৭৬৩ | ৬৫,৬১০ | শ্রী জয়বর্ধনপুর কোট্টে | ||
| সিরিয়া | ১৬,৯৪৫,০৫৭ | ১,৮৫,১৮০ | দামেস্ক | ||
| তাজিকিস্তান | ৯,১০০,৮৩৫ | ৪৩,১০০ | দুশানবে | ||
| থাইল্যান্ড | ৬৯,৪২৮,৪৫৩ | ১৩,১২০ | ব্যাংকক | ||
| তিমুর-লেস্তে | ১,২৬৭,৯৭৪ | ১৪,৮৭৪ | দিলি | ||
| তুরস্ক[টীকা ৫] | ৮২,৩৪০,০৮৮ | ৭,৮৩,৫৬২ | আঙ্কারা | ||
| তুর্কমেনিস্তান | ৫,৮৫০,৯০১ | ৪,৮৮,১০০ | আশখাবাদ | ||
| সংযুক্ত আরব আমিরাত | ৯,৬৩০,৯৫৯ | ৮৩,৬০০ | আবুধাবি | ||
| উজবেকিস্তান | ৩২,৪৭৬,২৪৪ | ৪,৪৭,৪০০ | তাশখন্দ | ||
| ভিয়েতনাম | ৯৫,৫৪৫,৯৬২ | ৩,৩১,২১২ | হানয় | ||
| ইয়েমেন[টীকা ২] | ২৮,৪৯৮,৬৮৩ | ৫,২৭,৯৬৮ |
উল্লিখিত দেশগুলোর ভেতরে কয়েকটি আংশিক স্বীকৃত রাষ্ট্র রয়েছে, যেগুলোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সীমিত বা নেই। তাদের কেউই জাতিসংঘের সদস্য নয়, তবে ফিলিস্তিন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে:
| প্রতীক | পতাকা | নাম | জনসংখ্যা |
আয়তন (কিমি২) |
রাজধানী |
|---|---|---|---|---|---|
| আবখাজিয়া | ২,৪২,৮৬২ | ৮,৬৬০ | সুখুমি | ||
| উত্তর সাইপ্রাস | ৩,২৬,০০০ | ৩,৩৫৫ | উত্তর নিকোসিয়া | ||
| ফিলিস্তিন | ৬,০২৫ | জেরুজালেম (সীমিত স্বীকৃতি) | |||
| দক্ষিণ ওসেটিয়া | ৫১,৫৪৭ | ৩,৯০০ | ৎসখিনভালি | ||
| তাইওয়ান (ROC) | ৩৬,১৯৩ | তাইপেই |
জনমিতি
[সম্পাদনা]| বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
|---|---|---|
| ১৫০০ | ২৪,৩০,০০,০০০ | — |
| ১৭০০ | ৪৩,৬০,০০,০০০ | +০.২৯% |
| ১৯০০ | ৯৪,৭০,০০,০০০ | +০.৩৯% |
| ১৯৫০ | ১,৪০,২০,০০,০০০ | +০.৭৯% |
| ১৯৯৯ | ৩,৬৩,৪০,০০,০০০ | +১.৯৬% |
| ২০১৬ | ৪,৪৬,২৬,৭৬,৭৩১ | +১.২২% |
| সূত্র: "জাতিসংঘ প্রতিবেদন ২০০৪ সালের তথ্য" (PDF)। ২০১৮ সালের সংখ্যা the 2019 revision of the World Population Prospects[২][৩] দ্বারা প্রদত্ত। | ||

প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আয়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, পূর্ব এশিয়া বিশ্বের যেকোন অঞ্চলের তুলনায় মানব উন্নয়নে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। গত ৪০ বছরে গড় এইচডিআই প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ১৯৭০ সালের পর থেকে চীন বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বাধিক উন্নয়নশীল দেশ। এর অগ্রগতি প্রধানত আয় বৃদ্ধির কারণে, স্বাস্থ্য বা শিক্ষায় নয়। গত চার দশকে দেশটিতে মাথাপিছু আয় ২১ গুণ বেড়েছে, এবং এতে শত শত মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। তবে স্কুলে ভর্তি হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধিতে চীন এই অঞ্চলের শীর্ষে নয়।[১১৯]
দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ নেপাল ১৯৭০ সালের পর থেকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কারণে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়েছে। বর্তমানে নেপালের গড় আয়ু ১৯৭০ সালের তুলনায় ২৫ বছর বেশি। এখন প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে চারজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়, যেখানে ৪০ বছর আগে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে মাত্র একজন যেত।[১১৯]
এইচডিআই সূচকে (বিশ্বের মধ্যে ৭ম স্থান, "খুব উচ্চ মানব উন্নয়ন" বিভাগে) সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে হংকং। এর পরেই সিঙ্গাপুর (৯), জাপান (১৯) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (২২)। আফগানিস্তান (১৫৫) এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচে রয়েছে।[১১৯]
ভাষা
[সম্পাদনা]এশিয়া বিভিন্ন ভাষা পরিবার এবং অনেক স্বতন্ত্র ভাষার আবাসভূমি। বেশিরভাগ এশীয় দেশে একাধিক ভাষা মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, এথনোলগ অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়াতে ৭০০টির বেশি ভাষা, ভারতে ৪০০টির বেশি ভাষা এবং ফিলিপাইনে ১০০টিরও বেশি ভাষা ব্যবহৃত হয়। চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বহু ভাষা ও উপভাষা প্রচলিত।
ধর্ম
[সম্পাদনা]বিশ্বের অনেক প্রধান ধর্ম এশিয়ায় উদ্ভূত হয়েছে। বিশ্বের পাঁচটি সর্বাধিক প্রচলিত ধর্ম—খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, হিন্দুধর্ম, চীনা লোকধর্ম (কনফুসীয়বাদ ও তাওবাদ) এবং বৌদ্ধধর্ম সবগুলোরই উৎপত্তি এশিয়ায়। এশীয় পুরাণ বেশ জটিল ও বৈচিত্র্যময়। উদাহরণস্বরূপ, মহাপ্লাবনের কাহিনি হিব্রু বাইবেলের নূহ নবির কাহিনি ছাড়াও পরবর্তীতে পুরাতন নিয়ম ও কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় মেসোপটেমীয় পুরাণে, যেমন এনূমা এলিশ ও গিলগামেশের মহাকাব্যে। তেমনি, হিন্দু পুরাণে বলা হয়েছে বিষ্ণুর মৎস্য অবতার মনুকে এক মহাপ্লাবনের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। প্রাচীন চীনা পুরাণেও প্রজন্মজুড়ে এক মহাপ্লাবনের কাহিনি আছে। সেই প্লাবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্রাট ও দেবতাদের যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়েছিল।
