বিষয়বস্তুতে চলুন

লোহিত সাগর

লোহিত সাগর
লোহিত সাগরের মানচিত্র
অবস্থানউত্তর আফ্রিকা, পূর্ব আফ্রিকাপশ্চিম এশিয়া
স্থানাঙ্ক২২° উত্তর ৩৮° পূর্ব / ২২° উত্তর ৩৮° পূর্ব / 22; 38
ধরনসমুদ্র
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহআডেন উপসাগর, সুয়েজ উপসাগর
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহবাব-এল-মানদেব, সুয়েজ খাল
অববাহিকার দেশসমূহ
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য২,২৫০ কিলোমিটার (১,৪০০ মাইল)
সর্বাধিক প্রস্থ৩৫৫ কিলোমিটার (২২১ মাইল)
পৃষ্ঠতল অঞ্চল৪,৩৮,০০০ বর্গকিলোমিটার (১,৬৯,০০০ বর্গমাইল)
গড় গভীরতা৪৯০ মিটার (১,৬১০ ফুট)
সর্বাধিক গভীরতা৩,০৪০ মিটার (৯,৯৭০ ফুট)
পানির আয়তন২,৩৩,০০০ ঘনকিলোমিটার (৫৬,০০০ ঘনমাইল)

লোহিত সাগর হলো ভারত মহাসাগরের একটি শাখা, যা আফ্রিকা ও এশিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এর দক্ষিণ অংশ বাব-এল-মানদেব প্রণালী ও আডেন উপসাগরের মাধ্যমে মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত।

উত্তরে রয়েছে সিনাই উপদ্বীপ, আকাবা উপসাগর এবং সুয়েজ উপসাগর—যা সুয়েজ খালে মিশেছে। এই সমুদ্রের নিচে রয়েছে লোহিত সাগর রিফট, যা গ্রেট রিফট উপত্যকার অংশ।

লোহিত সাগরের মোট পৃষ্ঠফল প্রায় ৪,৩৮,০০০ বর্গকিলোমিটার (১,৬৯,০০০ বর্গমাইল)[] এটি প্রায় ২,২৫০ কিলোমিটার (১,৪০০ মাইল) দীর্ঘ এবং সবচেয়ে প্রশস্ত স্থানে ৩৫৫ কিলোমিটার (২২১ মাইল) চওড়া। এর গড় গভীরতা প্রায় ৪৯০ মিটার (১,৬১০ ফুট) এবং কেন্দ্রীয় সুয়াকিন খাদে সর্বাধিক গভীরতা পৌঁছেছে ৩,০৪০ মিটার (৯,৯৭০ ফুট) পর্যন্ত।[]

লোহিত সাগরের প্রায় ৪০ শতাংশ অংশের গভীরতা ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট)-এর কম এবং প্রায় ২৫ শতাংশ অংশ ৫০ মিটার (১৬০ ফুট)-এর কম গভীর। এর বিস্তীর্ণ অগভীর তলদেশ সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও প্রবাল দ্বারা বিখ্যাত। এখানে ১,০০০-রও বেশি অকশরজ প্রাণী এবং ২০০ প্রজাতির নরম ও কঠিন প্রবাল রয়েছে।

লোহিত সাগর হলো বিশ্বের সর্বউত্তরের ক্রান্তীয় সমুদ্র এবং এটি গ্লোবাল ২০০ পরিবেশ অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত।

বিস্তার

[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা (International Hydrographic Organization) লোহিত সাগরের সীমানা নিম্নরূপভাবে নির্ধারণ করেছে:[]

উত্তরে: সুয়েজআকাবা উপসাগরের দক্ষিণ সীমানা।

দক্ষিণে: হুসন মুরাদ (১২°৪০′ উত্তর ৪৩°৩০′ পূর্ব / ১২.৬৬৭° উত্তর ৪৩.৫০০° পূর্ব / 12.667; 43.500) এবং রাস সিয়ান (১২°২৯′ উত্তর ৪৩°২০′ পূর্ব / ১২.৪৮৩° উত্তর ৪৩.৩৩৩° পূর্ব / 12.483; 43.333)-এর মধ্যে একটি রেখা।

একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল

[সম্পাদনা]

লোহিত সাগরে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ নিম্নরূপ:[]

ক্রমিক সংখ্যা দেশ এলাকা (কিমি²)
 সৌদি আরব১৮৬,৩৯২
 সুদান৯২,৫১৩
 মিশর৯১,২৭৯
 ইরিত্রিয়া৭৮,৩৮৩
 ইয়েমেন৩৫,৮৬১
 জিবুতি৭,০৩৭
মোট লোহিত সাগর৪৯১,৪৬৫
  • দ্রষ্টব্য: হালায়িব ত্রিভুজ অঞ্চলটি সুদান ও মিশরের মধ্যে বিরোধপূর্ণ এবং উভয় দেশের হিসাবেই গণ্য করা হয়েছে।
লোহিত সাগরের তীরে ইয়েমেনের খাউখার কাছে তিহামা
লোহিত সাগরের উপকূল, ফারাসান দ্বীপপুঞ্জ থেকে দেখা

নাম ও এর উৎস

[সম্পাদনা]

লোহিত সাগরের জন্য অঞ্চলের বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নাম প্রচলিত:

  • আধুনিক আরবি: আরবি: البحر الأحمر, মধ্যযুগীয় আরবি: আরবি: بحر القلزم
  • হিব্রু: হিব্রু ভাষায়: הַיָּם הָאָדוֹם, প্রাচীন হিব্রু: প্রাচীন হিব্রু: יַם-סוּף
  • কপটিক: ⲫⲓⲟⲙ ⲛ̀ϩⲁϩ Phiom Enhah বা ⲫⲓⲟⲙ ⲛ̀ϣⲁⲣⲓ Phiom ǹšari
  • তিগ্রিনিয়া: ቀይሕ ባሕሪ Qeyih Bahri
  • সোমালি: Badda Cas
  • আফার: Qasa Bad

ইংরেজি "Red Sea" নামটি প্রাচীন গ্রিক "Erythra Thalassa" (Ἐρυθρὰ Θάλασσα) এর সরাসরি অনুবাদ। ইউরোপীয়দের কাছে এক সময় এই সমুদ্রকে Erythraean Sea হিসেবেও ডাকা হতো। ল্যাটিনে এটি পরিচিত ছিল Mare Rubrum নামে (অথবা Sinus Arabicus, অর্থাৎ "আরব উপসাগর")। রোমানদের একটি নাম ছিল Pontus Herculis (হারকিউলিসের সাগর)।[]

আরবি ভাষায় Al-Baḥr Al-Aḥmar ছাড়াও এটিকে Baḥr Al-Qulzum (আক্ষরিক অর্থে "কুলজুমের সাগর") বলা হতো। কপটিক ভাষায় ⲫⲓⲟⲙ ̀ⲛϣⲁⲣⲓ (Phiom ̀nšari), সিরিয়াক ভাষায় ܝܡܐ ܣܘܡܩܐ (Yammāʾ summāqā), সোমালি ভাষায় Badda cas এবং তিগ্রিনিয়া ভাষায় Qeyyiḥ bāḥrī (ቀይሕ ባሕሪ) বলা হয়।

সমুদ্রের এই নামকরণের একটি ব্যাখ্যা হল, পানির উপর ভেসে থাকা লাল বর্ণের Trichodesmium erythraeum নামক অ্যালগির মৌসুমি বৃদ্ধি।[] কিছু সূত্র মতে, পাশের খনিজসমৃদ্ধ লাল পর্বত বা এডোম (Hebrew: הרי אדום) পর্বতমালার নাম থেকেই নামকরণ হয়েছে। হিব্রু ভাষায় Edom অর্থ “লালবর্ণ” এবং এটি বাইবেলের চরিত্র এসাউ-এর নামও বটে।