আব্রাহামীয় ধর্ম
[সম্পাদনা]


আব্রাহামীয় ধর্ম যেমন, ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, দ্রুজ ধর্ম,[১২০] এবং বাহাই ধর্ম সবগুলোরই উৎপত্তি পশ্চিম এশিয়ায়।[১২১]
ইহুদি ধর্ম সবচেয়ে প্রাচীন আব্রাহামীয় ধর্ম। বর্তমানে এটি মূলত এটি ইহুদি জাতির ঐতিহাসিক জন্মভূমি ইসরায়েলে প্রচলিত। প্রায় ৬১ লক্ষ ইহুদি ইসরায়েলে বাস করে, যা দেশটি মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৫.৬%।[১২২] ইসরায়েলের বাইরে এশিয়ায় ছোট ইহুদি সম্প্রদায় আছে তুরস্ক (১৭,৪০০), আজারবাইজান (৯,১০০), ইরান (৮,৭৫৬), ভারত (৫,০০০) ও উজবেকিস্তানে (৪,০০০)।[১২৩] ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে মোট প্রায় ১.৪৪ থেকে ১.৭৫ কোটি ইহুদি রয়েছে, যা এশিয়ার মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৩–০.৪ শতাংশ।
খ্রিস্টধর্ম এশিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচলিত। পিউ রিসার্চ সেন্টার অনুযায়ী ২০১০ সালে এশিয়ায় ২৮.৬ কোটির বেশি এবং ব্রিটানিকা ২০১৪ অনুযায়ী প্রায় ৩৬.৪ কোটি খ্রিস্টান ছিল। খ্রিস্টানরা এশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১২.৬%। ফিলিপাইন ও পূর্ব তিমুররে ক্যাথলিক ধর্ম প্রধান। দেশ দুটিতে যথাক্রমে স্পেনীয় ও পর্তুগিজদের মাধ্যমে খ্রিষ্টধর্মের প্রচলন হয়। আর্মেনিয়া ও জর্জিয়াতে পূর্ব অর্থোডক্স খ্রিস্টধর্ম প্রধান। লেভান্ত, আনাতোলিয়া ও ফার্স অঞ্চলে সিরিয়াক খ্রিস্টধর্ম ও ওরিয়েন্টাল অর্থোডক্সি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে টিকে আছে। ভারতের সেন্ট থমাস খ্রিস্টানরা প্রথম শতাব্দীতে প্রেরিত থমাসের প্রচার কার্যক্রম থেকে তাদের ধর্মীয় সূত্র খুঁজে পান। দক্ষিণ, মধ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই উল্লেখযোগ্য খ্রিস্টান সম্প্রদায় আছে।[১২৪]
ইসলামের উৎপত্তি হয় হেজাজ অঞ্চলে (বর্তমান সৌদি আরব)। এটি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও সর্বাধিক বিস্তৃত ধর্ম। প্রায় ১০০ কোটি মুসলমান এশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ২৩.৮%।[১২৫] বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়, এরপরেই পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, ইরান ও তুরস্কের অবস্থান। ইসলামের তিনটি পবিত্র শহর হলো মক্কা, মদিনা ও জেরুজালেম। প্রতি বছর হজ ও উমরাহ উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ মুসলমান মক্কা ও মদিনায় যান। ইরান বিশ্বের বৃহত্তম শিয়া দেশ।
দ্রুজ ধর্ম পশ্চিম এশিয়ায় উদ্ভূত একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম। এটি হামজা ইবনে আলী ও আল-হাকিম বি-আমরিল্লাহর শিক্ষা এবং গ্রিক দার্শনিক প্লেটো ও এরিস্টটলের দর্শন থেকে প্রভাবিত। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১০ লক্ষ দ্রুজ ধর্মাবলম্বী আছে; এর মধ্যে ৪৫–৫০% সিরিয়ায়, ৩৫–৪০% লেবাননে এবং ১০%ের কম ইসরায়েলে বাস করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুজদের প্রবাসী সম্প্রদায়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।[১২৬]
বাহাই ধর্মের উৎপত্তি ইরানে (তৎকালীন পারস্যে)। প্রচারক বাহাউল্লাহর জীবদ্দশায় এটি উসমানীয় সাম্রাজ্য, মধ্য এশিয়া, ভারত ও বার্মায় ছড়িয়ে পড়ে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে মুসলিম দেশগুলিতে ধর্মীয় দমননীতি থাকা সত্ত্বেও এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে এর বিস্তার ঘটে। ভারতের কমল মন্দির একটি বৃহৎ বাহাই মন্দির।
ভারতীয় ও প্রাচ্য ধর্ম
[সম্পাদনা]
প্রায় সব এশীয় ধর্মেই দার্শনিক চরিত্র রয়েছে। ভারতীয় দর্শনের মধ্যে রয়েছে হিন্দু দর্শন ও বৌদ্ধ দর্শন। এরা আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি পার্থিব জীবনের ভারসাম্য শেখায়। ভারতের চার্বাক দর্শন বস্তুবাদী চিন্তাধারার প্রতিনিধি ছিল। হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, জৈনধর্ম ও শিখধর্মের উৎপত্তি দক্ষিণ এশিয়ার ভারতেই। চীন ও জাপানে কনফুসীয়বাদ, তাওবাদ ও জেন বৌদ্ধধর্ম বিকাশ লাভ করে।
২০১২-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ], হিন্দুধর্মের অনুসারী প্রায় ১০১ কোটি। এটি এশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫% এবং মহাদেশটির বৃহত্তম ধর্ম। হিন্দুরা মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে। ভারত ও নেপালের ৮০%েরও বেশি মানুষ হিন্দু, এবং বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও বালি (ইন্দোনেশিয়া)তেও উল্লেখযোগ্য হিন্দু সম্প্রদায় রয়েছে। মায়ানমার, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যেও হিন্দু ধর্ম প্রচলিত।

বৌদ্ধধর্ম দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচলিত। কম্বোডিয়া (৯৬%), থাইল্যান্ড (৯৫%), মায়ানমার (৮০–৮৯%), জাপান (৩৬–৯৬%), ভুটান (৭৫–৮৪%), শ্রীলঙ্কা (৭০%), লাওস (৬০–৬৭%) এবং মঙ্গোলিয়া (৫৩–৯৩%)ের জনগণের প্রধান ধর্ম বৌদ্ধধর্ম। তাইওয়ানেও এটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। চীন, ভিয়েতনাম, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশেও উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ সম্প্রদায় রয়েছে। চীন, ভিয়েতনাম ও উত্তর কোরিয়ার মতো কমিউনিস্ট দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে নাস্তিক হওয়ায় প্রকৃত ধর্মীয় পরিসংখ্যান প্রায়শই কম দেখানো হয়।
জৈনধর্ম প্রধানত ভারতে এবং প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে (যেমন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া) প্রচলিত।
শিখধর্ম উত্তর ভারতে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে প্রচলিত।
কনফুসীয়বাদ প্রধানত চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে প্রচলিত, এবং তাওবাদ চীন, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। অনেক চীনা সম্প্রদায়ে তাওবাদ ও মহাযান বৌদ্ধধর্ম একত্রে পালন করা হয়; তাই সঠিক ধর্মীয় পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা কঠিন।
- মেইজি মন্দিরে জাপানি বিবাহ
- বার মিৎসভা অনুষ্ঠান, জেরুজালেমের পশ্চিম প্রাচীরে
- মানিলাতে ব্ল্যাক নাজারিনের ক্যাথলিক শোভাযাত্রা
- আর্মেনিয়ার এচমিয়াডজিন ক্যাথেড্রালে প্রার্থনারত আর্মেনীয় খ্রিস্টান
- ইস্তানবুলের ওর্তাকয় মসজিদে নামাজরত মুসলমানরা
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]নোবেল পুরস্কার
[সম্পাদনা]
ভারতীয় বাঙালি কবি, লেখক, কথাসাহিত্যিক, উপন্যাসিক এবং নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে প্রথম এশীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতের লেখক।
অন্যান্য এশীয় লেখকদের মধ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা (জাপান, ১৯৬৮), কেন্জাবুরো ওহয়ে (জাপান, ১৯৯৪), কাও শিংচিয়েন (চীন, ২০০০), ওরহান পামুক (তুরস্ক, ২০০৬), এবং মো ইয়ান (চীন, ২০১২)। অনেকে মার্কিন লেখক পার্ল এস বাককে এশিয়ান নোবেল বিজয়ী বিবেচনা করে। একজন ধর্মপ্রচারকের কন্যা হিসেবে তিনি চীনে উল্লেখ্যযোগ্য সময় কাটিয়েছেন, এবং তার উপন্যাস দ্য গুড আর্থ (১৯৩১) এবং মাদার (১৯৩৩), তার বাবা-মার চীনে থাকাকালীন সময়ের জীবনী, দ্য এক্সসাইল ও ফাইটিং এঞ্জেল চীন প্রবাসের উপ ভিত্তি করে লেখা। এগুল্প তাকে ১৯৩৮ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কার এনে দেয়।
এছাড়াও, ভারতের মাদার টেরিজা এবং ইরানের শিরিন এবাদর গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য তাদের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অধিকারের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এবাদি প্রথম ইরানি এবং প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত।
আরেকজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মায়ানমারে অং সান সু চি সামরিক একনায়কতন্ত্র বিরুদ্ধে তার শান্তিপূর্ণ ও অহিংস সংগ্রামের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন অহিংস গণতন্ত্রপন্থী কর্মী, ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমক্রেসি ইন বার্মার নেতা এবং মিয়ানমারের সামরিক শাসনামলের একজন উল্লেখ্যযোগ্য কারাবন্দী। তিনি ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। অতি সম্প্রতি, চীনে মৌলিক মানবাধিকারের জন্য দীর্ঘ ও অহিংস সংগ্রামের জন্য চীনা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ শাওবো নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি চীনে বসবাস করার অবস্থায় নোবেল পুরস্কার লাভকারী প্রথম চীনা নাগরিক।
স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া প্রথম এশীয়। তিনি আলোর বিক্ষেপণের উপর কাজ এবং আলোর বিক্ষেপণের রামন প্রভাব (তার নামেই নামকরণকৃত) আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
অমর্ত্য সেন (জন্ম ৩ নভেম্বর, ১৯৩৩) একজন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ; তিনি কল্যাণ অর্থনীতি ও সামাজিক পছন্দ তত্ত্বে তার অবদানসমূহের জন্য অর্থনীতিতে ১৯৯৮ সালে নোবেল স্মারক পুরস্কার লাভ করেন। তার আগ্রহের বিষয়বস্তু সমাজের দরিদ্রতম সদস্যদের সমস্যা।