আধুনিক গবেষকদের মতে, "লাল" শব্দটি দক্ষিণ দিক নির্দেশ করতেও ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন "কালো সাগর" উত্তর দিক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। কারণ, কিছু এশীয় ভাষায় দিকনির্দেশ বোঝাতে রঙ ব্যবহার হতো।[] হেরোডোটাস একাধিকবার "লোহিত সাগর" এবং "দক্ষিণ সাগর" কে পরস্পরবিনিময়যোগ্যভাবে ব্যবহার করেছেন।[]

হিব্রু ভাষায় Yam Suph (হিব্রু ভাষায়: ים סוף) নামটি বাইবেলীয় উৎস থেকে এসেছে। সেপ্টুয়াজিন্ট অনুবাদে এটি Erythra Thalassa হিসেবে অনূদিত হয়েছে, যেটি হিব্রু থেকে কোইনে গ্রিকে অনূদিত হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে।

লোহিত সাগর হলো ইংরেজি ভাষায় রঙের নামে নামকরণ করা চারটি সমুদ্রের একটি। বাকি তিনটি হলো কালো সাগর, সাদা সাগর এবং হলুদ সাগর। গ্রিক ভাষায় "Erythra Thalassa" এর ল্যাটিন অনুবাদ "Mare Erythraeum" উত্তর-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের একটি অঞ্চল এবং মঙ্গলের একটি অঞ্চল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।

সমুদ্রবিজ্ঞান

[সম্পাদনা]
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে লোহিত সাগর ও নীল নদ, ধূলিঝড়সহ চিহ্নিত দৃশ্য[]
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের অভিযাত্রীদের ধারণকৃত ভিডিও, যাতে দক্ষিণ-পূর্ব ভূমধ্যসাগর থেকে শুরু করে লোহিত সাগরের উপকূল বরাবর দৃশ্য দেখা যায়

লোহিত সাগর ঘিরে রয়েছে শুষ্ক অঞ্চল, মরুভূমি ও আধা-মরুভূমি। গভীরতা বেশি হওয়া এবং কার্যকর জলচলাচল ব্যবস্থার কারণে লোহিত সাগরে প্রবাল প্রাচীরগুলোর বিকাশ তুলনামূলকভাবে ভালো। এই সাগরের জল আডেন উপসাগর হয়ে আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরের সঙ্গে বিনিময় হয়। এই প্রাকৃতিক কারণগুলো উত্তরাঞ্চলের উচ্চবাষ্পীভবনজনিত লবণাক্ততা ও দক্ষিণাঞ্চলের তুলনামূলকভাবে উষ্ণ পানির প্রভাবকে হ্রাস করে।[১০]

লোহিত সাগরের আবহাওয়া মূলত দুটি মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গঠিত: উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। স্থলভাগ ও জলভাগের মধ্যকার উষ্ণতার পার্থক্যের কারণে এই মৌসুমি বাতাস সৃষ্টি হয়। উচ্চতর পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা ও বেশি লবণাক্ততার কারণে এটি বিশ্বের অন্যতম উষ্ণ ও লবণাক্ত সামুদ্রিক জলরাশিগুলোর একটি। গ্রীষ্মকালে এর উত্তরাংশে পৃষ্ঠতলের গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং দক্ষিণাংশে প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) হয়। শীতকালে তাপমাত্রা পরিবর্তন খুব কম, গড়ে মাত্র ২ degrees Celsius change (৩.৬ degrees Fahrenheit change) পার্থক্য দেখা যায়। সামগ্রিকভাবে এর গড় জলতাপমাত্রা প্রায় ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। পানির স্বচ্ছতা এবং দৃশ্যমানতা প্রায় ২০০ মিটার (৬৬০ ফুট) পর্যন্ত ভালো থাকে। এই সাগর শক্তিশালী বাতাস এবং হঠাৎ পরিবর্তনশীল স্থানীয় স্রোতের জন্যও পরিচিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