অন্যান্য এশীয় নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে রয়েছে সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর, আবদুস সালাম, রবার্ট আউমান, মেনাখেম বেগিন, আহারোন চিহানোভের, আভ্রাম হের্শকো, ড্যানিয়েল কাহনেমান, শিমন পেরেজ, আইজাক রবিন, আদা ইয়োনাত, ইয়াসির আরাফাত, হোজে রামোস হোর্তা, পূর্ব তিমুরের বিশপ কার্লোস ফিলিপ শিমেনেস বেলো, কিম দায়ে জং, এবং আরোও ১৩ জাপানি বিজ্ঞানী। বেশিরভাগ পুরস্কারপ্রাপ্ত জাপান এবং ইসরাইলের, এছাড়া চন্দ্রশেখর ও রামন (ভারত), সালাম (পাকিস্তান), আরাফাত (ফিলিস্তিন), কিম (দক্ষিণ কোরিয়া), হোর্তা ও বেলো (পূর্ব তিমুর)।
২০০৬ সালে বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ক্ষুদ্রঋণের ধারণার জন্য পরিচিত, যা দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেয়। ঋণগ্রহীতারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করেন এবং খেলাপির হার খুবই কম। ড. ইউনূস ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বও গ্রহণ করেন।[১২৭]
দালাই লামা তার আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক কর্মজীবনে প্রায় চুরাশিটি পুরস্কার পেয়েছেন।[১২৮] ২০০৬ সালের ২২ জুন, তিনি কানাডার গভর্নর জেনারেল কর্তৃক কানাডার সম্মানসূচক নাগরিকত্ব লাভ করেন, যা তার আগে মাত্র তিন জন লাভ করে। ২০০৫ সালের ২৮ মেতে তিনি যুক্তরাজ্যের বৌদ্ধ সোসাইটি থেকে ক্রিসমাস হামফ্রে পুরস্কার পান। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৮৯ সালের ১০ ডিসেম্বর তারিখে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বিশেষ বিষয়:
- এশিয়ান গেমস
- এশীয় রন্ধনশৈলী
- ইউরেশিয়া
- দূরপ্রাচ্য
- পূর্ব এশিয়া
- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
- দক্ষিণ এশিয়া
- মধ্য এশিয়া
- পশ্চিম এশিয়া
- উত্তর এশিয়া
- এশিয়ার পতাকা
- মধ্যপ্রাচ্য
তালিকা:
প্রকল্প
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ফ্যামিলি রেফারেন্স অ্যাটলাস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড। ওয়াশিংটন, ডি.সি.: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)। ২০০৬। পৃ. ২৬৪।
- 1 2 3 ""World Population prospects – Population division""। population.un.org। United Nations Department of Economic and Social Affairs, Population Division। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- 1 2 3 ""Overall total population" – World Population Prospects: The 2019 Revision" (xslx)। population.un.org (custom data acquired via website)। United Nations Department of Economic and Social Affairs, Population Division। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "জিডিপি পিপিপি, বর্তমান মূল্য"। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। ২০২২। ২২ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "নামমাত্র জিডিপি, বর্তমান মূল্য"। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। ২০২২। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "নামমাত্র প্রতি ব্যক্তি জিডিপি"। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। ২০২২। ১১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Johnson, Todd M.; Crossing, Peter F. (১৪ অক্টোবর ২০২২)। "মহাদেশ অনুযায়ী ধর্মসমূহ"। Journal of Religion and Demography। ৯ (1–2): ৯১–১১০। ডিওআই:10.1163/2589742x-bja10013। আইএসএসএন 2589-7411।
- ↑ "Population of Asia"। populationof.net। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Like herrings in a barrel"। The Economist (Millennium issue: Population)। The Economist online, The Economist Group। ২৩ ডিসেম্বর ১৯৯৯। ৪ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৪।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}:|প্রকাশক=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য). - ↑ "Asia"। eb.com, Encyclopædia Britannica। Chicago: Encyclopædia Britannica, Inc.। ২০০৬।
- 1 2 National Geographic Atlas of the World (7th সংস্করণ)। Washington, DC: National Geographic। ১৯৯৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৯২২-৭৫২৮-২। "Europe" (pp. 68–9); "Asia" (pp. 90–1): "A commonly accepted division between Asia and Europe is formed by the Ural Mountains, Ural River, Caspian Sea, Caucasus Mountains, and the Black Sea with its outlets, the Bosporus and Dardanelles."
- ↑ Nalapat, M. D.। "Ensuring China's 'Peaceful Rise'"। ১০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;Eric.ed.gov-20002নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "The Real Great Leap Forward"। The Economist। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
- ↑ "Like herrings in a barrel"। The Economist। নং Millennium issue: Population। ২৩ ডিসেম্বর ১৯৯৯। ৪ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
- ↑ Slomp, Hans (২০১১)। Europe, A Political Profile: An American Companion to European Politics (Illustrated, revised সংস্করণ)। ABC-CLIO। আইএসবিএন ৯৭৮-০৩১৩৩৯১৮২৮।
- 1 2 Lewis ও Wigen 1997, পৃ. 170–173
- ↑ Histories 4.38...
- ↑ Geographia 7.5.6...
- ↑ Lewis ও Wigen 1997, পৃ. 27–28.
- ↑ http://voices.nationalgeographic.com/...।
{{ম্যাগাজিন উদ্ধৃতি}}:|title=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য); উদ্ধৃতি magazine এর জন্য|magazine=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Suez Canal: 1250 to 1920...।
- ↑ "Islands under the sea..."।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি journal এর জন্য|journal=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Simpson ...।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}:|title=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য); উদ্ধৃতি journal এর জন্য|journal=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ "Jejak Pembauran Melanesia dan Austronesia..."।
{{ম্যাগাজিন উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি magazine এর জন্য|magazine=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Lewis ও Wigen 1997, পৃ. 170–173.
- ↑ Flick ...।
{{বই উদ্ধৃতি}}:|title=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ Lewis ও Wigen 1997, পৃ. 7–9.
- ↑ "Asia"।
- ↑ https://www.theatlantic.com/doc/200812/editors-choice...।
{{ম্যাগাজিন উদ্ধৃতি}}:|title=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য); উদ্ধৃতি magazine এর জন্য|magazine=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Reid, T.R. Confucius Lives Next Door: What living in the East teaches us about living in the west Vintage Books(1999).
- ↑ Henry George Liddell; Robert Scott; Henry Stuart Jones; Roderick McKenzie (২০০৭) [1940]। "Ἀσία"। A Greek-English Lexicon। Medford: Perseus Digital Library, Tufts University।
- ↑ Book IV, Articles 37–40.
- ↑ Book IV, Article 45.
- ↑ "Asie"। Encyclopedia: Greek Gods, Spirits, Monsters। Theoi Greek Mythology, Exploring Mythology in Classical Literature and Art। ২০০০–২০১১।
- ↑ Theogony, Line 345 ff.
- ↑ Theogony, Line 364ff.
- ↑ Μ95, Π717.
- ↑ Β461.
- ↑ Ventris ও Chadwick 1973, পৃ. 536.
- ↑ Ventris ও Chadwick 1973, পৃ. 410
- ↑ Bossert, Helmut T., Asia, Istanbul, 1946.
- 1 2 3 4 উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;reid3নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ আউট অব আফ্রিকা. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি। সংগৃহীত: ২৩ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ পেকিং ম্যান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে. দ্য হিস্ট্রি অব হিউম্যান ইভোলিউশন। আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি। ২৩ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ বাই ল্যান্ড অ্যান্ড সি. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি। সংগৃহীত: ২৩ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ "রহস্যময় ডেনিসোভানদের সন্ধানে নতুন প্রমাণ"। অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়াম।
- ↑ Sutikna, Thomas; Tocheri, Matthew W.; Morwood, Michael J. (৩০ মার্চ ২০১৬)। "ইন্দোনেশিয়ার লিয়াং বুয়া গুহায় হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস-এর নবায়িত ভূস্তরবিন্যাস ও কালানুক্রম"। Nature। ৫৩২ (৭৫৯৯): ৩৬৬–৩৬৯। ডিওআই:10.1038/nature17179।
- ↑ Vallini, Leonardo (২৫ মার্চ ২০২৪)। "প্রধান আউট অব আফ্রিকা অভিবাসনের পর পারস্য মালভূমি হোমো স্যাপিয়েন্সের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছিল"। Nature Communications। ১৫ (১): ১৮৮২। ডিওআই:10.1038/s41467-024-46161-7।
- ↑ "আমেরিকার প্রথম জনগণের জিনগত ইতিহাস"। SAPIENS। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- 1 2 Narasimhan, Vagheesh M. (৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার মানব জনগোষ্ঠীর গঠন"। Science। ৩৬৫ (৬৪৫৭)। ডিওআই:10.1126/science.aat7487।
- ↑ Lee, Adela C. Y.। "প্রাচীন সিল্ক রোডের ভ্রমণকারীরা"। Silkroad Foundation।
- ↑ "ইসলাম কীভাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল"। Yaqeen Institute for Islamic Research।
- ↑ "আপনি কি জানেন?: বাণিজ্য পথের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইসলামের প্রসার"। UNESCO।
- ↑ Ping-ti Ho. "An Estimate of the Total Population of Sung-Chin China", in Études Song, Series 1, No. 1, (1970). pp. 33–53.