লোহিত সাগর ও এর উপকূলবর্তী অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত অত্যন্ত কম—প্রায় ৬০ মিলিমিটার (২.৩৬ ইঞ্চি)। বৃষ্টিপাত সাধারণত স্বল্পমেয়াদি বর্ষণ আকারে হয়, যার সঙ্গে বজ্রঝড় বা ধূলিঝড়ও দেখা যেতে পারে। বৃষ্টিপাতের অভাব এবং কোনো বড়ো নদীর মিষ্টি পানির প্রবাহ না থাকায় বার্ষিক বাষ্পীভবনের হার অত্যধিক—প্রায় ২,০৫০ মিলিমিটার (৮১ ইঞ্চি)—যার ফলে সাগরের লবণাক্ততাও বেশি এবং ঋতুভেদে এর খুব কম পরিবর্তন ঘটে।

সম্প্রতি[কখন?] সুদানইরিত্রিয়ার উপকূলীয় অংশে পরিচালিত এক গভীর সমুদ্র অভিযানে দেখা যায়, শীতকালে পৃষ্ঠতলের জলতাপমাত্রা প্রায় ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৮২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং গ্রীষ্মকালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পর্যন্ত হয়। তীব্র উষ্ণতা সত্ত্বেও এই অঞ্চলের প্রবালপ্রাচীর স্বাস্থ্যবান ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ছিল, এবং প্রবাল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার (coral bleaching) খুব কম লক্ষণ দেখা গেছে—শুধুমাত্র ৯% প্রবাল Thalassomonas loyana ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত। Favia favus নামে একটি প্রবাল সেখানে BA3 নামে একটি ভাইরাস ধারণ করে, যা T. loyana-কে ধ্বংস করে।[১১]

বিজ্ঞানীরা এই প্রবাল ও তাদের সহাবস্থানকারী শৈবাল নিয়ে গবেষণা করছেন, যাতে এদের বৈশিষ্ট্য অন্য অঞ্চলের ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া প্রবালপ্রাচীর রক্ষায় কাজে লাগানো যায়।[১২]

ভূতত্ত্ব

[সম্পাদনা]
লোহিত সাগরের উপর ধূলিঝড়

লোহিত সাগর গঠিত হয়েছে আরব উপদ্বীপআফ্রিকার শৃঙ্গের মধ্যে বিভাজনের ফলে, যা লোহিত সাগর রিফটের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। এই বিভাজন শুরু হয় ইওসিন যুগে এবং অোলিগোসিনে তা ত্বরান্বিত হয়। এই সাগর এখনও প্রশস্ত হচ্ছে—২০০৫ সালে তিন সপ্তাহব্যাপী টেকটোনিক কার্যকলাপের ফলে এর প্রস্থ প্রায় ৮ মিটার [২৬ ফুট] বেড়েছিল।[১৩] জন টুজো উইলসনের মডেল অনুযায়ী ভবিষ্যতে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ মহাসাগরে রূপ নিতে পারে।

১৯৪৯ সালে পরিচালিত এক গভীরজল জরিপে লোহিত সাগরের কেন্দ্রীয় অংশে অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ লবণাক্ত জলধারার সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯৬০-এর দশকের গবেষণায় এটি নিশ্চিত হয় যে ওই অঞ্চলে উষ্ণ (প্রায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট)), অতিমাত্রায় লবণাক্ত জল এবং ধাতবতুল্য কাদামাটি রয়েছে। এই গরম জলধারা সমুদ্রতলের নিচের সক্রিয় রিফট থেকে উদ্গত হয়।