- ↑ "ব্ল্যাক ডেথ"। BBC। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- ↑ Hu-DeHart, Evelyn (২০০৮)। "লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে এশীয় প্রবাসীদের ইতিহাস"। Afro-Hispanic Review। ২৭ (১): ৯–২১।
- ↑ "দ্য স্টোরি অব ইন্ডিয়া"। PBS।
- ↑ Sen, Sailendra Nath (২০১০)। An Advanced History of Modern India। Macmillan। পৃ. ১১।
- ↑ "ভারতের অর্থনীতি কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে অতিক্রম করবে"। Time। ২৮ জুলাই ২০২৩।
- ↑ "সুয়েজ খালের দীর্ঘস্থায়ী গুরুত্বের পেছনে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতার ছায়া"। The Wire।
- ↑ "১৮৩০–১৮৬০: চীনে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ – মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর"।
- ↑ "চীনের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস তার 'অপমানের শতাব্দী'"। South China Morning Post।
- ↑ "দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ১৮০০–১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ"। Metropolitan Museum of Art।
- ↑ "মেইজি জাপানে বর্ণ ও সাম্রাজ্যের পরিচয়"। The Asia–Pacific Journal।
- ↑ Huffman, James L. (২০১৯)। মেইজি জাপানের উত্থান ও বিকাশ। Amsterdam University Press।
- ↑ "যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের প্রতি উন্মুক্ততা, ১৮৫৩"।
- ↑ "ফরাসি ও ব্রিটিশ মধ্যপ্রাচ্য ম্যান্ডেট (১৯১৮–১৯৩৯): দুটি রাজনৈতিক কৌশল"। Revue Française de Civilisation Britannique। ৪ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Global war's colonial consequence"। Decolonization: A Very Short Introduction। Oxford University Press। ২০১৬।
- ↑ "ভারত বিভাজনের পারস্পরিক গণহত্যা"। The New Yorker।
- ↑ "শীতল যুদ্ধ কীভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে প্রভাবিত করেছিল"। The Diplomat।
- ↑ "No Great Game: শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী মধ্য এশিয়ার শক্তির গল্প"। The Atlantic।
- ↑ "সৌদি আরবে তেল আবিষ্কার"। National Geographic।
- ↑ "১৯৪৮-এর পথ ও এক অনন্ত সংঘাতের সূত্রপাত"। The New York Times।
- ↑ "আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য নীতি: বহু হস্তক্ষেপ, অল্প সফলতা"। NPR।
- ↑ "পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি"। IMF।
- ↑ "চীনের ১৯৭৮-পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় প্রবেশ"। The Cato Institute।
- ↑ "২৫ বছরের উদারীকরণ: ভারতের উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত চিত্র"। Firstpost।
- ↑ "৫ বছরে ভারতের জনসংখ্যার এক-দশমাংশ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত"। Reuters।
- ↑ "পর্বত থেকে সাগর পর্যন্ত: গালওয়ান পরবর্তী ভারত–চীন প্রতিযোগিতা"। Stimson Center।
- ↑ "'ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয়' ধারণার ভূরাজনৈতিক উৎস"। The Diplomat।
- ↑ "কনস্টান্টিনোপল থেকে কলকাতা পর্যন্ত অঞ্চলের মানচিত্র"। Wdl.org।
- ↑ "Asia"। Encyclopædia Britannica Online। Chicago: Encyclopædia Britannica, Inc। ২০০৬।
- ↑ "Standard Country or Area Codes for Statistical Use (M49 Standard)"। UN Statistics Division। ৩০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০২০।
- ↑ Beck, Hylke E.; Zimmermann, Niklaus E. (৩০ অক্টোবর ২০১৮)। "Present and future Köppen-Geiger climate classification maps at 1-km resolution"। Scientific Data। ৫। ডিওআই:10.1038/sdata.2018.214। পিএমসি 6207062। পিএমআইডি 30375988।
- ↑ "How melting glaciers contributed to floods in Pakistan"। NPR.org (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "Pakistan not to blame for climate crisis-fuelled flooding, says PM Shehbaz Sharif"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ আগস্ট ২০২২। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ Kang, Suchul; Eltahir, Elfatih A. B. (৩১ জুলাই ২০১৮)। "North China Plain threatened by deadly heatwaves due to climate change and irrigation"। Nature Communications। ৯ (1): ৩৫২৮। ডিওআই:10.1038/s41467-023-38906-7। পিএমসি 10319847। পিএমআইডি 37402712।
- 1 2 3 Shaw, R., Y. Luo, T. S. Cheong, S. Abdul Halim, S. Chaturvedi, M. Hashizume, G. E. Insarov, Y. Ishikawa, M. Jafari, A. Kitoh, J. Pulhin, C. Singh, K. Vasant, and Z. Zhang, 2022: Chapter 10: Asia. In Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability [H.-O. Pörtner, D. C. Roberts, M. Tignor, E. S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, New York, US, pp. 1457–1579 |doi=10.1017/9781009325844.012.
- 1 2 3 4 5 6 7 Shaw, R., Y. Luo, T. S. Cheong, S. Abdul Halim, S. Chaturvedi, M. Hashizume, G. E. Insarov, Y. Ishikawa, M. Jafari, A. Kitoh, J. Pulhin, C. Singh, K. Vasant, and Z. Zhang, 2022: Chapter 10: Asia. In Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability [H.-O. Pörtner, D. C. Roberts, M. Tignor, E. S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, New York, US, pp. 1457–1579 |doi=10.1017/9781009325844.012.
- ↑ Armstrong McKay, David; Abrams, Jesse (৯ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "Exceeding 1.5°C global warming could trigger multiple climate tipping points"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। ৩৭৭ (6611)। ডিওআই:10.1126/science.abn7950। আইএসএসএন 0036-8075। পিএমআইডি 36074831। এস২সিআইডি 252161375।
{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}:|hdl-access=এর জন্য|hdl=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ Armstrong McKay, David (৯ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "Exceeding 1.5°C global warming could trigger multiple climate tipping points – paper explainer"। climatetippingpoints.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০২২।
- 1 2 3 4 Shaw, R., Y. Luo, T. S. Cheong, S. Abdul Halim, S. Chaturvedi, M. Hashizume, G. E. Insarov, Y. Ishikawa, M. Jafari, A. Kitoh, J. Pulhin, C. Singh, K. Vasant, and Z. Zhang, 2022: Chapter 10: Asia. In Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability [H.-O. Pörtner, D. C. Roberts, M. Tignor, E. S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, New York, US, pp. 1457–1579 |doi=10.1017/9781009325844.012.
- 1 2 3 4 Shaw, R., Y. Luo, T. S. Cheong, S. Abdul Halim, S. Chaturvedi, M. Hashizume, G. E. Insarov, Y. Ishikawa, M. Jafari, A. Kitoh, J. Pulhin, C. Singh, K. Vasant, and Z. Zhang, 2022: Chapter 10: Asia. In Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability [H.-O. Pörtner, D. C. Roberts, M. Tignor, E. S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, New York, US, pp. 1457–1579 |doi=10.1017/9781009325844.012.
- ↑ Vulnerability to Climate Change: Adaptation Strategies and layers of Resilience ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুলাই ২০১৮ তারিখে, ICRISAT, Policy Brief No. 23, February 2013
- 1 2 আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। "বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ডাটাবেস, এপ্রিল ২০২৩"। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। ১৩ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০২৩।
- ↑ "এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি"। Aneki.com। ৩০ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "হংকং, সিঙ্গাপুর ও টোকিও বিশ্বের শীর্ষ অফিস গন্তব্য"। CFO Innovation Asia। ৭ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১১।
- ↑ Farah, Paolo Davide (৪ আগস্ট ২০০৬), চীনের WTO সদস্যপদকালীন পাঁচ বছর: স্বচ্ছতা প্রতিশ্রুতি ও রিভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে ইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি, এসএসআরএন 916768
- ↑ Maddison, Angus (২০ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। বিশ্ব অর্থনীতির রূপরেখা ১–২০৩০ খ্রিস্টাব্দ: সামষ্টিক অর্থনীতির প্রবন্ধ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-১৬৪৭৫৮-১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২১।
- ↑ Angus, Maddison (২০০৩)। বিশ্ব অর্থনীতির ঐতিহাসিক পরিসংখ্যান। OECD। আইএসবিএন ৯৭৮-৯২৬৪১০৪১৪৩। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২১।
- ↑ Bairoch, Paul (১৯৯৫)। অর্থনীতি ও বিশ্ব ইতিহাস: মিথ ও বৈপরীত্য। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন ৯৭৮-০-২২৬-০৩৪৬৩-৮।
- ↑ Nalapat, M. D. (১১ সেপ্টেম্বর ২০০১)। "চীনের শান্তিপূর্ণ উত্থান নিশ্চিত করা"। ১০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
- ↑ "জাপান ও চার এশিয়ান টাইগারের উত্থান"। ২২ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
- ↑ Fairless, Tom। "ধনী দেশগুলো সস্তা শ্রমের ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে"। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২৪।
- ↑ "ফিলিপাইনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদন"। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
{{সংবাদ উদ্ধৃতি}}:|archive-date=এর জন্য|archive-url=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ "আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলে নতুন আন্তর্জাতিক নৌপথের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে"। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "গ্লোবাল মেরিন ট্রেন্ডস ২০৩০ প্রতিবেদন"।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:|url=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য);|সংগ্রহের-তারিখ=এর জন্য|ইউআরএল=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ "এশিয়ায় ইউরোপের চেয়ে বেশি মিলিয়নেয়ার"। টরন্টো।