জিবুতির আসাল হ্রদকে লোহিত সাগরের গভীর, উষ্ণ লবণাক্ত জলের বিবর্তন অধ্যয়নের জন্য একটি উপযুক্ত গবেষণাস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১৪] লোহিত সাগরের গভীর লবণাক্ত জলের স্ট্রনটিয়াম আইসোটোপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যায়, এগুলো আসাল হ্রদের মতোই বিকশিত হয়েছে এবং এই হ্রদ সম্ভবত সেই রাসায়নিক প্রান্তবিন্দুকে উপস্থাপন করে।[১৪] এই উচ্চ লবণাক্ততা জীবজগতের জন্য অনুকূল ছিল না।[১৫][যাচাইকরণ ব্যর্থ হয়েছে]

টারশিয়ারি যুগের কোনো এক সময় বাব-এল-মানদেব প্রণালী বন্ধ হয়ে যায় এবং লোহিত সাগর শুকিয়ে এক ধরনের উষ্ণ, শুষ্ক, লবণাক্ত তলবিশিষ্ট উপত্যকায় রূপ নেয়। এই পরিবর্তনের সম্ভাব্য কারণ ছিল:

লোহিত সাগরের কেন্দ্রীয় অংশে একাধিক আগ্নেয় দ্বীপ রয়েছে। এদের বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয়। তবে ২০০৭ সালে বাব-এল-মানদেব প্রণালীতে অবস্থিত জাবাল আল-তাইর দ্বীপে প্রবল অগ্ন্যুৎপাত হয়। এরপর জুবাইর দ্বীপপুঞ্জে ২০১১ ও ২০১৩ সালে দুটি নতুন দ্বীপ গঠিত হয়। প্রথমটি ছিল শোলান দ্বীপ, যা ২০১১ সালের ডিসেম্বরের অগ্ন্যুৎপাতে উৎপন্ন হয়; দ্বিতীয়টি ছিল জাদিদ দ্বীপ, যা ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে গঠিত হয়।[১৬][১৭][১৮]

লোহিত সাগরের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকাই ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট)-এর চেয়ে কম গভীর, এবং এর প্রায় ২৫ শতাংশ অঞ্চল ৫০ মিটার (১৬০ ফুট)-এর চেয়ে কম গভীর।[]

প্রতিবিন্যাস

[সম্পাদনা]
এলফিনস্টোন রিফে হকসবিল কচ্ছপ
শা'আব মাহমুদের কাছে নুডিব্র্যাঙ্ক ডিমের ফিতা

লোহিত সাগর একটি সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রতিবিন্যাসের আবাসস্থল। এখানে ১২০০-রও বেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া গেছে,[১৯] যাদের মধ্যে প্রায় ১০% প্রজাতি এই অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ, অন্য কোথাও দেখা যায় না।[২০]

১৮৬৯ সালের নভেম্বরে সুয়েজ খাল খোলার পর থেকে লোহিত সাগরের হাজারেরও বেশি সামুদ্রিক প্রজাতি—যেমন প্ল্যাঙ্কটন, সামুদ্রিক শৈবাল, অমেরুদণ্ডী প্রাণী ও মাছ—উত্তরের দিকে অভিবাসন করে ভূমধ্যসাগরে বসতি গড়েছে। এর ফলে কিছু প্রজাতি এখন ভূমধ্যসাগরের প্রতিবিন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এই জৈববৈচিত্র্যের পরিবর্তন মানব ইতিহাসে নজিরবিহীন, এবং ভূমধ্যসাগরীয় বিজ্ঞান কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ করে মাছের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন বর্তমানে আরও দ্রুত ঘটছে।[২১]

লোহিত সাগরের প্রবালপ্রাচীর ও সামুদ্রিক মাছ

লোহিত সাগরের এই বৈচিত্র্যের একটি বড় উৎস হলো এর ২,০০০ কিলোমিটার (১,২০০ মাইল) দীর্ঘ প্রবালপ্রাচীর। এই উপকূলীয় প্রবালপ্রাচীরগুলো ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ বছর পুরাতন এবং প্রধানত কঠিন অ্যক্রোপোরাপোরাইটস প্রজাতির প্রবাল দিয়ে গঠিত। এই প্রাচীরগুলো উপকূল বরাবর প্ল্যাটফর্ম ও মাঝে মাঝে ল্যাগুন গঠন করে। কখনও কখনও ডাহাবের ব্লু হোলের মতো নলাকার গঠনও দেখা যায়।

লোহিত সাগরে অনেকগুলি উপকূলবর্তী এবং দূরবর্তী প্রবালপ্রাচীর রয়েছে, যাদের মধ্যে কিছু প্রকৃত প্রবাল প্রাচীরও। অনেক দূরবর্তী প্রবালগঠন প্রচলিত (ডারউইনীয়) শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে ফেলা যায় না, এবং সাধারণত এসব গঠনের পেছনে অঞ্চলের উচ্চ মাত্রার টেকটোনিক কার্যকলাপ দায়ী। উপকূলীয় ও দূরবর্তী উভয় ধরনের প্রবালপ্রাচীরেই পেলাজিক মাছ যেমন বিভিন্ন হাঙর প্রজাতি (যার মধ্যে ৪৪ প্রজাতি রেকর্ড করা হয়েছে) এবং ১৭৫-রও বেশি প্রজাতির নুডিব্র্যাঙ্ক দেখতে পাওয়া যায়, যাদের অনেকগুলিই লোহিত সাগরে স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত।[২২]

অন্যান্য উপকূলীয় পরিবেশে সামুদ্রিক ঘাসের বন, লবণাক্ত প্যান, ম্যানগ্রোভ বন ও লবণাভূমি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, লোহিত সাগরের গভীর লবণাক্ত জলাধার বা ব্রাইন পুলগুলোতে জীবাণুর উপস্থিতি ও তাদের চরম পরিবেশে অভিযোজনের বৈচিত্র্য নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে।

এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য মিশর সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ১৯৮৩ সালে রাস মুহাম্মদ জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠা করে। এই অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত নিয়মাবলি স্থানীয় সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দেয়, যা ডাইভিং প্রেমীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তবে, ডাইভারদের জানা উচিত যে অধিকাংশ লোহিত সাগরীয় প্রজাতি ক্ষতিকর না হলেও কিছু কিছু মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।[২৩][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]

লবণাক্ত পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্র

[সম্পাদনা]

লোহিত সাগরের উপকূলবর্তী জনসংখ্যা ও শিল্পকারখানার চাহিদা মেটাতে লবণাক্ত পানি বিশুদ্ধকরণকৃত জলের ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে।

সৌদি আরবের লোহিত সাগর উপকূলে অন্তত ১৮টি লবণাক্ত পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলো গরম লবণাক্ত জলধারা ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ (ক্লোরিনঅ্যান্টি-স্কেলেন্ট) নির্গত করে। এসব পদার্থ প্রবাল ফ্যাকাশে করে দেয়, প্রবাল হত্যা করে এবং মাছের মধ্যে নানা রোগ সৃষ্টি করে। যদিও এই প্রভাব বর্তমানে স্থানীয়ভাবে সীমিত, ভবিষ্যতে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে মাছ ধরার শিল্পের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।[২৪]

বাণিজ্য

[সম্পাদনা]

লোহিত সাগর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিবছর অসংখ্য পণ্যবাহী জাহাজ ভারত মহাসাগরভূমধ্যসাগরের মধ্যে যাতায়াত করে, যার ফলে এশিয়াইউরোপর মধ্যে পণ্য পরিবহনের পথ প্রায় অর্ধেকে সংক্ষিপ্ত হয়—আটলান্টিক মহাসাগর ঘুরে আফ্রিকার চারপাশ দিয়ে যাত্রার তুলনায়।[২৫]

বিশ্বের মোট বাণিজ্যের প্রায় ১২% এই লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে,[২৬] যার মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক কনটেইনার পরিবহনের প্রায় ৩০%।[২৬]

সীমানার দেশসমূহ

[সম্পাদনা]
লোহিত সাগর ও এর সীমানাসংলগ্ন দেশসমূহের চার রঙের মানচিত্র

ভৌগোলিকভাবে লোহিত সাগরকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায়: মূল লোহিত সাগর এবং উত্তরের দিকে আকাবা উপসাগরসুয়েজ উপসাগর

মূল লোহিত সাগরের সঙ্গে ছয়টি দেশের সীমানা রয়েছে:

সুয়েজ উপসাগর সম্পূর্ণরূপে মিশরের মধ্যে অবস্থিত। আকাবা উপসাগর সীমানা গঠন করে মিশর, ইসরায়েল, জর্ডান এবং সৌদি আরবের সঙ্গে।

উপরের ছয়টি দেশকে সাধারণত লোহিত সাগরের উপকূলবর্তী দেশ হিসেবে ধরা হলেও, সোমালিয়াকেও কখনও কখনও লোহিত সাগরীয় অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর কারণ হলো সোমালিয়ার ভৌগোলিক সান্নিধ্য, ভূতাত্ত্বিক মিল এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক, যা লোহিত সাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[২৭][২৮]

শহর ও বন্দরনগরীগুলো

[সম্পাদনা]

লোহিত সাগরের উপকূলে (যার মধ্যে আকাবা উপসাগরসুয়েজ উপসাগর-এর উপকূলও অন্তর্ভুক্ত) অবস্থিত প্রধান শহর ও বন্দরনগরীগুলোর মধ্যে রয়েছে:

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "State of the Marine Environment Report for the Red Sea and Gulf of Aden: 2006" (পিডিএফ)। ১৬ জুন ২০০৮। ২১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২০
  2. Dinwiddie, Robert (২০০৮)। Thomas, Louise (সম্পাদক)। Ocean: The World's Last Wilderness Revealed। London: Dorling Kindersley। পৃ. ৪৫২। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৫৬৬-২২০৫-৩
  3. "Limits of Oceans and Seas, 3rd edition" (পিডিএফ)। International Hydrographic Organization। ১৯৫৩। ৮ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
  4. "Sea Around Us | Fisheries, Ecosystems and Biodiversity"www.seaaroundus.org। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
  5. Phillips, Carl; Villeneuve, François; Facey, William (২০০৪)। "A Latin inscription from South Arabia"Proceedings of the Seminar for Arabian Studies৩৪: ২৩৯–২৫০। আইএসএসএন 0308-8421জেস্টোর 41223821। ২ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২৩
  6. 1 2 "Red Sea | sea, Middle East"Encyclopedia Britannica Online Library Edition। Encyclopedia Britannica। ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০০৮
  7. "How the Red Sea Got its Name"। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১৫
  8. Schmitt, Rüdiger (১৯৯৬)। "Considerations on the Name of the Black Sea"। Hellas und der griechische Osten। Saarbrücken: ২১৯–২২৪।
  9. "Egyptian Dust Plume, Red Sea"earthobservatory.nasa.gov। ৮ জুলাই ২০১৩। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
  10. Sofianos, Sarantis S.; Johns, William E. (২০০২)। "An Oceanic General Circulation Model (OGCM) investigation of the Red Sea circulation, 1. Exchange between the Red Sea and the Indian Ocean"Journal of Geophysical Research: Oceans (ইংরেজি ভাষায়)। ১০৭ (C11): ৩১৯৬। বিবকোড:2002JGRC..107.3196Sডিওআই:10.1029/2001JC001184
  11. "Virus power harnessed to protect Red Sea coral"New Scientist (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২৩
  12. Fitzgerald, Sunny (৮ এপ্রিল ২০২০)। "The super-corals of the Red Sea"BBC Future। ৭ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২২
  13. Rose, Paul; Laking, Anne (২০০৮)। Oceans: Exploring the hidden depths of the underwater world। London: BBC Books। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪-৬০৭৫০৫-৬
  14. 1 2 Boschetti, Tiziano; Awaleh, Mohamed Osman; Barbieri, Maurizio (২০১৮)। "Waters from the Djiboutian Afar: a review of strontium isotopic composition and a comparison with Ethiopian waters and Red Sea brines"Water১০ (11): ১৭০০। বিবকোড:2018Water..10.1700Bডিওআই:10.3390/w10111700এইচডিএল:11573/1202448
  15. Degens, Egon T.; Ross, David A., সম্পাদকগণ (১৯৬৯)। Hot Brines and Recent Heavy Metal Deposits in the Red Sea (ইংরেজি ভাষায়)। Berlin, Heidelberg: Springer Berlin Heidelberg। ডিওআই:10.1007/978-3-662-28603-6আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৬৬২-২৭১২০-৯। ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২৩
  16. "MSN – Outlook, Office, Skype, Bing, Breaking News, and Latest Videos"NBC News। ২৮ ডিসেম্বর ২০১১। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৯
  17. Israel, Brett (২৮ ডিসেম্বর ২০১১)। "New Island Rises in the Red Sea"LiveScience.com। ২৮ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৫
  18. Oskin, Becky; SPACE.com (৩০ মে ২০১৫)। "Red Sea Parts for 2 New Islands"Scientific American। ৩ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৫
  19. Froese, Rainer; Pauly, Daniel (২০০৯)। "FishBase"। ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০০৯
  20. Siliotti, A. (২০০২)। Verona, Geodia (সম্পাদক)। Fishes of the red sea। Geodia Edizioni Internazionali। আইএসবিএন ৯৭৮-৮৮-৮৭১৭৭-৪২-৮
  21. Atlas of Exotic Fishes in the Mediterranean Sea. 2nd Edition. 2021. (F. Briand Ed.) CIESM Publishers, Paris, Monaco 366 p.
  22. Yonow, Nathalie (২০১২)। "Nature's Best-Dressed"Saudi Aramco World। খণ্ড ৬৩ নং 4। Aramco Services Company। পৃ. ২–৯। ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৮
  23. Lieske, Ewald; Myers, Robert F.; Fiedler, Klaus E. (২০০৪)। Coral reef guide: Red Sea to Gulf of Aden, South Oman। London: Collins। আইএসবিএন ৯৭৮-০-০০-৭১৫৯৮৬-৪
  24. Mabrook, Badr (১ আগস্ট ১৯৯৪)। "Environmental impact of waste brine disposal of desalination plants, Red Sea, Egypt"Desalination। Proceedings of the IDA and WRPC World Conference On Desalination and Water Treatment (ইংরেজি ভাষায়)। ৯৭ (1): ৪৫৩–৪৬৫। বিবকোড:1994Desal..97..453Mডিওআই:10.1016/0011-9164(94)00108-1আইএসএসএন 0011-9164। ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২৩
  25. Rodrigue, Jean-Paul (১ নভেম্বর ২০১৭)। "Geographical Impacts of the Suez and Panama Canals" (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। New York: Hofstra University। ৪ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২৩
  26. 1 2 Yerushalmy, Jonathan (২০ ডিসেম্বর ২০২৩)। "Red Sea crisis explained: what is happening and what does it mean for global trade?"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৪
  27. Barth, Hans-Jörg (২০০২)। Sabkha ecosystems, Volume 2। Springer। পৃ. ১৪৮। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০২০-০৫০৪-৬
  28. Makinda, Samuel M. (১৯৮৭)। Superpower diplomacy in the Horn of Africa। Routledge। পৃ. ৩৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭০৯৯-৪৬৬২-৫