- ↑ "সিটিগ্রুপ গবেষণা: এশীয় ধনীরা উত্তর আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেছে"। ব্লুমবার্গ। ২৮ মার্চ ২০১২।
- ↑ জাপানের নামমাত্র জিডিপি সম্পর্কিত বিশ্বব্যাংকের তথ্য
- ↑ সৌদি আরবের নামমাত্র জিডিপি সম্পর্কিত বিশ্বব্যাংকের তথ্য
- ↑ ইরানের নামমাত্র জিডিপি সম্পর্কিত বিশ্বব্যাংকের তথ্য
- ↑ তুরস্কের পিপিপি ভিত্তিক জিডিপি সম্পর্কিত বিশ্বব্যাংকের তথ্য
- ↑ সৌদি আরবের পিপিপি ভিত্তিক জিডিপি সম্পর্কিত বিশ্বব্যাংকের তথ্য
- ↑ "মাস্টারকার্ড গ্লোবাল ডেস্টিনেশন সিটিজ ইনডেক্সে মিলান ও রোমের পাশাপাশি ব্যাংকক শীর্ষে"। ২৮ মে ২০১৩।
- ↑ "Milan and Rome named among the most widely visited cities in the world in the Mastercard Global Destination Cities Index report"। ২৮ মে ২০১৩। ১৭ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "গণতন্ত্র প্রতিবেদন ২০২৪, ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসি" (পিডিএফ)। ১২ মার্চ ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৪।
- 1 2 3 "২০১০ মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন: ৪০ বছরে এশিয়ার দেশগুলোর উন্নয়ন অগ্রগতি"। ইউএনডিপি।
{{সংবাদ উদ্ধৃতি}}:|সংগ্রহের-তারিখ=এর জন্য|ইউআরএল=প্রয়োজন (সাহায্য) - ↑ দ্রুজ ও তাদের তাওহিদ বিশ্বাস। সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ২০০৬।
- ↑ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি: ধারাবাহিকতা, পরিবর্তন, সংঘাত ও সহযোগিতা। SAGE। ২০১৩।
- ↑ "জনসংখ্যা পূর্বাভাসের বিপরীতে ইসরায়েলের ইহুদি জনসংখ্যা"। ইসরায়েল হায়োম। ৫ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ "বিশ্ব ইহুদি জনসংখ্যা ২০০৭"। আমেরিকান ইহুদি ইয়ারবুক।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:|url=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "বিশ্বে খ্রিস্টধর্মের বিস্তার সম্পর্কিত প্রতিবেদন"। পিউ রিসার্চ সেন্টার।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:|url=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "এশিয়া–প্রশান্ত অঞ্চল: মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যৎ"। পিউ ফোরাম। ২৭ জানুয়ারি ২০১১।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:|url=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ মধ্যপ্রাচ্যের ধারা: স্থান, মানুষ ও রাজনীতি। রাউটলেজ। ২০০৮।
- ↑ "Muhammad Yunus returns to Bangladesh to lead interim government"। Al Jazeera। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ His Holiness's Teachings at TCV। "A Brief Biography – The Office of His Holiness The Dalai Lama"। Dalailama.com। ২৫ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Lewis, Martin W.; Wigen, Kären (১৯৯৭)। The myth of continents: a critique of metageography। Berkeley and Los Angeles: University of California Press। আইএসবিএন ০-৫২০-২০৭৪৩-২।
{{বই উদ্ধৃতি}}: অবৈধ|সূত্র=harv(সাহায্য) - Ventris, Michael; Chadwick, John (১৯৭৩)। Documents in Mycenaean Greek (2nd সংস্করণ)। Cambridge: University Press।
{{বই উদ্ধৃতি}}: অবৈধ|সূত্র=harv(সাহায্য)
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Higham, Charles. Encyclopedia of Ancient Asian Civilizations. Facts on File library of world history. New York: Facts On File, 2004.
- Kamal, Niraj. "Arise Asia: Respond to White Peril". New Delhi:Wordsmith,2002, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৮৭৪১২-০৮-৩
- Kapadia, Feroz, and Mandira Mukherjee. Encyclopaedia of Asian Culture and Society. New Delhi: Anmol Publications, 1999.
- Levinson, David, and Karen Christensen. Encyclopedia of Modern Asia. New York: Charles Scribner's Sons, 2002.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- "Display Maps"। The Soil Maps of Asia। European Digital Archive of Soil Maps – EuDASM। ১২ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১১।
- "Asia Maps"। Perry-Castañeda Library Map Collection। University of Texas Libraries। ১৮ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১১।
- "Asia"। Norman B. Leventhal Map Center at the Boston Public Library। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১১।
- Bowring, Philip (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭)। "What is Asia?"। Eastern Economic Review। ১৩৫ (7)। Columbia University Asia For Educators। ২৮ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Siberia lies in Asia geographically, but is considered part of Europe culturally and politically.
- 1 2 3 4 5 6 দ্বিমহাদেশীয় দেশ
- ↑ রাশিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় দেশ, যা পূর্ব ইউরোপ ও উত্তর এশিয়াতে অবস্থিত। তবে ইতিহাস, সংস্কৃতি, জাতিগত ও রাজনৈতিক দিক থেকে এটি ইউরোপীয় দেশ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর জনসংখ্যার প্রায় ৭৮% বসবাস করে এর ইউরোপীয় অংশে।
- ↑ রাজধানী মস্কো ইউরোপে অবস্থিত।
- ↑ তুরস্ক একটি আন্তঃমহাদেশীয় দেশ। এর প্রধান অংশ পশ্চিম এশিয়ায় হলেও একটি ছোট অংশ দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত।
<ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="টীকা"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি